#হযরত_মুহাম্মাদ ‎(সাঃ) ‏কে হত্যা করা হয়েছেআল্লাহুমা সাল্লে আলা মুহাম্মাদ ওয়া আলে মুহাম্মাদ ।খুবই গুরুত্বপুর্ন লেখা আশা করি মনোযোগ সহকারে পড়বেন সম্পুর্ন লেখাটা পড়বেন শেষ হওয়া অবধি এবং সাথে সাথে প্রত্যেকটা তথ্য ও রেফারেন্স হাদীসগুলো থেকে মিলিয়ে নিবেন ।কোরআনে সূরা আলে ইমরান ‎- ‏১৪৪ নং আয়াত থেকে,وَمَا مُحَمَّدٌ إِلَّا رَسُولٌ قَدْ خَلَتْ مِنْقَبْلِهِ الرُّسُلُ ۚ أَفَإِنْ مَاتَ أَوْ قُتِلَ انْقَلَبْتُمْ عَلَىٰأَعْقَابِكُمْ ۚ وَمَنْ يَنْقَلِبْ عَلَىٰ عَقِبَيْهِ فَلَنْ يَضُرَّ اللَّهَشَيْئًا ۗ وَسَيَجْزِي اللَّهُ الشَّاكِرِينَAnd Muhammad is no more than a messenger; ‏the messengers have already passed away before him; ‏if then hedies or is killed will you turn back upon your heels? ‏And whoever turns backupon his heels, ‏he will by no means do harm to Allah in the least and Allahwill reward the grateful."--- ‏আর মুহাম্মদ একজন রসূল বৈ তো নয় ‎! ‏তাঁর পূর্বেও বহু রসূল অতিবাহিত হয়ে গেছেন । তাহলে কি তিনি যদি মৃত্যুবরণ করেন অথবা নিহত হন ‎, ‏তবে তোমরা পশ্চাদপসরণ করবে ‎? ‏বস্তুতঃ কেউ যদি পশ্চাদপসরণ করে ‎, ‏তবে তাতে আল্লাহর কিছুই ক্ষতি-বৃদ্ধি হবে না । আর যারা কৃতজ্ঞ ‎, ‏আল্লাহ তাদের সওয়াব দান করবেন ‎---" ‏।উপরের আয়াতে এই কথার ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছে যে ‎, ‏রাসুল ‎(সাঃ) ‏এর স্বাভাবিক মৃত্যু হয় নি বরঞ্চ তাঁকে হত্যা ‎(শহীদ) ‏করা হয়েছে । কারন ‎أَفَإِنْ مَاتَ أَوْ قُتِلَ ,أَو ‏এর মানে ‎‘ ‏অথবা ‎’ ‏ও হয় আবার ‎‘ ‏বরঞ্চ ‎’ ‏হিসাবে ধরা যায় ।এখানে যে ভাবে বলা হচ্ছে তাতে দুটো মানে নেওয়া যেতে পারে । সুতরাং এটার মানে দাঁড়াল যে ‎“ ‏যদি তিনি মৃত্যুবরণ করেন বরঞ্চ কতল করা হয়।নবী ‎(সাঃ) ‏কে শহীদ করা হয়েছ এটা আরও ভালো ভাবে বোঝা যায় যখন আমরা দেখি যে হজরত আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ ‎(রাঃ) ‏বলছেন যে ‎,عَنْ عَبدِ اللَّهِ قَالَ لَأَنْ أَحْلِفَ تِسْعًا أَنَّ رَسُولَاللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قُتِلَ قَتْلًا أَحَبُّ إِلَيَّ مِنْ أَنْ أَحْلِفَ وَاحِدَةً أَنَّهُلَمْ يُقْتَلْ وَذَلِكَ بِأَنَّ اللَّهَ جَعَلَهُ نَبِيًّا وَاتَّخَذَهُ شَهِيدًا“ ‏আমি ন’বার কসম খেতে পারি যে, ‏নবিকে হত্যা করা হয়েছে ‎, ‏কিন্ত একবারও কসম খাব না যে তাঁকে ‎(কতল) ‏করা হয়নি । আল্লাহ তাঁকে নবী ও শহীদ করেছেন ‎”।-মুসনাদ এ আহমাদ ইবনে হাম্বাল ।- ‏মুসত্রাদক‘আলা সাহিহাইন তাহাকিক যাহাবিঃ বুখারি ও মুসলিমের standard এর হাদিস।- ‏মজমাউজ জওাদ, ‏বর্ণনা কারিগন সব সিকাহ ‎( ‏বিশস্ত)।- ‏কানজোল উম্মাল, ‏তারিখ এ ঈসলাম, ‏যাহাবি। তারিখ এ দামিস্ক, ‏ইবনে আসাকির।- ‏আল বেদায়া ওয়ান নেহায়া, ‏ইবনে কাসির।আরও অনেক হাদিসের বইয়ে।সুতরাং একথা বোঝা যাছে যে ‎, ‏নবী পাক ‎(সাঃ) ‏কে হত্যা করা হয়েছে । এটা আহলে সুন্নাহও মনে করে ।এখন প্রশ্ন থাকে যে, #কে বা কারা কিভাবে নবী ‎(সাঃ) ‏কে হত্যা করেছে ‎?আহলে সুন্নাহ তাঁদের চিন্তা ধার অনুসারে বলে যে,যয়নব বিনতে হারিস একজন ইহুদি মহিলা,যার ভাই মরহাবকে ইমাম আলি হত্যা করে ছিলেন । খাইবারে যুদ্ধের পরে ঐ হিহুদী মহিলা বিষ খাবারে বিষ দিয়েছিল, ‏সেই বিষক্রিয়াতে নবী ‎(সাঃ) ‏মারা যান।সংক্ষিপ্ত ঘটনা ‎-#খাইবার যুদ্ধে ইহুদিদের পরাজয়ের পরে যখন নবী পাক ‎(সাঃ) ‏ঐখানে অবস্থান করছিলেন তখন যয়নব বিনতে হারিস নামে এক ইহুদি মহিলা রসুল ‎(সাঃ) ‏কে দাওয়াত করে বিষ মেশানো বকরি রান্না করে দেন ‎, ‏যাতে মুহাম্মাদ ‎(সাঃ) ‏কে পরীক্ষা করা যায় যে ‎, ‏তিনি একজন আল্লাহ প্রেরিত সত্যিকারের রাসুল ।হাদিস আর ইসলামের ইতিহাসের কিতাব থেকে আমরা এই বিষয় তিন ধরনের বর্ণনা পাই-এখানে আমি ‎#সহীহ বুখারি ও মুসলিম থেকে একটা একটা করে হাদিস উল্লেখ করছি ‎-১) ‏রাসুল ‎(সাঃ) ‏রান্না করা উক্ত গোস্ত খান এবং বুঝতে পারেন যে ‎, ‏এতে বিষ মেশানো আছে । এবং ইহুদি মহিলাটাকে হত্যা করা হয়নি ।#সহিহ বুখারি হাদিস নং ‎- ‏২৪৪১আবদুল্লাহ ইবনু আবদুল ওয়াহাব ‎(রহঃ) ‏আনাস ইবনু মালিক ‎(রাঃ) ‏থেকে বর্ণিত যে ‎, ‏তিনি বলেন ‎, ‏জনৈক ইয়াহূদী মহিলা নবী ‎(সাঃ) ‏এর খিদমতে বিষ মিশানো বকরী নিয়ে এলো । সেখান থেকে কিছু অংশ তিনি ‎(সাঃ) ‏খেলেন এবং খাওয়ার পরে বিষক্রিয়া টের পেয়ে মহিলাকে হাজির করা হল । তখন বলা হল ‎, ‏আপনি কি এই মহিলাকে হত্যার আদেশ দিবেন না ‎?তিনি ‎(সাঃ) ‏বললেন ‎, ‏না । আনাস ‎(রাঃ) ‏বলেন নবী ‎(সাঃ) ‏এর ‎(মুখ গহবরের) ‏তালুতে আমি বরাবরই বিষ ক্রিয়ার আলামত দেখতে পেতাম ।২) ‏রাসুলের ‎(সাঃ) ‏ও একজন সাহাবী ঐ গোস্ত খেলেন আর ঐ সাহাবী মারা গেলেন। রাসুল ‎(সাঃ) ‏বুঝতে পারলেন যে ‎, ‏খাবারে বিষ দেওয়া আছে । ইহুদি মহিলাকে হত্যা করা হয় ।#সহিহ বুখারি ‎- ‏হাদিস নং ‎- ‏৩৯২৫ আবদুল্লাহ ইবনু ইউসুফ ‎(রহঃ) ‏আবূ হুরায়রা ‎(রাঃ) ‏থেকে বর্ণিত যে ‎, ‏যখন খায়বার বিজয় হয়ে গেল তখন ইহুদীদের পক্ষ থেকে রান্না করা একটি বকরী রাসূল ‎(সাঃ) ‏কে হাদিয়া হিসাবে দেওয়া হয় । সেই রান্না করা বকরীটিতে বিষ মেশানো ছিল । খায়বার যুদ্ধে যখন ইহুদীদের জন্য মুসলমানদের আনুগত্য স্বীকার ব্যতীত অন্য কোন পথ বাকী রইল না তখন তারা ঘৃণ্য ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয় । ইহুদী হারিসের কন্যা ও সালাম ইবনু মুশফিমের স্ত্রী যয়নাব একটি বকরীর গোশতে বিষ মিশিয়ে তা রাসূল ‎(সাঃ) ‏এর জন্য হাদিয়া হিসাবে পাঠাল । রাসূল ‎(সাঃ) ‏বকরীটির গোশত খেলেও বিষ তাঁর কোন ক্ষতি করতে পারে নি বটে ‎, ‏কিন্ত তাঁর সাহাবী বার আ ইবনু মা’রূর ‎(রাঃ) ‏বিষক্রিয়ার ফলে শহীদ হন । ষড়যন্ত্রকারী মহিলা ধরা পড়ার পর প্রথমে তাকে মাফ করে দেওয়া হয়েছিল ‎, ‏কিন্ত পরবর্তীতে যখন বারাআ ‎(রাঃ) ‏মারা গেলেন তখন ‎‘ ‏কিসাস ‎’ ‏হিসেবে তাকে হত্যা করা হয় ।৩) ‏রাসুল ‎(সাঃ) ‏খাওয়ার আগেই ইহুদি মহিলাকে ডেকে পাঠান ও সরাসরই বলে দেন যে ‎, ‏এতে বিষ মেশান আছে ।#সহিহ বুখারি ‎- ‏হাদিস নং ‎- ‏৫৩৬২কুতায়বা ‎(রহঃ) ‏আবূ হুরায়রা ‎(রাঃ) ‏থেকে বর্ণিত । তিনি বলেন ‎, ‏খায়বার যখন বিজয় হয় ‎, ‏তখন রাসুলুল্লাহ ‎( ‏সাঃ) ‏এর নিকট হাদীয়া স্বরুপ একটি ভুনা বকরী প্রেরিত হয় । এর মধ্যে ছিল বিষ । তখন রাসুলুল্লাহ ‎(সাঃ) ‏বলেন যে ‎, ‏এখানে যত ইয়াহুদী আছে আমার কাছে তাদের জমায়েত কর । তার কাছে সবাইকে জমায়েত করা হলে । রাসুলুল্লাহ ‎(সাঃ) ‏তাদের সন্মোধন করে বললেন ‎, ‏আমি তোমাদের নিকট একটি বিষয়ে জানতে চাই ‎, ‏তোমরা কি সে বিষয়ে আমাকে সত্য কথা বলবে ‎?তারা বলল ‎, ‏হ্যা ‎, ‏হে আবূল কাসিম ।রাসুলুল্লাহ ‎(সাঃ) ‏বললেন ‎, ‏তোমাদের পিতা কে ‎? ‏তারা বলল ‎, ‏আমাদের পিতা অমুক । রাসুলুল্লাহ ‎(সাঃ) ‏বললেন ‎, ‏তোমরা মিথ্যে বলেছ বরং তোমাদের পিতা অমুক । তারা বলল ‎, ‏আপনি সত্য ও সঠিক বলেছেন । এরপর তিনি ‎(সাঃ) ‏বললেন ‎, ‏আমি যদি তোমাদের নিকট আর একটি প্রশ্ন করি ‎, ‏তা হলে কি তোমরা সে ব্যাপারে আমাকে সত্য কথা বলবে ‎? ‏তারা বলল ‎, ‏হে আবূল কাসিম ‎, ‏যদি আমরা মিথ্যে বলি তবে তো আপনি আমাদের মিথ্যা জেনে ফেলবেন ‎, ‏যেমনিভাবে জেনেছেন আমাদের পিতার ব্যাপারে । তখন তিনি ‎(সাঃ) ‏বললেন ‎, ‏তোমরা কি এ বকরীর মধ্যে বিষ মিশ্রিত করেছ ‎?তারা বলল ‎, ‏হ্যা । তিনি ‎(সাঃ) ‏বললেন ‎, ‏কিসে তোমাদের এ কাজে উদ্ভুদ্ধ করেছে ‎?তারা বলল ‎, ‏আমরা চেয়েছি ‎!যদি আপনি নবুওয়াতের দাবীতে মিথ্যাবাদী হন ‎, ‏তবে আমরা আপনার থেকে মুক্তি পেয়ে যাব । আর যদি আপনি সত্য নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হন ‎, ‏তবে এ বিষ আপনার কোন ক্ষতি করতে পারবে না ।বিঃদ্রঃ ‎- ‏উপরে একই ঘটনার সহিহ হাদিসের তিন রূপ দেওয়া হল ‎- ‏এই বিষয় আরও কিছু জানা যায় যে ‎, ‏ইহুদি মহিলা পরবর্তীতে ‎#মুসলিম হয়ে গিয়েছিল ।যাইহোক ‎, #খাইবারের যুদ্ধ ৬য় হিজরিতে হয়েছিল আর রাসুল ‎(সাঃ) ‏১০ ম হিজরিতে মারা যান । এ কথা বোধগম্যের বাইরে যে ‎, ‏বিষ পানের ৪ বছর পর কি ভাবে একজন মানুষ বেঁচে থাকতে পারে ‎! ‏ধরে নিলাম যে ‎, ‏রাসুল ‎(সাঃ) ‏ঐ গোস্ত খেয়েছিলেন ।ঐ ইহুদিদের কথা অনুযায়ী ওরা ‎#বিষ দিয়েছিল রাসুল ‎(সাঃ) ‏এর থেকে তাৎক্ষনিক ভাবে মুক্তি পাওয়ার জন্য ।অথচ এটাও দেখা যাচ্ছে যে ‎, ‏রাসুল ‎(সঃ) ‏আদৌও ঐ গোস্ত খান নি ।এখন এই প্রশ্নও উঠতে পারে যে ‎, ‏ঐ ইহুদি মহিলা বিষ দিয়ে ছিল আর এটাপরীক্ষা কারার জন্য যে ‎, ‏তিনি প্রকৃত নবী কিনা ।এখন যদি রাসুল পাকের ‎(সাঃ) ‏উপর ‎#বিষক্রিয়া হয় বা অন্য একজন সাহাবা মারা যাওয়ার পর বোঝা যায়ে যে ‎, ‏বিষ আছে । তবে তো ঐ মহিলার পরীক্ষাতে রসুল ‎(সাঃ) ‏পাস করতে পারলেন না ।আর ঐ মহিলা মুসলিম বা হবেন কেন ‎?এখন দেখা যাক ‎, ‏রাসুল ‎(সাঃ) ‏এর মৃত্যুর সময়কার কিছু হাদিস ।যেখানে বলা হচ্ছে যে ‎, ‏নবী ‎(সাঃ) ‏যখন অসুস্থ ছিলেন ‎, ‏সেই সময় তিনি ‎(সাঃ) ‏ঘুমাচ্ছিলেন। তখন আয়শা নবী ‎(সাঃ) ‏এর মুখে কিছু দ্রব্য ঢুকিয়ে দেন। তখন রাসুল ‎(সাঃ) ‏কড়া ভাবে আয়শাকে বলেছিলেন যে ‎, ‏এভাবে তাঁর মুখে যেন কিছু না দেওয়া হয় ।সূত্র ‎- ‏সহিহ আল বুখারি ‎, ‏আধুনিক প্রকাশনী ‎-ঢাকা ‎, ‏বাংলাদেশ।৫২৯৪ ‎- ‏ইবনে আব্বাস ও আয়শা থেকে বর্ণিত । নবী ‎(সাঃ) ‏ইন্তেকাল করলে হযরত আবু বকর নবী ‎(সাঃ) ‏কে চুমু দিলেন । হযরত আয়েশা ‎(রাঃ) ‏আরও বলেন ‎, ‏নবীজী ‎(সাঃ) ‏এর অসূখের সময় আমরা তার মুখে কিছু ঢেলে দিলাম । তখন তিনি রাসুল ‎(সাঃ) ‏আমাদের ইশারা দিতে থাকলেন যে ‎, ‏তোমরা আমায় মুখে কিছু ঢেল না । আমরা মনে করলাম ‎, ‏এটা ঔষধের প্রতি একজন রোগীর অরুচির প্রকাশ মাত্র । এরপর তিনি যখন সুস্থবোধ করলেন তখন বললেন ‎, ‏আমি কি তোমাদের আমার মুখে কিছু ঢালতে নিষেধ করি নি ‎? ‏আমরা বললাম ‎, ‏আমরাতো ঔষধের প্রতি রোগীর সাধারন অনীহা মনে করেছিলাম । তখন তিনি রাসুল ‎(সাঃ) ‏বললেন ‎, ‏আমি এখন যাদের এ ঘরে দেখতে পাচ্ছি তাদের সকলকে এটা না গিলিয়ে ছাড়ব না শুধুমাত্র আব্বাস ‎(রাঃ) ‏ছাড়া । কেননা, ‏তিনি তোমাদের সংগে জড়িত ছিলেন না ।৬৪২০ ‎- ‏হযরত আয়েশা ‎(রাঃ) ‏থেকে বর্ণিত ‎-তিনি বলেন ‎, ‏আমরা নাবী ‎(সাঃ) ‏এর অসুখের সময় তার মুখের এক কিনারায় ঔষধ ঢেলে দিলাম ।তিনি ‎(সাঃ) ‏বলেন ‎, #তোমরা আমার মুখের কিনারায় ঔষধ দিও না । আমরা মনে করলাম ‎, ‏রোগী ঔষধ সেবন অপছন্দ করেই থাকে। যখন তাঁর হুশ ফিরে এলো ‎, ‏তখন তিনি ‎(সাঃ) ‏বললেন ‎, ‏তোমাদের মধ্যে যেন এমন কেউ থাকে না ‎, ‏যার মুখের কিনারায় জোর পুর্বক ঔষধ ঢেলে দেয়া না হয় শুধুমাত্র আব্বাস ব্যতীত।কেননা ‎, ‏সে তোমাদের কাছে হাজির ছিল না ।৬৪৩০ ‎- ‏মূসা’দ্দাদ ‎(রহঃ) ‏হযরত আয়েশা ‎(রাঃ) ‏থেকে বর্ণিত ‎- ‏তিনি বলেন ‎, ‏আমরা নবী ‎(সাঃ) ‏এর অসুখের সময় তার মুখের কিনারায় ঔষধ ঢেলে দিলাম । আর তিনি ‎(সাঃ) ‏আমাদের দিকে ইশারা করতে থাকলেন যে ‎, ‏তোমরা আমার মূখের কিনারায় ঔষধ ঢেলে দিও না । আমরা মনে করলাম যে ‎, ‏রোগীর ঔষধের প্রতি অনীহা-ই এর কারণ । যখন তিনি ‎(সাঃ) ‏হুশ ফিরে পেলেন ‎, ‏তখন বললেন ‎, #আমাকে জোর পূর্বক ঔষধ সেবন করাতে কি তোমাদেরকে নিষেধ করি নি ‎? ‏আমরা বললাম ‎, ‏রোগীর ঔষধের প্রতি অনীহা তাই এর কারণ বলে আমরা মনে করেছি । তখন তিনি ‎(সাঃ) ‏বললেন ‎, ‏তোমাদের মাঝে যেন এমন কেউ না থাকে যার মুখে জোরপূর্বক ঔষধ ঢালা হয় আর আমি দেখতে থাকব শুধু আব্বাস ব্যতীত । কেননা ‎, ‏সে তোমাদের সাথে ছিল না ।#নোট ‎- ‏উপরে অনেক বেশির ভাগ জায়গাতে ঔষধ শব্দ অরিজিনালে নেই অনুবাদক বসিয়ে দিয়েছেন ‎, ‏বরং অরিজিনাল আরবীতে এটা আছে ‎‘(কিছু একটা) ‏ঢেলেদিলাম’) ‏।সুতরাং উপরের হাদিস সমূহ থেকে দেখা যাচ্ছে যে ‎, #রাসুল ‎(সাঃ) ‏তার অসুস্থতার সময় হযরত আয়েশা এবং আরও কেউ রসুলের ‎(সাঃ) ‏মুখে কিছু ঢুকিয়ে দেন...যেটা রাসুল পাক ‎(সাঃ) ‏নিষেধ করার পরেও । রাসুল ‎(সাঃ) ‏পরিষ্কার ভাবে বারণ করেছিলেন যে ‎, ‏তাঁর মুখে যেন কিছু না দেওয়া হয় । পরে রাসুল ‎(সাঃ) ‏একটু হুস ফিরে পেলে রাগান্বিত হয়ে বললেন যে ‎, ‏এটাকে সবাইকে মুখে দিতে হবে এবং রাসুল ‎(সাঃ) ‏সেটা দেখবেন ‎, ‏শুধু হযরত আব্বাস ‎(রাঃ) ‏ব্যতীত কারণ তিনি ঐ সময় ছিলেন না ।রাসুল ‎(সাঃ) ‏এর মৃত্যুর কারণ হিসাবে আয়েশা এটা প্রচার করতে লাগলেন যে ‎, ‏টেস্টিস এ ‎#টিউমার ফেটে গিয়ে মারা গিয়েছেন ।মুসনাদে আহমাদ ও আবু ইয়ালাআল মাসুলি ‎-حدثنا كامل ، حدثنا ابن لهيعة ، حدثني أبو الأسود ، عنعروة ، عن عائشة ، قالت : مات رسول الله صلى الله عليه وسلم من ذات الجنبকিন্ত কেউ এটাকে বিশ্বাস করতে চায় নি কারণ রাসুল ‎(সাঃ) ‏আগেই বলে গিয়েছিলেন যে ‎, ‏এই ধরনের রোগ আমাদের রাসুলদের হয় না ।এই সব দেখে আয়েশা বললেন যে ‎, ‏খাইবার যুদ্বে খাবারের বিষ ক্রীয়ায় তিনি ‎(সাঃ) ‏মারা গিয়েছেন ‎?আপনারা উপরে আহলে সুন্নিদের সহীহ হাদিস থেকে বুঝতেই পারছেন যে ‎, ‏খাইবার যুদ্বে আল্লাহের রাসুল ‎(সাঃ) ‏বিষ খান নি বলেই বোঝা যাচ্ছে । আবার খেলেও তাঁর উপর ঐ বিষ কোন ক্রীয়া করে নি । আবার ঐ বিষ দেওয়া হয়েছিল ৬ষ্ঠ হিজরিতে এবং রাসুল ‎(সাঃ) ‏ইন্তেকাল করেছেন ১০ম হিজরিতে । তাহলে দীর্ঘ চার দশক কিভাবে একজন লোক দিব্যি বেঁচে থাকতে পারে ‎? ‏এতো গেল আহলে সুন্নাতের হাদিস গ্রন্থ থেকে দলিল ।এখন দেখা যাক যে ‎, ‏শীয়া হাদিস বা তাফসির বই এ কি বলা হচ্ছে-তাফসির এ আইয়াস ও আল্লামা মাজলিশি ও আলি ইবনে ইব্রাহিম কুম্মি যিনি ইমাম হাসন আল আসকারী এর সমসাময়িক ছিলেন ‎-ইমাম জাফর সাদিক এর থেকে বর্ণনা করেছেন যে ‎, ‏তার মুল মর্ম হল যে রাসুল ‎(সাঃ) ‏এর ওফাতের শেষ দিনের দিকে আবুবকর আর ওমরের ইশারাতে আয়শা ও হাফসা রাসুল ‎(সাঃ) ‏কে বিষাক্ত কিছু খাইয়ে ছিলেনসুপ্রিয় পাঠক, ‏এই লেখাটিতে নিজস্ব কোন কিছুই বলা হয়নি । ইতিহাস থেকে যা পাওয়া যায় তাই এখানে তুলে ধরা হয়েছে। এখন এই লেখাটা গ্রহন করা বা না করা যার যার ব্যক্তিগত অভিরুচি ।তবে হ্যা ‎, ‏এই বিষয় আপনাদের শালীন ভাষায় যৌক্তিক যে কোন তথ্যাদি বা মতামত সাদরে গ্রহনীয় ।⭐⭐দয়াল রাসূল পাক ‎(সঃ) ‏এর জন্মদিন ও মৃত্যু দিন কি একই তারিখে হয়েছিলো ‎❓নাকি মুসলমানদের আনন্দ নষ্ট করেছিলো ষড়যন্ত্রকারীরা ‎❓ ***সমাজে দীর্ঘ কাল ধরে এটাই প্রচলিত যে আমাদের দয়াল রাসূল ‎(সা:) ‏১২ই রবিউল আওয়াল রোজ সোমবার জন্মগ্রহন করেছিলেন এবং তিনি ঐ একই তারিখে ওফাত লাভ করেন । কিন্তু দয়াল রাসূল ‎(সাঃ) ‏হিজরী পূর্ব ৫৩ সালের ১২ই রবিউল আওয়াল রোজ সোমবার জন্মগ্রহন করলেও তার ওফাতের প্রকৃত তারিখটি ছিল হিজরী ১১ সালের ১লা রবিউল আওয়াল রোজ সোমবার। স্বধর্মীদের অজ্ঞতা আর বিধর্মীদের চক্রান্তের কবলে পড়ে হয়ত কোন এক ভাবে এই সঠিক ইতিহাসটির বিকৃতি ঘটেছে। পবিত্র আল-কোরআনে আল্লাহ্‌ ‏এরশাদ করেন, “আজ আমি তোমাদের ধর্মকে পরিপূর্ণ করলাম, ‏আমার নেয়ামত পরিপূর্ণ করলাম এবং ইসলাম কে একমাত্র ধর্ম হিসেবে কবুল করে নিলাম।” (সুরা মায়েদাঃ আয়াত- ‏৩) ‏এই আয়াতটি ১০ই হিজরীর ৯ই জিলহজ্ব রোজ শুক্রবার অর্থাৎ বিদায় হজের দিন আরাফার ময়দানে নাজিল হয়েছিল। আর এই তারিখটি হযরত রাসুল ‎(সাঃ) ‏এর ওফাত লাভের প্রকৃত তারিখ নির্ণয়ে বিশেষ ভুমিকা পালন করে। বিশিষ্ট সাহাবী হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস ‎(রাঃ) ‏বলেন, “এই আয়াতটি ১০ম হিজরীর ৯ই জিলহজ্ব তারিখে নাজিল হয়। এরপর রাসূল ‎(সাঃ) ‏আর মাত্র ৮১ দিন পৃথিবীতে জীবিত ছিলেন।” (তফসীরে মা’রেফুল কোরআন) ‏তফসিরে দুররে মানসুরের ৩য় খণ্ডে বলা হয়েছে ‎“ইবনে জারির কর্তৃক ইবনে জুরাইজ হতে বর্ণিত হয়েছে, ‏তিনি বলেন-এই আয়াতটি নাজিল হওয়ার পর রাসুল ‎(সাঃ) ‏৮১ রাত দুনিয়াতে অবস্থান করেন।” ‏তফসিরে তাবারীর ৪র্থ খণ্ডে বলা হয়েছে, “হাজ্জাজ কর্তৃক ইবনে জুরাইজ হতে বর্ণিত হয়েছে, ‏তিনি বলেন-এই আয়াতটি নাজিল হওয়ার পর ৮১ রাত রাসূল ‎(সাঃ) ‏জীবিত ছিলেন।” ‏ইবনে জারির বলেন যে আরাফা দিবসের পর রাসুল ‎(সাঃ) ‏৮১ দিন জীবিত ছিলেন। ‎(তফসীরে ইবনে কাসীর- ‏২য় খণ্ড)ইমাম বাগবী বলেন, “হারুন ইবনে আনতারা তার পিতা হতে বর্ণনা করেন, ‏এই আয়াতটি অবতীর্ণ হওয়ার পর রাসুল ‎(সাঃ) ‏৮১ দিন জীবিত ছিলেন।” (তফসীরে মাযহারী-৩য় খণ্ড) ‏সুতরাং ১০ম হিজরীর বিদায় হজ্জের দিনটি মূলসুত্র ধরে ৮১তম দিন কবে হয় তা হিসাব করলে খুব সহজেই বের করা সম্ভভ যে রাসুল ‎(সাঃ) ‏আসলে কবে ওফাত লাভ করেছিলেন। এ কথাটি ঐতিহাসিক ভাবে প্রমানিত যে ১০ম হিজরীর ৯ই জিলহজ্ব হযরত রাসুল ‎(সাঃ) ‏এর আরাফার ময়দানে বিদায় হজ্জের ভাষণ দান কালে উক্ত আয়াতটি নাজিল হয়েছিল এবং তার পর তিনি আর মাত্র ৮১ দিন পৃথিবীর বুকে জীবিত ছিলেন। চন্দ্রবর্ষ হিসাব অনুযায়ী এক মাস ২৯ দিন হলে তার পরের মাস হয় ৩০ দিনে। এই হিসেবে জিলহজ্ব মাস ২৯ দিন, ‏মহররম মাস ৩০ দিন, ‏সফর মাস ২৯ দিন। এখন ১০ম হিজরীর ৯ই জিলহজ্ব থেকে হিসাব করলে দেখা যায় যে ওই জিলহজ্ব মাসের বাকি থাকে আর ২১ দিন, ‏তার পরের মাস অর্থাৎ ১১ হিজরীর মহরম মাসের ৩০ দিন এবং সফর মাসের ২৯ দিন। সর্বমোট ৮০ দিন। সেই হিসেবে ৮১ তম দিন হয় ১লা রবিউল আওয়াল। এবং সেই দিনটিও ছিল সোমবার। এখন এই ৩টি মাসের সব কয়টি মাস ২৯ দিন অথবা ৩০ দিন যাই হোক না কেন বিদায় হজ্জের দিন থেকে হিসেব করলে ৮১ তম দিন কখনই এবং কোন ভাবেই ১২ ই রবিউল হয় না।

#হযরত_মুহাম্মাদ (সাঃ) কে হত্যা করা হয়েছে
আল্লাহুমা সাল্লে আলা মুহাম্মাদ ওয়া আলে মুহাম্মাদ ।
খুবই গুরুত্বপুর্ন লেখা আশা করি মনোযোগ সহকারে পড়বেন সম্পুর্ন লেখাটা পড়বেন শেষ হওয়া অবধি এবং সাথে সাথে প্রত্যেকটা তথ্য ও রেফারেন্স হাদীসগুলো থেকে মিলিয়ে নিবেন ।
কোরআনে সূরা আলে ইমরান - ১৪৪ নং আয়াত থেকে,
وَمَا مُحَمَّدٌ إِلَّا رَسُولٌ قَدْ خَلَتْ مِنْقَبْلِهِ الرُّسُلُ ۚ أَفَإِنْ مَاتَ أَوْ قُتِلَ انْقَلَبْتُمْ عَلَىٰ
أَعْقَابِكُمْ ۚ وَمَنْ يَنْقَلِبْ عَلَىٰ عَقِبَيْهِ فَلَنْ يَضُرَّ اللَّهَشَيْئًا ۗ وَسَيَجْزِي اللَّهُ الشَّاكِرِينَ
And Muhammad is no more than a messenger; the messengers have already passed away before him; if then hedies or is killed will you turn back upon your heels? And whoever turns backupon his heels, he will by no means do harm to Allah in the least and Allahwill reward the grateful.
"--- আর মুহাম্মদ একজন রসূল বৈ তো নয় ! তাঁর পূর্বেও বহু রসূল অতিবাহিত হয়ে গেছেন । তাহলে কি তিনি যদি মৃত্যুবরণ করেন অথবা নিহত হন , তবে তোমরা পশ্চাদপসরণ করবে ? বস্তুতঃ কেউ যদি পশ্চাদপসরণ করে , তবে তাতে আল্লাহর কিছুই ক্ষতি-বৃদ্ধি হবে না । আর যারা কৃতজ্ঞ , আল্লাহ তাদের সওয়াব দান করবেন ---" ।
উপরের আয়াতে এই কথার ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছে যে , রাসুল (সাঃ) এর স্বাভাবিক মৃত্যু হয় নি বরঞ্চ তাঁকে হত্যা (শহীদ) করা হয়েছে । কারন أَفَإِنْ مَاتَ أَوْ قُتِلَ ,أَو এর মানে ‘ অথবা ’ ও হয় আবার ‘ বরঞ্চ ’ হিসাবে ধরা যায় ।
এখানে যে ভাবে বলা হচ্ছে তাতে দুটো মানে নেওয়া যেতে পারে । সুতরাং এটার মানে দাঁড়াল যে “ যদি তিনি মৃত্যুবরণ করেন বরঞ্চ কতল করা হয়।
নবী (সাঃ) কে শহীদ করা হয়েছ এটা আরও ভালো ভাবে বোঝা যায় যখন আমরা দেখি যে হজরত আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রাঃ) বলছেন যে ,
عَنْ عَبدِ اللَّهِ قَالَ لَأَنْ أَحْلِفَ تِسْعًا أَنَّ رَسُولَاللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قُتِلَ قَتْلًا أَحَبُّ إِلَيَّ مِنْ أَنْ أَحْلِفَ وَاحِدَةً أَنَّهُلَمْ يُقْتَلْ وَذَلِكَ بِأَنَّ اللَّهَ جَعَلَهُ نَبِيًّا وَاتَّخَذَهُ شَهِيدًا
“ আমি ন’বার কসম খেতে পারি যে, নবিকে হত্যা করা হয়েছে , কিন্ত একবারও কসম খাব না যে তাঁকে (কতল) করা হয়নি । আল্লাহ তাঁকে নবী ও শহীদ করেছেন ”।
-মুসনাদ এ আহমাদ ইবনে হাম্বাল ।
- মুসত্রাদক‘আলা সাহিহাইন তাহাকিক যাহাবিঃ বুখারি ও মুসলিমের standard এর হাদিস।
- মজমাউজ জওাদ, বর্ণনা কারিগন সব সিকাহ ( বিশস্ত)।
- কানজোল উম্মাল, তারিখ এ ঈসলাম, যাহাবি। তারিখ এ দামিস্ক, ইবনে আসাকির।
- আল বেদায়া ওয়ান নেহায়া, ইবনে কাসির।
আরও অনেক হাদিসের বইয়ে।
সুতরাং একথা বোঝা যাছে যে , নবী পাক (সাঃ) কে হত্যা করা হয়েছে । এটা আহলে সুন্নাহও মনে করে ।
এখন প্রশ্ন থাকে যে, #কে বা কারা কিভাবে নবী (সাঃ) কে হত্যা করেছে ?
আহলে সুন্নাহ তাঁদের চিন্তা ধার অনুসারে বলে যে,
যয়নব বিনতে হারিস একজন ইহুদি মহিলা,
যার ভাই মরহাবকে ইমাম আলি হত্যা করে ছিলেন । খাইবারে যুদ্ধের পরে ঐ হিহুদী মহিলা বিষ খাবারে বিষ দিয়েছিল, সেই বিষক্রিয়াতে নবী (সাঃ) মারা যান।
সংক্ষিপ্ত ঘটনা -
#খাইবার যুদ্ধে ইহুদিদের পরাজয়ের পরে যখন নবী পাক (সাঃ) ঐখানে অবস্থান করছিলেন তখন যয়নব বিনতে হারিস নামে এক ইহুদি মহিলা রসুল (সাঃ) কে দাওয়াত করে বিষ মেশানো বকরি রান্না করে দেন , যাতে মুহাম্মাদ (সাঃ) কে পরীক্ষা করা যায় যে , তিনি একজন আল্লাহ প্রেরিত সত্যিকারের রাসুল ।
হাদিস আর ইসলামের ইতিহাসের কিতাব থেকে আমরা এই বিষয় তিন ধরনের বর্ণনা পাই-
এখানে আমি #সহীহ বুখারি ও মুসলিম থেকে একটা একটা করে হাদিস উল্লেখ করছি -
১) রাসুল (সাঃ) রান্না করা উক্ত গোস্ত খান এবং বুঝতে পারেন যে , এতে বিষ মেশানো আছে । এবং ইহুদি মহিলাটাকে হত্যা করা হয়নি ।
#সহিহ বুখারি হাদিস নং - ২৪৪১
আবদুল্লাহ ইবনু আবদুল ওয়াহাব (রহঃ) আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে , তিনি বলেন , জনৈক ইয়াহূদী মহিলা নবী (সাঃ) এর খিদমতে বিষ মিশানো বকরী নিয়ে এলো । সেখান থেকে কিছু অংশ তিনি (সাঃ) খেলেন এবং খাওয়ার পরে বিষক্রিয়া টের পেয়ে মহিলাকে হাজির করা হল । তখন বলা হল , আপনি কি এই মহিলাকে হত্যার আদেশ দিবেন না ?
তিনি (সাঃ) বললেন , না । আনাস (রাঃ) বলেন নবী (সাঃ) এর (মুখ গহবরের) তালুতে আমি বরাবরই বিষ ক্রিয়ার আলামত দেখতে পেতাম ।
২) রাসুলের (সাঃ) ও একজন সাহাবী ঐ গোস্ত খেলেন আর ঐ সাহাবী মারা গেলেন। 
রাসুল (সাঃ) বুঝতে পারলেন যে , খাবারে বিষ দেওয়া আছে । ইহুদি মহিলাকে হত্যা করা হয় ।
#সহিহ বুখারি - হাদিস নং - ৩৯২৫ 
আবদুল্লাহ ইবনু ইউসুফ (রহঃ) আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে , যখন খায়বার বিজয় হয়ে গেল তখন ইহুদীদের পক্ষ থেকে রান্না করা একটি বকরী রাসূল (সাঃ) কে হাদিয়া হিসাবে দেওয়া হয় । সেই রান্না করা বকরীটিতে বিষ মেশানো ছিল । খায়বার যুদ্ধে যখন ইহুদীদের জন্য মুসলমানদের আনুগত্য স্বীকার ব্যতীত অন্য কোন পথ বাকী রইল না তখন তারা ঘৃণ্য ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয় । ইহুদী হারিসের কন্যা ও সালাম ইবনু মুশফিমের স্ত্রী যয়নাব একটি বকরীর গোশতে বিষ মিশিয়ে তা রাসূল (সাঃ) এর জন্য হাদিয়া হিসাবে পাঠাল । রাসূল (সাঃ) বকরীটির গোশত খেলেও বিষ তাঁর কোন ক্ষতি করতে পারে নি বটে , কিন্ত তাঁর সাহাবী বার আ ইবনু মা’রূর (রাঃ) বিষক্রিয়ার ফলে শহীদ হন । ষড়যন্ত্রকারী মহিলা ধরা পড়ার পর প্রথমে তাকে মাফ করে দেওয়া হয়েছিল , কিন্ত পরবর্তীতে যখন বারাআ (রাঃ) মারা গেলেন তখন ‘ কিসাস ’ হিসেবে তাকে হত্যা করা হয় ।
৩) রাসুল (সাঃ) খাওয়ার আগেই ইহুদি মহিলাকে ডেকে পাঠান ও সরাসরই বলে দেন যে , এতে বিষ মেশান আছে ।
#সহিহ বুখারি - হাদিস নং - ৫৩৬২
কুতায়বা (রহঃ) আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত । 
তিনি বলেন , খায়বার যখন বিজয় হয় , তখন রাসুলুল্লাহ ( সাঃ) এর নিকট হাদীয়া স্বরুপ একটি ভুনা বকরী প্রেরিত হয় । এর মধ্যে ছিল বিষ । 
তখন রাসুলুল্লাহ (সাঃ) বলেন যে , এখানে যত ইয়াহুদী আছে আমার কাছে তাদের জমায়েত কর । তার কাছে সবাইকে জমায়েত করা হলে । রাসুলুল্লাহ (সাঃ) তাদের সন্মোধন করে বললেন , আমি তোমাদের নিকট একটি বিষয়ে জানতে চাই , তোমরা কি সে বিষয়ে আমাকে সত্য কথা বলবে ?
তারা বলল , হ্যা , হে আবূল কাসিম ।
রাসুলুল্লাহ (সাঃ) বললেন , তোমাদের পিতা কে ? 
তারা বলল , আমাদের পিতা অমুক । 
রাসুলুল্লাহ (সাঃ) বললেন , তোমরা মিথ্যে বলেছ বরং তোমাদের পিতা অমুক । 
তারা বলল , আপনি সত্য ও সঠিক বলেছেন । 
এরপর তিনি (সাঃ) বললেন , আমি যদি তোমাদের নিকট আর একটি প্রশ্ন করি , তা হলে কি তোমরা সে ব্যাপারে আমাকে সত্য কথা বলবে ? 
তারা বলল , হে আবূল কাসিম , যদি আমরা মিথ্যে বলি তবে তো আপনি আমাদের মিথ্যা জেনে ফেলবেন , যেমনিভাবে জেনেছেন আমাদের পিতার ব্যাপারে । 
তখন তিনি (সাঃ) বললেন , তোমরা কি এ বকরীর মধ্যে বিষ মিশ্রিত করেছ ?
তারা বলল , হ্যা । 
তিনি (সাঃ) বললেন , কিসে তোমাদের এ কাজে উদ্ভুদ্ধ করেছে ?
তারা বলল , আমরা চেয়েছি !যদি আপনি নবুওয়াতের দাবীতে মিথ্যাবাদী হন , তবে আমরা আপনার থেকে মুক্তি পেয়ে যাব । আর যদি আপনি সত্য নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হন , তবে এ বিষ আপনার কোন ক্ষতি করতে পারবে না ।
বিঃদ্রঃ - উপরে একই ঘটনার সহিহ হাদিসের তিন রূপ দেওয়া হল - এই বিষয় আরও কিছু জানা যায় যে , ইহুদি মহিলা পরবর্তীতে #মুসলিম হয়ে গিয়েছিল ।
যাইহোক , #খাইবারের যুদ্ধ ৬য় হিজরিতে হয়েছিল আর রাসুল (সাঃ) ১০ ম হিজরিতে মারা যান । 
এ কথা বোধগম্যের বাইরে যে , বিষ পানের ৪ বছর পর কি ভাবে একজন মানুষ বেঁচে থাকতে পারে ! 
ধরে নিলাম যে , রাসুল (সাঃ) ঐ গোস্ত খেয়েছিলেন ।
ঐ ইহুদিদের কথা অনুযায়ী ওরা #বিষ দিয়েছিল রাসুল (সাঃ) এর থেকে তাৎক্ষনিক ভাবে মুক্তি পাওয়ার জন্য ।
অথচ এটাও দেখা যাচ্ছে যে , রাসুল (সঃ) আদৌও ঐ গোস্ত খান নি ।
এখন এই প্রশ্নও উঠতে পারে যে , ঐ ইহুদি মহিলা বিষ দিয়ে ছিল আর এটাপরীক্ষা কারার জন্য যে , তিনি প্রকৃত নবী কিনা ।
এখন যদি রাসুল পাকের (সাঃ) উপর #বিষক্রিয়া হয় বা অন্য একজন সাহাবা মারা যাওয়ার পর বোঝা যায়ে যে , বিষ আছে । তবে তো ঐ মহিলার পরীক্ষাতে রসুল (সাঃ) পাস করতে পারলেন না ।
আর ঐ মহিলা মুসলিম বা হবেন কেন ?
এখন দেখা যাক , 
রাসুল (সাঃ) এর মৃত্যুর সময়কার কিছু হাদিস ।
যেখানে বলা হচ্ছে যে , নবী (সাঃ) যখন অসুস্থ ছিলেন , সেই সময় তিনি (সাঃ) ঘুমাচ্ছিলেন। তখন আয়শা নবী (সাঃ) এর মুখে কিছু দ্রব্য ঢুকিয়ে দেন। তখন রাসুল (সাঃ) কড়া ভাবে আয়শাকে বলেছিলেন যে , এভাবে তাঁর মুখে যেন কিছু না দেওয়া হয় ।
সূত্র - সহিহ আল বুখারি , আধুনিক প্রকাশনী -ঢাকা , বাংলাদেশ।
৫২৯৪ - ইবনে আব্বাস ও আয়শা থেকে বর্ণিত । 
নবী (সাঃ) ইন্তেকাল করলে হযরত আবু বকর নবী (সাঃ) কে চুমু দিলেন । হযরত আয়েশা (রাঃ) আরও বলেন , নবীজী (সাঃ) এর অসূখের সময় আমরা তার মুখে কিছু ঢেলে দিলাম । তখন তিনি রাসুল (সাঃ) আমাদের ইশারা দিতে থাকলেন যে , তোমরা আমায় মুখে কিছু ঢেল না । আমরা মনে করলাম , এটা ঔষধের প্রতি একজন রোগীর অরুচির প্রকাশ মাত্র । এরপর তিনি যখন সুস্থবোধ করলেন তখন বললেন , আমি কি তোমাদের আমার মুখে কিছু ঢালতে নিষেধ করি নি ? আমরা বললাম , আমরাতো ঔষধের প্রতি রোগীর সাধারন অনীহা মনে করেছিলাম । তখন তিনি রাসুল (সাঃ) বললেন , আমি এখন যাদের এ ঘরে দেখতে পাচ্ছি তাদের সকলকে এটা না গিলিয়ে ছাড়ব না শুধুমাত্র আব্বাস (রাঃ) ছাড়া । কেননা, তিনি তোমাদের সংগে জড়িত ছিলেন না ।
৬৪২০ - হযরত আয়েশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত -
তিনি বলেন , আমরা নাবী (সাঃ) এর অসুখের সময় তার মুখের এক কিনারায় ঔষধ ঢেলে দিলাম ।
তিনি (সাঃ) বলেন , #তোমরা আমার মুখের কিনারায় ঔষধ দিও না । আমরা মনে করলাম , রোগী ঔষধ সেবন অপছন্দ করেই থাকে। যখন তাঁর হুশ ফিরে এলো , তখন তিনি (সাঃ) বললেন , তোমাদের মধ্যে যেন এমন কেউ থাকে না , যার মুখের কিনারায় জোর পুর্বক ঔষধ ঢেলে দেয়া না হয় শুধুমাত্র আব্বাস ব্যতীত।
কেননা , সে তোমাদের কাছে হাজির ছিল না ।
৬৪৩০ - মূসা’দ্দাদ (রহঃ) হযরত আয়েশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত - তিনি বলেন , আমরা নবী (সাঃ) এর অসুখের সময় তার মুখের কিনারায় ঔষধ ঢেলে দিলাম । আর তিনি (সাঃ) আমাদের দিকে ইশারা করতে থাকলেন যে , তোমরা আমার মূখের কিনারায় ঔষধ ঢেলে দিও না । আমরা মনে করলাম যে , রোগীর ঔষধের প্রতি অনীহা-ই এর কারণ । যখন তিনি (সাঃ) হুশ ফিরে পেলেন , তখন বললেন , #আমাকে জোর পূর্বক ঔষধ সেবন করাতে কি তোমাদেরকে নিষেধ করি নি ? আমরা বললাম , রোগীর ঔষধের প্রতি অনীহা তাই এর কারণ বলে আমরা মনে করেছি । তখন তিনি (সাঃ) বললেন , তোমাদের মাঝে যেন এমন কেউ না থাকে যার মুখে জোরপূর্বক ঔষধ ঢালা হয় আর আমি দেখতে থাকব শুধু আব্বাস ব্যতীত । কেননা , সে তোমাদের সাথে ছিল না ।
#নোট - উপরে অনেক বেশির ভাগ জায়গাতে ঔষধ শব্দ অরিজিনালে নেই অনুবাদক বসিয়ে দিয়েছেন , বরং অরিজিনাল আরবীতে এটা আছে ‘(কিছু একটা) ঢেলেদিলাম’) ।
সুতরাং উপরের হাদিস সমূহ থেকে দেখা যাচ্ছে যে , #রাসুল (সাঃ) তার অসুস্থতার সময় হযরত আয়েশা এবং আরও কেউ রসুলের (সাঃ) মুখে কিছু ঢুকিয়ে দেন...যেটা রাসুল পাক (সাঃ) নিষেধ করার পরেও । রাসুল (সাঃ) পরিষ্কার ভাবে বারণ করেছিলেন যে , তাঁর মুখে যেন কিছু না দেওয়া হয় । পরে রাসুল (সাঃ) একটু হুস ফিরে পেলে রাগান্বিত হয়ে বললেন যে , এটাকে সবাইকে মুখে দিতে হবে এবং রাসুল (সাঃ) সেটা দেখবেন , শুধু হযরত আব্বাস (রাঃ) ব্যতীত কারণ তিনি ঐ সময় ছিলেন না ।
রাসুল (সাঃ) এর মৃত্যুর কারণ হিসাবে আয়েশা এটা প্রচার করতে লাগলেন যে , টেস্টিস এ #টিউমার ফেটে গিয়ে মারা গিয়েছেন ।
মুসনাদে আহমাদ ও আবু ইয়ালাআল মাসুলি -
حدثنا كامل ، حدثنا ابن لهيعة ، حدثني أبو الأسود ، عنعروة ، عن عائشة ، قالت : مات رسول الله صلى الله عليه وسلم من ذات الجنب
কিন্ত কেউ এটাকে বিশ্বাস করতে চায় নি কারণ রাসুল (সাঃ) আগেই বলে গিয়েছিলেন যে , এই ধরনের রোগ আমাদের রাসুলদের হয় না ।
এই সব দেখে আয়েশা বললেন যে , খাইবার যুদ্বে খাবারের বিষ ক্রীয়ায় তিনি (সাঃ) মারা গিয়েছেন ?
আপনারা উপরে আহলে সুন্নিদের সহীহ হাদিস থেকে বুঝতেই পারছেন যে , খাইবার যুদ্বে আল্লাহের রাসুল (সাঃ) বিষ খান নি বলেই বোঝা যাচ্ছে । আবার খেলেও তাঁর উপর ঐ বিষ কোন ক্রীয়া করে নি । 
আবার ঐ বিষ দেওয়া হয়েছিল ৬ষ্ঠ হিজরিতে এবং রাসুল (সাঃ) ইন্তেকাল করেছেন ১০ম হিজরিতে । তাহলে দীর্ঘ চার দশক কিভাবে একজন লোক দিব্যি বেঁচে থাকতে পারে ? এতো গেল আহলে সুন্নাতের হাদিস গ্রন্থ থেকে দলিল ।
এখন দেখা যাক যে , শীয়া হাদিস বা তাফসির বই এ কি বলা হচ্ছে-
তাফসির এ আইয়াস ও আল্লামা মাজলিশি ও আলি ইবনে ইব্রাহিম কুম্মি যিনি ইমাম হাসন আল আসকারী এর সমসাময়িক ছিলেন -
ইমাম জাফর সাদিক এর থেকে বর্ণনা করেছেন যে , তার মুল মর্ম হল যে রাসুল (সাঃ) এর ওফাতের শেষ দিনের দিকে আবুবকর আর ওমরের ইশারাতে আয়শা ও হাফসা রাসুল (সাঃ) কে বিষাক্ত কিছু খাইয়ে ছিলেন
সুপ্রিয় পাঠক, এই লেখাটিতে নিজস্ব কোন কিছুই বলা হয়নি । ইতিহাস থেকে যা পাওয়া যায় তাই এখানে তুলে ধরা হয়েছে। এখন এই লেখাটা গ্রহন করা বা না করা যার যার ব্যক্তিগত অভিরুচি ।
তবে হ্যা , এই বিষয় আপনাদের শালীন ভাষায় যৌক্তিক যে কোন তথ্যাদি বা মতামত সাদরে গ্রহনীয় ।

⭐⭐দয়াল রাসূল পাক (সঃ) এর জন্মদিন ও মৃত্যু দিন কি একই তারিখে হয়েছিলো ❓
নাকি মুসলমানদের আনন্দ নষ্ট করেছিলো ষড়যন্ত্রকারীরা ❓

 ***সমাজে দীর্ঘ কাল ধরে এটাই প্রচলিত যে আমাদের দয়াল রাসূল (সা:) ১২ই রবিউল আওয়াল রোজ সোমবার জন্মগ্রহন করেছিলেন এবং তিনি ঐ একই তারিখে ওফাত লাভ করেন । কিন্তু  দয়াল রাসূল (সাঃ) হিজরী পূর্ব ৫৩ সালের ১২ই রবিউল আওয়াল রোজ সোমবার জন্মগ্রহন করলেও তার ওফাতের প্রকৃত তারিখটি ছিল হিজরী ১১ সালের ১লা রবিউল আওয়াল রোজ সোমবার। স্বধর্মীদের অজ্ঞতা আর বিধর্মীদের চক্রান্তের কবলে  পড়ে হয়ত কোন এক ভাবে এই সঠিক ইতিহাসটির বিকৃতি ঘটেছে।    
 
    পবিত্র আল-কোরআনে আল্লাহ্‌ এরশাদ করেন, 
“আজ আমি তোমাদের ধর্মকে পরিপূর্ণ করলাম, আমার নেয়ামত পরিপূর্ণ করলাম এবং ইসলাম কে একমাত্র ধর্ম হিসেবে কবুল করে নিলাম।” 
(সুরা মায়েদাঃ আয়াত- ৩)
   এই আয়াতটি ১০ই হিজরীর ৯ই জিলহজ্ব রোজ শুক্রবার অর্থাৎ বিদায় হজের দিন আরাফার ময়দানে নাজিল হয়েছিল। আর এই তারিখটি হযরত রাসুল (সাঃ) এর ওফাত লাভের প্রকৃত তারিখ নির্ণয়ে বিশেষ ভুমিকা পালন করে।  
 
    বিশিষ্ট সাহাবী হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রাঃ) বলেন, 
“এই আয়াতটি ১০ম হিজরীর ৯ই জিলহজ্ব তারিখে নাজিল হয়। এরপর রাসূল (সাঃ) আর মাত্র ৮১ দিন পৃথিবীতে জীবিত ছিলেন।” 
(তফসীরে মা’রেফুল কোরআন)      
 
     তফসিরে দুররে মানসুরের ৩য় খণ্ডে বলা হয়েছে 
“ইবনে জারির কর্তৃক ইবনে জুরাইজ হতে বর্ণিত হয়েছে, তিনি বলেন-
এই আয়াতটি নাজিল হওয়ার পর রাসুল (সাঃ) ৮১ রাত দুনিয়াতে অবস্থান করেন।”
 
     তফসিরে তাবারীর ৪র্থ খণ্ডে বলা হয়েছে, “হাজ্জাজ কর্তৃক ইবনে জুরাইজ হতে বর্ণিত হয়েছে, তিনি বলেন-এই আয়াতটি নাজিল হওয়ার পর ৮১ রাত রাসূল (সাঃ) জীবিত ছিলেন।”
  
     ইবনে জারির বলেন যে আরাফা দিবসের পর রাসুল (সাঃ) ৮১ দিন জীবিত ছিলেন। (তফসীরে ইবনে কাসীর- ২য় খণ্ড)
ইমাম বাগবী বলেন, “হারুন ইবনে আনতারা তার পিতা হতে বর্ণনা করেন, এই আয়াতটি অবতীর্ণ হওয়ার পর রাসুল (সাঃ) ৮১ দিন জীবিত ছিলেন।” 
(তফসীরে মাযহারী-৩য় খণ্ড)

    সুতরাং ১০ম হিজরীর বিদায় হজ্জের দিনটি মূলসুত্র ধরে ৮১তম দিন কবে হয় তা হিসাব করলে খুব সহজেই বের করা সম্ভভ যে রাসুল (সাঃ) আসলে কবে ওফাত লাভ করেছিলেন।  
 
    এ কথাটি ঐতিহাসিক ভাবে প্রমানিত যে ১০ম হিজরীর ৯ই জিলহজ্ব  হযরত রাসুল (সাঃ) এর আরাফার ময়দানে বিদায় হজ্জের ভাষণ দান কালে উক্ত আয়াতটি নাজিল হয়েছিল এবং তার পর তিনি আর মাত্র ৮১ দিন পৃথিবীর বুকে জীবিত ছিলেন।
   চন্দ্রবর্ষ হিসাব অনুযায়ী এক মাস ২৯ দিন হলে তার পরের মাস হয় ৩০ দিনে। এই হিসেবে জিলহজ্ব মাস ২৯ দিন, মহররম মাস ৩০ দিন, সফর মাস ২৯ দিন। এখন ১০ম হিজরীর ৯ই জিলহজ্ব থেকে হিসাব করলে দেখা যায় যে ওই জিলহজ্ব মাসের বাকি থাকে আর ২১ দিন, তার পরের মাস অর্থাৎ ১১ হিজরীর মহরম মাসের ৩০ দিন এবং সফর মাসের ২৯ দিন। সর্বমোট ৮০ দিন। সেই হিসেবে ৮১ তম দিন হয় ১লা রবিউল আওয়াল। এবং সেই দিনটিও ছিল সোমবার। এখন এই ৩টি মাসের সব কয়টি মাস ২৯ দিন অথবা ৩০ দিন যাই হোক না কেন বিদায় হজ্জের দিন থেকে হিসেব করলে ৮১ তম দিন কখনই এবং কোন ভাবেই ১২ ই রবিউল হয় না।

মন্তব্যসমূহ

জনপ্রিয় পোস্টসমূহ

বিসমিল্লাহির রহমানির রহিমআল্লাহুম্মা সাল্লে আলা মোহাম্মদ ওয়া আলে মোহাম্মদপবিত্র কুরআন ও রাসূল সাল্লাল্লাহু ওয়া সাল্লাম এর হাদিস থেকে আমিরুল মোমেনীন আলী ইবনে আবি তালিব আঃ এর কিছু গুরুত্বপূর্ণ হাদিসমহানবী হযরত মুহাম্মদ ‎(সা.)-এর উত্তরাধিকারী,তাঁর নবুওয়াতের মিশনের প্রধান সাহায্যকারী এবং দুনিয়া ও আখেরাতে রাসূলের ভ্রাতা আলী ‎(আ.) ‏আবরাহার পবিত্র মক্কা আক্রমণের ৩৩ বছর পর ১৩ রজব পবিত্র কা’বা শরীফে জন্মগ্রহণ করেন। মহান আল্লাহর আদেশে তাঁর নাম রাখা হয় আলী।শিশুকাল থেকেই মহানবী ‎(সা.)-এর সাথে হযরত আলীর বিশেষ সম্পর্ক গড়ে ওঠে। এ সম্পর্কে আলী ‎(আ.) ‏নিজেই বলেছেন ‎: ‘...তিনি আমাকে তাঁর কোলে রাখতেন যখন আমি শিশু ছিলাম। তিনি আমাকে বুকে জড়িয়ে ধরতেন এবং তাঁর বিছানায় শুইয়ে রাখতেন। তাঁর পবিত্র দেহ আমার দেহকে স্পর্শ করত এবং তিনি আমাকে তাঁর শরীরের সুগন্ধির ঘ্রাণ নেওয়াতেন। তিনি খাদ্য-দ্রব্য চিবিয়ে আমার মুখে পুরে দিতেন।...’১হযরত আবু তালিবের সংসারের ব্যয়ভার কমানোর জন্য হযরত আলীর বালক বয়সেই মহানবী ‎(সা.) ‏তাঁকে নিজের কাছে নিয়ে আসেন। তখন থেকে তিনি রাসূলের সার্বক্ষণিক সঙ্গী হয়ে যান। রাসূল হেরা পর্বতের গুহায় আল্লাহর ইবাদাত করতে গেলেও তাঁকে সাথে নিয়ে যেতেন। হযরত আলী বলেন ‎: ‘তিনি ‎(মহানবী) ‏প্রতি বছর হেরাগুহায় একান্ত নির্জনে বাস করতেন। আমি তাঁকে দেখতাম। আমি ব্যতীত আর কোন লোকই তাঁকে দেখতে পেত না। ঐ সময় রাসূলুল্লাহ্ ও খাদীজাহ্ ব্যতীত কোন মুসলিম পরিবারই পৃথিবীর বুকে ছিল না। আমি ছিলাম তাঁদের পরিবারের তৃতীয় সদস্য। আমি ওহী ও রেসালতের আলো প্রত্যক্ষ করেছি এবং নবুওয়াতের সুবাস ও সুঘ্রাণ অনুভব করেছি।’২তিনি মহানবীর প্রতি নিবেদিতপ্রাণ ছিলেন এবং প্রতিটি ক্ষেত্রে তাঁকে অনুসরণ করতেন। তিনি বলেন ‎: ‘উষ্ট্র শাবক যেমনভাবে উষ্ট্রীকে অনুসরণ করে ঠিক সেভাবে আমি তাঁকে অনুসরণ করতাম। তিনি প্রতিদিন তাঁর উন্নত চরিত্র থেকে একটি নিদর্শন আমাকে শিক্ষা দিতেন এবং আমাকে তা পালন করার নির্দেশ দিতেন।... ‏তাঁর ওপর যখন ওহী অবতীর্ণ হয়েছিল তখন আমি শয়তানের ক্রন্দন ধ্বনি শুনেছিলাম। তাই আমি তাঁকে জিজ্ঞেস করেছিলাম ‎: ‏হে রাসূলুল্লাহ্! ‏এ ক্রন্দন ধ্বনি কার? ‏তখন তিনি আমাকে বলেছিলেন ‎: ‏এই শয়তান এখন থেকে তার পূজা ‎(ইবাদাত) ‏করা হবে না বলে হতাশ হয়ে গেছে। নিশ্চয় আমি যা শুনি তুমি তা শোন এবং আমি যা দেখি তা দেখ। তবে তুমি নবী নও,কিন্তু ‎[নবীর] ‏সহকারী এবং নিঃসন্দেহে তুমি মঙ্গল ও কল্যাণের ওপরই আছ।’৩আর তাই মহানবী ‎(সা.)-এর নবুওয়াতের আনুষ্ঠানিক ঘোষণা আসার পর তিনিই সর্বপ্রথম তাঁর ওপর ঈমান আনেন এবং তিনিই তাঁর সাথে নামায আদায় করা প্রথম ব্যক্তি। ইমাম মালেক বর্ণনা করেছেন ‎: ‘মহানবী ‎(সা.) ‏সোমবারে নবুওয়াত প্রাপ্ত হন এবং আলী মঙ্গলবারে তাঁর ওপর ঈমান আনেন।’৪হযরত আলী নিজেই বলেন ‎: ‘আমি আল্লাহর বান্দা এবং তাঁর রাসূলের ভ্রাতা এবং তাঁর নবুওয়াতের সবচেয়ে বড় বিশ্বাসস্থাপনকারী। একমাত্র মিথ্যাবাদী ছাড়া আমার পর কেউ এ দাবি করবে না। অন্য লোকদের নামায পড়ারও ৭ বছর আগে থেকে আমি নামায পড়েছি।’৫হযরত আলী ‎(আ.)-এর প্রসিদ্ধ উপাধিরাসূলুল্লাহ ‎(সা.) ‏হযরত আলীকে বিভিন্ন উপাধিতে ভূষিত করেছিলেন। এর মধ্যে সবচেয়ে প্রসিদ্ধ হচ্ছে সিদ্দিকে আকবার,ফারুকে আযম,আসাদুল্লাহ ও মুরতাজা।পবিত্র কুরআনে হযরত আলী ‎(আ.)-এর মর্যাদাহযরত আলীর শানে পবিত্র কুরআনের অনেক আয়াত নাযিল হয়েছে। ইবনে আসাকির হযরত ইবনে আব্বাস থেকে বর্ণনা করেছেন যে,কোন ব্যক্তির গুণ বর্ণনায় এত অধিক কুরআনের বাণী অবতীর্ণ হয়নি যা হযরত আলী সম্পর্কে অবতীর্ণ হয়েছে। হযরত ইবনে আব্বাস আরও বলেছেন যে,হযরত আলীর শানে তিনশ’ ‏আয়াত নাযিল হয়েছে এবং তাঁর গুণাবলি অত্যধিক ও প্রসিদ্ধ।৬ পবিত্র কুরআনের নাযিলকৃত আয়াতগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য কয়েকটি নিম্নে উল্লেখ করা হল ‎:১. ‏সূরা বাকারার ২০৭ নং আয়াতوَمِنَ النَّاسِ مَنْ يَشْرِي نَفْسَهُ ابْتِغَاءَ مَرْضَاتِ اللَّهِ وَاللَّهُ رَءُوفٌ بِالْعِبَادِ‘এবং মানুষের মধ্যে এমনও আছে,যে আল্লাহর সন্তোষ লাভের জন্য নিজের জীবন পর্যন্ত বিক্রয় করে দেয় এবং আল্লাহ ‎(এরূপ) ‏বান্দাদের প্রতি অতিশয় অনুগ্রহশীল।’সালাবী তাঁর তাফসীর গ্রন্থে বর্ণনা করেছেন যে,রাসূলুল্লাহ ‎(সা.) ‏যখন মক্কা থেকে মদীনায় হিজরত করার প্রস্তুতি নিলেন সেই সময় হযরত আলীকে তাঁর বিছানায় শুয়ে থাকার নির্দেশ দেন যাতে কাফির-মুশরিকরা মনে করে যে,রাসূল তাঁর নিজ ঘরেই রয়েছেন। আলী ‎(আ.) ‏নির্দ্বিধায় এ নির্দেশ পালন করলে মহান আল্লাহ এ আয়াত নাযিল করেন।৭ ২. ‏সূরা আলে ইমরানের ৬১ নং আয়াতفَمَنْ حَاجَّكَ فِيهِ مِنْ بَعْدِ مَا جَاءَكَ مِنَ الْعِلْمِ فَقُلْ تَعَالَوْا نَدْعُ أَبْنَاءَنَا وَأَبْنَاءَكُمْ وَنِسَاءَنَا وَنِسَاءَكُمْ وَأَنْفُسَنَا وَأَنْفُسَكُمْ ثُمَّ نَبْتَهِلْ فَنَجْعَلْ لَعْنَتَ اللَّهِ عَلَى الْكَاذِبِينَ‘অতঃপর তোমার নিকট যখন জ্ঞান ‎(কুরআন) ‏এসে গেছে,এরপরও যদি কেউ ‎(খ্রিস্টান) ‏তোমার সাথে তার ‎(ঈসার) ‏সম্বন্ধে তর্ক-বিতর্ক করে,তবে বল,‘(ময়দানে) ‏এস,আমরা আহ্বান করি আমাদের পুত্রদের ও তোমাদের পুত্রদের,আমাদের নারীদের ও তোমাদের নারীদের এবং আমাদের সত্তাদের ও তোমাদের সত্তাদের;’ ‏অতঃপর সকলে মিলে ‎(আল্লাহর দরবারে) ‏নিবেদন করি এবং মিথ্যাবাদীদের ওপর আল্লাহর অভিসম্পাত বর্ষণ করি।’ঘটনাটি এরূপ ‎: ‏রাসূলুল্লাহ্ ‎(সা.)-এর নবুওয়াতের সত্যতা যাচাই করার জন্য নাজরানের একটি খ্রিস্টান প্রতিনিধিদল মদীনায় আসল। তাদের সাথে আলোচনা ফলপ্রসূ হলো না। রাসূল ‎(সা.) ‏হযরত ঈসা ‎(আ.) ‏সম্বন্ধে প্রতিনিধিদের বললেন যে,তিনি আল্লাহর পুত্র নন,বরং আল্লাহর বান্দা ও রাসূল। রাসূলুল্লাহ্ হযরত ঈসার জন্মের ব্যাপারে হযরত আদমের উদাহরণও দিলেন। কিন্তু তারা কোন কথাই শুনল না। অবশেষে তিনি আল্লাহর আদেশে পরস্পরের বিরুদ্ধে দোয়া ও মিথ্যাবাদীদের ওপর অভিশাপ বর্ষণের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করলেন,যাকে ‎‘মুবাহিলা’ ‏বলে। স্থির করা হল যে,নির্দিষ্ট স্থানে নির্দিষ্ট সময়ে উভয়ে নিজ নিজ পুত্রদের,নারীদের ‎(কন্যা সন্তানদের) ‏এবং তাদের নিজেদের ‎‘সত্তা’ ‏বলে গণ্য হওয়ার যোগ্য ব্যক্তিদের নিয়ে একত্র হবে এবং প্রত্যেকে অপরের প্রতি অভিসম্পাত ও আল্লাহর শাস্তি কামনা করবে। রাসূলুল্লাহ ‎(সা.) ‏ইমাম হুসাইনকে কোলে নিয়ে ইমাম হাসানের হাত ধরলেন এবং হযরত ফাতিমাকে নিজের পেছনে,আর হযরত আলীকে তাঁর পেছনে রাখলেন। অর্থাৎ ছেলেদের স্থানে তিনি নাতিদের,নারীদের স্থানে নিজ কন্যাকে এবং ‎‘সত্তা’ ‏বলে গণ্যদের স্থানে আলীকে নিলেন এবং দোয়া করলেন,‘হে আল্লাহ! ‏প্রত্যেক নবীর আহলে বাইত থাকে,এরা আমার আহলে বাইত। এদের সকল দোষ-ত্রুটি হতে মুক্ত ও পাক-পবিত্র রেখ।’ ‏তিনি এভাবে ময়দানে পৌঁছলে খ্রিস্টানদের নেতা আকব তা দেখে বলল,‘আল্লাহর কসম,আমি এমন নূরানী চেহারা দেখছি যে,যদি এ পাহাড়কে নিজ স্থান হতে সরে যেতে বলেন,তবে অবশ্যই সরে যাবে। সুতরাং মুবাহিলা হতে হাত গুটিয়ে নেওয়াই কল্যাণকর,অন্যথায় কিয়ামত অবধি খ্রিস্টানদের কেউ অবশিষ্ট থাকবে না।’ ‏পরিশেষে তারা জিযিরা কর দিতে সম্মত হল। এটা হযরত আলীর একটি উঁচু স্তরের ফযিলত যে,তিনি আল্লাহর আদেশে রাসূলের ‎‘নাফ্স’ (অনুরূপ সত্তা) ‏সাব্যস্ত হলেন এবং সমুদয় নবীর থেকে শ্রেষ্ঠ হলেন।৮৩. ‏সূরা নিসার ৫৯ নং আয়াত ‎يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا أَطِيعُوا اللَّهَ وَأَطِيعُوا الرَّسُولَ وَأُولِي الْأَمْرِ مِنْكُمْ‘হে বিশ্বাসিগণ! ‏তোমরা আল্লাহর আনুগত্য কর এবং রাসূল ও তোমাদের মধ্যে যারা নির্দেশের অধিকর্তা,তাদের আনুগত্য কর...।’ইমাম জাফর সাদিক ‎(আ.)- ‏কে জিজ্ঞেস করা হলো যে,উত্তরাধিকারীর আদেশ মান্য করা কি অবশ্যই কর্তব্য? ‏তিনি বললেন ‎: ‏হ্যাঁ,তাঁরা ঐসব ব্যক্তি যাঁদের আদেশ পালন করা এ আয়াতে ওয়াজিব করা হয়েছে...। এ আয়াত হযরত আলী বিন আবি তালিব,হযরত হাসান ও হযরত হুসাইন ‎(আ.)-এর শানে অবতীর্ণ হয়েছে।৯ ৪. ‏সূরা মায়েদার ৫৫ নং আয়াতإِنَّمَا وَلِيُّكُمُ اللَّهُ وَرَسُولُهُ وَالَّذِينَ آمَنُوا الَّذِينَ يُقِيمُونَ الصَّلَاةَ وَيُؤْتُونَ الزَّكَاةَ وَهُمْ رَاكِعُونَ‘(হে বিশ্বাসিগণ!) ‏তোমাদের অভিভাবক তো কেবল আল্লাহ,তাঁর রাসূল এবং সেই বিশ্বাসীরা যারা নামায প্রতিষ্ঠা করে এবং রুকু অবস্থায় যাকাত প্রদান করে।’শীয়া-সুন্নি উভয় মাযহাবের তফসীরকাররা একমত যে,আয়াতটি হযরত আলী ‎(আ.)-এর শানে নাযিল হয়েছে। যেমন ইবনে মারদুইয়া এবং খাতীব বাগদাদী ইবনে আব্বাস সূত্রে এবং তাবরানী ও ইবনে মারদুইয়া আম্মার ইবনে ইয়াসির ও আলী ইবনে আবি তালিব সূত্রে বর্ণনা করেছেন যে,আয়াতটি আলী ইবনে আবি তালিব ‎(আ.) ‏সম্পর্কে অবতীর্ণ হয়েছে যখন তিনি রুকু অবস্থায় যাকাত দেন।ঘটনাটি এরূপ ‎: ‏একদিন হযরত আলী ‎(আ.) ‏মদীনার মসজিদে নামায পড়ছিলেন। এমন সময় একজন ভিক্ষুক এসে ভিক্ষা চাইল। কিন্তু কোন ভিক্ষা না পাওয়ায় সে ফরিয়াদ করল যে,রাসূলের মসজিদ থেকে সে খালি হাতে ফিরে যাচ্ছে। এ সময় হযরত আলী রুকু অবস্থায় ছিলেন। তিনি সেই অবস্থায় তাঁর ডান হাতের আঙ্গুল থেকে আংটি খুলে নেওয়ার জন্য ভিক্ষুকের প্রতি ইশারা করেন। ভিক্ষুক তাঁর হাত থেকে আংটি খুলে নেয়। এ ঘটনার প্রেক্ষিতে উপরিউক্ত আয়াত নাযিল হয়।১০৫. ‏সূরা মায়েদার ৬৭ নং আয়াতيَا أَيُّهَا الرَّسُولُ بَلِّغْ مَا أُنْزِلَ إِلَيْكَ مِنْ رَبِّكَ وَإِنْ لَمْ تَفْعَلْ فَمَا بَلَّغْتَ رِسَالَتَهُ وَاللَّهُ يَعْصِمُكَ مِنَ النَّاسِ إِنَّ اللَّهَ لَا يَهْدِي الْقَوْمَ الْكَافِرِينَ‘হে রাসূল! ‏যা ‎(যে আদেশ) ‏তোমার প্রতিপালকের পক্ষ হতে তোমার প্রতি অবতীর্ণ হয়েছে তা পৌঁছে দাও,আর যদি তুমি তা না কর,তবে তুমি ‎(যেন) ‏তার কোন বার্তাই পৌঁছাওনি,এবং ‎(তুমি ভয় কর না) ‏আল্লাহ তোমাকে মানুষের অনিষ্ট হতে রক্ষা করবেন;এবং নিশ্চয় আল্লাহ অবিশ্বাসী সম্প্রদায়কে সঠিক পথে পরিচালিত করেন না।’যখন রাসূলুল্লাহ ‎(সা.) ‏দশম হিজরিতে বিদায় হজ্ব থেকে মদীনায় প্রত্যাবর্তন করছিলেন সে সময় আল্লাহ্ তা‘আলা এ আয়াত নাযিল করেন। ইবনে আবী হাতিম ও ইবনে আসাকির আবু সাঈদ খুদরী হতে বর্ণনা করেছেন যে,এ আয়াত গাদীরে খুম প্রান্তরে হযরত আলী ‎(আ.)-এর শানে নাযিল হয়েছে।বিদায় হজ্ব থেকে প্রত্যাবর্তন করার সময় গাদীরে খুম নামক স্থানে মহানবী ‎(সা.) ‏হযরত আলীকে তাঁর পরে সকল মুমিনের অভিভাবক বলে ঘোষণা দেন।১১এ ঘোষণা দেয়ার পর হযরত ওমর হযরত আলীর সাথে সাক্ষাৎ করে অভিনন্দন জানান এবং বলেন ‎: ‘হে আলী ইবনে আবি তালিব! ‏আপনি আজ হতে প্রত্যেক মুসলিম নর-নারীর মাওলা হয়ে গেলেন।’১২৬. ‏সূরা রাদের ৭ নং আয়াতإِنَّمَا أَنْتَ مُنْذِرٌ وَلِكُلِّ قَوْمٍ هَادٍ‘(হে রাসূল!) ‏তুমি তো কেবল সতর্ককারী এবং প্রত্যেক সম্প্রদায়ের জন্য রয়েছে এক পথ প্রদর্শক।’ইবনে মারদুইয়্যা,ইবনে জারীর,আবু নাঈম তাঁর ‎‘মারেফাত’ ‏গ্রন্থে,ইবনে আসাকির,দাইলামী ও ইবনে নাজ্জার তাঁদের স্ব স্ব গ্রন্থে বর্ণনা করেছেন যে,আয়াতটি নাযিল হলে মহানবী ‎(সা.) ‏তাঁর হাত নিজের বুকে রেখে বললেন,‘আমিই সতর্ককারী।’ ‏অতঃপর আলীর কাঁধের প্রতি তাঁর হাত দ্বারা ইশারা করে বললেন,‘হে আলী! ‏তুমিই পথপ্রদর্শক এবং মানুষ আমার পর তোমার মাধ্যমে হেদায়াতপ্রাপ্ত হবে।’ ‏উক্ত রেওয়ায়েতটি শব্দের তারতম্যে ইবনে মারদুইয়্যা সাহাবী আবু বারযাহ আসলামী হতে,জীয়াফীল হযরত ইবনে আব্বাস হতে,ইবনে আহমাদ তাঁর মুসনাদে এবং ইবনে মারদুইয়্যা ও ইবনে আসাকির স্বয়ং হযরত আলী ‎(আ.) ‏হতে বর্ণনা করেছেন।১৩৭. ‏সূরা রাদের ৪৩ নং আয়াতوَيَقُولُ الَّذِينَ كَفَرُوا لَسْتَ مُرْسَلًا قُلْ كَفَى بِاللَّهِ شَهِيدًا بَيْنِي وَبَيْنَكُمْ وَمَنْ عِنْدَهُ عِلْمُ الْكِتَابِযারা অবিশ্বাস করেছে তারা বলে,‘তুমি আল্লাহর রাসূল নও।’ ‏তুমি বল,‘আমার ও তোমাদের মধ্যে ‎(রেসালাতের) ‏সাক্ষী হিসেবে আল্লাহই যথেষ্ট এবং সেই ব্যক্তি যার কাছে গ্রন্থের পূর্ণ জ্ঞান রয়েছে।’অধিকাংশ তাফসীরকার স্বীকার করেছেন যে,আয়াতে বর্ণিত সেই ব্যক্তি হলেন হযরত আলী ‎(আ.)। যেমন আসমী ‎‘যায়নুল ফাতা’ ‏নামক গ্রন্থে উল্লেখ করেছেন এবং সা’লাবী আবদুল্লাহ ইবনে আতা থেকে বর্ণনা করেছেন যে,আবদুল্লাহ বিন সালাম বলতেন,‘যার কাছে গ্রন্থের পূর্ণ জ্ঞান আছে’-এর উদ্দিষ্ট হযরত আলী ‎(আ.)। এজন্যই হযরত আলী ‎(আ.) ‏বারবার বলতেন,‘আমার কাছে আমার মৃত্যুর পূর্বে যা চাও জিজ্ঞেস কর।’১৪৮. ‏সূরা নাহলের ৪৩ নং আয়াতوَمَا أَرْسَلْنَا مِنْ قَبْلِكَ إِلَّا رِجَالًا نُوحِي إِلَيْهِمْ فَاسْأَلُوا أَهْلَ الذِّكْرِ إِنْ كُنْتُمْ لَا تَعْلَمُونَতোমার পূর্বেও আমরা কেবল পুরুষদেরই ‎(রাসূল করে) ‏প্রেরণ করেছি যাদের প্রতি আমরা প্রত্যাদেশ প্রেরণ করতাম;যদি তোমরা না জেনে থাক তবে যারা জানে তাদের জিজ্ঞেস কর।আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস বর্ণনা করেন ‎: ‏জ্ঞানী ব্যক্তিরা অর্থাৎ আহলুয যিকর হলেন হযরত মুহাম্মাদ ‎(সা.),হযরত আলী ‎(আ.),হযরত ফাতেমা ‎(আ.),হযরত হাসান ও হুসাইন ‎(আ.)। যাবের ইবনে আবদুল্লাহ বলেছেন ‎: ‏যখন এই আয়াত নাযিল হল তখন হযরত আলী বললেন ‎: ‏আমরাই হলাম জ্ঞানের ভাণ্ডার।১৫৯. ‏সূরা আহযাবের ৩৩ নং আয়াতوَقَرْنَ فِي بُيُوتِكُنَّ وَلَا تَبَرَّجْنَ تَبَرُّجَ الْجَاهِلِيَّةِ الْأُولَى وَأَقِمْنَ الصَّلَاةَ وَآتِينَ الزَّكَاةَ وَأَطِعْنَ اللَّهَ وَرَسُولَهُ إِنَّمَا يُرِيدُ اللَّهُ لِيُذْهِبَ عَنْكُمُ الرِّجْسَ أَهْلَ الْبَيْتِ وَيُطَهِّرَكُمْ تَطْهِيرًا‘হে নবী পরিবার! ‏আল্লাহ তো কেবল চান তোমাদের থেকে অপবিত্রতা দূর করতে এবং তোমাদের সম্পূর্ণরূপে পবিত্র করতে।’উম্মুল মুমিনীন হযরত উম্মে সালামার ঘরে এ আয়াত নাযিল হলে রাসূলুল্লাহ ‎(সা.) ‏হযরত ফাতিমা,ইমাম হাসান ও ইমাম হুসাইন ‎(আ.)-কে ডাকেন এবং তাঁদেরকে একটি চাদরে ঢেকে নেন। হযরত আলী তাঁর পেছনে ছিলেন। তিনি তাঁকেও চাদরে ঢেকে নেন। অতঃপর বলেন ‎: ‘হে আল্লাহ্! ‏এরা আমার আহলে বাইত। অতএব,তুমি তাদের থেকে অপবিত্রতা দূর করে দাও এবং তাদেরকে উত্তমরূপে পবিত্র কর।’ ‏তখন উম্মে সালামা বলেন ‎: ‘হে আল্লাহর রাসূল! ‏আমিও কি তাদের অন্তর্ভুক্ত?’ ‏তিনি বলেন ‎: ‘তুমি স্ব স্থানে আছ এবং তুমি কল্যাণের মধ্যেই আছ।’১৬হযরত উম্মে সালামা ছাড়াও হযরত আবু সাঈদ খুদরী ও আনাস ইবনে মালিক কর্তৃক এ হাদীসটি বর্ণিত হয়েছে।১৭১০. ‏সূরা শূরার ২৩ নং আয়াতقُلْ لَا أَسْأَلُكُمْ عَلَيْهِ أَجْرًا إِلَّا الْمَوَدَّةَ فِي الْقُرْبَى‘বল,আমি এর বিনিময়ে তোমাদের নিকট থেকে আমার নিকটাত্মীয়দের প্রতি ভালবাসা ছাড়া আর কোন প্রতিদান চাই না।’রাসূলুল্লাহ ‎(সা.)-এর নিকটাত্মীয় আহলে বাইতের সদস্যদের প্রতি ভালবাসা পোষণকে এ আয়াত দ্বারা মহান আল্লাহ মুসলমানদের জন্য ফরয বলে ঘোষণা করেন।হযরত আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস বর্ণনা করেছেন ‎: ‏যখন এ আয়াত নাযিল হল তখন সাহাবিগণ জিজ্ঞেস করলেন,হে রাসূলুল্লাহ! ‏আপনার নিকটাত্মীয়,যাদেরকে ভালবাসা আমাদের ওপর ওয়াজিব করা হয়েছে তারা কারা? ‏রাসূল ‎(সা.) ‏বললেন ‎: ‏আলী,ফাতেমা,হাসান ও হুসাইন।১৮রাসূলুল্লাহ ‎(সা.)-এর হাদীসে আলী ‎(আ.)হযরত আলীর মর্যাদা সম্পর্কে মহানবী ‎(সা.)-এর নিকট থেকে অনেক হাদীস বর্ণিত হয়েছে। এখানে কয়েকটি উল্লেখ করা হল ‎:১. ‏সা’দ ইবনে আবি ওয়াক্কাস বলেন,নবী ‎(সা.) ‏তাবুক যুদ্ধের সময় আলীকে লক্ষ্য করে বলেছেন ‎: ‘তুমি কি এতে সন্তুষ্ট নও যে,মর্যাদার দিক থেকে মূসার নিকট হারুন যে পর্যায়ে ছিলেন,তুমিও আমার নিকট ঐ পর্যায়ে রয়েছ?’১৯২. ‏অন্য একটি হাদীসে এসেছে ‎: ‏রাসূল বলেন ‎: ‘তুমি তো আমার নিকট তদ্রূপ যেরূপ হারুনের স্থান মূসার নিকট। পার্থক্য এতটুকু যে,আমার পরে কোন নবী নেই।’২০৩. ‏রাসূলুল্লাহ ‎(সা.) ‏ইমাম হাসান ও হুসাইনের হাত ধরে বলেন ‎: ‘যে ব্যক্তি আমাকে ভালবাসে এবং এ দু’জন ও তাদের পিতা-মাতাকে ভালবাসে,সে কিয়ামতের দিন আমার সাথে একই মর্যাদায় অবস্থান করবে।’২১৪. ‏আবদুল্লাহ্ ইবনে মাসউদ থেকে বর্ণিত। রাসূল বলেছেন ‎: ‘আলীর চেহারার দিকে তাকানোও ইবাদত।’২২৫. ‏রাসূলুল্লাহ্ ‎(সা.) ‏আলী ‎(আ.)-কে সম্বোধন করে বলেছিলেন ‎: ‘মুমিনরাই তোমাকে মহব্বত করবে এবং মুনাফিকরাই তোমার প্রতি বিদ্বেষ পোষণ করবে।’২৩৬. ‏তিরমিযী,নাসাঈ ও ইবনে মাযাহ হুবশী ইবনে জুনাদাহ্ ‎(রা.) ‏থেকে বর্ণনা করেছেন। রাসূল ‎(সা.) ‏বলেছেন ‎: ‘আলী আমা থেকে এবং আমি আলী থেকে। যে ব্যক্তি আলীকে ভালবেসেছে,সে আমাকে ভালোবেসেছে। আর যে ব্যক্তি আলীকে ভালবেসেছে,সে আল্লাহকে ভালবেসেছে। যে ব্যক্তি আলীর সাথে শত্রুতা পোষণ করেছে সে আমার সাথে শত্রুতা পোষণ করেছে। আর যে আমার শত্রু সে আল্লাহর শত্রু। যে ব্যক্তি আলীকে কষ্ট দিয়েছে,সে আমাকে কষ্ট দিয়েছে।’২৪৭. ‏রাসূলুল্লাহ ‎(সা.) ‏বলেন ‎: ‘(হে আলী!) ‏দুনিয়া ও আখেরাতে তুমি আমারই ভাই।’২৫৮. ‏আবদুল্লাহ ইবনে বুরাইদা ‎(র.) ‏থেকে তাঁর পিতার সূত্রে বর্ণিত। তিনি বলেন ‎: ‏রাসূলুল্লাহ ‎(সা.) ‏বলেছেন ‎: ‘চার ব্যক্তিকে ভালবাসতে আল্লাহ আমাকে আদেশ করেছেন এবং তিনি আমাকে এও অবহিত করেছেন যে,তিনিও তাদের ভালবাসেন। বলা হল ‎: ‏হে আল্লাহর রাসূল! ‏আমাদের তাদের নামগুলো বলুন। তিনি বলেন ‎: ‏আলীও তাদের অন্তর্ভুক্ত। এ কথা তিনি তিনবার বলেন। ‎(অবশিষ্ট তিনজন হলেন) ‏আবু যার,মিকদাদ ও সালমান।...’২৬৯. ‏জাবির ‎(রা.) ‏থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন ‎: ‏তায়েফ অভিযানের দিন রাসূলুল্লাহ ‎(সা.) ‏আলীকে কাছে ডেকে তার সাথে চুপিসারে আলাপ করেন। লোকেরা বলল ‎: ‏তিনি তাঁর চাচাত ভাইয়ের সাথে দীর্ঘক্ষণ চুপিসারে কথা বললেন। রাসূলুল্লাহ ‎(সা.) ‏বলেন ‎: ‏আমি তার সাথে চুপিসারে কথা বলিনি;বরং আল্লাহই তার সাথে চুপিসারে কথা বলেছেন। ‎(অর্থাৎ তার সাথে চুপিসারে কথা বলার জন্য আল্লাহ্ই আমাকে আদেশ করেছেন।)২৭হযরত আলী সম্পর্কে অন্যান্য সাহাবীহযরত আবু বকর প্রায়ই হয়রত আলীর মুখের দিকে তাকিয়ে থাকতেন। হযরত আয়েশা এ ব্যাপারে জিজ্ঞাসা করলে তিনি বলেন ‎: ‘আমি রাসূলে করীমকে বলতে শুনেছি,আলীর মুখ দেখা ইবাদাতের শামিল।’২৮হযরত উমর বিন খাত্তাব বলতেন,হযরত আলী বিন আবি তালিবের তিনটি বৈশিষ্ট্য ছিল। যদি তার একটি আমার থাকত তাহলে আমি বলতাম যে,আমাকে লাল রঙের একটি উট দেয়া হলে তা অপেক্ষাও আমি তা পছন্দ করতাম। তাঁকে এ তিনটি বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে জিজ্ঞেস করা হলে তিনি বলেন ‎: ‏১.তাঁর বিয়ে হয় রাসূল ‎(সা.)-এর কন্যার সাথে,২. ‏তাঁর সঙ্গে রাসূলে করীমের মসজিদে অবস্থান এবং যা রাসূলে করিমের জন্য বৈধ ছিল তার জন্যও তা বৈধ ছিল এবং ৩. ‏খায়বার যুদ্ধের পতাকা বহনের দায়িত্ব তাঁর ওপর ন্যস্ত ছিল।২৯হযরত উমর বলেছেন,হে আল্লাহ! ‏আমার ওপর এমন কোন বিপদ দিও না যখন আবুল হাসান ‎(আলী) ‏আমার নিকট উপস্থিত না থাকে। কারণ,তিনি আমার নিকট উপস্থিত থাকলে আমাকে সে বিপদ থেকে নিষ্কৃতি দেবেন।’৩০তাবরানী হযরত ইবনে আব্বাস থেকে রেওয়ায়াত করেছেন যে,হযরত আলীর আঠারটি বৈশিষ্ট্য এমন ছিল যা সমগ্র উম্মতের কারও ছিল না।’৩১তথ্যসূত্র১. ‏মমতাজ বেগম কর্তৃক প্রকাশিত নাহজ আল বালাঘা,২য় মুদ্রণ,আল খুতবাতুল কাসেয়াহ্,খুতবা নং ১৯১২. ‏প্রাগুক্ত৩. ‏প্রাগুক্ত৪. ‏মুসতাদরাকে হাকেম,৩য় খণ্ড,পৃ. ‏১১২;এটি ইমাম মালেক কর্তৃক বর্ণিত। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে হেরা গুহায় জিবরাঈল ‎(আ.) ‏কর্তৃক রাসূলুল্লাহ ‎(সা.)-এর নবুওয়াত ঘোষণার পর পরই হযরত আলী ‎(আ.) ‏তাঁর ঈমান আনার বিষয়টি প্রকাশ করেন।৫. ‏সুনানে ইবনে মাজাহ্,১ম খণ্ড,পৃ. ‏৪৪৬. ‏নূর-এ-সাকালাইন কর্তৃক প্রকাশিত,সাইয়্যেদ আলী জাফরী প্রণীত আল মুরতাজা,পৃ. ‏৩০।৭. ‏এহইয়াউ উলুমিদ্দীন,৩য় খণ্ড,পৃ. ‏২৩৮;নুরুল আবসার,পৃ. ‏৮৬,মুসতাদরাকে হাকেম,৩য় খণ্ড,পৃ. ‏৪;তাফসীরে কুমী,১ম খণ্ড,পৃ. ‏৭১;তাযকিরাতু সিবতে ইবনে যাওযী,পৃ. ‏২১;ইয়ানাবিউল মাওয়াদ্দাহ,পৃ. ‏৯২।৮. ‏তাফসীরে জালালাইন,১ম খণ্ড,পৃ.৬০;বায়দ্বাভী,১ম খণ্ড,পৃ. ‏১১৮,তাফসীরে দুররুল মানসুর,২য় খণ্ড,পৃ. ‏৩৯,মিশর মুদ্রণ;মুসনাদে আহমাদ ইবনে হাম্বাল,১ম খণ্ড,পৃ. ‏১৮৫;৯. ‏মাজমাউল বায়ান,২য় খণ্ড,পৃ. ‏১৪১;তাফসীরে কুমী,১ম খণ্ড,পৃ. ‏১৪১;ইয়ানাবিউল মাওয়াদ্দাহ,পৃ. ‏২১;শাওয়াহেদুত তানযিল,১ম খণ্ড,পৃ. ‏১৪৮;তাফসীরে ফুরাত,পৃ.২৮১০. ‏তাফসীরে তাবারী,৬ষ্ঠ খণ্ড,পৃ. ‏১৬৫;তাফসীরে রাযী,৩য় খণ্ড,পৃ. ‏৪৩১;মানাকেবে খাওয়ারেযমী,পৃ. ‏১৭৮;যাখায়েরুল উকবা,পৃ. ‏১০২;তাফসীরে ইবনে কাসীর,২য় খণ্ড,পৃ. ‏৭১;আল- ‏বেদায়া ওয়ান নেহায়া,৭ম খণ্ড,পৃ. ‏৩৫৭;সাওয়ায়েকে মুহরিকাহ,পৃ. ‏২৫;১১. ‏মুসনাদে আহমাদ ইবনে হাম্বাল,৪র্থ খণ্ড,পৃ. ‏৩৭২;ইমাম নাসাঈ প্রণীত খাসায়েসে আমীরুল মুমিনীন,পৃ. ‏২১;মুসতাদরাকে হাকেম,৩য় খণ্ড,পৃ. ‏১০৯;আল গাদীর,১ম খণ্ড,পৃ. ‏২১৪ ও ২২৯;শাওয়াহেদুত তানযিল,১ম খণ্ড,পৃ. ‏১৮৭ ।১২. ‏তাফসীরে তাবারী,৩য় খণ্ড,মুসনাদে আহমাদ ইবনে হাম্বল,৩য় খণ্ড,দারে কুতনী।১৩. ‏তাফসীরে দুররে মানসুর,৪র্থ খণ্ড,পৃ. ‏৪৫ দ্রষ্টব্য।১৪. ‏তাফসীরে দুররে মানসুর,৪র্থ খণ্ড,পৃ. ‏৬৯ ।১৫. ‏কেফাইয়াতুল মুওয়াহহিদীন,২য় খণ্ড,পৃ. ‏৬৫০;মাজমাউল বায়ান,২য় খণ্ড,পৃ. ‏৪১৩;কানযুল উম্মাল,৬ষ্ঠ খণ্ড,পৃ. ‏১৫৬;তাফসীরে তাবারী,১৪তম খণ্ড,পৃ. ‏১০৮ ।১৬. ‏বাংলাদেশ ইসলামিক সেন্টার কর্তৃক প্রকাশিত জামে আত-তিরমিযী,৬ষ্ঠ খণ্ড,হাদীস নং ৩৭২৫,পৃ. ‏৩৫৯ ।১৭. ‏মুসনাদে আহমাদ,১ম খণ্ড,পৃ. ‏৩৩১;যাখায়েরুল উকবা,পৃ. ‏২১,তাফসীরে তাবারী,২২তম খণ্ড,পৃ. ‏৮;মুসতাদরাকে হাকেম,৩য় খণ্ড,পৃ. ‏২০৮;ফাজায়েলে খামসাহ,১ম খণ্ড,পৃ. ‏২২৪;শাওয়াহেদুত তানযিল,২য় খণ্ড,পৃ. ‏১০ ।১৮. ‏যাখায়েরুল উকবা,পৃ. ‏৯ ও ১২;তাফসীরে যামাখশারী,২য় খণ্ড,পৃ. ‏৩৩৯;সাওয়ায়েকে মুহরিকাহ,পৃ. ‏১০১,তাফসীরে দুররুল মানসূর,৬ষ্ঠ খণ্ড,পৃ. ‏৭;মুসনাদে আহমাদ,১ম খণ্ড,পৃ. ‏২২৯;আল গাদীর,৩য় খণ্ড,পৃ. ‏১৭২;শাওয়াহেদুত তানযিল,২য় খণ্ড,পৃ. ‏৩০ ।১৯. ‏আধুনিক প্রকাশনী কর্তৃক প্রকাশিত সহীহ আল বুখারী,৩য় খণ্ড,হাদীস নং ৩৪৩১;বাংলাদেশ ইসলামিক সেন্টার কর্তৃক প্রকাশিত সহীহ মুসলিম,৭ম খণ্ড,হাদীস নং ৬০৪২ ।২০. ‏বাংলাদেশ ইসলামিক সেন্টার কর্তৃক প্রকাশিত সহীহ মুসলিম,৭ম খণ্ড,হাদীস নং ৬০৪০ ও জামে আত-তিরমিযী,৬ষ্ঠ খণ্ড,হাদীস নং ৩৬৬৮ ।২১. ‏বাংলাদেশ ইসলামিক সেন্টার কর্তৃক প্রকাশিত জামে আত-তিরমিযী,৬ষ্ঠ খণ্ড,হাদীস নং ৩৬৭০২২. ‏এমদাদীয়া লাইব্রেরী কর্তৃক প্রকাশিত হযরত আলী ইবনে আবি তালিব ‎(রা.),পৃ. ‏১৫ ।২৩. ‏বাংলাদেশ ইসলামিক সেন্টার কর্তৃক প্রকাশিত জামে আত-তিরমিযী,৬ষ্ঠ খণ্ড,হাদীস নং ৩৬৭৩ ।২৪. ‏এমদাদিয়া লাইব্রেরী কর্তৃক প্রকাশিত হযরত আলী ‎(রা.),পৃ. ‏১৫-১৬ ।২৫. ‏বাংলাদেশ ইসলামিক সেন্টার কর্তৃক প্রকাশিত জামে আত-তিরমিযী,৬ষ্ঠ খণ্ড,হাদীস নং ৩৬৫৮;২৬. ‏প্রাগুক্ত,হাদীস নং ৩৬৫৬;২৭. ‏প্রাগুক্ত,হাদীস নং ৩৬৬৪২৮. ‏সাওয়ায়েকে মুহরিকাহ,পৃ. ‏১৭৫ ।২৯. ‏সাওয়ায়েকে মুহরিকাহ,৩য় খণ্ড,এবং মুসতাদরাকে হাকেম,৩য় খণ্ড ।৩০. ‏মুনতাখাবে কানজুল উম্মাল,৩য় খণ্ড ।৩১. ‏সাওয়ায়েকে মুহরিকাহ ১১৩ ।(প্রত্যাশা,৩য় বর্ষ, ‏১ম সংখ্যাপ্রচারে মোঃ জাহিদ হুসাইন

শিশু ইমাম হযরত জাওয়াদ (আ.)'র জন্মবার্ষিকীসকল মোমিন মোমিনা কে জানাই ঈদ মোবারক🎂🎂🎂🎂🎂(((পর্ব ১)))🎂🎂🎂🎂🎂দশই রজব ইসলামের মহাখুশির দিন। এই দিনে পৃথিবীতে এসেছিলেন মাওলা মোহাম্মদ (সা) পবিত্র আহলে বাইতের সদস্য নবম ইমাম হযরত জাওয়াদ বা তাকি(আ)। নবীজীর আহলে বাইতের সদস্যরা কেবল মুসলমানদেরই ধর্মীয় নেতা নন বরং যারাই সত্য পথের সন্ধানী কিংবা কল্যাণকামী-তাদের সবারই নেতা।আহলে বাইতের এই মহান ইমাম হযরত জাওয়াদ (আ) এর জন্ম-বার্ষিকীতে আপনাদের সবার প্রতি রইলো অশেষ অভিনন্দন ও প্রাণঢালা মোবারকবাদ এবং মাওলা মোহাম্মদ (সা.) ও তাঁর পবিত্র আহলে বাইতের শানে পেশ করছি অসংখ্য দরুদ ও সালাম ।ইমাম জাওয়াদের জন্ম হয়েছিল ১৯৫ হিজরিতে তথা ৮১১ খ্রিস্টাব্দের ১২ এপ্রিল পবিত্র মদীনায়। মজলুম ও দরিদ্রদের প্রতি ব্যাপক দানশীলতা ও দয়ার জন্য তিনি 'জাওয়াদ' উপাধি পেয়েছিলেন। তাকি বা খোদাভীরু ছিল তাঁর আরেকটি উপাধি। জগত-বিখ্যাত মহাপুরুষ ইমাম রেজা (আ) ছিলেন তাঁর বাবা। আর তাঁর মায়ের নাম ‘সাবিকাহ’ বলে জানা যায়। ইমাম রেজা (আ) তাঁর এই স্ত্রীর নাম রেখেছিলেন খিইজরান। তিনি ছিলেন মহানবীর স্ত্রী উম্মুল মু’মিনিন হযরত মারিয়া কিবতির (আ) বংশধর। ইমাম জাওয়াদ (আ) ১৭ বছর ইমামতের দায়িত্ব পালনের পর মাত্র ২৫ বছর বয়সে শাহাদত বরণ করেন। তিনিই হলেন ইসলামের ইতিহাসের সবচেয়ে কম বয়স্ক ইমাম। আহলে বাইতের অন্য ইমামগণের মত ইমাম জাওয়াদ (আ.)ও ছিলেন উচ্চতর নৈতিক গুণ, জ্ঞান ও পরিপূর্ণতার অধিকারী। ইসলামের মূল শিক্ষা ও সংস্কৃতির পুনরুজ্জীবন এবং বিকাশ ছিল তাঁর তৎপরতার মূল লক্ষ্য বা কেন্দ্রবিন্দু। সেযুগের সব মাজহাবের জ্ঞানী-গুণীরা ইমাম জাওয়াদ (আ.)'র উচ্ছ্বসিত প্রশংসা করেছেন।সমসাময়িক যুগের প্রখ্যাত সুন্নি চিন্তাবিদ কামালউদ্দিন শাফেয়ি ইমাম জাওয়াদ (আ.) সম্পর্কে বলেছেন, "মুহাম্মাদ বিন আলী তথা ইমাম জাওয়াদ (আ.) ছিলেন অত্যন্ত উঁচু মর্যাদা ও গুণের অধিকারী। মানুষের মুখে মুখে ফিরতো তাঁর প্রশংসা। তাঁর উদারতা, প্রশস্ত দৃষ্টি ও সুমিষ্ট কথা সবাইকে আকৃষ্ট করত। যে-ই তাঁর কাছে আসতো নিজের অজান্তেই এই মহামানবের অনুরাগী হয়ে পড়ত এবং তাঁর কাছ থেকে জ্ঞান অর্জন করত।" ইমাম জাওয়াদ (আ) মাত্র সাত বা আট বছর বয়সে ইমামতির দায়িত্ব গ্রহণ করেন। এতো অল্প বয়সে তাঁর ইমামতিত্বের বিষয়টি ছিল যথেষ্ট বিস্ময়কর। ফলে অনেকেই এ বিষয়ে সন্দেহ করতেন। অথচ আল্লাহর তো এই শক্তি আছে যে তিনি মানুষকে তার বয়সের স্বল্পতা সত্ত্বেও পরিপূর্ণ বিবেক-বুদ্ধির পর্যায়ে পৌঁছাতে পারেন। কোরানের আয়াতের ভিত্তিতে পূর্ববর্তী উম্মতের মধ্যেও এরকম উদাহরণ বহু আছে। যেমন শিশুকালে হযরত ইয়াহিয়া (আ) এর নবুয়্যত প্রাপ্তি, মায়ের কোলে নবজাতক ঈসা (আ) এর কথা বলা ইত্যাদি সর্বশক্তিমান আল্লাহর অশেষ ক্ষমতারই নিদর্শন। ইমাম জাওয়াদ (আ) শৈশব-কৈশোরেই ছিলেন জ্ঞানে-গুণে, ধৈর্য ও সহনশীলতায়, ইবাদত-বন্দেগিতে, সচেতনতায়, কথাবার্তায় শীর্ষস্থানীয় মহামানব। একবার হজ্জ্বের সময় বাগদাদ এবং অন্যান্য শহরের বিখ্যাত ফকীহদের মধ্য থেকে আশি জন মদীনায় ইমাম জাওয়াদ (আ) এর কাছে গিয়েছিলেন। তাঁরা ইমামকে বহু বিষয়ে জিজ্ঞেস করে অত্যন্ত যুক্তিযুক্ত ও সন্তোষজনক জবাব পেলেন। ফলে জাওয়াদ (আ)’র ইমামতিত্বের ব্যাপারে তাদের মনে যেসব সন্দেহ ছিল-তা দূর হয়ে যায়।প্রচারে মোঃ জাহিদ হুসাইন আল্লাহুম্মা সাল্লে আলা মোহাম্মদ ওয়া আলে মোহাম্মদ ওয়া আজ্জিল ফারজাহুম‌লা'নাতুল্লাহি আলাল কাজেবিন🎂🎂🎂🎂🎂🎂🎂🎂🎂🎂🎂🎂🎂🎂🎂