(পর্ব ৪৮): ইমাম জাফর সাদেক (আ.)’র বিদ্রোহের পন্থাজুলাই ২৫, ২০১৯ ১৮:০৩ Asia/Dhakaগত আসরে আমরা বনি উমাইয়া শাসকদের বিরুদ্ধে বনি আব্বাসের বিদ্রোহ ও ক্ষমতা গ্রহণের ঘটনা উল্লেখ করে বলেছিলাম, ইমাম জাফর সাদেক (আ.) না পারছিলেন বনি আব্বাসদের সমর্থন জানাতে এবং না পারছিলেন তাদের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করতে।রাসূলুল্লাহ (সা.)’র চাচা আব্বাসের বংশধর দাবিদার একদল মানুষ আহলে বাইতের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তরের স্লোগান তুলে বনি উমাইয়া শাসকগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করে। কিন্তু ইমাম জাফর সাদেক (আ.) রাজনৈতিক দূরদর্শিতা ও প্রজ্ঞার মাধ্যমে বুঝতে পারেন ক্ষমতার মোহ ছাড়া এদের আর কোনো লক্ষ্য নেই। তাই তিনি এই গোষ্ঠীর সঙ্গে নিরাপদ দূরত্ব বজায় রাখেন এবং বিদ্রোহে অংশগ্রহণ থেকে বিরত থাকেন। তবে কেউ কেউ ইমামের এই ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলে বলেন, তিনি কেন এই সুযোগের সদ্ব্যবহার করেননি।এ প্রশ্নের উত্তরে বলা যায়, ইমাম জাফর সাদেক (আ.) যেসব কারণে বিদ্রোহে যোগ দেননি তার প্রথম কারণ হতে পারে মহানবী (সা.)’র রেহলাতের পর হযরত আলী (আ.)’র ক্ষমতা গ্রহণ করতে না পারা। অবশ্য ২৫ বছর পর জনগণের প্রবল চাপে হযরত আলী (আ.) শাসনক্ষমতা নিজের হাতে তুলে নিয়েছিলেন। কিন্তু তিনি সুস্থ মস্তিষ্কে মুসলিম ভূখণ্ডে শান্তি ও নিরাপত্তা প্রতিষ্ঠার কাজ করতে পারেননি। মাত্র পাঁচ বছরের শাসনামলে তাঁর ওপর তিন তিনটি যুদ্ধ চাপিয়ে দেয়া হয়। জঙ্গে জামাল, জঙ্গে সিফফিন ও জঙ্গে নাহরাওয়ানের পর একজন অভিশপ্ত খারেজির হাতে তাঁকে শহীদ হতে হয়।দ্বিতীয় যে কারণে ইমাম জাফর সাদেক (আ.) বিদ্রোহে যোগ দেননি তা ছিল হযরত হাসান (আ.)’র তিক্ত অভিজ্ঞতা। কুফার জনগণ মুয়াবিয়ার বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার ঘোষণা দেয়া সত্ত্বেও সময়মতো তারা সটকে পড়েছিল যার কারণে ইমাম হাসান মুয়াবিয়ার সঙ্গে সন্ধি করতে বাধ্য হন। ওই অভিজ্ঞতার আলোকে ইমাম সাদেক (আ.) তাঁর আশপাশে থাকা লোকজনের ওপর নির্ভর করতে পারেননি বলে বনি উমাইয়া শাসকগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে বিদ্রোহে যোগ দেননি। এ সম্পর্কে নিজের এক সঙ্গীর সঙ্গে ইমামের কথোকপথন উল্লেখ করা যাক:‘সারির সেইরাফি’ নামের একজন সঙ্গী বলেন: আমি একবার ইমাম জাফর সাদেক (আ.)কে প্রশ্ন করি, আপনি কেন বিদ্রোহ করছেন না? ইমাম পাল্টা প্রশ্ন করেন: এ ধরনের প্রশ্ন করছো কেন? আমি বললাম: আপনার তো প্রচুর সমর্থক ও অনুসারী রয়েছে। ইমাম বলেন: তাদের সংখ্যা কতো হতে পারে বলে তোমার মনে হয়? আমি বললাম: এক লাখ। হযরত বিস্ময়ের সঙ্গে বললেন: এক লাখ? আমি বললাম: দুই লাখও হতে পারে। ইমামের কণ্ঠে আবার বিস্ময় ঝড়ে পড়ে: দুই লাখ? এ অবস্থায় ইমাম কোনো কথা না বলে উঠে দাঁড়িয়ে আমাকে নিয়ে মদীনার বাইরে যান। সেখানে একটি ভেড়ার পাল দেখিয়ে হযরত বললেন: খোদার কসম যদি আমার মাত্র এই কয়জন প্রকৃত অনুসারী থাকত তাহলে আমি কালবিলম্ব না করে বিদ্রোহ করতাম। সারির বলেন, ওই ভেড়ার পালে মাত্র ১৭টি ভেড়া ছিল।বিদ্রোহ না করলেও শাসকগোষ্ঠীর অন্যায় ও দুঃশাসনের বিরুদ্ধে নীরবতা অবলম্বন করাও ইমাম সাদেক (আ.)’র পক্ষে সম্ভব ছিল না। তিনি বনি আব্বাস শাসকগোষ্ঠীর সঙ্গে সব ধরনের সহযোগিতা ও সম্পর্ক ছিন্ন করার জন্য নিজের প্রকৃত অনুসারীদের প্রতি আহ্বান জানান। তিনি একদিন ধর্মীয় ক্লাসে ছাত্রদের উদ্দেশে বলেন: আমি কখনো জালেম শাসকদের সাহায্য করব না এবং তাদের স্বার্থে কথা বলার জন্য কলম ধরব না। কারণ, কিয়ামতের দিন জালেম শাসকের পাশাপাশি তাকে সাহায্যকারী ব্যক্তিরাও জাহান্নামের আগুনে নিক্ষিপ্ত হবে। আলেম ও ফকিহগণকে বিশ্বনবী (সা.)’র উত্তরাধিকারী হিসেবে উল্লেখ করে ইমাম সাদেক (আ.) বলেন, যদি কখনো কোনো ফকিহকে জালেম শাসকের সমর্থক হয়ে যেতে দেখো তাহলে তার দ্বীনদারী নিয়ে প্রশ্ন তুলবে এবং মানুষের সামনে তার স্বরূপ উন্মোচন করে দেবে।একদিন এক ব্যক্তি ইমাম জাফর সাদেক (আ.)’র কাছে প্রশ্ন করেন: ইহুদিরা তাদের আলেমদের অনুসরণ করার কারণে আল্লাহ তায়ালার ভর্ৎসনার শিকার হয়ে থাকলে মুসলমানরাও তো তাদের আলেমদের অনুসরণ করছে। তাহলে এই দুই পক্ষের মধ্যে পার্থক্য কোথায়?ইমাম উত্তরে বলেন: সাধারণ ইহুদিরা তাদের আলেমদের চিনত এবং তারা জানত যে, এসব আলেম তাদেরকে মিথ্যা বলছে, হারাম খাচ্ছে, উৎকোচ গ্রহণ করছে এবং আল্লাহর নির্দেশ পরিবর্তন করে নিজেদের মনের অশুভ বাসনাকে আল্লাহর নির্দেশ বলে চাপিয়ে দিচ্ছে। সাধারণ ইহুদিরা আলেমদের এই অপকর্ম সম্পর্কে অবগত হওয়া সত্ত্বেও অন্ধভাবে তাদেরকে অনুসরণ করার কারণে আল্লাহর উপহাসের পাত্র হয়েছে। এরপর ইমাম বলেন, মুসলমানরাও যদি ইহুদিদের মতো কোনো ভ্রান্ত আলেম বা ফকিহকে অনুসরণ করে তাহলে তারাও আল্লাহর ক্রোধের পাত্রে পরিণত হবে।এরপর ইমাম সাদেক (আ.) অনুসরণযোগ্য আলেম বা ফকিহ’র বৈশিষ্ট্য তুলে ধরতে গিয়ে বলেন: যিনি তাঁর আত্মাকে পরিশুদ্ধ করে নফসের পরিপূর্ণ নিয়ন্ত্রণ গ্রহণ করেছেন, আল্লাহর দ্বীন রক্ষার জন্য কাজ করছেন এবং আল্লাহর নির্দেশের সামনে নিজের কামনা-বাসনাকে জলাঞ্জলি দিতে পেরেছেন তাকে অনুসরণ করা সাধারণ মুসলমানের কর্তব্য। সবশেষে তিনি এ কথাও বলেন, “কিন্তু সমাজে এ ধরনের আলেমের সংখ্যা অত্যন্ত কম।” ইমামের এই দিকনির্দেশনা শুধু তাঁর আমলের মানুষের জন্যই প্রযোজ্য ছিল না বরং সকল যুগের সকল মানুষের উচিত এভাবেই অনুসরণযোগ্য আলেম খুঁজে বের করা।একবার মানসুর আব্বাসি ইমাম সাদেক (আ.)কে চিঠি লিখে জানতে চান, আপনি কেনো রাজ দরবারে আসেন না? ইমাম উত্তরে চিঠি লিখে জানান: আমি যেমন দুনিয়ার ঐশ্বর্য চাই না বলে তোমার দরবারে আসি না তেমনি আখেরাতের ব্যাপারেও তোমার কাছে এমন কোনো পুঁজি নেই যা গ্রহণ করে সৌভাগ্যবান হওয়ার লক্ষ্যে আমাকে রাজদরবারে আসতে হবে।ইমাম রাজদরবারে যাওয়ার পরিবর্তে মানুসর আব্বাসির জুলুমের বিরুদ্ধে জনগণকে সচেতন করে তোলেন যা ওই শাসকের ভালো লাগেনি। ইমাম ও তাঁর অনুসারিদের গতিবিধি পর্যবেক্ষণ করতে মানসুর গোয়েন্দা বাহিনীকে লেলিয়ে দেন। সরকারি নিরাপত্তা বাহিনী ইমাম ও তাঁর শিয়াদের জীবনকে দুর্বিসহ করে তোলে। এ অবস্থায় ইমাম জাফর সাদেক (আ.) জালেম শাসকের বিরুদ্ধে সংগ্রামে নয়া পন্থা অবলম্বন করেন। #পার্সটুডে/মুজাহিদুল ইসলাম/ মো: আবু সাঈদ / ২৫
(পর্ব ৪৮): ইমাম জাফর সাদেক (আ.)’র বিদ্রোহের পন্থা
জুলাই ২৫, ২০১৯ ১৮:০৩ Asia/Dhaka
গত আসরে আমরা বনি উমাইয়া শাসকদের বিরুদ্ধে বনি আব্বাসের বিদ্রোহ ও ক্ষমতা গ্রহণের ঘটনা উল্লেখ করে বলেছিলাম, ইমাম জাফর সাদেক (আ.) না পারছিলেন বনি আব্বাসদের সমর্থন জানাতে এবং না পারছিলেন তাদের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করতে।
রাসূলুল্লাহ (সা.)’র চাচা আব্বাসের বংশধর দাবিদার একদল মানুষ আহলে বাইতের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তরের স্লোগান তুলে বনি উমাইয়া শাসকগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করে। কিন্তু ইমাম জাফর সাদেক (আ.) রাজনৈতিক দূরদর্শিতা ও প্রজ্ঞার মাধ্যমে বুঝতে পারেন ক্ষমতার মোহ ছাড়া এদের আর কোনো লক্ষ্য নেই। তাই তিনি এই গোষ্ঠীর সঙ্গে নিরাপদ দূরত্ব বজায় রাখেন এবং বিদ্রোহে অংশগ্রহণ থেকে বিরত থাকেন। তবে কেউ কেউ ইমামের এই ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলে বলেন, তিনি কেন এই সুযোগের সদ্ব্যবহার করেননি।
এ প্রশ্নের উত্তরে বলা যায়, ইমাম জাফর সাদেক (আ.) যেসব কারণে বিদ্রোহে যোগ দেননি তার প্রথম কারণ হতে পারে মহানবী (সা.)’র রেহলাতের পর হযরত আলী (আ.)’র ক্ষমতা গ্রহণ করতে না পারা। অবশ্য ২৫ বছর পর জনগণের প্রবল চাপে হযরত আলী (আ.) শাসনক্ষমতা নিজের হাতে তুলে নিয়েছিলেন। কিন্তু তিনি সুস্থ মস্তিষ্কে মুসলিম ভূখণ্ডে শান্তি ও নিরাপত্তা প্রতিষ্ঠার কাজ করতে পারেননি। মাত্র পাঁচ বছরের শাসনামলে তাঁর ওপর তিন তিনটি যুদ্ধ চাপিয়ে দেয়া হয়। জঙ্গে জামাল, জঙ্গে সিফফিন ও জঙ্গে নাহরাওয়ানের পর একজন অভিশপ্ত খারেজির হাতে তাঁকে শহীদ হতে হয়।
দ্বিতীয় যে কারণে ইমাম জাফর সাদেক (আ.) বিদ্রোহে যোগ দেননি তা ছিল হযরত হাসান (আ.)’র তিক্ত অভিজ্ঞতা। কুফার জনগণ মুয়াবিয়ার বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার ঘোষণা দেয়া সত্ত্বেও সময়মতো তারা সটকে পড়েছিল যার কারণে ইমাম হাসান মুয়াবিয়ার সঙ্গে সন্ধি করতে বাধ্য হন। ওই অভিজ্ঞতার আলোকে ইমাম সাদেক (আ.) তাঁর আশপাশে থাকা লোকজনের ওপর নির্ভর করতে পারেননি বলে বনি উমাইয়া শাসকগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে বিদ্রোহে যোগ দেননি। এ সম্পর্কে নিজের এক সঙ্গীর সঙ্গে ইমামের কথোকপথন উল্লেখ করা যাক:
‘সারির সেইরাফি’ নামের একজন সঙ্গী বলেন: আমি একবার ইমাম জাফর সাদেক (আ.)কে প্রশ্ন করি, আপনি কেন বিদ্রোহ করছেন না? ইমাম পাল্টা প্রশ্ন করেন: এ ধরনের প্রশ্ন করছো কেন? আমি বললাম: আপনার তো প্রচুর সমর্থক ও অনুসারী রয়েছে। ইমাম বলেন: তাদের সংখ্যা কতো হতে পারে বলে তোমার মনে হয়? আমি বললাম: এক লাখ। হযরত বিস্ময়ের সঙ্গে বললেন: এক লাখ? আমি বললাম: দুই লাখও হতে পারে। ইমামের কণ্ঠে আবার বিস্ময় ঝড়ে পড়ে: দুই লাখ? এ অবস্থায় ইমাম কোনো কথা না বলে উঠে দাঁড়িয়ে আমাকে নিয়ে মদীনার বাইরে যান। সেখানে একটি ভেড়ার পাল দেখিয়ে হযরত বললেন: খোদার কসম যদি আমার মাত্র এই কয়জন প্রকৃত অনুসারী থাকত তাহলে আমি কালবিলম্ব না করে বিদ্রোহ করতাম। সারির বলেন, ওই ভেড়ার পালে মাত্র ১৭টি ভেড়া ছিল।
বিদ্রোহ না করলেও শাসকগোষ্ঠীর অন্যায় ও দুঃশাসনের বিরুদ্ধে নীরবতা অবলম্বন করাও ইমাম সাদেক (আ.)’র পক্ষে সম্ভব ছিল না। তিনি বনি আব্বাস শাসকগোষ্ঠীর সঙ্গে সব ধরনের সহযোগিতা ও সম্পর্ক ছিন্ন করার জন্য নিজের প্রকৃত অনুসারীদের প্রতি আহ্বান জানান। তিনি একদিন ধর্মীয় ক্লাসে ছাত্রদের উদ্দেশে বলেন: আমি কখনো জালেম শাসকদের সাহায্য করব না এবং তাদের স্বার্থে কথা বলার জন্য কলম ধরব না। কারণ, কিয়ামতের দিন জালেম শাসকের পাশাপাশি তাকে সাহায্যকারী ব্যক্তিরাও জাহান্নামের আগুনে নিক্ষিপ্ত হবে। আলেম ও ফকিহগণকে বিশ্বনবী (সা.)’র উত্তরাধিকারী হিসেবে উল্লেখ করে ইমাম সাদেক (আ.) বলেন, যদি কখনো কোনো ফকিহকে জালেম শাসকের সমর্থক হয়ে যেতে দেখো তাহলে তার দ্বীনদারী নিয়ে প্রশ্ন তুলবে এবং মানুষের সামনে তার স্বরূপ উন্মোচন করে দেবে।
একদিন এক ব্যক্তি ইমাম জাফর সাদেক (আ.)’র কাছে প্রশ্ন করেন: ইহুদিরা তাদের আলেমদের অনুসরণ করার কারণে আল্লাহ তায়ালার ভর্ৎসনার শিকার হয়ে থাকলে মুসলমানরাও তো তাদের আলেমদের অনুসরণ করছে। তাহলে এই দুই পক্ষের মধ্যে পার্থক্য কোথায়?
ইমাম উত্তরে বলেন: সাধারণ ইহুদিরা তাদের আলেমদের চিনত এবং তারা জানত যে, এসব আলেম তাদেরকে মিথ্যা বলছে, হারাম খাচ্ছে, উৎকোচ গ্রহণ করছে এবং আল্লাহর নির্দেশ পরিবর্তন করে নিজেদের মনের অশুভ বাসনাকে আল্লাহর নির্দেশ বলে চাপিয়ে দিচ্ছে। সাধারণ ইহুদিরা আলেমদের এই অপকর্ম সম্পর্কে অবগত হওয়া সত্ত্বেও অন্ধভাবে তাদেরকে অনুসরণ করার কারণে আল্লাহর উপহাসের পাত্র হয়েছে। এরপর ইমাম বলেন, মুসলমানরাও যদি ইহুদিদের মতো কোনো ভ্রান্ত আলেম বা ফকিহকে অনুসরণ করে তাহলে তারাও আল্লাহর ক্রোধের পাত্রে পরিণত হবে।
এরপর ইমাম সাদেক (আ.) অনুসরণযোগ্য আলেম বা ফকিহ’র বৈশিষ্ট্য তুলে ধরতে গিয়ে বলেন: যিনি তাঁর আত্মাকে পরিশুদ্ধ করে নফসের পরিপূর্ণ নিয়ন্ত্রণ গ্রহণ করেছেন, আল্লাহর দ্বীন রক্ষার জন্য কাজ করছেন এবং আল্লাহর নির্দেশের সামনে নিজের কামনা-বাসনাকে জলাঞ্জলি দিতে পেরেছেন তাকে অনুসরণ করা সাধারণ মুসলমানের কর্তব্য। সবশেষে তিনি এ কথাও বলেন, “কিন্তু সমাজে এ ধরনের আলেমের সংখ্যা অত্যন্ত কম।” ইমামের এই দিকনির্দেশনা শুধু তাঁর আমলের মানুষের জন্যই প্রযোজ্য ছিল না বরং সকল যুগের সকল মানুষের উচিত এভাবেই অনুসরণযোগ্য আলেম খুঁজে বের করা।
একবার মানসুর আব্বাসি ইমাম সাদেক (আ.)কে চিঠি লিখে জানতে চান, আপনি কেনো রাজ দরবারে আসেন না? ইমাম উত্তরে চিঠি লিখে জানান: আমি যেমন দুনিয়ার ঐশ্বর্য চাই না বলে তোমার দরবারে আসি না তেমনি আখেরাতের ব্যাপারেও তোমার কাছে এমন কোনো পুঁজি নেই যা গ্রহণ করে সৌভাগ্যবান হওয়ার লক্ষ্যে আমাকে রাজদরবারে আসতে হবে।
ইমাম রাজদরবারে যাওয়ার পরিবর্তে মানুসর আব্বাসির জুলুমের বিরুদ্ধে জনগণকে সচেতন করে তোলেন যা ওই শাসকের ভালো লাগেনি। ইমাম ও তাঁর অনুসারিদের গতিবিধি পর্যবেক্ষণ করতে মানসুর গোয়েন্দা বাহিনীকে লেলিয়ে দেন। সরকারি নিরাপত্তা বাহিনী ইমাম ও তাঁর শিয়াদের জীবনকে দুর্বিসহ করে তোলে। এ অবস্থায় ইমাম জাফর সাদেক (আ.) জালেম শাসকের বিরুদ্ধে সংগ্রামে নয়া পন্থা অবলম্বন করেন। #
পার্সটুডে/মুজাহিদুল ইসলাম/ মো: আবু সাঈদ / ২৫
মন্তব্যসমূহ