হানাফী ইমাম আবু হানিফা: "ইমাম জাফর সাদিকের চেয়ে বড় ফকিহ আর দেখিনি" ইমাম জাফর সাদেক (আ.) এমন একটি ধর্মীয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলেছিলেন যেখান থেকে হাজার হাজার আলেম বেরিয়ে আসেন।ইমাম বাকের (আ.) খাঁটি মোহাম্মাদি ইসলাম প্রচারের যে কাজ শুরু করেছিলেন ইমাম জাফর সাদেক (আ.) তাকে পূর্ণতায় পৌঁছে দেন। শুধু শিয়া চিন্তাবিদরা নন সেইসঙ্গে সুন্নি আলেম ও বিজ্ঞ ব্যক্তিবর্গও ইমামের এই কাজে ভূয়সী প্রশংসা করেছেন। আজকের আসরে আমরা ইমাম সম্পর্কে এরকম কয়েকজন চিন্তাবিদের মতামত শুনব।কায়রো বিশ্ববিদ্যালয়ের ফরেন ল্যাঙ্গুয়েজ ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক ড. হামিদ বলেন: আমি ২০ বছরেরও বেশি সময় ধরে ফিকাহ শাস্ত্র নিয়ে গবেষণা করছি। এরমধ্যে ইমাম সাদেক আমার দৃষ্টি গভীরভাবে আকৃষ্ট করতে পেরেছেন। তিনি ফিকাহ শাস্ত্রকে এতটা সমৃদ্ধ করেছেন যে, তা শিয়া ও সুন্নি গবেষকদের চিন্তার খোরাক যুগিয়েছে।আহলে সুন্নাত ওয়াল জামায়াতের হাদিস বিশারদ মালিক বিন আনাস বলেন: জ্ঞান, প্রজ্ঞা ও ইবাদতের দিক দিয়ে আমি জাফর বিন মোহাম্মাদ সাদেক (আ.)’র সমতুল্য আর কাউকে দেখিনি।হানাফি মাজহাবের প্রতিষ্ঠাতা আবু হানিফা নুমান বিন সাবেত বলেন: আমি ইমাম জাফর বিন মোহাম্মাদের চেয়ে বড় ফকিহ আর দেখিনি। আমি একদিন খলিফা মানসুরের নির্দেশে ফিকাহ শাস্ত্রের ৪০টি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন খলিফার দরবারে উপস্থিত আলেমদের সামনে উপস্থাপনের জন্য প্রস্তুত করি। দরবারে উপস্থিত ইমাম জাফর সাদেক (আ.) ৪০টি প্রশ্নেরই এত সুন্দর ও চমৎকার উত্তর দেন যে, উপস্থিত প্রত্যেকে একবাক্যে স্বীকার করেন ইসলামি জ্ঞান ও প্রজ্ঞার দিক দিয়ে তিনি সব আলেমের চেয়ে অগ্রগামী।এখানে উল্লেখ করা প্রয়োজন যে, ইসলামের ইতিহাসের বেশিরভাগ শাসকের ইসলামি জ্ঞানের প্রতি কোনো আগ্রহ ছিল না। কখনো কখনো যদি তাদের দরবারে কোনো আলেমের দেখা পাওয়া যেত তাহলে এ কাজে শাসকের উদ্দেশ্য ছিল এসব আলেমকে নিজের ক্ষমতা সুসংহত করার কাজে ব্যবহার করা এবং জনগণকে এটা বোঝানো যে, শাসক আলেমদের অনেক সম্মান করেন। কখনো কখনো আলেমদের অপমান করার জন্যও খলিফার দরবারে তলব করা হতো। আব্বাসীয় খলিফা মানসুর একই উদ্দেশ্যে আবু হানিফাকে ফিকাহ শাস্ত্রের ৪০টি জটিল প্রশ্ন প্রস্তুত করার নির্দেশ দিয়েছিলেন যাতে দরবারে উপস্থিত ব্যক্তিদের সামনে ইমাম জাফর সাদকে (আ.)কে বিপদে ফেলা যায়। মানসুরের ধারণা ছিল ইমাম এসব প্রশ্নের সামনে বাকরুদ্ধ হয়ে পড়বেন। কিন্তু মানসুরের ধারণার বিপরীতে ইমাম সাদেক (আ.) এসব প্রশ্নের এতটা প্রজ্ঞাপূর্ণ উত্তর দেন যাতে উপস্থিত সকলে হতভম্ভ হয়ে যায়।জ্ঞান ও প্রজ্ঞার পাশাপাশি তাকওয়া ও সাধাসিধে জীবনযাপনের দিক দিয়েও ইমামের জুড়ি ছিল না। মানুষের সঙ্গে অতি উত্তম আচরণ ও উন্নত নৈতিক গুণাবলীর কারণে সাধারণ মানুষই ইমামকে সাদেক উপাধি দিয়েছিল; যে নামে তিনি সর্বাধিক পরিচিতি অর্জন করেন। মিশরের বিখ্যাত লেখক ড. আহমাদ আমিন এ সম্পর্কে বলেন: ইমাম সাদেক শুধু শিয়া মাজহাবের সবচেয়ে বড় ফকিহ ছিলেন না সেইসঙ্গে ইসলামের ইতিহাসের পরবর্তী আরো বহু যুগ ধরে তিনি ছিলেন সবচেয়ে বড় জ্ঞানী ও পণ্ডিত ব্যক্তি। বন্ধুরা! ইমাম জাফর সাদেক (আ.) কত মহান ব্যক্তিত্ব ছিলেন তা উপলব্ধি করার জন্য তাঁর সম্পর্কে আমরা আরো দু’জন বিখ্যাত মুসলিম পণ্ডিতের বক্তব্য তুলে ধরব। মিশরের প্রখ্যাত কবি, লেখক ও গবেষক আব্দুর রহমান আশ-শারকাভি ইমাম সাদেক (আ.) সম্পর্কে লিখেছেন: ইমাম সাদেকের যুগের সকল মানুষ তাঁকে ভালোবাসত ও সম্মান করত। কারণ, তাঁর চিন্তাশক্তির ব্যাপ্তি ছিল বিশাল, তাঁর চরিত্র ছিল মহান, মুখে সর্বদা হাসি লেগে থাকত এবং মানুষের সঙ্গে তার ব্যবহার ছিল অত্যন্ত অমায়িক। পরোপকারে তাঁর জুড়ি ছিল না। শাসকগোষ্ঠীর সর্বোচ্চ হুমকি ও চাপ সত্ত্বেও তিনি বিচক্ষণতার সঙ্গে আল্লাহর একত্ববাদ ও দ্বীন প্রচারের দায়িত্ব পালন করে গেছেন।ইমাম জাফর সাদেক (আ.)’র উন্নত চারিত্রিক গুণাবলী বর্ণনা করতে গিয়ে মুসলিম বিশ্বের আরেকজন বিশিষ্ট চিন্তাবিদ মোহাম্মাদ বিন তালহা শাফিয়ী বলেন: আহলে বাইতের মহান আলেম জাফর বিন মোহাম্মাদ সুগভীর জ্ঞানের অধিকারী ছিলেন। তিনি একাগ্রচিত্তে আল্লাহর ইবাদত করতেন এবং সব সময় আল্লাহর জিকির তাঁর মুখে লেগে লাগত। তিনি বেশি বেশি কুরআন তেলাওয়াত করতেন, কুরআনের মর্মার্থ ও শিক্ষা গভীরভাবে অনুধাবন করতেন এবং সেখান থেকে সাধারণ মানুষের বোঝার মতো শিক্ষা বের করে আনতেন। নিজের নফস বা রিপুকে তিনি কঠোর হাতে নিয়ন্ত্রণ করতেন। তাঁর নূরানি চেহারা দেখলে মানুষের আখেরাতের কথা স্মরণ হয়ে যেত। তিনি বক্তৃতা দিতে শুরু করলে মানুষের দুনিয়াপ্রেম ছুটে যেত এবং তারা কিয়ামতের জন্য প্রস্তুতি নিতে শুরু করত। তাঁর গুণাবলী বর্ণনা করে শেষ করা সম্ভব নয়।ইমাম জাফর সাদেক (আ.) মোহাম্মাদি ইসলাম প্রচারের মহান দায়িত্ব পালনের একই সময়ে রাজনৈতিক অঙ্গনেও তৎপর ছিলেন। ইমাম যে পরিপূর্ণ ফিকাহ সংকলন রেখে গেছেন তা থেকে বোঝা যায়, ইসলাম তখনই মানুষের কল্যাণ করতে পারবে যখন এই ঐশী ধর্ম মানুষের জীবনের প্রতিটি প্রয়োজন পূরণের মতো দিকনির্দেশনা বাতলে দিতে পারবে। ইসলামি ফিকাহ শাস্ত্রে আধিপত্যকামী ও সাম্রাজ্যবাদী শাসকদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর শিক্ষা থাকতে হবে। আল্লাহর কিতাব কুরআন মজিদ থেকে উৎসারিত জ্ঞান দিয়ে ইমাম যে পূর্ণাঙ্গ ফিকাহ সংকলন রেখে গেছেন তাতে মুসলমানদের দৈনন্দিন জীবনের সব সমস্যার সমাধান রয়েছে। এজন্যই ইমাম সাদেক (আ.)’র ফিকাহ সংকলনকে আব্বাসীয় শাসকরা ভয় পেত।শেষাংশে এবার আমরা ইমাম জাফর সাদেক (আ.)’র কিছু মূল্যবান উপদেশবাণী শুনব। তিনি বলেছেন: ইসলামের শত্রুরা তোমাদের সন্তানদের অন্তরকে ভ্রান্ত শিক্ষা দিয়ে পূর্ণ করে ফেলার আগে তাদের মাঝে আমাদের শিক্ষা ছড়িয়ে দাও। প্রজ্ঞাবান ও বুৎপত্তিসম্পন্ন, ধর্মীয় জ্ঞানে সমৃদ্ধ, সত্যবাদী ও কর্তব্যনিষ্ঠ মানুষদের আমরা ভালোবাসি। আমাদের অনুসারীরা সঠিক পথপ্রাপ্ত, মুত্তাকি, নেককার, ঈমানদার ও সফলকাম হয়। আমার সবচেয়ে প্রিয় ভাই হচ্ছেন তিনি, যিনি আমার ভুল-ত্রুটিগুলো আমার সামনে তুলে ধরেন। মানসুর আব্বাসির বিষপ্রয়োগে শাহাদাতের অমীয় সুধা পান করার আগ মুহূর্তে ইমাম সাদেক (আ.) সর্বশেষ যে মূল্যবান বাণী রেখে যান তা হচ্ছে: যে ব্যক্তি নামাজকে অবহেলা করে সে আমাদের শাফায়াত থেকে বঞ্চিত হবে।#নিবেদকমোঃ আলীআল্লাহুম্মা সাল্লে আলা মোহাম্মদ ওয়া আলে মোহাম্মদ ওয়া আজ্জিল ফারজাহুম
হানাফী ইমাম আবু হানিফা: "ইমাম জাফর সাদিকের চেয়ে বড় ফকিহ আর দেখিনি"
ইমাম জাফর সাদেক (আ.) এমন একটি ধর্মীয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলেছিলেন যেখান থেকে হাজার হাজার আলেম বেরিয়ে আসেন।
ইমাম বাকের (আ.) খাঁটি মোহাম্মাদি ইসলাম প্রচারের যে কাজ শুরু করেছিলেন ইমাম জাফর সাদেক (আ.) তাকে পূর্ণতায় পৌঁছে দেন। শুধু শিয়া চিন্তাবিদরা নন সেইসঙ্গে সুন্নি আলেম ও বিজ্ঞ ব্যক্তিবর্গও ইমামের এই কাজে ভূয়সী প্রশংসা করেছেন। আজকের আসরে আমরা ইমাম সম্পর্কে এরকম কয়েকজন চিন্তাবিদের মতামত শুনব।
কায়রো বিশ্ববিদ্যালয়ের ফরেন ল্যাঙ্গুয়েজ ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক ড. হামিদ বলেন: আমি ২০ বছরেরও বেশি সময় ধরে ফিকাহ শাস্ত্র নিয়ে গবেষণা করছি। এরমধ্যে ইমাম সাদেক আমার দৃষ্টি গভীরভাবে আকৃষ্ট করতে পেরেছেন। তিনি ফিকাহ শাস্ত্রকে এতটা সমৃদ্ধ করেছেন যে, তা শিয়া ও সুন্নি গবেষকদের চিন্তার খোরাক যুগিয়েছে।
আহলে সুন্নাত ওয়াল জামায়াতের হাদিস বিশারদ মালিক বিন আনাস বলেন: জ্ঞান, প্রজ্ঞা ও ইবাদতের দিক দিয়ে আমি জাফর বিন মোহাম্মাদ সাদেক (আ.)’র সমতুল্য আর কাউকে দেখিনি।
হানাফি মাজহাবের প্রতিষ্ঠাতা আবু হানিফা নুমান বিন সাবেত বলেন: আমি ইমাম জাফর বিন মোহাম্মাদের চেয়ে বড় ফকিহ আর দেখিনি। আমি একদিন খলিফা মানসুরের নির্দেশে ফিকাহ শাস্ত্রের ৪০টি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন খলিফার দরবারে উপস্থিত আলেমদের সামনে উপস্থাপনের জন্য প্রস্তুত করি। দরবারে উপস্থিত ইমাম জাফর সাদেক (আ.) ৪০টি প্রশ্নেরই এত সুন্দর ও চমৎকার উত্তর দেন যে, উপস্থিত প্রত্যেকে একবাক্যে স্বীকার করেন ইসলামি জ্ঞান ও প্রজ্ঞার দিক দিয়ে তিনি সব আলেমের চেয়ে অগ্রগামী।
এখানে উল্লেখ করা প্রয়োজন যে, ইসলামের ইতিহাসের বেশিরভাগ শাসকের ইসলামি জ্ঞানের প্রতি কোনো আগ্রহ ছিল না। কখনো কখনো যদি তাদের দরবারে কোনো আলেমের দেখা পাওয়া যেত তাহলে এ কাজে শাসকের উদ্দেশ্য ছিল এসব আলেমকে নিজের ক্ষমতা সুসংহত করার কাজে ব্যবহার করা এবং জনগণকে এটা বোঝানো যে, শাসক আলেমদের অনেক সম্মান করেন। কখনো কখনো আলেমদের অপমান করার জন্যও খলিফার দরবারে তলব করা হতো। আব্বাসীয় খলিফা মানসুর একই উদ্দেশ্যে আবু হানিফাকে ফিকাহ শাস্ত্রের ৪০টি জটিল প্রশ্ন প্রস্তুত করার নির্দেশ দিয়েছিলেন যাতে দরবারে উপস্থিত ব্যক্তিদের সামনে ইমাম জাফর সাদকে (আ.)কে বিপদে ফেলা যায়। মানসুরের ধারণা ছিল ইমাম এসব প্রশ্নের সামনে বাকরুদ্ধ হয়ে পড়বেন। কিন্তু মানসুরের ধারণার বিপরীতে ইমাম সাদেক (আ.) এসব প্রশ্নের এতটা প্রজ্ঞাপূর্ণ উত্তর দেন যাতে উপস্থিত সকলে হতভম্ভ হয়ে যায়।
জ্ঞান ও প্রজ্ঞার পাশাপাশি তাকওয়া ও সাধাসিধে জীবনযাপনের দিক দিয়েও ইমামের জুড়ি ছিল না। মানুষের সঙ্গে অতি উত্তম আচরণ ও উন্নত নৈতিক গুণাবলীর কারণে সাধারণ মানুষই ইমামকে সাদেক উপাধি দিয়েছিল; যে নামে তিনি সর্বাধিক পরিচিতি অর্জন করেন। মিশরের বিখ্যাত লেখক ড. আহমাদ আমিন এ সম্পর্কে বলেন: ইমাম সাদেক শুধু শিয়া মাজহাবের সবচেয়ে বড় ফকিহ ছিলেন না সেইসঙ্গে ইসলামের ইতিহাসের পরবর্তী আরো বহু যুগ ধরে তিনি ছিলেন সবচেয়ে বড় জ্ঞানী ও পণ্ডিত ব্যক্তি।
বন্ধুরা! ইমাম জাফর সাদেক (আ.) কত মহান ব্যক্তিত্ব ছিলেন তা উপলব্ধি করার জন্য তাঁর সম্পর্কে আমরা আরো দু’জন বিখ্যাত মুসলিম পণ্ডিতের বক্তব্য তুলে ধরব। মিশরের প্রখ্যাত কবি, লেখক ও গবেষক আব্দুর রহমান আশ-শারকাভি ইমাম সাদেক (আ.) সম্পর্কে লিখেছেন: ইমাম সাদেকের যুগের সকল মানুষ তাঁকে ভালোবাসত ও সম্মান করত। কারণ, তাঁর চিন্তাশক্তির ব্যাপ্তি ছিল বিশাল, তাঁর চরিত্র ছিল মহান, মুখে সর্বদা হাসি লেগে থাকত এবং মানুষের সঙ্গে তার ব্যবহার ছিল অত্যন্ত অমায়িক। পরোপকারে তাঁর জুড়ি ছিল না। শাসকগোষ্ঠীর সর্বোচ্চ হুমকি ও চাপ সত্ত্বেও তিনি বিচক্ষণতার সঙ্গে আল্লাহর একত্ববাদ ও দ্বীন প্রচারের দায়িত্ব পালন করে গেছেন।
ইমাম জাফর সাদেক (আ.)’র উন্নত চারিত্রিক গুণাবলী বর্ণনা করতে গিয়ে মুসলিম বিশ্বের আরেকজন বিশিষ্ট চিন্তাবিদ মোহাম্মাদ বিন তালহা শাফিয়ী বলেন: আহলে বাইতের মহান আলেম জাফর বিন মোহাম্মাদ সুগভীর জ্ঞানের অধিকারী ছিলেন। তিনি একাগ্রচিত্তে আল্লাহর ইবাদত করতেন এবং সব সময় আল্লাহর জিকির তাঁর মুখে লেগে লাগত। তিনি বেশি বেশি কুরআন তেলাওয়াত করতেন, কুরআনের মর্মার্থ ও শিক্ষা গভীরভাবে অনুধাবন করতেন এবং সেখান থেকে সাধারণ মানুষের বোঝার মতো শিক্ষা বের করে আনতেন। নিজের নফস বা রিপুকে তিনি কঠোর হাতে নিয়ন্ত্রণ করতেন। তাঁর নূরানি চেহারা দেখলে মানুষের আখেরাতের কথা স্মরণ হয়ে যেত। তিনি বক্তৃতা দিতে শুরু করলে মানুষের দুনিয়াপ্রেম ছুটে যেত এবং তারা কিয়ামতের জন্য প্রস্তুতি নিতে শুরু করত। তাঁর গুণাবলী বর্ণনা করে শেষ করা সম্ভব নয়।
ইমাম জাফর সাদেক (আ.) মোহাম্মাদি ইসলাম প্রচারের মহান দায়িত্ব পালনের একই সময়ে রাজনৈতিক অঙ্গনেও তৎপর ছিলেন। ইমাম যে পরিপূর্ণ ফিকাহ সংকলন রেখে গেছেন তা থেকে বোঝা যায়, ইসলাম তখনই মানুষের কল্যাণ করতে পারবে যখন এই ঐশী ধর্ম মানুষের জীবনের প্রতিটি প্রয়োজন পূরণের মতো দিকনির্দেশনা বাতলে দিতে পারবে। ইসলামি ফিকাহ শাস্ত্রে আধিপত্যকামী ও সাম্রাজ্যবাদী শাসকদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর শিক্ষা থাকতে হবে। আল্লাহর কিতাব কুরআন মজিদ থেকে উৎসারিত জ্ঞান দিয়ে ইমাম যে পূর্ণাঙ্গ ফিকাহ সংকলন রেখে গেছেন তাতে মুসলমানদের দৈনন্দিন জীবনের সব সমস্যার সমাধান রয়েছে। এজন্যই ইমাম সাদেক (আ.)’র ফিকাহ সংকলনকে আব্বাসীয় শাসকরা ভয় পেত।
শেষাংশে এবার আমরা ইমাম জাফর সাদেক (আ.)’র কিছু মূল্যবান উপদেশবাণী শুনব। তিনি বলেছেন: ইসলামের শত্রুরা তোমাদের সন্তানদের অন্তরকে ভ্রান্ত শিক্ষা দিয়ে পূর্ণ করে ফেলার আগে তাদের মাঝে আমাদের শিক্ষা ছড়িয়ে দাও। প্রজ্ঞাবান ও বুৎপত্তিসম্পন্ন, ধর্মীয় জ্ঞানে সমৃদ্ধ, সত্যবাদী ও কর্তব্যনিষ্ঠ মানুষদের আমরা ভালোবাসি। আমাদের অনুসারীরা সঠিক পথপ্রাপ্ত, মুত্তাকি, নেককার, ঈমানদার ও সফলকাম হয়। আমার সবচেয়ে প্রিয় ভাই হচ্ছেন তিনি, যিনি আমার ভুল-ত্রুটিগুলো আমার সামনে তুলে ধরেন। মানসুর আব্বাসির বিষপ্রয়োগে শাহাদাতের অমীয় সুধা পান করার আগ মুহূর্তে ইমাম সাদেক (আ.) সর্বশেষ যে মূল্যবান বাণী রেখে যান তা হচ্ছে: যে ব্যক্তি নামাজকে অবহেলা করে সে আমাদের শাফায়াত থেকে বঞ্চিত হবে।#
নিবেদক
মোঃ আলী
আল্লাহুম্মা সাল্লে আলা মোহাম্মদ ওয়া আলে মোহাম্মদ ওয়া আজ্জিল ফারজাহুম
মন্তব্যসমূহ