(পর্ব ৪৩): ইমাম মোহাম্মাদ বাকের (আ.)’র সংক্ষিপ্ত জীবনীজুন ১৭, ২০১৯ ১৯:০৪ Asia/Dhakaনবীবংশের এই পঞ্চম ইমাম ৫৭ হিজরির ১লা রজব মদীনায় জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর নাম ছিল মোহাম্মাদ, আবু জাফর ছিল তাঁর উপাধি এবং অনেকে তাঁকে বাকেরুল উলুম উপাধিও দিয়েছিলেন।ইমাম বাকের (আ.) সম্পর্কে প্রখ্যাত শাফিয়ী আলেম ও ফকিহ ইবনে হাজার হাইতামি লিখেছেন: যা ভূমিকে বিদারিত করে এর ভেতরের সুপ্ত বস্তুগুলো বের করে আনে তাকে আরবি ভাষায় ‘বাকেরুল আরদ’ বলা হয়। এই পরিভাষা থেকে এই ইমামের জন্য বাকের উপাধি গ্রহণ করা হয়েছে। কারণ, তিনি ইসলামের অনেক সুপ্ত শিক্ষা, আহকাম ও হাকিকাত মানুষের সামনে প্রকাশ করে দিয়েছেন। এই সুপ্ত শিক্ষাগুলো অদূরদর্শী ও পাপী ব্যক্তিদের দৃষ্টিগোচর হতো না।তিনি এমন পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন যে পরিবার ছিল সবদিক দিকে শ্রেষ্ঠ। কারণ, তাঁর পিতা ছিলেন ইমাম হোসেইন (আ.)’র সন্তান ইমাম সাজ্জাদ (আ.) এবং তাঁর মা ছিলেন ইমাম হাসানের কন্যা ফাতিমা। পবিত্র ও উন্নত চরিত্রের অধিকারী নারী ফাতিমা ছিলেন ইসলামি জ্ঞানে অত্যন্ত পারদর্শী। ইমাম সাদেক (আ.) বলেছেন: একদিন রাসূলুল্লাহ (সা.) তাঁর বিখ্যাত সাহাবী জাবের বিন আব্দুল্লাহ আনসারিকে বলেন, হে জাবের! আল্লাহ তায়ালা তোমাকে তুলনামূলক লম্বা হায়াত দান করবেন। তুমি বৃদ্ধ বয়সে আমার সন্তান মোহাম্মাদ বিন আলী বিন হোসেইন যার নাম তাওরাতে ‘বাকের’ লেখা রয়েছে তাকে দেখতে পাবে। তখন তুমি তাঁকে আমার সালাম পৌঁছে দিও।রাসূলের ওই বক্তব্যের বহু বছর পরে জাবের একদিন ইমাম সাজ্জাদ (আ.)’র কাছে যান এবং সেখানে শিশু ইমাম বাকের (আ.)কে দেখতে পান। ছোট্ট শিশুর কথা ও আচরণে মুগ্ধ হয়ে যান জাবের। রাসূলের সেই বক্তব্য মনে পড়ে যায় তার। তিনি ইমাম সাজ্জাদের কাছে জানতে চান এই শিশুটি কে? তিনি জবাবে বলেন, এই হচ্ছে আমার পরে আমার স্থলাভিষিক্ত ইমাম মোহাম্মাদ বাকের। জাবের একথা শুনে মন্ত্রমুগ্ধের মতো শিশু মোহাম্মাদ বাকেরের দিকে তাকিয়ে থাকেন, উঠে গিয়ে তাকে কোলে তুলে নেন এবং চুমু খেয়ে বলেন: তুমি তোমার পূর্বপুরুষ রাসূলে খোদার সালাম ও দরুদ গ্রহণ করো। কারণ, তিনি আমার মাধ্যমে তোমাকে সালাম পৌঁছে দিয়েছেন। ইমাম মোহাম্মাদ বাকের (আ.) তখন বলেন, আমি আমার পূর্বপুরুষ রাসূলে খোদার প্রতি দরুদ ও সালাম পাঠাচ্ছি। সেইসঙ্গে আমার পিতার দরুদ ও সালাম আমার কাছে পৌঁছে দেয়ার জন্য হে জাবের আপনাকেও সালাম জানাচ্ছি।ইমাম মোহাম্মাদ বাকের (আ.)’র বয়স যখন তিন বা চার বছর তখন কারবালা ময়দানের নির্মম ইতিহাস সংঘটিত হয়। অর্থাৎ জীবনের শুরুতেই তিনি এরকম একটি বিপর্যয়কর ঘটনার তিক্ত অভিজ্ঞতা অর্জন করেন। কারবালার এই হৃদয়বিদারক ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতেই এজিদ বাহিনী মদীনা ও মক্কায় গণহত্যা ও ভয়াবহ অপরাধযজ্ঞ চালায়। এরপর ইমাম সাজ্জাদ (আ.)’র ইমামতের ৩৪ বছরে তিনি স্বৈরাচারী উমাইয়া শাসকদের পক্ষ থেকে যেসব অত্যাচার ও নিপীড়নের সম্মুখীন হয়েছিলেন তা প্রত্যক্ষ করেন ইমাম মোহাম্মাদ বাকের (আ.)।ইমাম সাজ্জাদ (আ.) কুফা ও শামের দরবারে জ্বালাময়ী ভাষণ দিয়ে এজিদের পাপাচারী ও দুশ্চরিত্র আত্মার স্বরূপ উন্মোচন করার পাশাপাশি দোয়ার আদলে ইসলামের গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষাগুলো মুসলিম সমাজে ছড়িয়ে দেন। পিতার এসব তৎপরতা সার্বিকভাবে ইমাম মোহাম্মাদ বাকের (আ.)’র জন্য অভিজ্ঞতার নতুন দুয়ার খুলে দেয়। বিশেষ করে এই সময়ে উমাইয়া শাসকদের শাসনক্ষমতার ভিত দুর্বল হয়ে পড়েছিল। ইমাম মোহাম্মাদ বাকের (আ.)’র ১৯ বছরের ইমামতের সময়কালে পাঁচজন শাসক ক্ষমতায় আসেন। ওই পাঁচজন হলেন ওয়ালিদ বিন আব্দুলমালেক, সোলায়মান বিন আব্দুলমালেক, ওমর বিন আব্দুলআজিজ, এজিদ বিন আব্দুলমালেক এবং হিশাম বিন আব্দুলমালেক।শাসনক্ষমতায় এই টালমাটাল অবস্থার সুযোগ ইমাম বাকের (আ.) একটি শিয়া সাংস্কৃতিক বিপ্লব ঘটানোর সর্বোচ্চ চেষ্টা চালান। এ লক্ষ্যে তিনি একজন প্রকৃত শিয়া মুসলমানের বৈশিষ্ট্য জনগণের সামনে তুলে ধরার পাশাপাশি আব্বাসীয় শাসকদের মিথ্যা শিয়া স্লোগানের স্বরূপ উন্মোচন করেন।উমাইয়া শাসকগোষ্ঠী তাদের অর্ধ শতকের শাসনামলে হযরত আলী (আ.) ও তাঁর বংশধরদের ভাবমর্যাদা ক্ষুণ্ন করার জন্য সব রকম প্রচেষ্টা চালায়। এ অবস্থায় ইমাম মোহাম্মাদ বাকের (আ.) সবার আগে ইমামতের উচ্চ মর্যাদার বিষয়টি জনগণের সামনে তুলে ধরার চেষ্টা করেন। তিনি মহাগ্রন্থ আল-কুরআনের সূরা শুরার ২৩ নম্বর আয়াতের শিক্ষা উপস্থাপন করে বিশ্বনবীর আহলে বাইতের প্রতি ভালোবাসা ও শ্রদ্ধা প্রদর্শনের জন্য জনগণের প্রতি আহ্বান জানান।এই আয়াতে আল্লাহ তায়ালা বিশ্বনবী (সা.)কে উদ্দেশ করে বলেন: “(হে নবী) আপনি বলুন, আমি আমার (রিসালাতের) দাওয়াতের জন্যে তোমাদের কাছে আমার নিকটজনদের প্রতি ভালোবাসা ছাড়া অন্য কোনো পুরস্কার চাই না।” ইমাম বলেন, “আমাদের প্রতি অর্থাৎ আহলে বাইতের প্রতি ভালোবাসা হচ্ছে ধর্মের মৌলিক ভিত্তি।” তিনি আরেক ভাষণে বলেন, “তোমরা আল্লাহকে ভালোবাসবে এবং আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের নির্দেশ অনুযায়ী আমাদেরকে ভালোবাসবে।” এমনকি আহলে বাইতের প্রতি ভালোবাসার গুরুত্ব তুলে ধরতে গিয়ে তিনি ইবাদত কবুল হওয়ার পূর্বশর্ত হিসেবে এই ভালোবাসার কথা উল্লেখ করেন।তিনি এক ভাষণে বলেন: “কেউ যদি সারাজীবন প্রতিটি রাত জেগে আল্লাহর ইবাদত করে, সারাজীবন রোজা রাখে, নিজের সব সম্পদ গরীবের মাঝে বিলিয়ে দেয় এবং প্রতি বছর হজ্ব পালন করে কিন্তু তার মনে আমাদের প্রতি অর্থাৎ আহলে বাইতের প্রতি ভালোবাসা না থাকে ও আমাদের নির্দেশ পালন না করে তাহলে এত ইবাদত ও দান-খয়রাতের কোনো মূল্য নেই এবং কিয়ামতের দিন তাকে আল্লাহ তায়ালা কোনো পুরস্কার দেবেন না।”আহলে বাইতের প্রতি অন্তরে ভালোবাসা পোষণের জন্য ইমাম মোহাম্মাদ বাকেরের এতটা তাগিদ দেয়ার প্রধান কারণ ছিল শাসকগোষ্ঠীর নিপীড়নমূলক আচরণ। উমাইয়া শাসকরা মানুষের মন থেকে আহলে বাইতের প্রতি শ্রদ্ধা ও আন্তরিকতা মুছে ফেলতে সবরকম চেষ্টা করছিল। #পার্সটুডে/মুজাহিদুল ইসলাম/ মো: আবু সাঈদ /১৭
(পর্ব ৪৩): ইমাম মোহাম্মাদ বাকের (আ.)’র সংক্ষিপ্ত জীবনী
জুন ১৭, ২০১৯ ১৯:০৪ Asia/Dhaka
নবীবংশের এই পঞ্চম ইমাম ৫৭ হিজরির ১লা রজব মদীনায় জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর নাম ছিল মোহাম্মাদ, আবু জাফর ছিল তাঁর উপাধি এবং অনেকে তাঁকে বাকেরুল উলুম উপাধিও দিয়েছিলেন।
ইমাম বাকের (আ.) সম্পর্কে প্রখ্যাত শাফিয়ী আলেম ও ফকিহ ইবনে হাজার হাইতামি লিখেছেন: যা ভূমিকে বিদারিত করে এর ভেতরের সুপ্ত বস্তুগুলো বের করে আনে তাকে আরবি ভাষায় ‘বাকেরুল আরদ’ বলা হয়। এই পরিভাষা থেকে এই ইমামের জন্য বাকের উপাধি গ্রহণ করা হয়েছে। কারণ, তিনি ইসলামের অনেক সুপ্ত শিক্ষা, আহকাম ও হাকিকাত মানুষের সামনে প্রকাশ করে দিয়েছেন। এই সুপ্ত শিক্ষাগুলো অদূরদর্শী ও পাপী ব্যক্তিদের দৃষ্টিগোচর হতো না।
তিনি এমন পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন যে পরিবার ছিল সবদিক দিকে শ্রেষ্ঠ। কারণ, তাঁর পিতা ছিলেন ইমাম হোসেইন (আ.)’র সন্তান ইমাম সাজ্জাদ (আ.) এবং তাঁর মা ছিলেন ইমাম হাসানের কন্যা ফাতিমা। পবিত্র ও উন্নত চরিত্রের অধিকারী নারী ফাতিমা ছিলেন ইসলামি জ্ঞানে অত্যন্ত পারদর্শী। ইমাম সাদেক (আ.) বলেছেন: একদিন রাসূলুল্লাহ (সা.) তাঁর বিখ্যাত সাহাবী জাবের বিন আব্দুল্লাহ আনসারিকে বলেন, হে জাবের! আল্লাহ তায়ালা তোমাকে তুলনামূলক লম্বা হায়াত দান করবেন। তুমি বৃদ্ধ বয়সে আমার সন্তান মোহাম্মাদ বিন আলী বিন হোসেইন যার নাম তাওরাতে ‘বাকের’ লেখা রয়েছে তাকে দেখতে পাবে। তখন তুমি তাঁকে আমার সালাম পৌঁছে দিও।
রাসূলের ওই বক্তব্যের বহু বছর পরে জাবের একদিন ইমাম সাজ্জাদ (আ.)’র কাছে যান এবং সেখানে শিশু ইমাম বাকের (আ.)কে দেখতে পান। ছোট্ট শিশুর কথা ও আচরণে মুগ্ধ হয়ে যান জাবের। রাসূলের সেই বক্তব্য মনে পড়ে যায় তার। তিনি ইমাম সাজ্জাদের কাছে জানতে চান এই শিশুটি কে? তিনি জবাবে বলেন, এই হচ্ছে আমার পরে আমার স্থলাভিষিক্ত ইমাম মোহাম্মাদ বাকের। জাবের একথা শুনে মন্ত্রমুগ্ধের মতো শিশু মোহাম্মাদ বাকেরের দিকে তাকিয়ে থাকেন, উঠে গিয়ে তাকে কোলে তুলে নেন এবং চুমু খেয়ে বলেন: তুমি তোমার পূর্বপুরুষ রাসূলে খোদার সালাম ও দরুদ গ্রহণ করো। কারণ, তিনি আমার মাধ্যমে তোমাকে সালাম পৌঁছে দিয়েছেন। ইমাম মোহাম্মাদ বাকের (আ.) তখন বলেন, আমি আমার পূর্বপুরুষ রাসূলে খোদার প্রতি দরুদ ও সালাম পাঠাচ্ছি। সেইসঙ্গে আমার পিতার দরুদ ও সালাম আমার কাছে পৌঁছে দেয়ার জন্য হে জাবের আপনাকেও সালাম জানাচ্ছি।
ইমাম মোহাম্মাদ বাকের (আ.)’র বয়স যখন তিন বা চার বছর তখন কারবালা ময়দানের নির্মম ইতিহাস সংঘটিত হয়। অর্থাৎ জীবনের শুরুতেই তিনি এরকম একটি বিপর্যয়কর ঘটনার তিক্ত অভিজ্ঞতা অর্জন করেন। কারবালার এই হৃদয়বিদারক ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতেই এজিদ বাহিনী মদীনা ও মক্কায় গণহত্যা ও ভয়াবহ অপরাধযজ্ঞ চালায়। এরপর ইমাম সাজ্জাদ (আ.)’র ইমামতের ৩৪ বছরে তিনি স্বৈরাচারী উমাইয়া শাসকদের পক্ষ থেকে যেসব অত্যাচার ও নিপীড়নের সম্মুখীন হয়েছিলেন তা প্রত্যক্ষ করেন ইমাম মোহাম্মাদ বাকের (আ.)।
ইমাম সাজ্জাদ (আ.) কুফা ও শামের দরবারে জ্বালাময়ী ভাষণ দিয়ে এজিদের পাপাচারী ও দুশ্চরিত্র আত্মার স্বরূপ উন্মোচন করার পাশাপাশি দোয়ার আদলে ইসলামের গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষাগুলো মুসলিম সমাজে ছড়িয়ে দেন। পিতার এসব তৎপরতা সার্বিকভাবে ইমাম মোহাম্মাদ বাকের (আ.)’র জন্য অভিজ্ঞতার নতুন দুয়ার খুলে দেয়। বিশেষ করে এই সময়ে উমাইয়া শাসকদের শাসনক্ষমতার ভিত দুর্বল হয়ে পড়েছিল। ইমাম মোহাম্মাদ বাকের (আ.)’র ১৯ বছরের ইমামতের সময়কালে পাঁচজন শাসক ক্ষমতায় আসেন। ওই পাঁচজন হলেন ওয়ালিদ বিন আব্দুলমালেক, সোলায়মান বিন আব্দুলমালেক, ওমর বিন আব্দুলআজিজ, এজিদ বিন আব্দুলমালেক এবং হিশাম বিন আব্দুলমালেক।
শাসনক্ষমতায় এই টালমাটাল অবস্থার সুযোগ ইমাম বাকের (আ.) একটি শিয়া সাংস্কৃতিক বিপ্লব ঘটানোর সর্বোচ্চ চেষ্টা চালান। এ লক্ষ্যে তিনি একজন প্রকৃত শিয়া মুসলমানের বৈশিষ্ট্য জনগণের সামনে তুলে ধরার পাশাপাশি আব্বাসীয় শাসকদের মিথ্যা শিয়া স্লোগানের স্বরূপ উন্মোচন করেন।
উমাইয়া শাসকগোষ্ঠী তাদের অর্ধ শতকের শাসনামলে হযরত আলী (আ.) ও তাঁর বংশধরদের ভাবমর্যাদা ক্ষুণ্ন করার জন্য সব রকম প্রচেষ্টা চালায়। এ অবস্থায় ইমাম মোহাম্মাদ বাকের (আ.) সবার আগে ইমামতের উচ্চ মর্যাদার বিষয়টি জনগণের সামনে তুলে ধরার চেষ্টা করেন। তিনি মহাগ্রন্থ আল-কুরআনের সূরা শুরার ২৩ নম্বর আয়াতের শিক্ষা উপস্থাপন করে বিশ্বনবীর আহলে বাইতের প্রতি ভালোবাসা ও শ্রদ্ধা প্রদর্শনের জন্য জনগণের প্রতি আহ্বান জানান।
এই আয়াতে আল্লাহ তায়ালা বিশ্বনবী (সা.)কে উদ্দেশ করে বলেন: “(হে নবী) আপনি বলুন, আমি আমার (রিসালাতের) দাওয়াতের জন্যে তোমাদের কাছে আমার নিকটজনদের প্রতি ভালোবাসা ছাড়া অন্য কোনো পুরস্কার চাই না।” ইমাম বলেন, “আমাদের প্রতি অর্থাৎ আহলে বাইতের প্রতি ভালোবাসা হচ্ছে ধর্মের মৌলিক ভিত্তি।” তিনি আরেক ভাষণে বলেন, “তোমরা আল্লাহকে ভালোবাসবে এবং আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের নির্দেশ অনুযায়ী আমাদেরকে ভালোবাসবে।” এমনকি আহলে বাইতের প্রতি ভালোবাসার গুরুত্ব তুলে ধরতে গিয়ে তিনি ইবাদত কবুল হওয়ার পূর্বশর্ত হিসেবে এই ভালোবাসার কথা উল্লেখ করেন।
তিনি এক ভাষণে বলেন: “কেউ যদি সারাজীবন প্রতিটি রাত জেগে আল্লাহর ইবাদত করে, সারাজীবন রোজা রাখে, নিজের সব সম্পদ গরীবের মাঝে বিলিয়ে দেয় এবং প্রতি বছর হজ্ব পালন করে কিন্তু তার মনে আমাদের প্রতি অর্থাৎ আহলে বাইতের প্রতি ভালোবাসা না থাকে ও আমাদের নির্দেশ পালন না করে তাহলে এত ইবাদত ও দান-খয়রাতের কোনো মূল্য নেই এবং কিয়ামতের দিন তাকে আল্লাহ তায়ালা কোনো পুরস্কার দেবেন না।”
আহলে বাইতের প্রতি অন্তরে ভালোবাসা পোষণের জন্য ইমাম মোহাম্মাদ বাকেরের এতটা তাগিদ দেয়ার প্রধান কারণ ছিল শাসকগোষ্ঠীর নিপীড়নমূলক আচরণ। উমাইয়া শাসকরা মানুষের মন থেকে আহলে বাইতের প্রতি শ্রদ্ধা ও আন্তরিকতা মুছে ফেলতে সবরকম চেষ্টা করছিল। #
পার্সটুডে/মুজাহিদুল ইসলাম/ মো: আবু সাঈদ /১৭
মন্তব্যসমূহ