শুধু ঝগড়া এবং মতভেদ --অফুরন্ত ঝগড়া ৷ এ ঝগড়ার কোন কুল-কিনারা নাই । দিন যত যায় , যুগ যত যায় - ঝগড়া শুধু বেড়েই চলে । কমার কোন লক্ষন নাই ।পাঠক ,বলছিলাম যে , সমগ্র বিশ্বের মুসলিম উম্মাহ নিয়ে ।দুঃখজনক ঐতিহাসিক বাস্তবতা এটাই যে , ১৫০০ বছর পূর্বে রাসুলের (সাঃ) ইন্তেকালের পরেই ক্ষমতাকে কেন্দ্র করে তৎকালীন মুসলিম উম্মতের মধ্যে বিভক্তির সূত্রপাত হয়েছিল । বিভক্তি নামক বিষবৃক্ষের দরুন আজ মুসলিম উম্মাহ শতভাগে বিভক্ত ।যদিও পবিত্র কোরআনে দ্বিধা-বিভক্ত না হওয়ার জন্য আল্লাহ অত্যন্ত কঠোরভাবে নিষেধ এবং হুঁশিয়ার করে দিয়েছেন ।" --- যারা নিজেদের ধর্মে বিভেদ সৃষ্টি করেছে এবং বিভিন্ন দলে বিভক্ত হয়েছে তাদের সঙ্গে তোমার কোন সম্পর্ক নাই । তাদের ব্যাপার কেবল আল্লাহর অধীন । অতঃপর তিনি তাদের কৃতকর্ম সম্বন্ধে তাদের অবহিত করবেন ----- " ।সুরা - আনআম / ১৫৯ ।কিন্ত কে শোনে কার কথা !আজকের বাস্তবতা হল ---নামাজ আদায়ের পদ্বতি নিয়ে ঝগড়া ,আযান নিয়ে ঝগড়া ,তারাবীহ নিয়ে ঝগড়া ,রোজা নিয়ে ঝগড়া ,নবীকে (সাঃ) দূরুদ প্রেরন নিয়ে ঝগড়া ,বিয়ে নিয়ে ঝগড়া ,তালাক নিয়ে ঝগড়া ,দাফন করা নিয়ে ঝগড়াহজ্ব নিয়ে ঝগড়া ।মোটকথা , দ্বীনের এমন কোন জায়গা নেই যেখানে ঝগড়া এবং মতভেদ নাই ৷পাঠক ,বলতে পারেন - এর মূল কারন কি ?সমগ্র মুসলিম উম্মাহ যেন দলে দলে বিভক্ত না হয়ে যায় --- পবিত্র কোরআনৈ এই সংক্রান্ত সুস্পষ্ট আদেশ থাকা সত্বেও মুসলিম উম্মাহ আজ কেন শতধা বিভক্ত ?এই দায় কার উপর বর্তায় ?সঙ্গত কারনেই প্রশ্ন চলে আসে যে , রাসুলের (সাঃ) ওফাতেরর পরে কেয়ামত পর্যন্ত সমগ্র মুসলিম উম্মাহকে রাসুল (সাঃ) কোন ব্যক্তিবর্গের অধীনে বা জিম্মায় সোপর্দ করে গেলেন ?মুসলিম উম্মাহর একত্রিকরন বিষয় রাসুলের (সাঃ) পক্ষ সুস্পষ্ট কোন দিক-নির্দেশনা ছিল কি ?পাঠক ,সহজভাবে সরল জবাবটা নিয়ে নিন ।বিদায় হজ্ব থেকে ফেরার পথে মহান আল্লাহর সরাসরি হুকুম মোতাবেক গাদীর এ খুমের ঘোষনা অনুযায়ী নবীজী (সাঃ) স্বয়ং নিজে তাঁর ওফাত পরবর্তী স্থলাভিষিক্ত সর্বপ্রথম ইমাম এবং খলীফা হিসাবে হযরত আলী ইবনে ইমরান ওরফে আবু তালিবকে (আঃ) সমগ্র মুসলিম উম্মাহর জন্য নির্বাচিত করে দিলেন ।সেইসাথে কেয়ামত পর্যন্ত সমগ্র মানবজাতির শাসনভর এবং হেদায়েতের জন্য হযরত আলীর (আঃ) বংশধারা থেকে পবিত্র এগারজন ইমামের (আঃ) নাম এবং পরিচয় বলে গেলেন ।আল্লাহর রাসুল (সাঃ) তাঁর উপর অর্পিত দায়িত্ব সঠিকভাবেই পালন করেছেন ।দুঃখজনক বাস্তবতা এটাই যে , হযরত মুসার (আঃ) অবাধ্য উম্মতের মত রাসুলের (সাঃ) উম্মত রাসুলের (সাঃ) ইন্তেকালের পরে হযরত আলীকে (আঃ) অবজ্ঞাভরে দূরে সরিয়ে দিয়ে ইসলাম ধর্ম গ্রহন করলেন "সাহাবীগনের" নিকট থেকে ।মূলত বিভক্তি শুরু হল সেখান থেকে ।আল্লাহর রাসুলের (সাঃ) অনুমোদনহীন অবৈধভাবে গঠিত বনু সকীফার খেলাফত পদ্বতিই হচ্ছে সকল ভষ্ট্রতার মূলভিত্তি ।১৫০০ বছর অতিক্রান্ত হতে চলল - মুসলিম উম্মত নিজেরা এখনও সঠিকভাবে জানতে পারল না যে , আসল ইসলামটা কি ?এক দল বলে - তুই কাফের , বাতিল ।আরেক দল বলে - তুই কাফের , বাতিল ।এটাই হল বাস্তবতা ।পাঠক ,লেখার শেষাংশে চলে এসেছি ।আল্লাহর রাসুলের (সাঃ) নির্দেশ মোতাবেক ---"হে মানবসকল , নিশ্চয়ই আমি তোমাদের মধ্যে অতীব গুরুত্বপূর্ন দুটি ভারী জিনিষ (সাকালাইন) রেখে যাচ্ছি , যদি এই দুইটি আঁকড়ে ধরে থাক তাহলে কখনই পথভ্রষ্ট হবে না । প্রথমটি হচ্ছে , পবিত্র কোরআন এবং দ্বিতীয়টি হচ্ছে , আমার ইতরাত , আহলে বাইত (রক্তজ বংশধর) । নিশ্চয়ই এই দুইটি জিনিষ হাউজে কাওসারে আমার সাথে মিলিত না হওয়া পর্যন্ত কখনই পরস্পর থেকে বিছিন্ন হবে না " ।#সূত্র - সহীহ তিরমিজি , খন্ড - ৬ , হাদিস - ৩৭৮৬ , ৩৭৮৮ (ইসলামিক ফাউন্ডেশন) / মেশকাত , খন্ড - ১১ , হাদিস - ৫৮৯২ , ৫৮৯৩ (এমদাদীয়া লাইব্রেরী) / তাফসীরে মাযহারী , খন্ড - ২ , পৃষ্ঠা - ১৮১ , ৩৯৩ (ইফাঃ) / তাফসীরে হাক্কানী (মাওলানা শামসুল হক ফরিদপুরী ) , পৃষ্ঠা - ১২ , ১৩ (হামিদীয়া লাইব্রেরী) / তাফসীরে নুরুল কোরআন , খন্ড - ৪ , পৃষ্ঠা - ৩৩ (মাওলানা আমিনুল ইসলাম) / মাদারেজুন নাবুয়াত , খন্ড - ৩ , পৃষ্ঠা - ১১৫ (শায়খ আব্দুল হক দেহলভী) / ইযাযাতুল খিফা (শাহ ওয়ালিউল্লাহ) , খন্ড - ১ , পৃষ্ঠা - ৫৬৬ / মুসলিম মুসনাদে আহমদ / নাসাঈ / কানযুল উম্মাল / তাফসীরে ইবনে কাছির / মিশকাতুল মাছাবিহ / তাফসীরে কবির / মুসনাদুল ইমাম আহমাদ বিন হাম্বাল , লেখক - আহমাদ বিন মুহাম্মাদ বিন হাম্বাল আশ শাইবানী (মৃত্যু - ২৪১হি .), খন্ড ১৭ , পৃ - ১৭০, ২১১, ৩০৯, খন্ড ১৮, পৃ: নং ১১৪, খন্ড ২৩, পৃ: নং ১০ ও ১১, প্রকাশক - মুয়াসসিসাতুর রিসালা , প্রথম প্রকাশ - ২০০১ ইং / সহীহ মুসলিম, লেখক - মুসলিম বিন হাজ্জাজ নিশাবুরী (মৃত্যু - ২৬১হি.), খন্ড ৪, পৃ - ১৮৭৩, প্রকাশনা - দারুল ইহইয়াইত তুরাসিল আরারী, বৈরুত / সুনানুত তিরমিযি , লেখক - মুহাম্মাদ ইবনে ইসা আত্ তিরমিযি (মৃত্যু: ২৭৯হি.), খন্ড - ৫ম , পৃ - ৬৬৩, প্রকাশক - শিরকাতু মাকতাবাতি ওয়া মাত্ববায়াতি মুসত্বাফা আল বাবি আল হালাবি, মিশর , দ্বিতীয় প্রকাশ - ১৯৭৫ ইং / উসুদুল গ্বাবা ফি মা’রিফাতিস সাহাবা, লেখক - আবুল হাসান আলী ইবনে আবিল কারাম ইবনে আসির (মৃত্যু: ৬৩০হি.), খন্ড ২য় , পৃ - ১৩, প্রকাশক: দারুল কুতুবিল ইলমিয়্যা , প্রথম প্রকাশ: ১৯৯৪ ইং / তাফসিরুল দুররিল মানসূর, লেখক - আব্দুর রাহমান ইবনে আবি বাকর জালালুদ্দীন সুয়ুতি (মৃত্যু: ৯১১হি.), খন্ড ৭ম, পৃ - ৩৪৯, প্রকাশক - দারুল ফিকর, বৈরুত / আল মুসান্নাফ ফিল আহাদিস ওয়াল আসার, লেখক - আবু বাকর আবদুল্লাহ ইবনে মুহাম্মাদ (মৃত্যু: ২৩৫হি.), খন্ড ৬ষ্ঠ , পৃ - ৩০৯, প্রকাশক - মাকতাবাতুর রুশদ, বিয়াদ, প্রথম প্রকাশ - ১৪০৯ হিজরী / কানযুল উম্মাল ফি সুনানিল আক্বওয়াল ওয়াল আফআ’ল, লেখক - আলাউদ্দীন আলী ইবনে হিসামুদ্দীন আল ক্বাদেরী আল মুত্তাক্বী আল হিন্দী (মৃত্যু: ৯৭৫হি.), খন্ড ১ম. পৃ - ১৭২, ১৮৬, ১৮৭, খন্ড ১৪তম , পৃ - ৪৩৫, মুয়াসসিসাতুর রিসালা , পঞ্চম প্রকাশ: ১৪০১হি . ১৯৮১ইং / তাফসীর ইবনে কাসির , লেখক - আবুল ফিদা ইসমাঈল ইবনে উমার ইবনে কাসির আদ দামেশক্বী (মৃত্যু: ৭৭৪হি.), খন্ড ৭ম, পৃ - ১৮৫, প্রকাশক - দারুল কুতুব আল ইলমিয়্যা, প্রথম প্রকাশ: ১৪১৯হি., বৈরুত / আল বিদায়া ওয়ান নিহায়া, খন্ড ৭ম, পৃ - ৬৬৮, লেখক - আবুল ফিদা ইসমাঈল ইবনে উমার ইবনে কাসির আদ দামেশক্বী (মৃত্যু: ৭৭৪হি.) , প্রকাশক - দারুল হিজরিন লিততাবায়া’ ওয়ান নাশর ওয়াত তাওযিহ ওয়াল ই’লান, প্রথম প্রকাশ - ১৪১৮হি. ২০০৩ ইং / সাহিহ ওয়া দ্বাইফুল জামিয়’ আস সাগ্বির ওয়া যিয়াদাতিহি , লেখক - আব্দুর রাহমান ইবনে আবি বাকর জালালুদ্দীন সুয়ুতি (মৃত্যু: ৯১১হি.), খন্ড ১ম, হাদিস নং - ৪২২২, ৪২২৩, ৫২৪৮, ৫৫৪৩ ও ৮২৩৯ / মাজমাউয যাওয়াইদ, লেখক - আবুল হাসান নুরুদ্দীন আলী ইবনে আবি বাকরইবনে সুলাইমান আল হাইসামী (মৃত্যু: ৮০৭হি.), খন্ড ১ম , পৃ - ১৭০, খন্ড ৯ম, পৃ - ১৬৩-১৬৫, খন্ড ১০ম, পৃ - ৩৬৩, প্রকাশক - মাকতাবাতুল ক্বুদসী, প্রকাশকাল: ১৪১৪হি. ১৯৯৪ইং / আল মুসতাদরাক আস সাহিহাইন, লেখক - আবু আবদিল্লাহ আল হাকিম মুহাম্মাদ ইবনে আবদিল্লাহ আন নিশাবুরী (মৃত্যু: ৪০৫হি.), খন্ড ৩য় , পৃ - ১১৭, ১১৮, ১৬০, প্রকাশক - দারুল কুতুব আল ইলমিয়্যা, প্রথম প্রকাশ - ১৪১১হি. ১৯৯০ইং, বৈরুত / হিল্লিইয়্যাতুল আওলিয়া ওয়া ত্বাবাক্বাতুল আসফিয়া, লেখক - আবু নাঈম আহমাদ ইবনে আবদিল্লাহ আল ইসফাহানী (মৃত্যু: ৪৩০হি.), খন্ড ১ম , পৃ - ৩৫৫, প্রকাশক - আসসাআদাহ্ বি-জাওয়ারি মুহাফিযাতি মিসর, প্রকাশকাল ১৩৯৪হি. ১৯৭৪ইং / আস সাওয়ায়িক্বুল মুহরিক্বাহ , লেখক - আবুল আব্বাস আহমাদ ইবনে মুহাম্মাদ ইবনে আলী ইবনে হাজার আল হাইসামী (মৃত্যু: ৯৭৪হি.), খন্ড ১ম , পৃ - ১০৯, খন্ড ২য় , পৃ- ৩৬১, ৩৬৮, ৪৩৮, ৬৫২, ৬৫৩, প্রকাশক -- মুয়াসসিসাতুর রিসালা, প্রথম প্রকাশ: ১৪১৮হি./ ১৯৯৮ ইং, বৈরুত ।আজ যদি পবিত্র আহলে বাইতের পবিত্র বার ইমামগন (আঃ) থেকে ইসলাম নেওয়া হত তাহলে এই ঝগড়া থাকত না ।মোবাহেলার ময়দানে অমুসলিম সম্প্রদায় শুধুমাত্র নবীজীর (সাঃ) পবিত্র আহলে বায়েতগনকে (আঃ) সম্মান করেছিল বিধায় আজও তারা পুরো পৃথিবীতে সম্মানিত ।পক্ষান্তরে ,মোরা মুসলিম উম্মত - গাদীর এ খুম পরিত্যাগ করে সাহাবা কতৃক সৃষ্ট অবৈধ বনু সকীফাকে আঁকড়ে ধরাতে আজ পৃথিবীতে আমরা সর্বনিম্ন লজ্জাবিহীন আর তুচ্ছ তাচ্ছিল্য হাস্যকর জাতিতে পরিনত হয়েছি ।আজ যদি মুসলমানগন নবীর (সাঃ) পবিত্র আহলে বাইতগন (আঃ) থেকে ইসলাম গ্রহণ করত তাহলে আজ মুসলমানের মর্যাদা আল্লাহপাক সব জাতির উপরে রাখতেন ৷যেহেতু আসল পরিত্যাগ করে ভূয়া ভন্ডদের কাছ থেকে "নকল ইসলাম" ধারন করেছি - তাই স্বাভাবিক ভাবে নকল ও ভূয়া সেবনে যা হয় আমাদের মুসলিম জাতির ঠিক তাই হয়েছে ।যেমন কর্ম তেমন ফল !সেই জন্য আজ পৃথিবীর সমস্ত জাতির কাছে আমরা তথা বনু সকীফার অনুসরনকারী মুসলমান একটা সার্কাস জাতিতে পরিনত হয়েছি ।সকলে আমাদের নিয়ে খালি ফুটবল খেলে । আমাদের জীবনটা দুনিয়ার সকলের লাথি খেতে খেতেই গেল !পাঠক ,এটা কিন্ত আমার একান্ত নিজস্ব ব্যক্তিগত মতামত ।আমার এই মতামতে কেউ দুঃখ পেয়ে থাকলে নিজ গুনে ক্ষমা করে দেবেন , প্লীজ।ইয়া সাহেবুজ্জামান (আঃ) আদরিকনী আদরিকনী ,সালামুন আলাইকুম ইয়া সাহেবুজ্জামান (আঃ) ইবনে হাসান আসকারী (আঃ) ওয়া আজ্জিল ফারাজাহুম ,আল্লাহুমা সাল্লে আলা মুহাম্মাদ ওয়া আলে মুহাম্মাদ ওয়া আজ্জিল ফারাজাহুম ,আল্লাহুম্মাল আন কাতালাহ আমিরিল মুমিনিন (আঃ)।- সংগ্রহ -আমি মুশকিল কোশা মাওলা আলী ইবনে আবি তালিব (আঃ)'র দলে।
শুধু ঝগড়া এবং মতভেদ --
অফুরন্ত ঝগড়া ৷ এ ঝগড়ার কোন কুল-কিনারা নাই । দিন যত যায় , যুগ যত যায় - ঝগড়া শুধু বেড়েই চলে । কমার কোন লক্ষন নাই ।
পাঠক ,
বলছিলাম যে , সমগ্র বিশ্বের মুসলিম উম্মাহ নিয়ে ।
দুঃখজনক ঐতিহাসিক বাস্তবতা এটাই যে , ১৫০০ বছর পূর্বে রাসুলের (সাঃ) ইন্তেকালের পরেই ক্ষমতাকে কেন্দ্র করে তৎকালীন মুসলিম উম্মতের মধ্যে বিভক্তির সূত্রপাত হয়েছিল । বিভক্তি নামক বিষবৃক্ষের দরুন আজ মুসলিম উম্মাহ শতভাগে বিভক্ত ।
যদিও পবিত্র কোরআনে দ্বিধা-বিভক্ত না হওয়ার জন্য আল্লাহ অত্যন্ত কঠোরভাবে নিষেধ এবং হুঁশিয়ার করে দিয়েছেন ।
" --- যারা নিজেদের ধর্মে বিভেদ সৃষ্টি করেছে এবং বিভিন্ন দলে বিভক্ত হয়েছে তাদের সঙ্গে তোমার কোন সম্পর্ক নাই । তাদের ব্যাপার কেবল আল্লাহর অধীন । অতঃপর তিনি তাদের কৃতকর্ম সম্বন্ধে তাদের অবহিত করবেন ----- " ।
সুরা - আনআম / ১৫৯ ।
কিন্ত কে শোনে কার কথা !
আজকের বাস্তবতা হল ---
নামাজ আদায়ের পদ্বতি নিয়ে ঝগড়া ,
আযান নিয়ে ঝগড়া ,
তারাবীহ নিয়ে ঝগড়া ,
রোজা নিয়ে ঝগড়া ,
নবীকে (সাঃ) দূরুদ প্রেরন নিয়ে ঝগড়া ,
বিয়ে নিয়ে ঝগড়া ,
তালাক নিয়ে ঝগড়া ,
দাফন করা নিয়ে ঝগড়া
হজ্ব নিয়ে ঝগড়া ।
মোটকথা , দ্বীনের এমন কোন জায়গা নেই যেখানে ঝগড়া এবং মতভেদ নাই ৷
পাঠক ,
বলতে পারেন - এর মূল কারন কি ?
সমগ্র মুসলিম উম্মাহ যেন দলে দলে বিভক্ত না হয়ে যায় --- পবিত্র কোরআনৈ এই সংক্রান্ত সুস্পষ্ট আদেশ থাকা সত্বেও মুসলিম উম্মাহ আজ কেন শতধা বিভক্ত ?
এই দায় কার উপর বর্তায় ?
সঙ্গত কারনেই প্রশ্ন চলে আসে যে , রাসুলের (সাঃ) ওফাতেরর পরে কেয়ামত পর্যন্ত সমগ্র মুসলিম উম্মাহকে রাসুল (সাঃ) কোন ব্যক্তিবর্গের অধীনে বা জিম্মায় সোপর্দ করে গেলেন ?
মুসলিম উম্মাহর একত্রিকরন বিষয় রাসুলের (সাঃ) পক্ষ সুস্পষ্ট কোন দিক-নির্দেশনা ছিল কি ?
পাঠক ,
সহজভাবে সরল জবাবটা নিয়ে নিন ।
বিদায় হজ্ব থেকে ফেরার পথে মহান আল্লাহর সরাসরি হুকুম মোতাবেক গাদীর এ খুমের ঘোষনা অনুযায়ী নবীজী (সাঃ) স্বয়ং নিজে তাঁর ওফাত পরবর্তী স্থলাভিষিক্ত সর্বপ্রথম ইমাম এবং খলীফা হিসাবে হযরত আলী ইবনে ইমরান ওরফে আবু তালিবকে (আঃ) সমগ্র মুসলিম উম্মাহর জন্য নির্বাচিত করে দিলেন ।
সেইসাথে কেয়ামত পর্যন্ত সমগ্র মানবজাতির শাসনভর এবং হেদায়েতের জন্য হযরত আলীর (আঃ) বংশধারা থেকে পবিত্র এগারজন ইমামের (আঃ) নাম এবং পরিচয় বলে গেলেন ।
আল্লাহর রাসুল (সাঃ) তাঁর উপর অর্পিত দায়িত্ব সঠিকভাবেই পালন করেছেন ।
দুঃখজনক বাস্তবতা এটাই যে , হযরত মুসার (আঃ) অবাধ্য উম্মতের মত রাসুলের (সাঃ) উম্মত রাসুলের (সাঃ) ইন্তেকালের পরে হযরত আলীকে (আঃ) অবজ্ঞাভরে দূরে সরিয়ে দিয়ে ইসলাম ধর্ম গ্রহন করলেন "সাহাবীগনের" নিকট থেকে ।
মূলত বিভক্তি শুরু হল সেখান থেকে ।
আল্লাহর রাসুলের (সাঃ) অনুমোদনহীন অবৈধভাবে গঠিত বনু সকীফার খেলাফত পদ্বতিই হচ্ছে সকল ভষ্ট্রতার মূলভিত্তি ।
১৫০০ বছর অতিক্রান্ত হতে চলল - মুসলিম উম্মত নিজেরা এখনও সঠিকভাবে জানতে পারল না যে , আসল ইসলামটা কি ?
এক দল বলে - তুই কাফের , বাতিল ।
আরেক দল বলে - তুই কাফের , বাতিল ।
এটাই হল বাস্তবতা ।
পাঠক ,
লেখার শেষাংশে চলে এসেছি ।
আল্লাহর রাসুলের (সাঃ) নির্দেশ মোতাবেক ---
"হে মানবসকল , নিশ্চয়ই আমি তোমাদের মধ্যে অতীব গুরুত্বপূর্ন দুটি ভারী জিনিষ (সাকালাইন) রেখে যাচ্ছি , যদি এই দুইটি আঁকড়ে ধরে থাক তাহলে কখনই পথভ্রষ্ট হবে না । প্রথমটি হচ্ছে , পবিত্র কোরআন এবং দ্বিতীয়টি হচ্ছে , আমার ইতরাত , আহলে বাইত (রক্তজ বংশধর) । নিশ্চয়ই এই দুইটি জিনিষ হাউজে কাওসারে আমার সাথে মিলিত না হওয়া পর্যন্ত কখনই পরস্পর থেকে বিছিন্ন হবে না " ।
#সূত্র - সহীহ তিরমিজি , খন্ড - ৬ , হাদিস - ৩৭৮৬ , ৩৭৮৮ (ইসলামিক ফাউন্ডেশন) / মেশকাত , খন্ড - ১১ , হাদিস - ৫৮৯২ , ৫৮৯৩ (এমদাদীয়া লাইব্রেরী) / তাফসীরে মাযহারী , খন্ড - ২ , পৃষ্ঠা - ১৮১ , ৩৯৩ (ইফাঃ) / তাফসীরে হাক্কানী (মাওলানা শামসুল হক ফরিদপুরী ) , পৃষ্ঠা - ১২ , ১৩ (হামিদীয়া লাইব্রেরী) / তাফসীরে নুরুল কোরআন , খন্ড - ৪ , পৃষ্ঠা - ৩৩ (মাওলানা আমিনুল ইসলাম) / মাদারেজুন নাবুয়াত , খন্ড - ৩ , পৃষ্ঠা - ১১৫ (শায়খ আব্দুল হক দেহলভী) / ইযাযাতুল খিফা (শাহ ওয়ালিউল্লাহ) , খন্ড - ১ , পৃষ্ঠা - ৫৬৬ / মুসলিম মুসনাদে আহমদ / নাসাঈ / কানযুল উম্মাল / তাফসীরে ইবনে কাছির / মিশকাতুল মাছাবিহ / তাফসীরে কবির / মুসনাদুল ইমাম আহমাদ বিন হাম্বাল , লেখক - আহমাদ বিন মুহাম্মাদ বিন হাম্বাল আশ শাইবানী (মৃত্যু - ২৪১হি .), খন্ড ১৭ , পৃ - ১৭০, ২১১, ৩০৯, খন্ড ১৮, পৃ: নং ১১৪, খন্ড ২৩, পৃ: নং ১০ ও ১১, প্রকাশক - মুয়াসসিসাতুর রিসালা , প্রথম প্রকাশ - ২০০১ ইং / সহীহ মুসলিম, লেখক - মুসলিম বিন হাজ্জাজ নিশাবুরী (মৃত্যু - ২৬১হি.), খন্ড ৪, পৃ - ১৮৭৩, প্রকাশনা - দারুল ইহইয়াইত তুরাসিল আরারী, বৈরুত / সুনানুত তিরমিযি , লেখক - মুহাম্মাদ ইবনে ইসা আত্ তিরমিযি (মৃত্যু: ২৭৯হি.), খন্ড - ৫ম , পৃ - ৬৬৩, প্রকাশক - শিরকাতু মাকতাবাতি ওয়া মাত্ববায়াতি মুসত্বাফা আল বাবি আল হালাবি, মিশর , দ্বিতীয় প্রকাশ - ১৯৭৫ ইং / উসুদুল গ্বাবা ফি মা’রিফাতিস সাহাবা, লেখক - আবুল হাসান আলী ইবনে আবিল কারাম ইবনে আসির (মৃত্যু: ৬৩০হি.), খন্ড ২য় , পৃ - ১৩, প্রকাশক: দারুল কুতুবিল ইলমিয়্যা , প্রথম প্রকাশ: ১৯৯৪ ইং / তাফসিরুল দুররিল মানসূর, লেখক - আব্দুর রাহমান ইবনে আবি বাকর জালালুদ্দীন সুয়ুতি (মৃত্যু: ৯১১হি.), খন্ড ৭ম, পৃ - ৩৪৯, প্রকাশক - দারুল ফিকর, বৈরুত / আল মুসান্নাফ ফিল আহাদিস ওয়াল আসার, লেখক - আবু বাকর আবদুল্লাহ ইবনে মুহাম্মাদ (মৃত্যু: ২৩৫হি.), খন্ড ৬ষ্ঠ , পৃ - ৩০৯, প্রকাশক - মাকতাবাতুর রুশদ, বিয়াদ, প্রথম প্রকাশ - ১৪০৯ হিজরী / কানযুল উম্মাল ফি সুনানিল আক্বওয়াল ওয়াল আফআ’ল, লেখক - আলাউদ্দীন আলী ইবনে হিসামুদ্দীন আল ক্বাদেরী আল মুত্তাক্বী আল হিন্দী (মৃত্যু: ৯৭৫হি.), খন্ড ১ম. পৃ - ১৭২, ১৮৬, ১৮৭, খন্ড ১৪তম , পৃ - ৪৩৫, মুয়াসসিসাতুর রিসালা , পঞ্চম প্রকাশ: ১৪০১হি . ১৯৮১ইং / তাফসীর ইবনে কাসির , লেখক - আবুল ফিদা ইসমাঈল ইবনে উমার ইবনে কাসির আদ দামেশক্বী (মৃত্যু: ৭৭৪হি.), খন্ড ৭ম, পৃ - ১৮৫, প্রকাশক - দারুল কুতুব আল ইলমিয়্যা, প্রথম প্রকাশ: ১৪১৯হি., বৈরুত / আল বিদায়া ওয়ান নিহায়া, খন্ড ৭ম, পৃ - ৬৬৮, লেখক - আবুল ফিদা ইসমাঈল ইবনে উমার ইবনে কাসির আদ দামেশক্বী (মৃত্যু: ৭৭৪হি.) , প্রকাশক - দারুল হিজরিন লিততাবায়া’ ওয়ান নাশর ওয়াত তাওযিহ ওয়াল ই’লান, প্রথম প্রকাশ - ১৪১৮হি. ২০০৩ ইং / সাহিহ ওয়া দ্বাইফুল জামিয়’ আস সাগ্বির ওয়া যিয়াদাতিহি , লেখক - আব্দুর রাহমান ইবনে আবি বাকর জালালুদ্দীন সুয়ুতি (মৃত্যু: ৯১১হি.), খন্ড ১ম, হাদিস নং - ৪২২২, ৪২২৩, ৫২৪৮, ৫৫৪৩ ও ৮২৩৯ / মাজমাউয যাওয়াইদ, লেখক - আবুল হাসান নুরুদ্দীন আলী ইবনে আবি বাকরইবনে সুলাইমান আল হাইসামী (মৃত্যু: ৮০৭হি.), খন্ড ১ম , পৃ - ১৭০, খন্ড ৯ম, পৃ - ১৬৩-১৬৫, খন্ড ১০ম, পৃ - ৩৬৩, প্রকাশক - মাকতাবাতুল ক্বুদসী, প্রকাশকাল: ১৪১৪হি. ১৯৯৪ইং / আল মুসতাদরাক আস সাহিহাইন, লেখক - আবু আবদিল্লাহ আল হাকিম মুহাম্মাদ ইবনে আবদিল্লাহ আন নিশাবুরী (মৃত্যু: ৪০৫হি.), খন্ড ৩য় , পৃ - ১১৭, ১১৮, ১৬০, প্রকাশক - দারুল কুতুব আল ইলমিয়্যা, প্রথম প্রকাশ - ১৪১১হি. ১৯৯০ইং, বৈরুত / হিল্লিইয়্যাতুল আওলিয়া ওয়া ত্বাবাক্বাতুল আসফিয়া, লেখক - আবু নাঈম আহমাদ ইবনে আবদিল্লাহ আল ইসফাহানী (মৃত্যু: ৪৩০হি.), খন্ড ১ম , পৃ - ৩৫৫, প্রকাশক - আসসাআদাহ্ বি-জাওয়ারি মুহাফিযাতি মিসর, প্রকাশকাল ১৩৯৪হি. ১৯৭৪ইং / আস সাওয়ায়িক্বুল মুহরিক্বাহ , লেখক - আবুল আব্বাস আহমাদ ইবনে মুহাম্মাদ ইবনে আলী ইবনে হাজার আল হাইসামী (মৃত্যু: ৯৭৪হি.), খন্ড ১ম , পৃ - ১০৯, খন্ড ২য় , পৃ- ৩৬১, ৩৬৮, ৪৩৮, ৬৫২, ৬৫৩, প্রকাশক -- মুয়াসসিসাতুর রিসালা, প্রথম প্রকাশ: ১৪১৮হি./ ১৯৯৮ ইং, বৈরুত ।
আজ যদি পবিত্র আহলে বাইতের পবিত্র বার ইমামগন (আঃ) থেকে ইসলাম নেওয়া হত তাহলে এই ঝগড়া থাকত না ।
মোবাহেলার ময়দানে অমুসলিম সম্প্রদায় শুধুমাত্র নবীজীর (সাঃ) পবিত্র আহলে বায়েতগনকে (আঃ) সম্মান করেছিল বিধায় আজও তারা পুরো পৃথিবীতে সম্মানিত ।
পক্ষান্তরে ,
মোরা মুসলিম উম্মত - গাদীর এ খুম পরিত্যাগ করে সাহাবা কতৃক সৃষ্ট অবৈধ বনু সকীফাকে আঁকড়ে ধরাতে আজ পৃথিবীতে আমরা সর্বনিম্ন লজ্জাবিহীন আর তুচ্ছ তাচ্ছিল্য হাস্যকর জাতিতে পরিনত হয়েছি ।
আজ যদি মুসলমানগন নবীর (সাঃ) পবিত্র আহলে বাইতগন (আঃ) থেকে ইসলাম গ্রহণ করত তাহলে আজ মুসলমানের মর্যাদা আল্লাহপাক সব জাতির উপরে রাখতেন ৷
যেহেতু আসল পরিত্যাগ করে ভূয়া ভন্ডদের কাছ থেকে "নকল ইসলাম" ধারন করেছি - তাই স্বাভাবিক ভাবে নকল ও ভূয়া সেবনে যা হয় আমাদের মুসলিম জাতির ঠিক তাই হয়েছে ।
যেমন কর্ম তেমন ফল !
সেই জন্য আজ পৃথিবীর সমস্ত জাতির কাছে আমরা তথা বনু সকীফার অনুসরনকারী মুসলমান একটা সার্কাস জাতিতে পরিনত হয়েছি ।
সকলে আমাদের নিয়ে খালি ফুটবল খেলে । আমাদের জীবনটা দুনিয়ার সকলের লাথি খেতে খেতেই গেল !
পাঠক ,
এটা কিন্ত আমার একান্ত নিজস্ব ব্যক্তিগত মতামত ।
আমার এই মতামতে কেউ দুঃখ পেয়ে থাকলে নিজ গুনে ক্ষমা করে দেবেন , প্লীজ।
ইয়া সাহেবুজ্জামান (আঃ) আদরিকনী আদরিকনী ,
সালামুন আলাইকুম ইয়া সাহেবুজ্জামান (আঃ) ইবনে হাসান আসকারী (আঃ) ওয়া আজ্জিল ফারাজাহুম ,
আল্লাহুমা সাল্লে আলা মুহাম্মাদ ওয়া আলে মুহাম্মাদ ওয়া আজ্জিল ফারাজাহুম ,
আল্লাহুম্মাল আন কাতালাহ আমিরিল মুমিনিন (আঃ)।
- সংগ্রহ -
মন্তব্যসমূহ