পোস্টগুলি

মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাই সালাম এর শুভ জন্ম পর্ব ২ লেবেল থাকা পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে

মহানবীর জন্মের দিন, মাস ও বছরনবী করীম মোস্তফা সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের শুভ জন্ম পর্ব ২সাধারণ সীরাত রচয়িতাগণ ঐকমত্য পোষণ করেন যে, মহানবী হাতির বছর (عام الفيل) অর্থাৎ ৫৭০ খ্রিষ্টাব্দে জন্মগ্রহণ করেছিলেন। কারণ, তিনি অকাট্যভাবে ৬৩২ খ্রিষ্টাব্দে ইন্তেকাল করেছিলেন। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৬২ অথবা ৬৩ বছর। অতএব, তিনি ৫৭০ খ্রিষ্টাব্দে জন্মগ্রহণ করেছিলেন।অধিকাংশ ঐতিহাসিক ঐকমত্য পোষণ করেছেন যে, মহানবী (সা.) রবিউল আউয়াল মাসে জন্মগ্রহণ করেছিলেন। তবে তাঁর জন্মদিন সম্পর্কে মতভেদ আছে। শিয়া মুহাদ্দিসদের মধ্যে প্রসিদ্ধ অভিমত হচ্ছে, মহানবী ১৭ রবিউল আউয়াল, শুক্রবার ফজরের সময় (ঊষালগ্নে) জন্মগ্রহণ করেছিলেন। আর আহলে সুন্নাতের মধ্যে সবচেয়ে প্রসিদ্ধ অভিমত হচ্ছে তিনি ১২ রবিউল আউয়াল, সোমবার জন্মগ্রহণ করেন।[4]এ দু’অভিমতের মধ্যে কোনটি সঠিক?একটি দুঃখজনক ব্যাপার হচ্ছে এই যে, ইসলাম ধর্মের মহান নেতার জন্ম ও মৃত্যুদিবস, বরং আমাদের অধিকাংশ ধর্মীয় নেতার জন্ম ও মৃত্যুদিবস সুনির্দিষ্ট নয়। এ অস্পষ্টতার কারণেই আমাদের বেশিরভাগ উৎসব ও শোকানুষ্ঠানের তারিখ অকাট্যভাবে জানা যায় নি। ইসলামের পণ্ডিত ও আলেমগণ বিগত শতাব্দীগুলোতে যেসব ঘটনা ঘটেছে সেগুলো এক বিশেষ পদ্ধতিতে লিপিবদ্ধ করতেন। কিন্তু কি কারণে তাঁদের অধিকাংশেরই জন্ম ও মৃত্যুর তারিখ খুব সূক্ষ্মভাবে লিপিবদ্ধ করা সম্ভব হয়নি তা (আজও) জানা যায় নি।আমি ভুলব না ঐ সময়ের কথা যখন ভাগ্যবিধি আমাকে (লেখক) কুর্দিস্তানের একটি সীমান্ত শহরে টেনে নিয়ে গিয়েছিল; ঐ এলাকার একজন আলেম এ বিষয়টি (অর্থাৎ ইসলামের গুরুত্বপূর্ণ ঐতিহাসিক ঘটনাবলীর সঠিক তারিখ নির্ণয়ের ক্ষেত্রে আলেমদের মধ্যে মতবিরোধ) উত্থাপন করেন এবং এজন্য তিনি অনেক দুঃখ প্রকাশও করেছিলেন। তিনি এ ব্যাপারে আলেমদের উদাসীনতা ও শৈথিল্য প্রদর্শন করার কারণে অত্যন্ত আশ্চর্যান্বিত হয়েছিলেন। তিনি আমাকে বলেছিলেন, ‘‘এ ধরনের বিষয়ের ক্ষেত্রে কিভাবে তাঁদের মধ্যে এ রকম মতবিরোধ বিরাজ করা সম্ভব?’’ তখন আমি তাঁকে বললাম, ‘‘এ বিষয়টির কিছুটা সমাধান করা সম্ভব। আপনি যদি এ শহরের একজন আলেমের জীবনী রচনা করতে চান এবং আমরা ধরেও নিই যে, এ আলেম ব্যক্তি বেশ কিছুসংখ্যক সন্তান এবং অনেক আত্মীয়-স্বজন রেখে গেছেন তাহলে উক্ত আলেমের শিক্ষিত সন্তান-সন্ততি এবং বিরাট পরিবার যারা স্বাভাবিকভাবেই তাঁর জীবনের যাবতীয় বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে জ্ঞাত তারা উপস্থিত থাকা সত্ত্বেও তাঁর আত্মীয় যারা নয় তাদের থেকে কি আপনি তাঁর জীবনের প্রয়োজনীয় তথ্যাবলী সংগ্রহ করবেন? নিশ্চিতভাবে আপনার বিবেক এ ধরনের কাজের অনুমতি দেবে না।মহানবী (সা.) জনগণের মধ্য হতে বিদায় নিয়েছেন। মৃত্যুর সময় তিনি উম্মাহ্‌ মাঝে তাঁর আহলে বাইত ও অন্যান্য সন্তান-সন্ততি রেখে গেছেন। তাঁর নিকটাত্মীয়গণের বক্তব্য : মহানবী (সা.) যদি আমাদের শ্রদ্ধেয় পিতা হয়ে থাকেন এবং আমরাও যদি তাঁর ঘরে বয়ঃপ্রাপ্ত এবং তাঁর কোলে প্রতিপালিত হয়ে থাকি, তাহলে আমরাই সকলের চেয়ে এ বিষয়ে অধিক জ্ঞাত যে, আমাদের বংশের প্রধান (মহানবী) অমুক দিন অমুক সময় জন্মগ্রহণ করেছিলেন।এমতাবস্থায় তাঁর সন্তান-সন্ততি ও বংশধরদের বক্তব্য উপেক্ষা করে দূর সম্পর্কের আত্মীয় ও প্রতিবেশীদের বক্তব্যকে কি তাঁদের বক্তব্যের ওপর প্রাধান্য দেয়া সম্ভব হবে?’’উপরোল্লিখিত আলেম আমার এ কথা শোনার পর মাথা নিচু করে বললেন, ‘‘আপনার কথা আসলে أهل البيت أدرى بما في البيت (ঘরের লোক ঘরে যা আছে সে সম্পর্কে সবচেয়ে বেশি জ্ঞাত)- এ প্রবাদ বাক্যের অন্তর্নিহিত অর্থের অনুরূপ। আর আমিও মনে করি যে, মহানবী (সা.)-এর জীবনের যাবতীয় বিশেষত্ব ও খুঁটিনাটি দিক সম্বন্ধে শিয়া ইমামীয়াহ্ মাজহাবের বক্তব্য যা তাঁর সন্তান-সন্ততি, বংশধর ও নিকটাত্মীয়দের থেকে সংগৃহীত তা সত্যের নিকটবর্তী।’’ এরপর আমাদের মধ্যকার আলোচনা অন্যান্য বিষয় পর্যন্ত সম্প্রসারিত হলো যা এখানে উল্লেখ করার কোন সুযোগ নেই।প্রচারে মুন্নি আক্তার