সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান
নবী করিম মোস্তফা সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের এর শুভ জন্মপর্ব ৩গর্ভধারণকালপ্রসিদ্ধি আছে যে, হযরত মুহাম্মাদ (সা.)-এর পবিত্র অস্তিত্বের নূর তাশরীকের (হজ্বের মাসের ১১, ১২ ও ১৩ তারিখকে আইয়ামে তাশরীক অর্থাৎ তাশরীকের দিনসমূহ বলে অভিহিত করা হয়) দিনগুলোতে হযরত আমেনার জরায়ুতে স্থাপিত হয়েছিল।[5]তবে ১৭ রবিউল আউয়ালে যে হযরত মুহাম্মাদ (সা.) জন্মগ্রহণ করেছিলেন এতৎসংক্রান্ত ঐতিহাসিকদের মধ্যে প্রচলিত প্রসিদ্ধ অভিমতের সাথে এ বিষয়টির মিল নেই। কারণ এমতাবস্থায় হযরত আমেনার গর্ভধারণকাল ৩ মাস অথবা ১ বছর ৩ মাস বলে ধরতে হবে। আর এ বিষয়টি স্বয়ং প্রকৃতির স্বাভাবিক নিয়মের পরিপন্থী। আর কোন ঐতিহাসিক বা আলেম তা মহানবীর অন্যতম বৈশিষ্ট্য বলে উল্লেখ করেন নি।[6]প্রখ্যাত গবেষক আলেম শহীদে সানী (৯১১-৯৬৬ খ্রি.) উপরিউক্ত আপত্তিটির এভাবে সমাধান করেছেন : ইসমাঈলের বংশধরগণ তাদের নিজ পূর্বপুরুষদের অনুকরণে যিলহজ্ব মাসেই হজ্বব্রত পালন করত। কিন্তু পরবর্তীকালে বিশেষ কিছু কারণে তারা প্রতি দু’বছর একই মাসে হজ্বব্রত পালনের চিন্তা-ভাবনা করে। অর্থাৎ দুই বছর তারা যিলহজ্ব মাসে, এর পরের দু’বছর মুহররম মাসে এবং এ ধারাক্রমানুসারে হজ্বব্রত পালন করার চিন্তা করেছিল। তাই ২৪ বছর গত হওয়ার মাধ্যমে পুনরায় হজ্বের দিনগুলো স্বস্থানে অর্থাৎ যিলহজ্ব মাসে ফিরে আসত। আরবদের রীতিনীতি এ ধারার ওপরই বহাল ছিল। অবশেষে ১০ হিজরীতে প্রথম বারের মতো হজ্বের দিবসগুলো যিলহজ্ব মাসে ফিরে আসে। মহানবী (সা.) একটি ভাষণ দানের মাধ্যমে (হজ্ব সংক্রান্ত) যে কোন ধরনের পরিবর্তন জোরালোভাবে নিষিদ্ধ করেন। তিনি যিলহজ্ব মাসকে হজ্বের মাস হিসাবে অভিহিত করেন।[7]আর নিম্নোক্ত এ আয়াতটি নিষিদ্ধ মাসগুলো পিছিয়ে দেয়ার ব্যাপারে নিষেধাজ্ঞাস্বরূপ অবতীর্ণ হয়েছিল; আর নিষিদ্ধ মাসসমূহ পিছিয়ে দেয়া ছিল জাহেলী আরবদের অন্যতম প্রচলিত প্রথা। আয়াতটি নিম্নরূপ :إنّما النّسيئ في زيادة الكفر يُضلّ به الذين كفروا و يُحلّونه عاما و يحرّمونه عاما‘‘হারাম মাসসমূহ পরিবর্তন করা হচ্ছে কুফ্র বৃদ্ধির নিদর্শন মাত্র। যারা কাফির তারা এ কাজের দ্বারা পথভ্রষ্ট হয়। তারা এক বছর ঐ কাজকে হালাল করে এবং আরেক বছর তা হারাম করে।’’ (সূরা তাওবাহ্ : ৩৭)এই পরিস্থিতিতেই প্রতি দু’বছর তাশরীকের দিবসগুলো পরিবর্তিত হতো। যদি হাদীসে বর্ণিত হয়ে থাকে যে, হযরত মুহাম্মাদ (সা.)-এর নূর তাশরীকের দিবসগুলোতে হযরত আমেনার গর্ভে স্থাপিত হয়েছিল এবং তিনি ১৭ রবিউল আউয়াল জন্মগ্রহণ করেছিলেন তাহলে এ দু’ব্যাপারে কোন স্ববিরোধিতা নেই। কারণ, ঐ অবস্থায় স্ববিরোধিতার উদ্ভব হতে পারে যখন তাশরীকের দিবসগুলো বলতে যিলহজ্ব মাসের ১১, ১২ ও ১৩ তারিখ বোঝাবে। তবে যেভাবে ব্যাখ্যা করা হয়েছে তদনুযায়ী তাশরীকের দিনগুলো সর্বদা পরিবর্তিত হয়েছে এবং চিন্তা-ভাবনা ও গবেষণা করার পর এ বিষয়ে আমরা পৌঁছেছি যে, মহানবী (সা.)-এর ভ্রূণ হযরত আমেনা কর্তৃক গর্ভে ধারণ এবং তাঁর জন্মগ্রহণের বছরে হজ্বের দিবসগুলো জমাদিউল উলা মাসে অনুষ্ঠিত হয়েছিল। আর যেহেতু মহানবীর জন্ম রবিউল আউয়াল মাসেই হয়েছিল এমতাবস্থায় হযরত আমেনার গর্ভধারণকাল প্রায় ১০ মাস হয়েছিল।প্রচারে মুন্নি আক্তার
মন্তব্যসমূহ