সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান
প্রশ্ন: ফাতেমার ঘরে দুশমনদের হামলার সময় কেন ফাতেমা সালামুল্লাহি আলাইহা দরজা খুলতে গেলেন? কেন আলী আ. দরজা খুললেন না?
উত্তর: উৎসুক হৃদয়ের জন্য এটা গুরুত্বপূর্ণ একটি প্রশ্ন। তবে ঐ মূহুর্তে কেন হযরত জাহরা সালামুল্লাহি আলাইহা দরজা খুলতে গেলেন, এ ক্ষেত্রে মনে রাখা আবশ্যক যে, নবীর সাহাবিদের কাছে তাঁর এমন মর্যাদা ও ব্যক্তিত্ব ছিল ঠিক যেমন তাদের কাছে নবী স. এর মর্যাদা ছিল। কারণ নবী স. বিভিন্ন প্রেক্ষাপটে নানাভাবে এই মহিয়শি নারীর পদ-মর্যাদা তাদের কাছে তুলে ধরেছেন। যে কারণে পাপিষ্ট এজিদের মত ব্যক্তিও যে কিনা ফাতেমার সন্তানকে হত্যা করার পর শাম শহরের দরবারে কথা বলার সমসয় যখন ফাতেমা আ. এর প্রসঙ্গ আসে, তখন তাকে সম্মান ও মর্যাদার সাথে শ্মরণ করেছিল। তেমনি ভাবে আজকের যুগেও এমন কোন ব্যক্তি খুঁজে পাওয়া যাবে না, যে ফাতেমাকে সম্মান দেখাবে না। অথচ ইসলামের ইতিহাসের অধিকাংশ লেখকবৃন্দ আহলে বাইতের ফজিলত বর্ণনা ও প্রকাশের ক্ষেত্রে আগ্রহ দেখান নি। সারকথা হল, যে নারীকুল শিরোমনির মোকাবেলায় মহান নবী দাড়িয়ে সম্মান দেখাতো ও তাঁর হাতে চুমু খেতো, তার বিষয়ে লেখতে কলমের কালি অপারগতা প্রকাশ করে। মুসলমানদের মাঝে এহেন মর্যাদাপূর্ণ অবস্থার কারণে কোন মুসলমানের মগজে এমন ধারণা জন্মাতে পারে না যে, কোন মুসলমান তাঁর বিষয়ে বিন্দুমাত্র অবজ্ঞা করবে। এসব বিষয় বিবেচনা করেই ফাতেমা সালামুল্লাহ আলাইহা দরজা খুলতে এসেছিলেন যাতে :
১- নিজ মর্যাদা, ব্যক্তিত্ব ও যুক্তির মাধ্যমে তাদের মন থেকে হামলা করার বাসনা দূর করে তাদেরকে ফিরিয়ে দিতে সক্ষম হবেন।
২- অথবা তাদের মোকাবেলায় আলীর প্রতিরক্ষায় নিজ সাহায্যর ঘোষণা করতে পারেন। যার মাধ্যমে মানুষ বুঝতে পারবে যে, আলীর এমন মর্যাদা ছিল যে কারণে হযরত ফাতেমা সা. সর্বশক্তি দিয়ে তাকে সাহায্য করেছেন। আর সে ঘটনার সাথে জড়িত ব্যক্তিদের জন্য তাঁর এহেন আগমনটি ছিল চূড়ান্ত দলিল। যদি তখন স্বয়ং হযরত আলী দরজা খুলতে আসতেন, তবে শত্রুপক্ষ আহলে বাইতের ঘরে হামলা করতে আরো বেশি সাহস দেখাতো। আর সে ঘটনায় ফাতেমার ঘরে আগুন দিয়ে আলীকে বন্দী করার পর ওজড় দেখিয়ে বলতো যে, হযরত ফাতেমা আলীর পক্ষে ছিল না। যদি তিনি আলীকে বন্দী করতে বাধা দিতো, তবে আমরা তাকে বন্দী করতাম না। এসব বিষয় বিবেচনা করেই হযরত ফাতেমা যাহরা সা. তাদের জন্য এভাবে শক্তিশালী যুক্তি উপস্থাপন করেন। যাতে আল্লাহর দরবার ও রাসূলের কাছে জবাবদিহি করতে না হয় এমনকি ইতিহাস ও মুসলমানদের কাছে সে ঘটনায় যাতে কোন ওজড় না থাকে। তাই তিনি ব্যাক্তিগত উদ্দোগেই প্রতিরোধের ভূমিকায় নামেন যাতে তাদের বিরুদ্ধে একদিকে আল্লাহর হুজ্জাত সম্পন্ন হয় এবং অন্যদিকে আহলে বাইতের শত্রুপক্ষের নোংড়ামির চিত্র ইতিহাসে লেখা থাকে এবং বিশ্ববাসির কাছে তা সুস্পষ্ট হয়
প্রচারে মোঃ আবু তুরাব
মন্তব্যসমূহ