বিসমিল্লাহির রহমানির রহিমআল্লাহুম্মা সাল্লে আলা মোহাম্মদ ওয়া আলে মোহাম্মদইয়া আমিরুল মোমেনিন আলী ইবনে আবি তালিব আঃ মাদাদরেখে গেলাম পবিত্র কোরআন এবং আমার সুন্নাহ বা হাদিস — ভিত্তিহীন একটি হাদিস ।একটি বহুল প্রচলিত মুরছাল হাদিস এবং প্রাসঙ্গিক কিছু কথা —মহানবী (সাঃ) তাঁর ইন্তেকালের পূর্বে সমগ্র উম্মতগনের জন্য বললেন যে , ” — রেখে গেলাম পবিত্র কোরআন এবং আমার সুন্নাহ বা হাদিস ——- ” ।প্রিয় পাঠক ,উপরে উল্লেখিত হাদিসটি আমাদের চারিপাশে প্রচলিত ইসলামে সর্বাধিক প্রচারিত একটি জনপ্রিয় একটি হাদিস । হাদিসটি আমাদের সম্মাানীয় আলেম ওলামাগন বিভিন্ন ওয়াজে , টিভি প্রোগ্রামে বয়ান করে থাকেন ।বেশ ভাল কথা ।তো এবারে আমাদের সম্মাানীয় আলেমগনের পক্ষ থেকে সর্বাধিক প্রচারিত হাদিসটির রেফারেন্স খুঁজতে যেয়ে পবিত্র কোরআনের ঠিক পরেই সবথেকে নির্ভরযোগ্য সহীহ আল বুখারি শরীফ এবং সহীহ আল মুসলিম শরীফে এই হাদিসটির কোন অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া গেল না ।এমনকি সহীহ তিরমিজি শরীফ , আবু দাউদ শরীফ , ইবনে মাজাহ এবং নাসায়ি শরীফেও এই হাদিসটির কোন অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া গেল না ।মোটকথা এই যে , সহীহ সিহাহ সিত্তাহ হাদিসগ্রন্থ সমূহে এই হাদিসটির কোন অস্তিত্ব নেই ।স্বভাবতই প্রশ্ন চলে আসে যে , সর্বাধিক প্রচারিত ও বাজারজাতরন কৃত জনপ্রিয় এই হাদিসটি তাহলে কোথায় আছে ?গবেষনায় দেখা গেল যে , হাদিসটি আছে মুয়াত্তা মালেকি তে ।হাদিসটি বর্ণনা করেছেন মালেক বিন আনাস (রঃ) ।কে ছিলেন এই মালেক বিন আনাস (রাঃ) ?উনি সাহাবি ছিলেন না । উনি ছিলেন তাবেঈন ।সংগত কারনে আমাদের প্রিয় রাসুল (সাঃ) এর বিদায় হজ্ব ভাষণের সময় উনি উপস্থিত ছিলেন না ।তাছাড়া হাদিস বর্ণনাকারীদের মধ্যে ধারাবাহিকতা বজায় থাকে নি ।অর্থাৎ উসুলে হাদিসের নীতিমালা অনুযায়ী হাদিসটি মুরসাল ।মূরসাল হাদীস হচ্ছে যেই হাদীসের রাবিদের পরম্পরায় একজন বা একটি জেনারেশান বাদ পড়ে গেছে ।অন্য দলীল না থাকলে মূরসাল হাদীস গ্রহনযোগ্য নয় ।পাঠক ,এবারে জেনে নিন যে , প্রকৃত সত্য তাহলে কোনটি ।হাদিসে সাকালাইন নামে এই হাদিসটি বহুল প্রচারিত —মহানবী (সাঃ) বলেন যে –” হে মানবসকল , নিশ্চয়ই আমি তোমাদের মধ্যে অতীব গুরুত্বপূর্ন দুটি ভারী জিনিষ (সাকালাইন) রেখে যাচ্ছি , যদি এই দুইটি আঁকড়ে ধরে থাক তাহলে কখনই পথভ্রষ্ট হবে না ।প্রথমটি হচ্ছে , পবিত্র কোরআন এবং দ্বিতীয়টি হচ্ছে , আমার ইতরাত , আহলে বাইত (রক্তজ বংশধর) । নিশ্চয়ই এই দুইটি জিনিষ হাউজে কাওসারে আমার সাথে মিলিত না হওয়া পর্যন্ত কখনই পরস্পর থেকে বিছিন্ন হবে না ” ।সূত্র – সহীহ তিরমিজি , খন্ড – ৬ , হাদিস – ৩৭৮৬ , ৩৭৮৮ (ইসলামিক ফাউন্ডেশন) / মেশকাত , খন্ড – ১১ , হাদিস – ৫৮৯২ , ৫৮৯৩ (এমদাদীয়া লাইব্রেরী) / তাফসীরে মাযহারী , খন্ড – ২ , পৃষ্ঠা – ১৮১ , ৩৯৩ (ইসলামিচ ফাউন্ডেশন) / তাফসীরে হাক্কানী (মাওলানা শামসুল হক ফরিদপুরী ) , পৃষ্ঠা – ১২ , ১৩ (হামিদীয়া লাইব্রেরী) / তাফসীরে নুরুল কোরআন , খন্ড – ৪ , পৃষ্ঠা – ৩৩ (মাওলানা আমিনুল ইসলাম) / মাদারেজুন নাবুয়াত , খন্ড – ৩ , পৃষ্ঠা – ১১৫ (শায়খ আব্দুল হক দেহলভী) / ইযাযাতুল খিফা (শাহ ওয়ালিউল্লাহ) , খন্ড – ১ , পৃষ্ঠা – ৫৬৬ / মুসলিম মুসনাদে আহমদ / নাসাঈ / কানযুল উম্মাল / তাফসীরে ইবনে কাছির / মিশকাতুল মাছাবিহ / তাফসীরে কবির ।সংক্ষিপ্ত বিশ্লেষন –পথভ্রষ্টতা থেকে মুক্তি পাওয়ার সনদ হচ্ছে , মহানবী (সাঃ) এর রক্তজ বংশধর তথা পুতঃপবিত্র আহলে বাইত (আঃ) গনের অনুসরন ও অানুগত্য করা ।এই সাবধান বানী মহানবী (সাঃ) সেই সময় সকল সাহাবীদের উদ্দেশ্যে বলেছিলেন । অর্থাৎ মহানবী (সাঃ) এর পবিত্র আহলে বাইত (আঃ) গনের অনুসরন ও আনুগত্য করা সকল সাহাবীগনের জন্যও বাধ্যতামূলক ছিল ।এই অবস্থায় আমরা যদি মহানবী (সাঃ) এর পবিত্র আহলে বাইত (আঃ) গনের অনুসরন ও আনুগত্য না করি , তাহলে পথভ্রষ্টতা থেকে আদৌ কি মুক্তি পাব ?আল্লামা সানাউল্লাহ পানিপথী তার তাফসীরে মাযাহারীতে লিখেছেন –” নবীজী (সাঃ) এর পবিত্র আহলে বাইত (আঃ) এর কথা এজন্যে তাগিদ করেছেন যে , হেদায়েত ও ইমামত তথা বেলায়েতের বিষয় আহলে বাইত (আঃ) গনই একমাত্র পথপ্রর্দশক ” ।সূত্র – তাফসীরে মাযহারী , খন্ড – ২ , পৃষ্ঠা – ৩৯৩ (ইফাঃ) / তাফসীরে নুরুল কোরআন , খন্ড – ৪ , পৃষ্ঠা – ৩৩ ।বিশ্লেষন —উসুলে হাদিসের নীতিমালা অনুযায়ী এই হাদিসে সাকালাইন হাদিসটি সম্পূর্ণ সহীহ ।সবথেকে অবাক করা বিষয় এই যে , প্রচলিত ইসলামে একটি মুরসাল হাদিস নিয়ে অনেক আলোচনা , ব্যাপক প্রচার ও বাজাতজাতকরন হয় ।কিন্ত অতীব দুঃখের বিষয় হল যে , এতগুলো সনদে উল্লেখ থাকা সত্বেও বিশুদ্ব সহীহ এই হাদিসটি নিয়ে আলোচনা খুবই কম হয় !নবীজী (সাঃ) এর পবিত্র আহলে বাইত (আঃ) গন তথা নবী বংশ নিয়ে আলোচনা এত কম হয় কেন ?পরিশেষে পবিত্র কোরআনের একটি আয়াত মনে করিয়ে দিয়ে আপাঃতত বিদায় –“ — এবং সত্যকে মিথ্যার সাথে মিশিও না অথবা সত্যকে গোপন কর না যখন তোমরা জান – “ ।সুরা – বাকারা / ৪২ ।পাঠক ,বহুল প্রচারিত একটি মুরছাল হাদিসের বিপরীতে আসুন আমরা গ্রহন করে নেই সর্বাধিক বিশুদ্ব রেওয়ায়েত সমৃদ্ব সহীহ হাদিসকে ।প্রচারে বিধি তুমার ধর্ম কি
বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম
আল্লাহুম্মা সাল্লে আলা মোহাম্মদ ওয়া আলে মোহাম্মদ
ইয়া আমিরুল মোমেনিন আলী ইবনে আবি তালিব আঃ মাদাদ
রেখে গেলাম পবিত্র কোরআন এবং আমার সুন্নাহ বা হাদিস — ভিত্তিহীন একটি হাদিস ।
একটি বহুল প্রচলিত মুরছাল হাদিস এবং প্রাসঙ্গিক কিছু কথা —
মহানবী (সাঃ) তাঁর ইন্তেকালের পূর্বে সমগ্র উম্মতগনের জন্য বললেন যে , ” — রেখে গেলাম পবিত্র কোরআন এবং আমার সুন্নাহ বা হাদিস ——- ” ।
প্রিয় পাঠক ,
উপরে উল্লেখিত হাদিসটি আমাদের চারিপাশে প্রচলিত ইসলামে সর্বাধিক প্রচারিত একটি জনপ্রিয় একটি হাদিস । হাদিসটি আমাদের সম্মাানীয় আলেম ওলামাগন বিভিন্ন ওয়াজে , টিভি প্রোগ্রামে বয়ান করে থাকেন ।
বেশ ভাল কথা ।
তো এবারে আমাদের সম্মাানীয় আলেমগনের পক্ষ থেকে সর্বাধিক প্রচারিত হাদিসটির রেফারেন্স খুঁজতে যেয়ে পবিত্র কোরআনের ঠিক পরেই সবথেকে নির্ভরযোগ্য সহীহ আল বুখারি শরীফ এবং সহীহ আল মুসলিম শরীফে এই হাদিসটির কোন অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া গেল না ।
এমনকি সহীহ তিরমিজি শরীফ , আবু দাউদ শরীফ , ইবনে মাজাহ এবং নাসায়ি শরীফেও এই হাদিসটির কোন অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া গেল না ।
মোটকথা এই যে , সহীহ সিহাহ সিত্তাহ হাদিসগ্রন্থ সমূহে এই হাদিসটির কোন অস্তিত্ব নেই ।
স্বভাবতই প্রশ্ন চলে আসে যে , সর্বাধিক প্রচারিত ও বাজারজাতরন কৃত জনপ্রিয় এই হাদিসটি তাহলে কোথায় আছে ?
গবেষনায় দেখা গেল যে , হাদিসটি আছে মুয়াত্তা মালেকি তে ।
হাদিসটি বর্ণনা করেছেন মালেক বিন আনাস (রঃ) ।
কে ছিলেন এই মালেক বিন আনাস (রাঃ) ?
উনি সাহাবি ছিলেন না । উনি ছিলেন তাবেঈন ।
সংগত কারনে আমাদের প্রিয় রাসুল (সাঃ) এর বিদায় হজ্ব ভাষণের সময় উনি উপস্থিত ছিলেন না ।
তাছাড়া হাদিস বর্ণনাকারীদের মধ্যে ধারাবাহিকতা বজায় থাকে নি ।
অর্থাৎ উসুলে হাদিসের নীতিমালা অনুযায়ী হাদিসটি মুরসাল ।
মূরসাল হাদীস হচ্ছে যেই হাদীসের রাবিদের পরম্পরায় একজন বা একটি জেনারেশান বাদ পড়ে গেছে ।
অন্য দলীল না থাকলে মূরসাল হাদীস গ্রহনযোগ্য নয় ।
পাঠক ,
এবারে জেনে নিন যে , প্রকৃত সত্য তাহলে কোনটি ।
হাদিসে সাকালাইন নামে এই হাদিসটি বহুল প্রচারিত —
মহানবী (সাঃ) বলেন যে –
” হে মানবসকল , নিশ্চয়ই আমি তোমাদের মধ্যে অতীব গুরুত্বপূর্ন দুটি ভারী জিনিষ (সাকালাইন) রেখে যাচ্ছি , যদি এই দুইটি আঁকড়ে ধরে থাক তাহলে কখনই পথভ্রষ্ট হবে না ।
প্রথমটি হচ্ছে , পবিত্র কোরআন এবং দ্বিতীয়টি হচ্ছে , আমার ইতরাত , আহলে বাইত (রক্তজ বংশধর) । নিশ্চয়ই এই দুইটি জিনিষ হাউজে কাওসারে আমার সাথে মিলিত না হওয়া পর্যন্ত কখনই পরস্পর থেকে বিছিন্ন হবে না ” ।
সূত্র – সহীহ তিরমিজি , খন্ড – ৬ , হাদিস – ৩৭৮৬ , ৩৭৮৮ (ইসলামিক ফাউন্ডেশন) / মেশকাত , খন্ড – ১১ , হাদিস – ৫৮৯২ , ৫৮৯৩ (এমদাদীয়া লাইব্রেরী) / তাফসীরে মাযহারী , খন্ড – ২ , পৃষ্ঠা – ১৮১ , ৩৯৩ (ইসলামিচ ফাউন্ডেশন) / তাফসীরে হাক্কানী (মাওলানা শামসুল হক ফরিদপুরী ) , পৃষ্ঠা – ১২ , ১৩ (হামিদীয়া লাইব্রেরী) / তাফসীরে নুরুল কোরআন , খন্ড – ৪ , পৃষ্ঠা – ৩৩ (মাওলানা আমিনুল ইসলাম) / মাদারেজুন নাবুয়াত , খন্ড – ৩ , পৃষ্ঠা – ১১৫ (শায়খ আব্দুল হক দেহলভী) / ইযাযাতুল খিফা (শাহ ওয়ালিউল্লাহ) , খন্ড – ১ , পৃষ্ঠা – ৫৬৬ / মুসলিম মুসনাদে আহমদ / নাসাঈ / কানযুল উম্মাল / তাফসীরে ইবনে কাছির / মিশকাতুল মাছাবিহ / তাফসীরে কবির ।
সংক্ষিপ্ত বিশ্লেষন –
পথভ্রষ্টতা থেকে মুক্তি পাওয়ার সনদ হচ্ছে , মহানবী (সাঃ) এর রক্তজ বংশধর তথা পুতঃপবিত্র আহলে বাইত (আঃ) গনের অনুসরন ও অানুগত্য করা ।
এই সাবধান বানী মহানবী (সাঃ) সেই সময় সকল সাহাবীদের উদ্দেশ্যে বলেছিলেন । অর্থাৎ মহানবী (সাঃ) এর পবিত্র আহলে বাইত (আঃ) গনের অনুসরন ও আনুগত্য করা সকল সাহাবীগনের জন্যও বাধ্যতামূলক ছিল ।
এই অবস্থায় আমরা যদি মহানবী (সাঃ) এর পবিত্র আহলে বাইত (আঃ) গনের অনুসরন ও আনুগত্য না করি , তাহলে পথভ্রষ্টতা থেকে আদৌ কি মুক্তি পাব ?
আল্লামা সানাউল্লাহ পানিপথী তার তাফসীরে মাযাহারীতে লিখেছেন –
” নবীজী (সাঃ) এর পবিত্র আহলে বাইত (আঃ) এর কথা এজন্যে তাগিদ করেছেন যে , হেদায়েত ও ইমামত তথা বেলায়েতের বিষয় আহলে বাইত (আঃ) গনই একমাত্র পথপ্রর্দশক ” ।
সূত্র – তাফসীরে মাযহারী , খন্ড – ২ , পৃষ্ঠা – ৩৯৩ (ইফাঃ) / তাফসীরে নুরুল কোরআন , খন্ড – ৪ , পৃষ্ঠা – ৩৩ ।
বিশ্লেষন —
উসুলে হাদিসের নীতিমালা অনুযায়ী এই হাদিসে সাকালাইন হাদিসটি সম্পূর্ণ সহীহ ।
সবথেকে অবাক করা বিষয় এই যে , প্রচলিত ইসলামে একটি মুরসাল হাদিস নিয়ে অনেক আলোচনা , ব্যাপক প্রচার ও বাজাতজাতকরন হয় ।
কিন্ত অতীব দুঃখের বিষয় হল যে , এতগুলো সনদে উল্লেখ থাকা সত্বেও বিশুদ্ব সহীহ এই হাদিসটি নিয়ে আলোচনা খুবই কম হয় !
নবীজী (সাঃ) এর পবিত্র আহলে বাইত (আঃ) গন তথা নবী বংশ নিয়ে আলোচনা এত কম হয় কেন ?
পরিশেষে পবিত্র কোরআনের একটি আয়াত মনে করিয়ে দিয়ে আপাঃতত বিদায় –
“ — এবং সত্যকে মিথ্যার সাথে মিশিও না অথবা সত্যকে গোপন কর না যখন তোমরা জান – “ ।
সুরা – বাকারা / ৪২ ।
পাঠক ,
বহুল প্রচারিত একটি মুরছাল হাদিসের বিপরীতে আসুন আমরা গ্রহন করে নেই সর্বাধিক বিশুদ্ব রেওয়ায়েত সমৃদ্ব সহীহ হাদিসকে ।
প্রচারে বিধি তুমার ধর্ম কি
মন্তব্যসমূহ