#হযরত_মুহাম্মাদ ‎(সাঃ) ‏কে হত্যা করা হয়েছেআল্লাহুমা সাল্লে আলা মুহাম্মাদ ওয়া আলে মুহাম্মাদ ।খুবই গুরুত্বপুর্ন লেখা আশা করি মনোযোগ সহকারে পড়বেন সম্পুর্ন লেখাটা পড়বেন শেষ হওয়া অবধি এবং সাথে সাথে প্রত্যেকটা তথ্য ও রেফারেন্স হাদীসগুলো থেকে মিলিয়ে নিবেন ।কোরআনে সূরা আলে ইমরান ‎- ‏১৪৪ নং আয়াত থেকে,وَمَا مُحَمَّدٌ إِلَّا رَسُولٌ قَدْ خَلَتْ مِنْقَبْلِهِ الرُّسُلُ ۚ أَفَإِنْ مَاتَ أَوْ قُتِلَ انْقَلَبْتُمْ عَلَىٰأَعْقَابِكُمْ ۚ وَمَنْ يَنْقَلِبْ عَلَىٰ عَقِبَيْهِ فَلَنْ يَضُرَّ اللَّهَشَيْئًا ۗ وَسَيَجْزِي اللَّهُ الشَّاكِرِينَAnd Muhammad is no more than a messenger; ‏the messengers have already passed away before him; ‏if then hedies or is killed will you turn back upon your heels? ‏And whoever turns backupon his heels, ‏he will by no means do harm to Allah in the least and Allahwill reward the grateful."--- ‏আর মুহাম্মদ একজন রসূল বৈ তো নয় ‎! ‏তাঁর পূর্বেও বহু রসূল অতিবাহিত হয়ে গেছেন । তাহলে কি তিনি যদি মৃত্যুবরণ করেন অথবা নিহত হন ‎, ‏তবে তোমরা পশ্চাদপসরণ করবে ‎? ‏বস্তুতঃ কেউ যদি পশ্চাদপসরণ করে ‎, ‏তবে তাতে আল্লাহর কিছুই ক্ষতি-বৃদ্ধি হবে না । আর যারা কৃতজ্ঞ ‎, ‏আল্লাহ তাদের সওয়াব দান করবেন ‎---" ‏।উপরের আয়াতে এই কথার ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছে যে ‎, ‏রাসুল ‎(সাঃ) ‏এর স্বাভাবিক মৃত্যু হয় নি বরঞ্চ তাঁকে হত্যা ‎(শহীদ) ‏করা হয়েছে । কারন ‎أَفَإِنْ مَاتَ أَوْ قُتِلَ ,أَو ‏এর মানে ‎‘ ‏অথবা ‎’ ‏ও হয় আবার ‎‘ ‏বরঞ্চ ‎’ ‏হিসাবে ধরা যায় ।এখানে যে ভাবে বলা হচ্ছে তাতে দুটো মানে নেওয়া যেতে পারে । সুতরাং এটার মানে দাঁড়াল যে ‎“ ‏যদি তিনি মৃত্যুবরণ করেন বরঞ্চ কতল করা হয়।নবী ‎(সাঃ) ‏কে শহীদ করা হয়েছ এটা আরও ভালো ভাবে বোঝা যায় যখন আমরা দেখি যে হজরত আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ ‎(রাঃ) ‏বলছেন যে ‎,عَنْ عَبدِ اللَّهِ قَالَ لَأَنْ أَحْلِفَ تِسْعًا أَنَّ رَسُولَاللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قُتِلَ قَتْلًا أَحَبُّ إِلَيَّ مِنْ أَنْ أَحْلِفَ وَاحِدَةً أَنَّهُلَمْ يُقْتَلْ وَذَلِكَ بِأَنَّ اللَّهَ جَعَلَهُ نَبِيًّا وَاتَّخَذَهُ شَهِيدًا“ ‏আমি ন’বার কসম খেতে পারি যে, ‏নবিকে হত্যা করা হয়েছে ‎, ‏কিন্ত একবারও কসম খাব না যে তাঁকে ‎(কতল) ‏করা হয়নি । আল্লাহ তাঁকে নবী ও শহীদ করেছেন ‎”।-মুসনাদ এ আহমাদ ইবনে হাম্বাল ।- ‏মুসত্রাদক‘আলা সাহিহাইন তাহাকিক যাহাবিঃ বুখারি ও মুসলিমের standard এর হাদিস।- ‏মজমাউজ জওাদ, ‏বর্ণনা কারিগন সব সিকাহ ‎( ‏বিশস্ত)।- ‏কানজোল উম্মাল, ‏তারিখ এ ঈসলাম, ‏যাহাবি। তারিখ এ দামিস্ক, ‏ইবনে আসাকির।- ‏আল বেদায়া ওয়ান নেহায়া, ‏ইবনে কাসির।আরও অনেক হাদিসের বইয়ে।সুতরাং একথা বোঝা যাছে যে ‎, ‏নবী পাক ‎(সাঃ) ‏কে হত্যা করা হয়েছে । এটা আহলে সুন্নাহও মনে করে ।এখন প্রশ্ন থাকে যে, #কে বা কারা কিভাবে নবী ‎(সাঃ) ‏কে হত্যা করেছে ‎?আহলে সুন্নাহ তাঁদের চিন্তা ধার অনুসারে বলে যে,যয়নব বিনতে হারিস একজন ইহুদি মহিলা,যার ভাই মরহাবকে ইমাম আলি হত্যা করে ছিলেন । খাইবারে যুদ্ধের পরে ঐ হিহুদী মহিলা বিষ খাবারে বিষ দিয়েছিল, ‏সেই বিষক্রিয়াতে নবী ‎(সাঃ) ‏মারা যান।সংক্ষিপ্ত ঘটনা ‎-#খাইবার যুদ্ধে ইহুদিদের পরাজয়ের পরে যখন নবী পাক ‎(সাঃ) ‏ঐখানে অবস্থান করছিলেন তখন যয়নব বিনতে হারিস নামে এক ইহুদি মহিলা রসুল ‎(সাঃ) ‏কে দাওয়াত করে বিষ মেশানো বকরি রান্না করে দেন ‎, ‏যাতে মুহাম্মাদ ‎(সাঃ) ‏কে পরীক্ষা করা যায় যে ‎, ‏তিনি একজন আল্লাহ প্রেরিত সত্যিকারের রাসুল ।হাদিস আর ইসলামের ইতিহাসের কিতাব থেকে আমরা এই বিষয় তিন ধরনের বর্ণনা পাই-এখানে আমি ‎#সহীহ বুখারি ও মুসলিম থেকে একটা একটা করে হাদিস উল্লেখ করছি ‎-১) ‏রাসুল ‎(সাঃ) ‏রান্না করা উক্ত গোস্ত খান এবং বুঝতে পারেন যে ‎, ‏এতে বিষ মেশানো আছে । এবং ইহুদি মহিলাটাকে হত্যা করা হয়নি ।#সহিহ বুখারি হাদিস নং ‎- ‏২৪৪১আবদুল্লাহ ইবনু আবদুল ওয়াহাব ‎(রহঃ) ‏আনাস ইবনু মালিক ‎(রাঃ) ‏থেকে বর্ণিত যে ‎, ‏তিনি বলেন ‎, ‏জনৈক ইয়াহূদী মহিলা নবী ‎(সাঃ) ‏এর খিদমতে বিষ মিশানো বকরী নিয়ে এলো । সেখান থেকে কিছু অংশ তিনি ‎(সাঃ) ‏খেলেন এবং খাওয়ার পরে বিষক্রিয়া টের পেয়ে মহিলাকে হাজির করা হল । তখন বলা হল ‎, ‏আপনি কি এই মহিলাকে হত্যার আদেশ দিবেন না ‎?তিনি ‎(সাঃ) ‏বললেন ‎, ‏না । আনাস ‎(রাঃ) ‏বলেন নবী ‎(সাঃ) ‏এর ‎(মুখ গহবরের) ‏তালুতে আমি বরাবরই বিষ ক্রিয়ার আলামত দেখতে পেতাম ।২) ‏রাসুলের ‎(সাঃ) ‏ও একজন সাহাবী ঐ গোস্ত খেলেন আর ঐ সাহাবী মারা গেলেন। রাসুল ‎(সাঃ) ‏বুঝতে পারলেন যে ‎, ‏খাবারে বিষ দেওয়া আছে । ইহুদি মহিলাকে হত্যা করা হয় ।#সহিহ বুখারি ‎- ‏হাদিস নং ‎- ‏৩৯২৫ আবদুল্লাহ ইবনু ইউসুফ ‎(রহঃ) ‏আবূ হুরায়রা ‎(রাঃ) ‏থেকে বর্ণিত যে ‎, ‏যখন খায়বার বিজয় হয়ে গেল তখন ইহুদীদের পক্ষ থেকে রান্না করা একটি বকরী রাসূল ‎(সাঃ) ‏কে হাদিয়া হিসাবে দেওয়া হয় । সেই রান্না করা বকরীটিতে বিষ মেশানো ছিল । খায়বার যুদ্ধে যখন ইহুদীদের জন্য মুসলমানদের আনুগত্য স্বীকার ব্যতীত অন্য কোন পথ বাকী রইল না তখন তারা ঘৃণ্য ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয় । ইহুদী হারিসের কন্যা ও সালাম ইবনু মুশফিমের স্ত্রী যয়নাব একটি বকরীর গোশতে বিষ মিশিয়ে তা রাসূল ‎(সাঃ) ‏এর জন্য হাদিয়া হিসাবে পাঠাল । রাসূল ‎(সাঃ) ‏বকরীটির গোশত খেলেও বিষ তাঁর কোন ক্ষতি করতে পারে নি বটে ‎, ‏কিন্ত তাঁর সাহাবী বার আ ইবনু মা’রূর ‎(রাঃ) ‏বিষক্রিয়ার ফলে শহীদ হন । ষড়যন্ত্রকারী মহিলা ধরা পড়ার পর প্রথমে তাকে মাফ করে দেওয়া হয়েছিল ‎, ‏কিন্ত পরবর্তীতে যখন বারাআ ‎(রাঃ) ‏মারা গেলেন তখন ‎‘ ‏কিসাস ‎’ ‏হিসেবে তাকে হত্যা করা হয় ।৩) ‏রাসুল ‎(সাঃ) ‏খাওয়ার আগেই ইহুদি মহিলাকে ডেকে পাঠান ও সরাসরই বলে দেন যে ‎, ‏এতে বিষ মেশান আছে ।#সহিহ বুখারি ‎- ‏হাদিস নং ‎- ‏৫৩৬২কুতায়বা ‎(রহঃ) ‏আবূ হুরায়রা ‎(রাঃ) ‏থেকে বর্ণিত । তিনি বলেন ‎, ‏খায়বার যখন বিজয় হয় ‎, ‏তখন রাসুলুল্লাহ ‎( ‏সাঃ) ‏এর নিকট হাদীয়া স্বরুপ একটি ভুনা বকরী প্রেরিত হয় । এর মধ্যে ছিল বিষ । তখন রাসুলুল্লাহ ‎(সাঃ) ‏বলেন যে ‎, ‏এখানে যত ইয়াহুদী আছে আমার কাছে তাদের জমায়েত কর । তার কাছে সবাইকে জমায়েত করা হলে । রাসুলুল্লাহ ‎(সাঃ) ‏তাদের সন্মোধন করে বললেন ‎, ‏আমি তোমাদের নিকট একটি বিষয়ে জানতে চাই ‎, ‏তোমরা কি সে বিষয়ে আমাকে সত্য কথা বলবে ‎?তারা বলল ‎, ‏হ্যা ‎, ‏হে আবূল কাসিম ।রাসুলুল্লাহ ‎(সাঃ) ‏বললেন ‎, ‏তোমাদের পিতা কে ‎? ‏তারা বলল ‎, ‏আমাদের পিতা অমুক । রাসুলুল্লাহ ‎(সাঃ) ‏বললেন ‎, ‏তোমরা মিথ্যে বলেছ বরং তোমাদের পিতা অমুক । তারা বলল ‎, ‏আপনি সত্য ও সঠিক বলেছেন । এরপর তিনি ‎(সাঃ) ‏বললেন ‎, ‏আমি যদি তোমাদের নিকট আর একটি প্রশ্ন করি ‎, ‏তা হলে কি তোমরা সে ব্যাপারে আমাকে সত্য কথা বলবে ‎? ‏তারা বলল ‎, ‏হে আবূল কাসিম ‎, ‏যদি আমরা মিথ্যে বলি তবে তো আপনি আমাদের মিথ্যা জেনে ফেলবেন ‎, ‏যেমনিভাবে জেনেছেন আমাদের পিতার ব্যাপারে । তখন তিনি ‎(সাঃ) ‏বললেন ‎, ‏তোমরা কি এ বকরীর মধ্যে বিষ মিশ্রিত করেছ ‎?তারা বলল ‎, ‏হ্যা । তিনি ‎(সাঃ) ‏বললেন ‎, ‏কিসে তোমাদের এ কাজে উদ্ভুদ্ধ করেছে ‎?তারা বলল ‎, ‏আমরা চেয়েছি ‎!যদি আপনি নবুওয়াতের দাবীতে মিথ্যাবাদী হন ‎, ‏তবে আমরা আপনার থেকে মুক্তি পেয়ে যাব । আর যদি আপনি সত্য নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হন ‎, ‏তবে এ বিষ আপনার কোন ক্ষতি করতে পারবে না ।বিঃদ্রঃ ‎- ‏উপরে একই ঘটনার সহিহ হাদিসের তিন রূপ দেওয়া হল ‎- ‏এই বিষয় আরও কিছু জানা যায় যে ‎, ‏ইহুদি মহিলা পরবর্তীতে ‎#মুসলিম হয়ে গিয়েছিল ।যাইহোক ‎, #খাইবারের যুদ্ধ ৬য় হিজরিতে হয়েছিল আর রাসুল ‎(সাঃ) ‏১০ ম হিজরিতে মারা যান । এ কথা বোধগম্যের বাইরে যে ‎, ‏বিষ পানের ৪ বছর পর কি ভাবে একজন মানুষ বেঁচে থাকতে পারে ‎! ‏ধরে নিলাম যে ‎, ‏রাসুল ‎(সাঃ) ‏ঐ গোস্ত খেয়েছিলেন ।ঐ ইহুদিদের কথা অনুযায়ী ওরা ‎#বিষ দিয়েছিল রাসুল ‎(সাঃ) ‏এর থেকে তাৎক্ষনিক ভাবে মুক্তি পাওয়ার জন্য ।অথচ এটাও দেখা যাচ্ছে যে ‎, ‏রাসুল ‎(সঃ) ‏আদৌও ঐ গোস্ত খান নি ।এখন এই প্রশ্নও উঠতে পারে যে ‎, ‏ঐ ইহুদি মহিলা বিষ দিয়ে ছিল আর এটাপরীক্ষা কারার জন্য যে ‎, ‏তিনি প্রকৃত নবী কিনা ।এখন যদি রাসুল পাকের ‎(সাঃ) ‏উপর ‎#বিষক্রিয়া হয় বা অন্য একজন সাহাবা মারা যাওয়ার পর বোঝা যায়ে যে ‎, ‏বিষ আছে । তবে তো ঐ মহিলার পরীক্ষাতে রসুল ‎(সাঃ) ‏পাস করতে পারলেন না ।আর ঐ মহিলা মুসলিম বা হবেন কেন ‎?এখন দেখা যাক ‎, ‏রাসুল ‎(সাঃ) ‏এর মৃত্যুর সময়কার কিছু হাদিস ।যেখানে বলা হচ্ছে যে ‎, ‏নবী ‎(সাঃ) ‏যখন অসুস্থ ছিলেন ‎, ‏সেই সময় তিনি ‎(সাঃ) ‏ঘুমাচ্ছিলেন। তখন আয়শা নবী ‎(সাঃ) ‏এর মুখে কিছু দ্রব্য ঢুকিয়ে দেন। তখন রাসুল ‎(সাঃ) ‏কড়া ভাবে আয়শাকে বলেছিলেন যে ‎, ‏এভাবে তাঁর মুখে যেন কিছু না দেওয়া হয় ।সূত্র ‎- ‏সহিহ আল বুখারি ‎, ‏আধুনিক প্রকাশনী ‎-ঢাকা ‎, ‏বাংলাদেশ।৫২৯৪ ‎- ‏ইবনে আব্বাস ও আয়শা থেকে বর্ণিত । নবী ‎(সাঃ) ‏ইন্তেকাল করলে হযরত আবু বকর নবী ‎(সাঃ) ‏কে চুমু দিলেন । হযরত আয়েশা ‎(রাঃ) ‏আরও বলেন ‎, ‏নবীজী ‎(সাঃ) ‏এর অসূখের সময় আমরা তার মুখে কিছু ঢেলে দিলাম । তখন তিনি রাসুল ‎(সাঃ) ‏আমাদের ইশারা দিতে থাকলেন যে ‎, ‏তোমরা আমায় মুখে কিছু ঢেল না । আমরা মনে করলাম ‎, ‏এটা ঔষধের প্রতি একজন রোগীর অরুচির প্রকাশ মাত্র । এরপর তিনি যখন সুস্থবোধ করলেন তখন বললেন ‎, ‏আমি কি তোমাদের আমার মুখে কিছু ঢালতে নিষেধ করি নি ‎? ‏আমরা বললাম ‎, ‏আমরাতো ঔষধের প্রতি রোগীর সাধারন অনীহা মনে করেছিলাম । তখন তিনি রাসুল ‎(সাঃ) ‏বললেন ‎, ‏আমি এখন যাদের এ ঘরে দেখতে পাচ্ছি তাদের সকলকে এটা না গিলিয়ে ছাড়ব না শুধুমাত্র আব্বাস ‎(রাঃ) ‏ছাড়া । কেননা, ‏তিনি তোমাদের সংগে জড়িত ছিলেন না ।৬৪২০ ‎- ‏হযরত আয়েশা ‎(রাঃ) ‏থেকে বর্ণিত ‎-তিনি বলেন ‎, ‏আমরা নাবী ‎(সাঃ) ‏এর অসুখের সময় তার মুখের এক কিনারায় ঔষধ ঢেলে দিলাম ।তিনি ‎(সাঃ) ‏বলেন ‎, #তোমরা আমার মুখের কিনারায় ঔষধ দিও না । আমরা মনে করলাম ‎, ‏রোগী ঔষধ সেবন অপছন্দ করেই থাকে। যখন তাঁর হুশ ফিরে এলো ‎, ‏তখন তিনি ‎(সাঃ) ‏বললেন ‎, ‏তোমাদের মধ্যে যেন এমন কেউ থাকে না ‎, ‏যার মুখের কিনারায় জোর পুর্বক ঔষধ ঢেলে দেয়া না হয় শুধুমাত্র আব্বাস ব্যতীত।কেননা ‎, ‏সে তোমাদের কাছে হাজির ছিল না ।৬৪৩০ ‎- ‏মূসা’দ্দাদ ‎(রহঃ) ‏হযরত আয়েশা ‎(রাঃ) ‏থেকে বর্ণিত ‎- ‏তিনি বলেন ‎, ‏আমরা নবী ‎(সাঃ) ‏এর অসুখের সময় তার মুখের কিনারায় ঔষধ ঢেলে দিলাম । আর তিনি ‎(সাঃ) ‏আমাদের দিকে ইশারা করতে থাকলেন যে ‎, ‏তোমরা আমার মূখের কিনারায় ঔষধ ঢেলে দিও না । আমরা মনে করলাম যে ‎, ‏রোগীর ঔষধের প্রতি অনীহা-ই এর কারণ । যখন তিনি ‎(সাঃ) ‏হুশ ফিরে পেলেন ‎, ‏তখন বললেন ‎, #আমাকে জোর পূর্বক ঔষধ সেবন করাতে কি তোমাদেরকে নিষেধ করি নি ‎? ‏আমরা বললাম ‎, ‏রোগীর ঔষধের প্রতি অনীহা তাই এর কারণ বলে আমরা মনে করেছি । তখন তিনি ‎(সাঃ) ‏বললেন ‎, ‏তোমাদের মাঝে যেন এমন কেউ না থাকে যার মুখে জোরপূর্বক ঔষধ ঢালা হয় আর আমি দেখতে থাকব শুধু আব্বাস ব্যতীত । কেননা ‎, ‏সে তোমাদের সাথে ছিল না ।#নোট ‎- ‏উপরে অনেক বেশির ভাগ জায়গাতে ঔষধ শব্দ অরিজিনালে নেই অনুবাদক বসিয়ে দিয়েছেন ‎, ‏বরং অরিজিনাল আরবীতে এটা আছে ‎‘(কিছু একটা) ‏ঢেলেদিলাম’) ‏।সুতরাং উপরের হাদিস সমূহ থেকে দেখা যাচ্ছে যে ‎, #রাসুল ‎(সাঃ) ‏তার অসুস্থতার সময় হযরত আয়েশা এবং আরও কেউ রসুলের ‎(সাঃ) ‏মুখে কিছু ঢুকিয়ে দেন...যেটা রাসুল পাক ‎(সাঃ) ‏নিষেধ করার পরেও । রাসুল ‎(সাঃ) ‏পরিষ্কার ভাবে বারণ করেছিলেন যে ‎, ‏তাঁর মুখে যেন কিছু না দেওয়া হয় । পরে রাসুল ‎(সাঃ) ‏একটু হুস ফিরে পেলে রাগান্বিত হয়ে বললেন যে ‎, ‏এটাকে সবাইকে মুখে দিতে হবে এবং রাসুল ‎(সাঃ) ‏সেটা দেখবেন ‎, ‏শুধু হযরত আব্বাস ‎(রাঃ) ‏ব্যতীত কারণ তিনি ঐ সময় ছিলেন না ।রাসুল ‎(সাঃ) ‏এর মৃত্যুর কারণ হিসাবে আয়েশা এটা প্রচার করতে লাগলেন যে ‎, ‏টেস্টিস এ ‎#টিউমার ফেটে গিয়ে মারা গিয়েছেন ।মুসনাদে আহমাদ ও আবু ইয়ালাআল মাসুলি ‎-حدثنا كامل ، حدثنا ابن لهيعة ، حدثني أبو الأسود ، عنعروة ، عن عائشة ، قالت : مات رسول الله صلى الله عليه وسلم من ذات الجنبকিন্ত কেউ এটাকে বিশ্বাস করতে চায় নি কারণ রাসুল ‎(সাঃ) ‏আগেই বলে গিয়েছিলেন যে ‎, ‏এই ধরনের রোগ আমাদের রাসুলদের হয় না ।এই সব দেখে আয়েশা বললেন যে ‎, ‏খাইবার যুদ্বে খাবারের বিষ ক্রীয়ায় তিনি ‎(সাঃ) ‏মারা গিয়েছেন ‎?আপনারা উপরে আহলে সুন্নিদের সহীহ হাদিস থেকে বুঝতেই পারছেন যে ‎, ‏খাইবার যুদ্বে আল্লাহের রাসুল ‎(সাঃ) ‏বিষ খান নি বলেই বোঝা যাচ্ছে । আবার খেলেও তাঁর উপর ঐ বিষ কোন ক্রীয়া করে নি । আবার ঐ বিষ দেওয়া হয়েছিল ৬ষ্ঠ হিজরিতে এবং রাসুল ‎(সাঃ) ‏ইন্তেকাল করেছেন ১০ম হিজরিতে । তাহলে দীর্ঘ চার দশক কিভাবে একজন লোক দিব্যি বেঁচে থাকতে পারে ‎? ‏এতো গেল আহলে সুন্নাতের হাদিস গ্রন্থ থেকে দলিল ।এখন দেখা যাক যে ‎, ‏শীয়া হাদিস বা তাফসির বই এ কি বলা হচ্ছে-তাফসির এ আইয়াস ও আল্লামা মাজলিশি ও আলি ইবনে ইব্রাহিম কুম্মি যিনি ইমাম হাসন আল আসকারী এর সমসাময়িক ছিলেন ‎-ইমাম জাফর সাদিক এর থেকে বর্ণনা করেছেন যে ‎, ‏তার মুল মর্ম হল যে রাসুল ‎(সাঃ) ‏এর ওফাতের শেষ দিনের দিকে আবুবকর আর ওমরের ইশারাতে আয়শা ও হাফসা রাসুল ‎(সাঃ) ‏কে বিষাক্ত কিছু খাইয়ে ছিলেনসুপ্রিয় পাঠক, ‏এই লেখাটিতে নিজস্ব কোন কিছুই বলা হয়নি । ইতিহাস থেকে যা পাওয়া যায় তাই এখানে তুলে ধরা হয়েছে। এখন এই লেখাটা গ্রহন করা বা না করা যার যার ব্যক্তিগত অভিরুচি ।তবে হ্যা ‎, ‏এই বিষয় আপনাদের শালীন ভাষায় যৌক্তিক যে কোন তথ্যাদি বা মতামত সাদরে গ্রহনীয় ।⭐⭐দয়াল রাসূল পাক ‎(সঃ) ‏এর জন্মদিন ও মৃত্যু দিন কি একই তারিখে হয়েছিলো ‎❓নাকি মুসলমানদের আনন্দ নষ্ট করেছিলো ষড়যন্ত্রকারীরা ‎❓ ***সমাজে দীর্ঘ কাল ধরে এটাই প্রচলিত যে আমাদের দয়াল রাসূল ‎(সা:) ‏১২ই রবিউল আওয়াল রোজ সোমবার জন্মগ্রহন করেছিলেন এবং তিনি ঐ একই তারিখে ওফাত লাভ করেন । কিন্তু দয়াল রাসূল ‎(সাঃ) ‏হিজরী পূর্ব ৫৩ সালের ১২ই রবিউল আওয়াল রোজ সোমবার জন্মগ্রহন করলেও তার ওফাতের প্রকৃত তারিখটি ছিল হিজরী ১১ সালের ১লা রবিউল আওয়াল রোজ সোমবার। স্বধর্মীদের অজ্ঞতা আর বিধর্মীদের চক্রান্তের কবলে পড়ে হয়ত কোন এক ভাবে এই সঠিক ইতিহাসটির বিকৃতি ঘটেছে। পবিত্র আল-কোরআনে আল্লাহ্‌ ‏এরশাদ করেন, “আজ আমি তোমাদের ধর্মকে পরিপূর্ণ করলাম, ‏আমার নেয়ামত পরিপূর্ণ করলাম এবং ইসলাম কে একমাত্র ধর্ম হিসেবে কবুল করে নিলাম।” (সুরা মায়েদাঃ আয়াত- ‏৩) ‏এই আয়াতটি ১০ই হিজরীর ৯ই জিলহজ্ব রোজ শুক্রবার অর্থাৎ বিদায় হজের দিন আরাফার ময়দানে নাজিল হয়েছিল। আর এই তারিখটি হযরত রাসুল ‎(সাঃ) ‏এর ওফাত লাভের প্রকৃত তারিখ নির্ণয়ে বিশেষ ভুমিকা পালন করে। বিশিষ্ট সাহাবী হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস ‎(রাঃ) ‏বলেন, “এই আয়াতটি ১০ম হিজরীর ৯ই জিলহজ্ব তারিখে নাজিল হয়। এরপর রাসূল ‎(সাঃ) ‏আর মাত্র ৮১ দিন পৃথিবীতে জীবিত ছিলেন।” (তফসীরে মা’রেফুল কোরআন) ‏তফসিরে দুররে মানসুরের ৩য় খণ্ডে বলা হয়েছে ‎“ইবনে জারির কর্তৃক ইবনে জুরাইজ হতে বর্ণিত হয়েছে, ‏তিনি বলেন-এই আয়াতটি নাজিল হওয়ার পর রাসুল ‎(সাঃ) ‏৮১ রাত দুনিয়াতে অবস্থান করেন।” ‏তফসিরে তাবারীর ৪র্থ খণ্ডে বলা হয়েছে, “হাজ্জাজ কর্তৃক ইবনে জুরাইজ হতে বর্ণিত হয়েছে, ‏তিনি বলেন-এই আয়াতটি নাজিল হওয়ার পর ৮১ রাত রাসূল ‎(সাঃ) ‏জীবিত ছিলেন।” ‏ইবনে জারির বলেন যে আরাফা দিবসের পর রাসুল ‎(সাঃ) ‏৮১ দিন জীবিত ছিলেন। ‎(তফসীরে ইবনে কাসীর- ‏২য় খণ্ড)ইমাম বাগবী বলেন, “হারুন ইবনে আনতারা তার পিতা হতে বর্ণনা করেন, ‏এই আয়াতটি অবতীর্ণ হওয়ার পর রাসুল ‎(সাঃ) ‏৮১ দিন জীবিত ছিলেন।” (তফসীরে মাযহারী-৩য় খণ্ড) ‏সুতরাং ১০ম হিজরীর বিদায় হজ্জের দিনটি মূলসুত্র ধরে ৮১তম দিন কবে হয় তা হিসাব করলে খুব সহজেই বের করা সম্ভভ যে রাসুল ‎(সাঃ) ‏আসলে কবে ওফাত লাভ করেছিলেন। এ কথাটি ঐতিহাসিক ভাবে প্রমানিত যে ১০ম হিজরীর ৯ই জিলহজ্ব হযরত রাসুল ‎(সাঃ) ‏এর আরাফার ময়দানে বিদায় হজ্জের ভাষণ দান কালে উক্ত আয়াতটি নাজিল হয়েছিল এবং তার পর তিনি আর মাত্র ৮১ দিন পৃথিবীর বুকে জীবিত ছিলেন। চন্দ্রবর্ষ হিসাব অনুযায়ী এক মাস ২৯ দিন হলে তার পরের মাস হয় ৩০ দিনে। এই হিসেবে জিলহজ্ব মাস ২৯ দিন, ‏মহররম মাস ৩০ দিন, ‏সফর মাস ২৯ দিন। এখন ১০ম হিজরীর ৯ই জিলহজ্ব থেকে হিসাব করলে দেখা যায় যে ওই জিলহজ্ব মাসের বাকি থাকে আর ২১ দিন, ‏তার পরের মাস অর্থাৎ ১১ হিজরীর মহরম মাসের ৩০ দিন এবং সফর মাসের ২৯ দিন। সর্বমোট ৮০ দিন। সেই হিসেবে ৮১ তম দিন হয় ১লা রবিউল আওয়াল। এবং সেই দিনটিও ছিল সোমবার। এখন এই ৩টি মাসের সব কয়টি মাস ২৯ দিন অথবা ৩০ দিন যাই হোক না কেন বিদায় হজ্জের দিন থেকে হিসেব করলে ৮১ তম দিন কখনই এবং কোন ভাবেই ১২ ই রবিউল হয় না।

#হযরত_মুহাম্মাদ (সাঃ) কে হত্যা করা হয়েছে
আল্লাহুমা সাল্লে আলা মুহাম্মাদ ওয়া আলে মুহাম্মাদ ।
খুবই গুরুত্বপুর্ন লেখা আশা করি মনোযোগ সহকারে পড়বেন সম্পুর্ন লেখাটা পড়বেন শেষ হওয়া অবধি এবং সাথে সাথে প্রত্যেকটা তথ্য ও রেফারেন্স হাদীসগুলো থেকে মিলিয়ে নিবেন ।
কোরআনে সূরা আলে ইমরান - ১৪৪ নং আয়াত থেকে,
وَمَا مُحَمَّدٌ إِلَّا رَسُولٌ قَدْ خَلَتْ مِنْقَبْلِهِ الرُّسُلُ ۚ أَفَإِنْ مَاتَ أَوْ قُتِلَ انْقَلَبْتُمْ عَلَىٰ
أَعْقَابِكُمْ ۚ وَمَنْ يَنْقَلِبْ عَلَىٰ عَقِبَيْهِ فَلَنْ يَضُرَّ اللَّهَشَيْئًا ۗ وَسَيَجْزِي اللَّهُ الشَّاكِرِينَ
And Muhammad is no more than a messenger; the messengers have already passed away before him; if then hedies or is killed will you turn back upon your heels? And whoever turns backupon his heels, he will by no means do harm to Allah in the least and Allahwill reward the grateful.
"--- আর মুহাম্মদ একজন রসূল বৈ তো নয় ! তাঁর পূর্বেও বহু রসূল অতিবাহিত হয়ে গেছেন । তাহলে কি তিনি যদি মৃত্যুবরণ করেন অথবা নিহত হন , তবে তোমরা পশ্চাদপসরণ করবে ? বস্তুতঃ কেউ যদি পশ্চাদপসরণ করে , তবে তাতে আল্লাহর কিছুই ক্ষতি-বৃদ্ধি হবে না । আর যারা কৃতজ্ঞ , আল্লাহ তাদের সওয়াব দান করবেন ---" ।
উপরের আয়াতে এই কথার ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছে যে , রাসুল (সাঃ) এর স্বাভাবিক মৃত্যু হয় নি বরঞ্চ তাঁকে হত্যা (শহীদ) করা হয়েছে । কারন أَفَإِنْ مَاتَ أَوْ قُتِلَ ,أَو এর মানে ‘ অথবা ’ ও হয় আবার ‘ বরঞ্চ ’ হিসাবে ধরা যায় ।
এখানে যে ভাবে বলা হচ্ছে তাতে দুটো মানে নেওয়া যেতে পারে । সুতরাং এটার মানে দাঁড়াল যে “ যদি তিনি মৃত্যুবরণ করেন বরঞ্চ কতল করা হয়।
নবী (সাঃ) কে শহীদ করা হয়েছ এটা আরও ভালো ভাবে বোঝা যায় যখন আমরা দেখি যে হজরত আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রাঃ) বলছেন যে ,
عَنْ عَبدِ اللَّهِ قَالَ لَأَنْ أَحْلِفَ تِسْعًا أَنَّ رَسُولَاللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قُتِلَ قَتْلًا أَحَبُّ إِلَيَّ مِنْ أَنْ أَحْلِفَ وَاحِدَةً أَنَّهُلَمْ يُقْتَلْ وَذَلِكَ بِأَنَّ اللَّهَ جَعَلَهُ نَبِيًّا وَاتَّخَذَهُ شَهِيدًا
“ আমি ন’বার কসম খেতে পারি যে, নবিকে হত্যা করা হয়েছে , কিন্ত একবারও কসম খাব না যে তাঁকে (কতল) করা হয়নি । আল্লাহ তাঁকে নবী ও শহীদ করেছেন ”।
-মুসনাদ এ আহমাদ ইবনে হাম্বাল ।
- মুসত্রাদক‘আলা সাহিহাইন তাহাকিক যাহাবিঃ বুখারি ও মুসলিমের standard এর হাদিস।
- মজমাউজ জওাদ, বর্ণনা কারিগন সব সিকাহ ( বিশস্ত)।
- কানজোল উম্মাল, তারিখ এ ঈসলাম, যাহাবি। তারিখ এ দামিস্ক, ইবনে আসাকির।
- আল বেদায়া ওয়ান নেহায়া, ইবনে কাসির।
আরও অনেক হাদিসের বইয়ে।
সুতরাং একথা বোঝা যাছে যে , নবী পাক (সাঃ) কে হত্যা করা হয়েছে । এটা আহলে সুন্নাহও মনে করে ।
এখন প্রশ্ন থাকে যে, #কে বা কারা কিভাবে নবী (সাঃ) কে হত্যা করেছে ?
আহলে সুন্নাহ তাঁদের চিন্তা ধার অনুসারে বলে যে,
যয়নব বিনতে হারিস একজন ইহুদি মহিলা,
যার ভাই মরহাবকে ইমাম আলি হত্যা করে ছিলেন । খাইবারে যুদ্ধের পরে ঐ হিহুদী মহিলা বিষ খাবারে বিষ দিয়েছিল, সেই বিষক্রিয়াতে নবী (সাঃ) মারা যান।
সংক্ষিপ্ত ঘটনা -
#খাইবার যুদ্ধে ইহুদিদের পরাজয়ের পরে যখন নবী পাক (সাঃ) ঐখানে অবস্থান করছিলেন তখন যয়নব বিনতে হারিস নামে এক ইহুদি মহিলা রসুল (সাঃ) কে দাওয়াত করে বিষ মেশানো বকরি রান্না করে দেন , যাতে মুহাম্মাদ (সাঃ) কে পরীক্ষা করা যায় যে , তিনি একজন আল্লাহ প্রেরিত সত্যিকারের রাসুল ।
হাদিস আর ইসলামের ইতিহাসের কিতাব থেকে আমরা এই বিষয় তিন ধরনের বর্ণনা পাই-
এখানে আমি #সহীহ বুখারি ও মুসলিম থেকে একটা একটা করে হাদিস উল্লেখ করছি -
১) রাসুল (সাঃ) রান্না করা উক্ত গোস্ত খান এবং বুঝতে পারেন যে , এতে বিষ মেশানো আছে । এবং ইহুদি মহিলাটাকে হত্যা করা হয়নি ।
#সহিহ বুখারি হাদিস নং - ২৪৪১
আবদুল্লাহ ইবনু আবদুল ওয়াহাব (রহঃ) আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে , তিনি বলেন , জনৈক ইয়াহূদী মহিলা নবী (সাঃ) এর খিদমতে বিষ মিশানো বকরী নিয়ে এলো । সেখান থেকে কিছু অংশ তিনি (সাঃ) খেলেন এবং খাওয়ার পরে বিষক্রিয়া টের পেয়ে মহিলাকে হাজির করা হল । তখন বলা হল , আপনি কি এই মহিলাকে হত্যার আদেশ দিবেন না ?
তিনি (সাঃ) বললেন , না । আনাস (রাঃ) বলেন নবী (সাঃ) এর (মুখ গহবরের) তালুতে আমি বরাবরই বিষ ক্রিয়ার আলামত দেখতে পেতাম ।
২) রাসুলের (সাঃ) ও একজন সাহাবী ঐ গোস্ত খেলেন আর ঐ সাহাবী মারা গেলেন। 
রাসুল (সাঃ) বুঝতে পারলেন যে , খাবারে বিষ দেওয়া আছে । ইহুদি মহিলাকে হত্যা করা হয় ।
#সহিহ বুখারি - হাদিস নং - ৩৯২৫ 
আবদুল্লাহ ইবনু ইউসুফ (রহঃ) আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে , যখন খায়বার বিজয় হয়ে গেল তখন ইহুদীদের পক্ষ থেকে রান্না করা একটি বকরী রাসূল (সাঃ) কে হাদিয়া হিসাবে দেওয়া হয় । সেই রান্না করা বকরীটিতে বিষ মেশানো ছিল । খায়বার যুদ্ধে যখন ইহুদীদের জন্য মুসলমানদের আনুগত্য স্বীকার ব্যতীত অন্য কোন পথ বাকী রইল না তখন তারা ঘৃণ্য ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয় । ইহুদী হারিসের কন্যা ও সালাম ইবনু মুশফিমের স্ত্রী যয়নাব একটি বকরীর গোশতে বিষ মিশিয়ে তা রাসূল (সাঃ) এর জন্য হাদিয়া হিসাবে পাঠাল । রাসূল (সাঃ) বকরীটির গোশত খেলেও বিষ তাঁর কোন ক্ষতি করতে পারে নি বটে , কিন্ত তাঁর সাহাবী বার আ ইবনু মা’রূর (রাঃ) বিষক্রিয়ার ফলে শহীদ হন । ষড়যন্ত্রকারী মহিলা ধরা পড়ার পর প্রথমে তাকে মাফ করে দেওয়া হয়েছিল , কিন্ত পরবর্তীতে যখন বারাআ (রাঃ) মারা গেলেন তখন ‘ কিসাস ’ হিসেবে তাকে হত্যা করা হয় ।
৩) রাসুল (সাঃ) খাওয়ার আগেই ইহুদি মহিলাকে ডেকে পাঠান ও সরাসরই বলে দেন যে , এতে বিষ মেশান আছে ।
#সহিহ বুখারি - হাদিস নং - ৫৩৬২
কুতায়বা (রহঃ) আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত । 
তিনি বলেন , খায়বার যখন বিজয় হয় , তখন রাসুলুল্লাহ ( সাঃ) এর নিকট হাদীয়া স্বরুপ একটি ভুনা বকরী প্রেরিত হয় । এর মধ্যে ছিল বিষ । 
তখন রাসুলুল্লাহ (সাঃ) বলেন যে , এখানে যত ইয়াহুদী আছে আমার কাছে তাদের জমায়েত কর । তার কাছে সবাইকে জমায়েত করা হলে । রাসুলুল্লাহ (সাঃ) তাদের সন্মোধন করে বললেন , আমি তোমাদের নিকট একটি বিষয়ে জানতে চাই , তোমরা কি সে বিষয়ে আমাকে সত্য কথা বলবে ?
তারা বলল , হ্যা , হে আবূল কাসিম ।
রাসুলুল্লাহ (সাঃ) বললেন , তোমাদের পিতা কে ? 
তারা বলল , আমাদের পিতা অমুক । 
রাসুলুল্লাহ (সাঃ) বললেন , তোমরা মিথ্যে বলেছ বরং তোমাদের পিতা অমুক । 
তারা বলল , আপনি সত্য ও সঠিক বলেছেন । 
এরপর তিনি (সাঃ) বললেন , আমি যদি তোমাদের নিকট আর একটি প্রশ্ন করি , তা হলে কি তোমরা সে ব্যাপারে আমাকে সত্য কথা বলবে ? 
তারা বলল , হে আবূল কাসিম , যদি আমরা মিথ্যে বলি তবে তো আপনি আমাদের মিথ্যা জেনে ফেলবেন , যেমনিভাবে জেনেছেন আমাদের পিতার ব্যাপারে । 
তখন তিনি (সাঃ) বললেন , তোমরা কি এ বকরীর মধ্যে বিষ মিশ্রিত করেছ ?
তারা বলল , হ্যা । 
তিনি (সাঃ) বললেন , কিসে তোমাদের এ কাজে উদ্ভুদ্ধ করেছে ?
তারা বলল , আমরা চেয়েছি !যদি আপনি নবুওয়াতের দাবীতে মিথ্যাবাদী হন , তবে আমরা আপনার থেকে মুক্তি পেয়ে যাব । আর যদি আপনি সত্য নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হন , তবে এ বিষ আপনার কোন ক্ষতি করতে পারবে না ।
বিঃদ্রঃ - উপরে একই ঘটনার সহিহ হাদিসের তিন রূপ দেওয়া হল - এই বিষয় আরও কিছু জানা যায় যে , ইহুদি মহিলা পরবর্তীতে #মুসলিম হয়ে গিয়েছিল ।
যাইহোক , #খাইবারের যুদ্ধ ৬য় হিজরিতে হয়েছিল আর রাসুল (সাঃ) ১০ ম হিজরিতে মারা যান । 
এ কথা বোধগম্যের বাইরে যে , বিষ পানের ৪ বছর পর কি ভাবে একজন মানুষ বেঁচে থাকতে পারে ! 
ধরে নিলাম যে , রাসুল (সাঃ) ঐ গোস্ত খেয়েছিলেন ।
ঐ ইহুদিদের কথা অনুযায়ী ওরা #বিষ দিয়েছিল রাসুল (সাঃ) এর থেকে তাৎক্ষনিক ভাবে মুক্তি পাওয়ার জন্য ।
অথচ এটাও দেখা যাচ্ছে যে , রাসুল (সঃ) আদৌও ঐ গোস্ত খান নি ।
এখন এই প্রশ্নও উঠতে পারে যে , ঐ ইহুদি মহিলা বিষ দিয়ে ছিল আর এটাপরীক্ষা কারার জন্য যে , তিনি প্রকৃত নবী কিনা ।
এখন যদি রাসুল পাকের (সাঃ) উপর #বিষক্রিয়া হয় বা অন্য একজন সাহাবা মারা যাওয়ার পর বোঝা যায়ে যে , বিষ আছে । তবে তো ঐ মহিলার পরীক্ষাতে রসুল (সাঃ) পাস করতে পারলেন না ।
আর ঐ মহিলা মুসলিম বা হবেন কেন ?
এখন দেখা যাক , 
রাসুল (সাঃ) এর মৃত্যুর সময়কার কিছু হাদিস ।
যেখানে বলা হচ্ছে যে , নবী (সাঃ) যখন অসুস্থ ছিলেন , সেই সময় তিনি (সাঃ) ঘুমাচ্ছিলেন। তখন আয়শা নবী (সাঃ) এর মুখে কিছু দ্রব্য ঢুকিয়ে দেন। তখন রাসুল (সাঃ) কড়া ভাবে আয়শাকে বলেছিলেন যে , এভাবে তাঁর মুখে যেন কিছু না দেওয়া হয় ।
সূত্র - সহিহ আল বুখারি , আধুনিক প্রকাশনী -ঢাকা , বাংলাদেশ।
৫২৯৪ - ইবনে আব্বাস ও আয়শা থেকে বর্ণিত । 
নবী (সাঃ) ইন্তেকাল করলে হযরত আবু বকর নবী (সাঃ) কে চুমু দিলেন । হযরত আয়েশা (রাঃ) আরও বলেন , নবীজী (সাঃ) এর অসূখের সময় আমরা তার মুখে কিছু ঢেলে দিলাম । তখন তিনি রাসুল (সাঃ) আমাদের ইশারা দিতে থাকলেন যে , তোমরা আমায় মুখে কিছু ঢেল না । আমরা মনে করলাম , এটা ঔষধের প্রতি একজন রোগীর অরুচির প্রকাশ মাত্র । এরপর তিনি যখন সুস্থবোধ করলেন তখন বললেন , আমি কি তোমাদের আমার মুখে কিছু ঢালতে নিষেধ করি নি ? আমরা বললাম , আমরাতো ঔষধের প্রতি রোগীর সাধারন অনীহা মনে করেছিলাম । তখন তিনি রাসুল (সাঃ) বললেন , আমি এখন যাদের এ ঘরে দেখতে পাচ্ছি তাদের সকলকে এটা না গিলিয়ে ছাড়ব না শুধুমাত্র আব্বাস (রাঃ) ছাড়া । কেননা, তিনি তোমাদের সংগে জড়িত ছিলেন না ।
৬৪২০ - হযরত আয়েশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত -
তিনি বলেন , আমরা নাবী (সাঃ) এর অসুখের সময় তার মুখের এক কিনারায় ঔষধ ঢেলে দিলাম ।
তিনি (সাঃ) বলেন , #তোমরা আমার মুখের কিনারায় ঔষধ দিও না । আমরা মনে করলাম , রোগী ঔষধ সেবন অপছন্দ করেই থাকে। যখন তাঁর হুশ ফিরে এলো , তখন তিনি (সাঃ) বললেন , তোমাদের মধ্যে যেন এমন কেউ থাকে না , যার মুখের কিনারায় জোর পুর্বক ঔষধ ঢেলে দেয়া না হয় শুধুমাত্র আব্বাস ব্যতীত।
কেননা , সে তোমাদের কাছে হাজির ছিল না ।
৬৪৩০ - মূসা’দ্দাদ (রহঃ) হযরত আয়েশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত - তিনি বলেন , আমরা নবী (সাঃ) এর অসুখের সময় তার মুখের কিনারায় ঔষধ ঢেলে দিলাম । আর তিনি (সাঃ) আমাদের দিকে ইশারা করতে থাকলেন যে , তোমরা আমার মূখের কিনারায় ঔষধ ঢেলে দিও না । আমরা মনে করলাম যে , রোগীর ঔষধের প্রতি অনীহা-ই এর কারণ । যখন তিনি (সাঃ) হুশ ফিরে পেলেন , তখন বললেন , #আমাকে জোর পূর্বক ঔষধ সেবন করাতে কি তোমাদেরকে নিষেধ করি নি ? আমরা বললাম , রোগীর ঔষধের প্রতি অনীহা তাই এর কারণ বলে আমরা মনে করেছি । তখন তিনি (সাঃ) বললেন , তোমাদের মাঝে যেন এমন কেউ না থাকে যার মুখে জোরপূর্বক ঔষধ ঢালা হয় আর আমি দেখতে থাকব শুধু আব্বাস ব্যতীত । কেননা , সে তোমাদের সাথে ছিল না ।
#নোট - উপরে অনেক বেশির ভাগ জায়গাতে ঔষধ শব্দ অরিজিনালে নেই অনুবাদক বসিয়ে দিয়েছেন , বরং অরিজিনাল আরবীতে এটা আছে ‘(কিছু একটা) ঢেলেদিলাম’) ।
সুতরাং উপরের হাদিস সমূহ থেকে দেখা যাচ্ছে যে , #রাসুল (সাঃ) তার অসুস্থতার সময় হযরত আয়েশা এবং আরও কেউ রসুলের (সাঃ) মুখে কিছু ঢুকিয়ে দেন...যেটা রাসুল পাক (সাঃ) নিষেধ করার পরেও । রাসুল (সাঃ) পরিষ্কার ভাবে বারণ করেছিলেন যে , তাঁর মুখে যেন কিছু না দেওয়া হয় । পরে রাসুল (সাঃ) একটু হুস ফিরে পেলে রাগান্বিত হয়ে বললেন যে , এটাকে সবাইকে মুখে দিতে হবে এবং রাসুল (সাঃ) সেটা দেখবেন , শুধু হযরত আব্বাস (রাঃ) ব্যতীত কারণ তিনি ঐ সময় ছিলেন না ।
রাসুল (সাঃ) এর মৃত্যুর কারণ হিসাবে আয়েশা এটা প্রচার করতে লাগলেন যে , টেস্টিস এ #টিউমার ফেটে গিয়ে মারা গিয়েছেন ।
মুসনাদে আহমাদ ও আবু ইয়ালাআল মাসুলি -
حدثنا كامل ، حدثنا ابن لهيعة ، حدثني أبو الأسود ، عنعروة ، عن عائشة ، قالت : مات رسول الله صلى الله عليه وسلم من ذات الجنب
কিন্ত কেউ এটাকে বিশ্বাস করতে চায় নি কারণ রাসুল (সাঃ) আগেই বলে গিয়েছিলেন যে , এই ধরনের রোগ আমাদের রাসুলদের হয় না ।
এই সব দেখে আয়েশা বললেন যে , খাইবার যুদ্বে খাবারের বিষ ক্রীয়ায় তিনি (সাঃ) মারা গিয়েছেন ?
আপনারা উপরে আহলে সুন্নিদের সহীহ হাদিস থেকে বুঝতেই পারছেন যে , খাইবার যুদ্বে আল্লাহের রাসুল (সাঃ) বিষ খান নি বলেই বোঝা যাচ্ছে । আবার খেলেও তাঁর উপর ঐ বিষ কোন ক্রীয়া করে নি । 
আবার ঐ বিষ দেওয়া হয়েছিল ৬ষ্ঠ হিজরিতে এবং রাসুল (সাঃ) ইন্তেকাল করেছেন ১০ম হিজরিতে । তাহলে দীর্ঘ চার দশক কিভাবে একজন লোক দিব্যি বেঁচে থাকতে পারে ? এতো গেল আহলে সুন্নাতের হাদিস গ্রন্থ থেকে দলিল ।
এখন দেখা যাক যে , শীয়া হাদিস বা তাফসির বই এ কি বলা হচ্ছে-
তাফসির এ আইয়াস ও আল্লামা মাজলিশি ও আলি ইবনে ইব্রাহিম কুম্মি যিনি ইমাম হাসন আল আসকারী এর সমসাময়িক ছিলেন -
ইমাম জাফর সাদিক এর থেকে বর্ণনা করেছেন যে , তার মুল মর্ম হল যে রাসুল (সাঃ) এর ওফাতের শেষ দিনের দিকে আবুবকর আর ওমরের ইশারাতে আয়শা ও হাফসা রাসুল (সাঃ) কে বিষাক্ত কিছু খাইয়ে ছিলেন
সুপ্রিয় পাঠক, এই লেখাটিতে নিজস্ব কোন কিছুই বলা হয়নি । ইতিহাস থেকে যা পাওয়া যায় তাই এখানে তুলে ধরা হয়েছে। এখন এই লেখাটা গ্রহন করা বা না করা যার যার ব্যক্তিগত অভিরুচি ।
তবে হ্যা , এই বিষয় আপনাদের শালীন ভাষায় যৌক্তিক যে কোন তথ্যাদি বা মতামত সাদরে গ্রহনীয় ।

⭐⭐দয়াল রাসূল পাক (সঃ) এর জন্মদিন ও মৃত্যু দিন কি একই তারিখে হয়েছিলো ❓
নাকি মুসলমানদের আনন্দ নষ্ট করেছিলো ষড়যন্ত্রকারীরা ❓

 ***সমাজে দীর্ঘ কাল ধরে এটাই প্রচলিত যে আমাদের দয়াল রাসূল (সা:) ১২ই রবিউল আওয়াল রোজ সোমবার জন্মগ্রহন করেছিলেন এবং তিনি ঐ একই তারিখে ওফাত লাভ করেন । কিন্তু  দয়াল রাসূল (সাঃ) হিজরী পূর্ব ৫৩ সালের ১২ই রবিউল আওয়াল রোজ সোমবার জন্মগ্রহন করলেও তার ওফাতের প্রকৃত তারিখটি ছিল হিজরী ১১ সালের ১লা রবিউল আওয়াল রোজ সোমবার। স্বধর্মীদের অজ্ঞতা আর বিধর্মীদের চক্রান্তের কবলে  পড়ে হয়ত কোন এক ভাবে এই সঠিক ইতিহাসটির বিকৃতি ঘটেছে।    
 
    পবিত্র আল-কোরআনে আল্লাহ্‌ এরশাদ করেন, 
“আজ আমি তোমাদের ধর্মকে পরিপূর্ণ করলাম, আমার নেয়ামত পরিপূর্ণ করলাম এবং ইসলাম কে একমাত্র ধর্ম হিসেবে কবুল করে নিলাম।” 
(সুরা মায়েদাঃ আয়াত- ৩)
   এই আয়াতটি ১০ই হিজরীর ৯ই জিলহজ্ব রোজ শুক্রবার অর্থাৎ বিদায় হজের দিন আরাফার ময়দানে নাজিল হয়েছিল। আর এই তারিখটি হযরত রাসুল (সাঃ) এর ওফাত লাভের প্রকৃত তারিখ নির্ণয়ে বিশেষ ভুমিকা পালন করে।  
 
    বিশিষ্ট সাহাবী হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রাঃ) বলেন, 
“এই আয়াতটি ১০ম হিজরীর ৯ই জিলহজ্ব তারিখে নাজিল হয়। এরপর রাসূল (সাঃ) আর মাত্র ৮১ দিন পৃথিবীতে জীবিত ছিলেন।” 
(তফসীরে মা’রেফুল কোরআন)      
 
     তফসিরে দুররে মানসুরের ৩য় খণ্ডে বলা হয়েছে 
“ইবনে জারির কর্তৃক ইবনে জুরাইজ হতে বর্ণিত হয়েছে, তিনি বলেন-
এই আয়াতটি নাজিল হওয়ার পর রাসুল (সাঃ) ৮১ রাত দুনিয়াতে অবস্থান করেন।”
 
     তফসিরে তাবারীর ৪র্থ খণ্ডে বলা হয়েছে, “হাজ্জাজ কর্তৃক ইবনে জুরাইজ হতে বর্ণিত হয়েছে, তিনি বলেন-এই আয়াতটি নাজিল হওয়ার পর ৮১ রাত রাসূল (সাঃ) জীবিত ছিলেন।”
  
     ইবনে জারির বলেন যে আরাফা দিবসের পর রাসুল (সাঃ) ৮১ দিন জীবিত ছিলেন। (তফসীরে ইবনে কাসীর- ২য় খণ্ড)
ইমাম বাগবী বলেন, “হারুন ইবনে আনতারা তার পিতা হতে বর্ণনা করেন, এই আয়াতটি অবতীর্ণ হওয়ার পর রাসুল (সাঃ) ৮১ দিন জীবিত ছিলেন।” 
(তফসীরে মাযহারী-৩য় খণ্ড)

    সুতরাং ১০ম হিজরীর বিদায় হজ্জের দিনটি মূলসুত্র ধরে ৮১তম দিন কবে হয় তা হিসাব করলে খুব সহজেই বের করা সম্ভভ যে রাসুল (সাঃ) আসলে কবে ওফাত লাভ করেছিলেন।  
 
    এ কথাটি ঐতিহাসিক ভাবে প্রমানিত যে ১০ম হিজরীর ৯ই জিলহজ্ব  হযরত রাসুল (সাঃ) এর আরাফার ময়দানে বিদায় হজ্জের ভাষণ দান কালে উক্ত আয়াতটি নাজিল হয়েছিল এবং তার পর তিনি আর মাত্র ৮১ দিন পৃথিবীর বুকে জীবিত ছিলেন।
   চন্দ্রবর্ষ হিসাব অনুযায়ী এক মাস ২৯ দিন হলে তার পরের মাস হয় ৩০ দিনে। এই হিসেবে জিলহজ্ব মাস ২৯ দিন, মহররম মাস ৩০ দিন, সফর মাস ২৯ দিন। এখন ১০ম হিজরীর ৯ই জিলহজ্ব থেকে হিসাব করলে দেখা যায় যে ওই জিলহজ্ব মাসের বাকি থাকে আর ২১ দিন, তার পরের মাস অর্থাৎ ১১ হিজরীর মহরম মাসের ৩০ দিন এবং সফর মাসের ২৯ দিন। সর্বমোট ৮০ দিন। সেই হিসেবে ৮১ তম দিন হয় ১লা রবিউল আওয়াল। এবং সেই দিনটিও ছিল সোমবার। এখন এই ৩টি মাসের সব কয়টি মাস ২৯ দিন অথবা ৩০ দিন যাই হোক না কেন বিদায় হজ্জের দিন থেকে হিসেব করলে ৮১ তম দিন কখনই এবং কোন ভাবেই ১২ ই রবিউল হয় না।

মন্তব্যসমূহ

জনপ্রিয় পোস্টসমূহ

ইসলামে হযরত আবু তালিব আঃ এর অবদান:::::::::::::_________পর্ব (((((৩)))))_____________:::::::::::::::মহানবী (সা.) জন্মের পূর্বেই পিতাকে হারিয়েছেন। মায়ের কাছে তিনি পিতা আব্দুল্লার ইন্তেকালের কথা জানতে পেরেছেন। ছয় বছর বয়সে তিনি মাতা আমেনার স্নেহ থেকেও বঞ্চিত হন।ফলে তাঁর লালন-পালনের ভার পিতামহ জনাব আব্দুল মোতালিব গ্রহণ করেন। মাত্র দুই ছর পর তিনিও এ পৃথীবি ছেড়ে চলে গেলেন। শিশু মোহাম্মদ (সাঃ) অসহায় হয়ে পড়লেন। মহিমান্বিত আল্লাহ তাঁর হাবিবের জন্য নিজ পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে যাচ্ছেন। আট বছর বয়সে শুরু হলো নবী (সা.)-এর জীবনের এক নতুন অধ্যায় , তাঁর দায়িত্ব গ্রহণ করলেন পিতৃব্য হযরত আবু তালিব। মোহাম্মদ (সা.)-কে চাচা আবু তালিব ও চাচি ফাতেমা বিনতে আসাদ প্রাণাধিক ভালবাসতেন। মোহাম্মদ (সা.)-কে তিনি কখনো মায়ের শূন্যতা বুঝতে দেননি। নিজেদের সীমাবদ্ধতা থাকলেও মোহাম্মদ (সা.)-কে তা অনুধাবন করতে দেননি। এই মহিমান্বিত পরিবারের অকৃত্রিম ভালবাসা , আদর-যন্ন আর লালন-পালন ও ছত্রছায়ায় প্রিয় নবী (সা.)-এর শিশু , কিশোর ও যৌবনকাল অতিবাহিত হয়েছিল। জীবনের সেই সময়গুলো কত সুখময় ছিল নবী (সা.) তা বুঝতে পেরেছিলেন , যখন মাতৃসুলভ চাচি ইন্তেকাল করলেন।নবী (সা.) সেই মহিয়সী চাচিকে‘ মা’ বলেই ডাকতেন। তাঁর ইন্তেকালে নবী (সা.) দীর্ঘদিন অশ্রুসজল ছিলেন। হযরত আবু তালিব যেমনি পিতার ন্যায় স্নেহ ভালবাসা দিয়ে নবীকে আগলে রেখেছেন , তেমনি তাঁর ভরণ-পোষণ , পোশাক-পরিচ্ছেদ ও অন্যন্য প্রয়োজন মিটিয়েছেন অকৃপণ ভাবে। এমনকি নিজের সন্তানের চেয়েও নবীকে দিয়েছেন অগ্রাধিকার। নিজেরা কষ্টে থাকলেও নবী (সা.)-এর কষ্টে থাকা তিনি সহ্য করতে পারতেন না।এখানে আমি একটি হাদীস উপস্থাপন করছি: রাসূল (সা.) বলেছেন ,“ যে ব্যক্তি তার জান-মাল , ইজ্জত-সম্মান ও সন্তানসন্ততি এবং সকল মানুষের চাইতে আমাকে অধিক ভালবাসে না তার ঈমান পরিপূর্ণ নয়” । উল্লিখিত হাদীসের আলোকে প্রমাণ হয় হযরত আবু তালিব ছিলেন একজন পরিপূর্ণ ঈমানদার। একজন স্নেহবৎসল পিতা , দয়ালু চাচা ও একজন দরদি অভিভাবক। তাঁরা উভয়ই চাচা এবং ভ্রাতুষ্পুত্র একে অন্যের প্রতি এতটাই অনুরোক্ত ছিলেন যেন মনে হতো তাঁদের জীবন পরস্পরের ওপর নির্ভরশীল। দেশে বিদেশে হযরত আবু তালিব আঃ যেখানেই সফর করতেন নবীকে সাথে রাখতেন। যে কারণে আরবের লোকেরা মোহাম্মদ (সা.)-কে‘ আবু তালিবের ইয়াতিম’ নামেও ডাকত। ভাতিজাকে কখনও তিনি একা ছাড়তেন না , এমনকি ঘুমানো কালেও পাশে নিয়ে ঘুমাতেন এরূপে নবী (সা.)-এর 8 বছর বয়স থেকে 25 বছর বয়স পর্যন্ত সুদীর্ঘ 17 টি বছর তিনি হযরত আবু তালিবের গৃহে অবস্থান করেন।আর যেখানে এত বছর নবী (সা.) অবস্থান করলেন , সেখানে যে খাওয়া দাওয়া করেছেন তা নিশ্চই হালাল ছিল। কারণ নবী-রাসূলগণ হারাম খাদ্য গ্রহণ করেন না। তাহলে যারা বলেন ,“ আবু তালিব ঈমান আনেননি” । তারা নবী (সা.)-কে কোথায় পৌঁছালেন ? কারণ পবিত্র কোরআনে সূরা তওবার 28 নং আয়াতে আল্লাহ পাক উল্লেখ করছেন :) يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا إِنَّمَا الْمُشْرِ‌كُونَ نَجَسٌ(“ হে ইমানদারগন! নিশ্চই মুশরিকরা হচ্ছে অপবিত্র” ।📚📚📚📚তাই ঐ সকল ওলামাদের স্মরণ করিয়ে দিতে চাই আপনাদের উক্তি সত্য হলে , নবী (সা.) কি 17 বছর হালাল খাদ্য গ্রহণ থেকে বঞ্চিত ছিলেন ? যা আদৌ বিশ্বাস যোগ্য নয়। পবিত্র কোরআনে আমরা জানতে পেরেছি নবী মূসা (আ.)-কে ফেরাউনের স্ত্রী আছিয়া (আ.) যখন লালন-পালনের সিদ্ধান্ত নিলেন এবং এই শিশুকে দুধ পান করানোর জন্য ধাত্রীর আহবান করলেন অতঃপর অসংখ্য ধাত্রীর আগমণ ঘটল কিন্তু কেউ শিশু মূসাকে দুগ্ধ পান করাতে সক্ষম হল না। তখন সেখানে উপস্থিত নবী মূসা (আ.)-এর আপন ভগ্নী বললেন ,“ আমি আপনাদের এমন এক ধাত্রীর সন্ধান দিতে পারি , হয়তো এই শিশু তাঁর দুগ্ধ পান করবে” । আর বাস্তবেও তাই ঘটল , অর্থাৎ আল্লাহ তাঁকে মায়ের কাছে ফিরিয়ে নিলেন এবং মায়ের দুগ্ধই পান করালেন। উক্ত ঘটনায় ইহাই প্রমানিত হয় যে , আল্লাহর মনোনীত নবী-রাসূলগণ আল্লাহর ইচ্ছা ব্যতীত যখন যা ইচ্ছা খাদ্য কিংবা পানীয় গ্রহণ করেন না।দুঃখজনক হলেও সত্য যে , আমাদের প্রিয় নবী (সা.) সম্পর্কে কিছু সংখ্যক মুসলমান নামধারী উম্মত এমন সব প্রচার প্রচারণা চালাচ্ছেন , যা শুনে অন্য ধর্মের অনুসারীরাও লজ্জাবোধ করেন। যেমন রাসূল (সা.)-কে সদা সর্বদা অভাবী , ক্ষুধার্ত ও অসহায় হিসেবে উপস্থাপন , তালিওয়ালা জামা পরিধারণ , রাসূল (সা.)-এর সিনাছাক করে ময়লা দূরিকরণ , রাসূল (সা.)-কে নিরক্ষর নির্ধারণ ও চল্লিশ বছর পর নবী নির্ধারণ সহ বেশ কিছু অসঙ্গতিপূর্ণ কিচ্ছা-কাহিনী আমাদের সমজে প্রচলিত আছে। অথচ পবিত্র কোরআনে বেশকিছু সংখ্যক নবীর নাম ও বর্ণনা রয়েছে , যাঁদের কারো কখনো সিনাছাক করতে হয়নি এবং কেহ নিরক্ষর ছিলেন এমন প্রমাণও নেই। তাই প্রিয় নবী (সা.)-এর উম্মত হিসাবে প্রত্যেক মুসলমানের অন্তত নূন্যতম আকিদা এই হওয়া উচিৎ ছিল যে , আমাদের সমাজে যে সকল বক্তব্য রাসূল (সা.)-এর মান-মর্যাদাকে হেয় প্রতিপন্ন করে এবং ভিন্ন ধর্মের লোকেদের কাছে রাসূল (সা.)-এর শাণ ও মানকে প্রশ্নের সন্মূখিন করে তোলে , অন্তত সে সকল প্রচার-প্রচারণা থেকে বিরত থাকা।উদহরণ স্বরুপ বলা যেতে পারে যে , ইসলামের ইতিহাসের প্রথম তিন খলিফার সন্মানিত পিতাগণ , কে কোন অবস্থানে ছিলেন বা তাঁরা প্রকাশ্যে কলেমা পড়ে ইসলামের ছায়াতলে এসেছিলেন কি না এবিষয়ে ইতিহাসে তেমন কোন আলোচনা পরিলক্ষিত হয় না। অথচ চতুর্থ খলিফার সম্মানিত পিতা সম্পর্কে যারা মর্যাদাহানীকর বক্তব্য দিয়ে যাচ্ছেন তারা কি নিশ্চিত বলতে পারেন যে , দ্বীন ইসলাম এতে কত টুকু উপকৃত হয়েছে ?আমাদের প্রিয়নবী হযরত মোহাম্মাদ (সা.)-এর 8 বছর বয়স থেকে শুরু করে তাঁর 50 বছর বয়স পর্যন্ত সুদীর্ঘ 42 বছরের এক অকৃত্রিম অভিভাবক ছিলেন হযরত আবু তালিব। তিনি যে কেবলমাত্র নবী (সা.)-এর অভিভাবক ছিলেন এমন নয় , তিনি ছিলেন সত্য ও ন্যায়ের প্রতিষ্ঠাতা , কল্যানের অগ্রদূত , মজলুমের বন্ধু ও জালেমের শত্রু। নবী (সা.)-এর বিভিন্ন বক্তব্যের মাধ্যমেও তা প্রকাশ পেয়েছে।হযরত আবু তালিব সম্পর্কে কিছু লিখতে গিয়ে ক্ষুদ্র একজন লেখক হিসেবে যে বিষয়টি বারবার আমার অনুভূতিতে নাড়া দিয়েছে তা সমীপে প্রকাশ করছি।আল্লাহুম্মা সাল্লে আলা মোহাম্মদ দিন ওয়া আলে মোহাম্মদ ওয়া আজ্জিল ফারজাহুম খালিফা তুল বিলা ফাসাললা'নাতুল্লাহি আল্লাল কাজেবিননিবেদক______ কবির উদ্দিন

আল্লাহুম্মা সাল্লে আলা মোহাম্মদদিন ওয়া আলে মোহাম্মদনবী-নন্দিনী হযরত ফাতিমা যাহরার মাহাত্ম্য যতই বর্ণনা করা হোক না তা অপূর্ণই থেকে যাবে ঠিক যেমনি জানা যায়নি তাঁর পবিত্র কবর কোথায় রয়েছে এবং তা গোপন বা অজ্ঞাত থাকার রহস্যই বা কী।তিনি কেবল সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ নারী ছিলেন না। বলা হয় মহান আল্লাহর পর সর্বশ্রেষ্ঠ সৃষ্টি হলেন মহানবী হযরত মুহাম্মাদ (সা) এবং তাঁর পর সর্বশ্রেষ্ঠ সৃষ্টি হলেন আমিরুল মু'মিনিন হযরত আলী (আ)। আর তাঁর পরই সর্বশ্রেষ্ঠ সৃষ্টি হলেন হযরত ফাতিমা। তাই এমন ব্যক্তিদের মহিমা ও মহত্ত্ব পুরোপুরি তুলে ধরা মহান আল্লাহর পর কেবল এই তিন শীর্ষ সৃষ্টির পক্ষেই সম্ভব। বলা হয় ইমাম হাসান ও হুসাইনসহ মাওলা মোহাম্মদ রাসুলুল্লাহর আহলে বাইতের ১১ জন সদস্য মা ফাতিমাকে তাঁদের জন্য আদর্শ বা হুজ্জাত বলে মনে করতেন।এমন কোনো নারীর কথা কি কল্পনা করা যায় যিনি তার দুই শিশু-সন্তানসহ তিন দিন ধরে ক্ষুধার্ত হওয়া সত্ত্বেও স্বামীকে খাবার সংগ্রহের কথা বলছেন না ইসলামের জন্য তাঁর গুরুত্বপূর্ণ কাজে মনোযোগ বিঘ্নিত হবে বলে? অথবা এমন নারীর কথা কি চিন্তা করা যায় যিনি পর পর তিন দিন শুধু পানি পান করে রোজা রাখা সত্ত্বেও ইফতারের সময় ক্ষুধার্ত সাহায্যপ্রার্থীকে খাদ্য দেয়ার জন্য সেই তিন দিন কেবল পানি দিয়েই ইফতার করেন? আসলে হযরত ফাতিমা যাহরা ছিলেন মানবজাতির চিরন্তন গৌরব ও আদর্শ মানুষের প্রতীক তথা মানবতা ও মনুষ্যত্বের পূর্ণতারঅন্যতম মডেল। এ ধরনের মানুষ পৃথিবীতে জন্ম না নিলে আদর্শের দিক থেকে মানবজাতির মধ্যে বিরাজ করতো ব্যাপক অপূর্ণতা এবং আদর্শিক শূন্যতা। মাওলা মোহাম্মদ সাঃ এর পুত্র সন্তানরা শৈশবেই ইন্তিকাল করায় মক্কার কাফিররা যখন মহানবীকে আবতার বা নির্বংশ বলে বিদ্রূপ করতো তখন মহান আল্লাহ তাঁকে দান করেন হযরত ফাতিমা যাহরা। পবিত্র কুরআনে তাঁকে উল্লেখ করা হয়েছে 'কাওসার' হিসেবে যার অর্থ মহত্ত্ব আর নেয়ামতের চির-প্রবহমান ঝর্ণা। আল্লামা ফখরুদ্দীন রাযী বলেছেন, হযরত ফাতিমার শানেই সুরা কাওসার নাযিল হয়েছে। তিনি বলেন, অনেক অত্যাচার সত্ত্বেও হযরত ফাতিমার বংশধারা পৃথিবীতে টিকে আছে, অন্যদিকে বনু উমাইয়্যা ধ্বংস হয়ে গেছে।অবশ্য পরবর্তী যুগে বনু আব্বাসও রাসূলের পরিবারের ওপর নিষ্ঠুর নির্যাতন চালিয়েছিল। অবশেষে তারাও ধ্বংস হয়ে গেছে। যারা রাসূলের বিরুদ্ধে কথা বলত তাদের বংশধরদের কোন খবর পৃথিবীর মানুষ জানে না, নেয় না। রাসূলের বংশধরদের নিশ্চিহ্ন করার জন্য সব ধরনের চেষ্টা করেও তারা সফল হয়নি। একের পর এক রাসূলের বংশধরদের শহীদ করা সত্ত্বেও যারা পুত্রসন্তান নিয়ে গর্ব বোধ করত তাদের কোন খবর আজ বিশ্ববাসী জানে না, অথচ রাসূলের বংশধারা হযরত ফাতিমার মাধ্যমে কিয়ামত পর্যন্ত বজায় থাকবে। এ বংশেই ইমাম মাহদী (আ.) আবির্ভূত হবেন এবং তিনি সারা বিশ্বে আল্লাহর ধর্মকে প্রতিষ্ঠিত করবেন। রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘সকল নারীর সন্তানকে যুক্ত করা হয় বাবার সাথে শুধু ফাতিমা ছাড়া। ফাতিমার সন্তানদের আমার সাথে সম্পর্কিত করা হয়েছে।’আর সেজন্যই আমরা ইতিহাসে দেখতে পাই যে, হযরত ফাতিমার সন্তানদের মানুষ ‘ইয়াবনা রাসূলিল্লাহ’ অর্থাৎ ‘হে রাসূলের সন্তান’ বলে সম্বোধন করত।মহান আল্লাহর নির্দেশে মহানবী (সা.) তাঁর কন্যা সন্তানের নাম রাখেন ফাতিমা। ‘ফাত্‌ম্‌’ শব্দের অর্থ রক্ষা করা। এ সম্পর্কে মহানবী বলেন : ‘তাঁর নামকরণ করা হয়েছে ফাতিমা। কারণ, আল্লাহ তাঁকে ও তাঁর অনুসারীদের জাহান্নামের আগুন থেকে মুক্ত রেখেছেন।’ হজরত ফাতিমা(সা) আদর্শ মানবাত্মার প্রতীকহযরত ফাতিমা ছিলেন নারী ও পুরুষ তথা গোটা মানব জাতির জন্য অসাধারণ ত্যাগ, বিশ্বস্ততা, অন্যায়ের ব্যাপারে আপোসহীনতা, সততা, দানশীলতা, ধৈর্য, চারিত্রিক পবিত্রতা, আল্লাহর প্রতি সন্তুষ্টিসহ বহু মহান স্বর্গীয় গুণের আদর্শ। স্নেহময়ী জননীর মত বিশ্বনবীর সেবা-যত্ন করা এবং বিপদের সময় তাঁর সহায়তায় এগিয়ে আসার জন্য মহীয়সী নারী ফাতিমা'র অন্য একটি উপাধি উম্মে আবিহা বা পিতার জননী। বিশ্বনবী (সা:) তাঁকে সর্বযুগের শ্রেষ্ঠ নারী বলে উল্লেখ করেছেন। আল্লাহর দরবারে তাঁর বিশেষ মর্যাদার কারণেই ফাতিমাকে দেখলে দাঁড়িয়ে তাকে সালাম দিতেন মহানবী (সা)। রাসুলে খোদা বলেছেন, 'ফাতিমা আমার দেহের অংশ, যা কিছু তাঁকে সন্তুষ্ট করে তা আমাকে সন্তুষ্ট করে এবং যা কিছু আমাকে সন্তুষ্ট করে তা আল্লাহকেও সন্তুষ্ট করে, আর যা কিছু ফাতিমা কে কষ্ট দেয়, তা আমাকে কষ্ট দেয়, আর যা আমাকে কষ্ট দেয়, তা আল্লাহকেও কষ্ট দেয়।' হযরত ফাতিমা বেহেশতে সর্ব প্রথম প্রবেশ করবেন বলে বিশ্বনবী উল্লেখ করেছেন। অনেকেই মনে করেন প্রিয় কন্যা ফাতিমাকে নিজের দেহের অংশ বলে মহানবী (সা) এটাও বুঝিয়েছেন যে পিতার রিসালাতের অন্যতম কাণ্ডারি ছিলেন ফাতিমা। এই মহীয়সী নারীর অনন্য ত্যাগ-তিতিক্ষা ও সেবা না থাকলে ইসলাম বিলুপ্ত হয়ে যেত।হযরত ফাতিমাকে কেউ কেউ কষ্ট দেবেন- এটা জানতেন বলেই বিশ্বনবী (সা) তাঁকে রাগানোর পরিণতি সম্পর্কে সতর্ক করে দিয়ে বলেছেন, ‘ফাতিমা আমার অস্তিত্বের অংশ। যে তাঁকে রাগান্বিত করে সে আমাকে রাগান্বিত করে এবং ফাতিমা কোন ব্যাপারে ক্রুদ্ধ হলে আল্লাহও ক্রুদ্ধ হন এবং ফাতিমার আনন্দে আল্লাহও আনন্দিত হন।’অনেক মহৎ গুণের আদর্শ হযরত ফাতিমার রয়েছে অনেক উপাধি। যেমন, তাঁর উপাধি ছিল আস-সিদ্দিক্বা বা সত্য-নিষ্ঠ,আল-মুবারাকাহ বা বরকতপ্রাপ্ত,আত-ত্বাহিরা বা পবিত্র,আল-মারজিয়া বা আল্লাহর প্রতি সন্তুষ্ট, আজ জাকিয়া বা সতী, মুহাদ্দিসাহ বা হাদিসের বর্ণনাকারী, সাইয়্যিদাতুন নিসায়িল আলামিন বা নারীকুলের মধ্যে শ্রেষ্ঠ, খাতুনে জান্নাত বা বেহেশতি নারীদের নেত্রী, আয যাহরা বা দ্যুতিময় ইত্যাদি। আর পিতা মহানবীর প্রতি অশেষ ভালোবাসা ও সেবার কারণে তাঁকে বলা হত উম্মে আবিহা বা পিতার মাতা।হযরত ফাতিমা যখন নামাজের জন্য দাঁড়াতেন তখন তাঁর জ্যোতি আকাশের ফেরেশতা ও অন্যান্যদের দিকে ছড়িয়ে পড়ত। আর এ কারণে তাঁকে যাহরা উপাধি দেয়া হয়।রাসুল (সা)’র ওফাতের পর তাঁকে সান্ত্বনা দিতে আসতেন ওহির ফেরেশতা। ওহির ফেরেশতা তাঁকে ভবিষ্যৎ বিষয়ে অনেক কিছু জানান। আর তার থেকে সেসব বিষয় লিখে রাখেন হযরত আলী (আ)। আর এ জন্যই ফাতিমাকে বলা হয় মুহাদ্দিসা।হযরত ফাতিমা খুবই সাধারণ জীবন যাপন করতেন। সংসারের যাবতীয় কাজ তিনি নিজের হাতে করতেন। মশক দিয়ে পানি তুলতে তুলতে তাঁর শরীরে দাগ পড়ে গিয়েছিল। তিনি যাঁতার মাধ্যমে এত পরিমাণ আটা তৈরি করতেন যে, তাঁর হাতে ফোস্কা পড়ে যেত। আর সেই আটা দিয়ে রুটি তৈরি করে সেগুলো মদীনার দরিদ্রদের মধ্যে বিতরণ করতেন। হযরত ফাতিমার কাপড়ের পোশাকে থাকতো তালি। পার্থিব কোন বস্তুই তাঁকে আকৃষ্ট করতে পারত না। আর এজন্যই রাসূল (সা.) তাঁকে ‘বাতুল’ উপাধিতে ভূষিত করেছিলেন।হযরত ফাতিমা সারারাত জেগে নামায পড়তেন, মহান আল্লাহর যিকির করতেন এবং রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর উম্মতের জন্য দো‘আ করতেন। তিনি এত বেশি নামায পড়তেন যে, তাঁর পা ফুলে যেত। সংসারের কাজ করার সময়ও তাঁর মুখে আল্লাহর যিকির থাকত।রাসূলের স্ত্রী হযরত উম্মে সালামাহ্ বলেন : রাসূলের ওফাতের পর ফাতিমাকে দেখতে যাই এবং তাঁর অবস্থা জানতে চাই। তিনি জবাব দিলেন : অত্যন্ত দুঃখ-কষ্টে দিন অতিবাহিত হচ্ছে।এ রকম কষ্টের মধ্য দিয়েই রাসূলুল্লাহ্ (সা.)-এর ওফাতের অল্প কিছুদিন পরই হযরত ফাতিমা এ পৃথিবী থেকে বিদায় নেন। রাসূলে খোদা ওফাতের আগে হযরত ফাতিমার কানে কানে বলে গিয়েছিলেন যে, তিনিই তাঁর সাথে প্রথম মিলিত হবেন। নিশ্চয়ই মহান আল্লাহ তাঁর প্রিয় রাসূলকে এও জানিয়েছিলেন যে, কীভাবে হযরত ফাতিমা তাঁর সাথে এত তাড়াতাড়ি মিলিত হবেন। আর সেজন্যই রাসূল (সা.) বারবার তাঁর উম্মতকে সতর্ক করছেন যে,তারা যেন হযরত ফাতিমাকে কষ্ট না দেয়,তাঁকে অসন্তুষ্ট না করে। হযরত ফাতিমা যাহরা পিতার শারীরিক বিদায়ের কারণে যতটা না দুঃখ পেয়েছিলেন তার চেয়েও বেশি ব্যথা পেয়েছিলেন পিতার আদর্শ তথা ইসলামের শিক্ষা ম্লান ও বিকৃত হয়ে পড়ার কারণে। রাসুলে খোদার কাছেই তিনি শুনেছিলেন তাঁর পবিত্র আহলে বাইতের ওপর অনেক বিপদ ও মুসিবত তথা ইসলামের ওপরই অনেক দুর্যোগ নেমে আসবে। আর সেইসব বিপদ মুকাবিলার মত কঠিন ধৈর্যের খোদায়ী পরীক্ষায়ও উত্তীর্ণ হয়েছিলেন সর্বকালের সেরা মহামানবী হযরত ফাতিমা ঠিক যেভাবে সিফফিন ও কারবালা প্রান্তরসহ যুগে যুগে নানা বিপদ, সংকট ও শত্রুতার মোকাবেলায় উত্তীর্ণ হয়েছিলেন বিশ্বনবী (সা)’র পবিত্র আহলে বাইতের অন্যান্য সদস্য।কোনো কোনো ঐতিহাসিক বর্ণনা অনুযায়ী রাজনৈতিক কারণে হযরত ফাতিমাকে আহত করা হয়েছিল প্রভাবশালী মহলের পক্ষ হতে এবং পরবর্তীকালে এ আঘাতজনিত কারণেই তিনি শাহাদাত বরণ করেন। ফাতিমা আমার দেহের অঙ্গ, চোখের জ্যোতি, অন্তরের ফল এবং আমার রূহস্বরূপ: মহানবী (সা)অনেকেই মনে করেন শত্রুতার প্রেক্ষাপটে হযরত ফাতিমাকে দাফন করা হয়েছিল মধ্যরাতে গোপনীয়ভাবে অতি গোপন স্থানে যা আজো গোপন রয়েছে এবং কিয়ামত পর্যন্ত গোপন থাকবে। হযরত ফাতিমা জানতেন কখন তাঁর মৃত্যু হবে। আর এ জন্য তিনি নিজে গোসল করে নতুন ও পরিষ্কার পোশাক পরে কিবলামুখী হয়েছিলেন।তিনি নিজের মৃত্যু কবে হবে এবং তাঁর দুই প্রিয় সন্তান হযরত হাসান ও হুসাইন কিভাবে মারা যাবেন সেইসব তথ্যসহ ভবিষ্যৎ ইতিহাসের অনেক খবর রাখতেন। হুসাইন (আ.)'র হত্যাকারীদের অভিশাপ দিয়ে গেছেন তিনি। মদিনার নারী সমাজ ধর্মীয় বিষয়সহ নানা বিষয়ে জ্ঞান অর্জন করত হযরত ফাতিমার কাছ থেকে। ফাদাক সম্পর্কিত তাঁর ভাষণ এই মহামানবীর অতুল জ্ঞান, খোদাভীরুতা এবং দূরদর্শিতাকেই তুলে ধরে।মাওলা মোহাম্মদ (সা.) বলেছেন, মহান আল্লাহ আলী, তাঁর স্ত্রী ও তাঁদের সন্তানদেরকে মানুষের জন্য হুজ্জাত বা দলিল করেছেন এবং তাঁরা হল জ্ঞানের দরজা।মহান আল্লাহর ইচ্ছায় হিজরতের দ্বিতীয় বর্ষে বা দ্বিতীয় হিজরিতে হযরত ফাতিমা যাহ্‌রা (সা.আ.) বিবাহ-বন্ধনে আবদ্ধ হন আমিরুল মু'মিনিন হযরত আলী (আ.)'র সঙ্গে। আলী (আ.) ছিলেন সত্য, ন্যায়বিচার ও খোদাভীরুতার প্রতীক। আলী (আ.)'র ঘরে তিনি হন আদর্শ স্ত্রী ও মাতা। গড়ে তোলেন বেহেশতি যুবকদের সর্দার হযরত ইমাম হাসান, ইমাম হুসাইন (আ.) এবং জাইনাব (সা.)'র মত ইসলামের ইতিহাসের প্রবাদতুল্য গৌরব সৃষ্টিকারী অনন্য সন্তান। বিয়ের দিন এক দরিদ্র নারী নবী-নন্দিনীর কাছে পোশাক সাহায্য হিসেবে চাইলে তিনি নিজের বিয়ের জন্য তৈরি নতুন পোশাকটি তাকে দান করে দেন। এর মাধ্যমে তিনি কুরআনের এই আয়াতটি বাস্তবায়ন করেছিলেন যেখানে সর্বোত্তম ও প্রিয় বস্তু থেকে দান করতে বলা হয়েছে। ফাতিমা যাহ্‌রা (সা.আ.) মুসলিম সমাজের বিচ্যুতি ঠেকানোর জন্য ও সত্যের জন্য সংগ্রামের সামাজিক দায়িত্ব পালনের ক্ষেত্রেও নজিরবিহীন দৃষ্টান্ত প্রতিষ্ঠায় সক্ষম হন। নারীমুক্তির আদর্শ হিসেবে এই মহামানবীর জন্মদিন ইরানসহ বিশ্বের বিভিন্ন অঞ্চলে পালিত হয় নারী ও মা দিবস হিসেবে। মাওলা হযরত মুহাম্মাদ (সা:) হযরত ফাতিমা (সা:) সম্পর্কে বলেছেন, ফাতিমা আমার দেহের অঙ্গ, চোখের জ্যোতি, অন্তরের ফল এবং আমার রূহস্বরূপ। সে হচ্ছে মানুষরূপী স্বর্গীয় হুর। প্রসিদ্ধ হাদীস গ্রন্থ বুখারীতে এসেছে, মহানবী (সা:) বলেছেন, ফাতিমা আমার অংশ। যে কেউ তাকে অসন্তুষ্ট ও ক্রোধান্বিত করলো সে আমাকেই অসন্তুষ্ট ও ক্রোধান্বিত করলো। একই ধরনের হাদীস বর্ণিত হয়েছে মুসলিম শরীফ ও আহমদ ইবনে শুয়াইব নাসায়ীর ফাজায়েল গ্রন্থসহ আরো অনেক হাদীস গ্রন্থে। হাদীসে এটাও এসেছে যে যা আল্লাহর রসূল (সা:)কে অসন্তুষ্ট করে তা আল্লাহকেও অসন্তুষ্ট বা ক্রুদ্ধ করে। হযরত ফাতিমা (সা:)'র উচ্চতর মর্যাদা উপলব্ধি করার জন্য কেবল এ হাদীসই যথেষ্ট। বিশ্বনবী (সা:)'র আহলে বাইত (আঃ)'র সদস্য হযরত ফাতিমা যে নিষ্পাপ ছিলেন তাও এসব বর্ণনা থেকে স্পষ্ট। হযরত ফাতিমা (সা:)'র সান্নিধ্য ও সেবা না পেলে আমীরুল মুমিনীন হযরত আলী (আঃ)'র জীবনও পুরোপুরি বিকশিত ও পরিপূর্ণতা লাভ করতো না। তাঁরা ছিলেন একে-অপরের প্রতি পুরোপুরি সন্তুষ্ট। বিশ্বনবী হযরত মুহাম্মাদ (সা:) হযরত ফাতিমা (সা:)-কে মানুষের আকৃতিতে ফেরেশতা বলেও প্রশংসা করেছেন। তিনি বলতেন, আমি যখনই বেহেশতের সুবাস পেতে চাইতাম তখনই কন্যা ফাতিমার ঘ্রাণ নেই।আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য রাত জেগে ইবাদত-বন্দেগী করা ছাড়াও প্রায়ই রোজা রাখা ও গরীব-দুঃখীকে অসাধারণ মাত্রায় দান-খয়রাত করা ছিল হযরত ফাতিমা (সা:)'র একটি বড় বৈশিষ্ট্য। জনসাধারণ বা কারো উদ্দেশ্যে যে কোনো বক্তব্য রাখার আগে দীর্ঘক্ষণ ধরে মহান আল্লাহর বিভিন্ন নেয়ামতের কথা খুব সুন্দর ও হৃদয়স্পর্শী ভাষায় তুলে ধরে আল্লাহর প্রশংসা করা ছিল তাঁর অন্য একটি বড় বৈশিষ্ট্য। বিশ্বনবী (সা:)'র আহলে বাইতের অন্য সদস্যদের মত তিনিও কখনও অন্যায়ের সাথে আপোষ করেন নি। আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য কাজ করা বা সক্রিয় থাকার মধ্যে তিনি খুঁজে পেতেন আনন্দ। হযরত ফাতিমা (সা:) বলেছেন, আল্লাহর সেবায় মশগুল হয়ে যে সন্তুষ্টি পাই তা আমাকে অন্য সব সন্তুষ্টি বা আনন্দ থেকে বিরত রাখে এবং সব সময় মহান আল্লাহর সুন্দর দৃষ্টি আমার দিকে নিবদ্ধ রাখার প্রার্থনা ছাড়া আমার অন্য কোনো প্রত্যাশা নেই। ফাতিমা সিদ্দিকা (সা. আ.) ঐশী পন্থায় অনেক জ্ঞান অর্জন করেছিলেন। 'মাসহাফই ফাতিমা' নামে খ্যাত গ্রন্থটির সমস্ত তথ্য সন্নিবেশিত হয়েছে জিবরাইল ফেরেশতার সঙ্গে ফাতিমা (সা. আ.)'র কথোপকথনের মাধ্যমে যা লিখে গেছেন হযরত আলী (আ.)। রাসূল (সা.)'র মৃত্যুর পর পিতার বিয়োগ-ব্যথায় কাতর ফাতিমাকে সান্ত্বনা দিতে আসতেন স্বয়ং জিবরাইল (আ.)। হযরত ফাতিমা ইমাম হুসাইন (আ.)'র হত্যাকারীদের অভিশাপ দিয়ে গেছেন। মদিনার নারী সমাজ ধর্মীয় বিষয়সহ নানা বিষয়ে জ্ঞান অর্জন করত ফাতিমা (সা.আ.)'র কাছ থেকে। ফাদাক ও মানজিল শীর্ষক তাঁর ভাষণ এই মহামানবীর অতুল জ্ঞান, খোদাভীরুতা এবং দূরদর্শিতাকেই তুলে ধরে।নবী-নন্দিনী (সা:) বলেছেন, পৃথিবীতে তিনটি জিনিস আমার খুবই প্রিয়। আল্লাহর পথে ব্যয়, রাসূলে খোদা (সা:)র চেহারার দিকে তাকানো এবং কুরআন তিলাওয়াত। পবিত্র কুরআনের আয়াত শ্রবণ মুসলমানদেরকে মুক্তির তীরে পৌঁছে দেয়। ফাতিমা (সা. আ.) রাসূল (সা.)'র উম্মতের উদ্দেশে বলেছেন: আল্লাহ ঈমানকে তোমাদের জন্য শির্ক হতে পবিত্র হওয়ার ও নামাজকে অহংকার থেকে পবিত্র হওয়ার এবং আমাদের আনুগত্য করাকে ধর্মের ব্যবস্থায় বা ধর্মকে প্রতিষ্ঠিত করার মাধ্যম করেছেন, আমাদের নেতৃত্বকে অনৈক্যের পথে বাধা ও আমাদের সঙ্গে বন্ধুত্বকে ইসলামের জন্য সম্মানের মাধ্যম করেছেন। ফাতিমা বা তাঁর বংশধরদের কেউই ঐশী সম্মানকে পার্থিব ভোগের কাজে লাগান নি। আত্মত্যাগের বিশালত্বে ফাতিমা এবং তাঁর বংশধররা ইতিহাসে অনন্য। ফাতিমার ত্যাগের শিক্ষাই হল কারবালার শিক্ষা। এ শিক্ষা আজও জুলুম-নিপীড়নের বিরুদ্ধে প্রতিরোধের আদর্শ। সত্যকে জানতে হলে, স্রষ্টার পথ চিনতে হলে এবং স্বাধীন ভাবে বেঁচে থাকতে হলে ধরতে হবে হযরত ফাতিমার পথ। তাই হজরত ফাতিমা(সা) আদর্শ মানবাত্মার প্রতীকবেশুমার লানত বর্ষিত হোক দুশমনে আহলে বায়েত পারআল্লাহুম্মা সাল্লে আলা মোহাম্মদদিন ওয়া আলে মোহাম্মদ ওয়া আজ্জিল ফারজাহুম31=12=202