আল্লাহুম্মা সাল্লে আলা মোহাম্মদ দিন ওয়া আলে মোহাম্মদ ওয়া আজ্জিল ফারজাহুমআজকে আমরা জান্নাতে নারীকূলের শিরোমণি ও রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর প্রাণপ্রিয় কন্যা হযরত ফাতিমা জাহরা সালামুল্লাহি আলাইহার জীবনী সম্পর্কে সংক্ষেপে জানার চেষ্টা করব। এই মহিয়সী নারী যদিও দুই দশকেরও কম সময় পৃথিবীতে বেঁচে ছিলেন তারপরও তাকওয়া ও খোদাভীরুতার দিক দিয়ে তিনি নিজেকে এতটা উন্নত অবস্থানে নিয়ে গিয়েছিলেন যে, প্রায় দেড় হাজার বছর পর আজও তিনি মুসলিম উম্মাহর জন্য অনুকরণীয় আদর্শ হয়ে রয়েছেন।হযরত ফাতিমা জাহরা সালামুল্লাহি আলাইহা সর্বশ্রেষ্ঠ মহামানবের ঔরষে জন্মগ্রহণ করে তাঁরই ঘরে লালিত পালিত হয়েছেন। মাওলা হযরত মোহাম্মদ মোস্তফা সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও পাশাপাশি তিনি মা হিসেবে পেয়েছিলেন রাসূলের মহীয়সী স্ত্রী ও চরম দুর্দিনের সঙ্গী বিবি খাদিজা সালামুল্লাহি আলাইহাকে। হযরত জাহরা’র উন্নত চরিত্র গঠনে বিবি খাদিজার ভূমিকা ছিল অনস্বীকার্য। হযরত খাদিজা কুরাইশ বংশের একটি অতি সম্মানিত পরিবারে জন্মগ্রহণ করেছিলেন। বংশ পরম্পরায় তাঁর পরিবারও ছিল একত্ববাদে বিশ্বাসী। ইসলাম আবির্ভাবের আগে যারা হাজরে আসওয়াদকে মসজিদুল হারাম থেকে ইয়েমেনে স্থানান্তরের তীব্র বিরোধিতা করেছিলেন বিবি খাদিজার পিতা ছিলেন তাদের অন্যতম। এ ছাড়া, বিবি খাদিজার পূর্বপুরুষ আসাদ বিন আব্দুলগ্বারি ছিলেন হিলফুল ফুজুল চুক্তির অন্যতম প্রধান উদ্যোক্তা। মক্কার নির্যাতিত ও অসহায় মানুষদেরকে জালেমদের অত্যাচার থেকে রক্ষা করার লক্ষ্যে এ চুক্তি হয়েছিল। মাওলা মোহাম্মদ (সা.)ও এ চুক্তিতে শামিল হয়েছিলেন। এ ছাড়া, বিবি খাদিজার চাচাতো ভাই ওয়ারাকা ইবনে নওফেল ছিলেন একজন উচ্চশিক্ষিত ও পণ্ডিত ব্যক্তি। হেরা পর্বতের গুহায় যেদিন আল্লাহর রাসূল নবুওয়াতপ্রাপ্ত হন সেদিন তিনি এই ঘটনা ওয়ারাকা ইবনে নওফেলকে খুলে বলেন। সবকিছু শোনার পর নওফেল বলেছিলেন, “খোদার কসম আপনি আল্লাহর পক্ষ থেকে নবুওয়াতপ্রাপ্ত হয়েছেন। যে ফেরেশতা হযরত মুসা ও হযরত ঈসার কাছে আসত তিনিই আপনার কাছে এসেছেন। আপনি জেনে রাখুন মক্কার কাফের ও মুশরিকরা আপনার দাওয়াতের বাণী মেনে নেবে না এবং আপনার ওপর অত্যাচার চালাবে। ওরা আপনাকে আপনার মাতৃভূমি ত্যাগ করতে বাধ্য করবে এবং আপনার সঙ্গে যুদ্ধ করবে। আমি যদি সেদিন পর্যন্ত বেঁচে থাকি তাহলে আল্লাহর ধর্ম রক্ষায় আপনাকে সহযোগিতা করব।” এরপর ওয়ারাকা ইবনে নওফেল মাওলা মোহাম্মদ (সাঃ) এর কপালে চুমু খেয়ে নিজের গন্তব্যে চলে যান।কাজেই দেখা যাচ্ছে, মাওলা মোহাম্মদ (সা.) এমন একজন নারীকে বিয়ে করেছিলেন যিনি একটি সম্ভ্রান্ত ও শিক্ষিত পরিবারে জন্মগ্রহণ করেছিলেন যারা আগে থেকেই ছিলেন ঐশী মূল্যবোধ ও উন্নত নৈতিক গুণাবলীতে সমৃদ্ধ। মহান আল্লাহর কাছে বিবি খাদিজার মর্যাদা এতটা উঁচু ছিল যে, হাদিসে এসেছে, হযরত জিব্রাইল (আ.) যতবারই ওহী নিয়ে মাওলা মোহাম্মদ ((সাঃ)) কাছে এসেছেন ততবারই তিনি বলে গিয়েছেন, “আল্লাহ আপনার স্ত্রী বিবি খাদিজাকে সালাম জানিয়েছেন।”একদিন ওহীর ফেরেশতা এসে মাওলা মোহাম্মদ (সা.)কে বললেন: “আল্লাহ তায়ালা আপনাকে সালাম জানিয়ে বলেছেন, ৪০ দিন বিবি খাদিজার কাছ থেকে দূরে থেকে শুধু আল্লাহর ইবাদতে মশগুল হতে হবে।” রাসূলুল্লাহ (সা.) আল্লাহর নির্দেশ পালন করেন। ৪০ দিন শেষে জিব্রাইল (আ.) জান্নাতি খাবার এনে মাওলা মোহাম্মদ (সাঃ) খেতে দেন। আল্লাহর রাসূল সেই খাবার গ্রহণ করার পর ওহীর ফেরেশতা বলেন, আপনি এবার স্ত্রীর সাক্ষাতে যান। মহান আল্লাহ আপনাকে একজন পবিত্র সন্তান দানের ইচ্ছা করেছেন।বিবি খাদিজার গর্ভাবস্থায় জিব্রাইল (আ.) মাওলা মোহাম্মদ (সাঃ) কে বলেন, বিবি খাদিজার গর্ভে যে সন্তান রয়েছে তার মাধ্যমে আপনার বংশ রক্ষা পাবে। তিনি হবেন এমন ইমামদের মাতা যারা আপনার কাছে ওহী নাজিল বন্ধ হয়ে যাওয়ার পর আপনার স্থলাভিষিক্ত হবেন। আল্লাহর রাসূল এই খুশির খবর বিবি খাদিজাকে খুলে বলেন। আইয়ামে জাহিলিয়্যাতের যুগে নারীর কোনো মানবীয়, সামাজিক ও আইনগত অধিকার ছিল না। কন্যা সন্তান জন্মগ্রহণ করাকে একটি পরিবারের জন্য কলঙ্ক মনে করা হতো। কারো পুত্রসন্তান না থাকলে মনে করা হতো তার বংশ ধ্বংস হয়ে যাবে। এ কারণে মক্কার মুশরিকরা ভেবেছিল আল্লাহর রাসূলের পুত্র সন্তান না থাকায় তাঁর মৃত্যুর পর ইসলামেরও অপমৃত্যু ঘটবে। কিন্তু তাদের অপমানকর বক্তব্যের জবাবে আল্লাহ তায়ালা সূরা কাউসার নাজিল করে সুস্পষ্টভাবে জানিয়ে দেন, শত্রুদের এ দুরাশা তো কোনোদিন সফল হবে না। বরং উল্টো নবীনন্দিনী হযরত ফাতিমার মাধ্যমেই রাসূলের বংশ রক্ষা পাবে এবং ইমামত ও বেলায়েতের ধারা জারি থাকার মাধ্যমে বিশ্বব্যাপী ইসলাম ছড়িয়ে পড়বে। হযরত ফাতিমা জাহরা সালামুল্লাহি আলাইহার জন্মের দিনগুলোতে ইসলামের দ্রুত প্রসার মক্কার কাফিরদের বিচলিত করে তুলেছিল। তারা নানারকম নির্যাতন, হুমকি ও ভয়-ভীতি প্রদর্শন করেও ইসলামের প্রসার রোধ করতে না পেরে মুসলমানদেরকে ‘শোয়াবে আবু তালিব’ নামক উপত্যকায় অবরুদ্ধ করে রাখে। টানা তিন বছর মাওলা মোহাম্মদ (সা.) ও তার পরিবারসহ সব মুসলমান ওই উপত্যকায় দুর্বিসহ জীবন কাটাতে বাধ্য হন। সেই কঠিন দিনে হযরত জাহরা ছিলেন দুগ্ধপোষ্য শিশু। জীবনের শুরুতেই এরকম কঠিন পরিস্থিতিতে পড়ার মাধ্যমে আল্লাহ তায়ালাই হয়ত তাঁকে ভবিষ্যতের আরো কঠিন দিন সহ্য করার জন্য প্রস্তুত করে তুলেছিলেন। টানা তিন বছর অবরুদ্ধ করে রাখার পরও মুসলমানদের মনোবলে বিন্দুমাত্র নমনীয়তা আনতে না পেরে কাফেররা অবরোধ প্রত্যাহার করে নেয়।এ ঘটনার কিছুদিন পর রাসূলের প্রিয় সহধর্মিনী বিবি খাদিজা সালামুল্লাহি আলাইহা রব্বুল আলামিনের ডাকে দুনিয়া ছেড়ে চলে যান। হযরত জাহরা সালামুল্লাহি আলাইহা পরিণত হন মাতৃহীন এতিম শিশুতে। এরপর আর কিছুদিন যেতে না যেতে রাসূলের চাচা আবু তালিব যিনি কাফেরদের চরম বিরোধিতা ও শত্রুতার মাঝে মাওলা মোহাম্মদ (সাঃ) আশ্রয় দিয়ে রেখেছিলেন তিনিও ইন্তেকাল করেন। পরপর ঘনিষ্ঠতম দু’জন দরদি মানুষকে হারিয়ে আল্লাহর রাসূল বিমর্ষ হয়ে পড়েন। এ সময় আবু তালিবের অনুপস্থিতির সুযোগে মক্কার মুশরিকরা নানাভাবে মাওলা মোহাম্মদ (সাঃ) কে কষ্ট দিতে থাকে। এ অবস্থায় আল্লাহর রাসূল প্রিয় জন্মভূমি মক্কা ত্যাগ করে মদীনায় হিজরত করার সিদ্ধান্ত নেন। এখান থেকে হযরত জাহরার জীবনে শুরু হয় নতুন অধ্যায়।চলবেপ্রচারে প্রিয় গোলাপ ফুল
আল্লাহুম্মা সাল্লে আলা মোহাম্মদ দিন ওয়া আলে মোহাম্মদ ওয়া আজ্জিল ফারজাহুম
আজকে আমরা জান্নাতে নারীকূলের শিরোমণি ও রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর প্রাণপ্রিয় কন্যা হযরত ফাতিমা জাহরা সালামুল্লাহি আলাইহার জীবনী সম্পর্কে সংক্ষেপে জানার চেষ্টা করব। এই মহিয়সী নারী যদিও দুই দশকেরও কম সময় পৃথিবীতে বেঁচে ছিলেন তারপরও তাকওয়া ও খোদাভীরুতার দিক দিয়ে তিনি নিজেকে এতটা উন্নত অবস্থানে নিয়ে গিয়েছিলেন যে, প্রায় দেড় হাজার বছর পর আজও তিনি মুসলিম উম্মাহর জন্য অনুকরণীয় আদর্শ হয়ে রয়েছেন।
হযরত ফাতিমা জাহরা সালামুল্লাহি আলাইহা সর্বশ্রেষ্ঠ মহামানবের ঔরষে জন্মগ্রহণ করে তাঁরই ঘরে লালিত পালিত হয়েছেন। মাওলা হযরত মোহাম্মদ মোস্তফা সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও পাশাপাশি তিনি মা হিসেবে পেয়েছিলেন রাসূলের মহীয়সী স্ত্রী ও চরম দুর্দিনের সঙ্গী বিবি খাদিজা সালামুল্লাহি আলাইহাকে। হযরত জাহরা’র উন্নত চরিত্র গঠনে বিবি খাদিজার ভূমিকা ছিল অনস্বীকার্য। হযরত খাদিজা কুরাইশ বংশের একটি অতি সম্মানিত পরিবারে জন্মগ্রহণ করেছিলেন। বংশ পরম্পরায় তাঁর পরিবারও ছিল একত্ববাদে বিশ্বাসী। ইসলাম আবির্ভাবের আগে যারা হাজরে আসওয়াদকে মসজিদুল হারাম থেকে ইয়েমেনে স্থানান্তরের তীব্র বিরোধিতা করেছিলেন বিবি খাদিজার পিতা ছিলেন তাদের অন্যতম। এ ছাড়া, বিবি খাদিজার পূর্বপুরুষ আসাদ বিন আব্দুলগ্বারি ছিলেন হিলফুল ফুজুল চুক্তির অন্যতম প্রধান উদ্যোক্তা। মক্কার নির্যাতিত ও অসহায় মানুষদেরকে জালেমদের অত্যাচার থেকে রক্ষা করার লক্ষ্যে এ চুক্তি হয়েছিল। মাওলা মোহাম্মদ (সা.)ও এ চুক্তিতে শামিল হয়েছিলেন।
এ ছাড়া, বিবি খাদিজার চাচাতো ভাই ওয়ারাকা ইবনে নওফেল ছিলেন একজন উচ্চশিক্ষিত ও পণ্ডিত ব্যক্তি। হেরা পর্বতের গুহায় যেদিন আল্লাহর রাসূল নবুওয়াতপ্রাপ্ত হন সেদিন তিনি এই ঘটনা ওয়ারাকা ইবনে নওফেলকে খুলে বলেন। সবকিছু শোনার পর নওফেল বলেছিলেন, “খোদার কসম আপনি আল্লাহর পক্ষ থেকে নবুওয়াতপ্রাপ্ত হয়েছেন। যে ফেরেশতা হযরত মুসা ও হযরত ঈসার কাছে আসত তিনিই আপনার কাছে এসেছেন। আপনি জেনে রাখুন মক্কার কাফের ও মুশরিকরা আপনার দাওয়াতের বাণী মেনে নেবে না এবং আপনার ওপর অত্যাচার চালাবে। ওরা আপনাকে আপনার মাতৃভূমি ত্যাগ করতে বাধ্য করবে এবং আপনার সঙ্গে যুদ্ধ করবে। আমি যদি সেদিন পর্যন্ত বেঁচে থাকি তাহলে আল্লাহর ধর্ম রক্ষায় আপনাকে সহযোগিতা করব।” এরপর ওয়ারাকা ইবনে নওফেল মাওলা মোহাম্মদ (সাঃ) এর কপালে চুমু খেয়ে নিজের গন্তব্যে চলে যান।
কাজেই দেখা যাচ্ছে, মাওলা মোহাম্মদ (সা.) এমন একজন নারীকে বিয়ে করেছিলেন যিনি একটি সম্ভ্রান্ত ও শিক্ষিত পরিবারে জন্মগ্রহণ করেছিলেন যারা আগে থেকেই ছিলেন ঐশী মূল্যবোধ ও উন্নত নৈতিক গুণাবলীতে সমৃদ্ধ। মহান আল্লাহর কাছে বিবি খাদিজার মর্যাদা এতটা উঁচু ছিল যে, হাদিসে এসেছে, হযরত জিব্রাইল (আ.) যতবারই ওহী নিয়ে মাওলা মোহাম্মদ ((সাঃ)) কাছে এসেছেন ততবারই তিনি বলে গিয়েছেন, “আল্লাহ আপনার স্ত্রী বিবি খাদিজাকে সালাম জানিয়েছেন।”
একদিন ওহীর ফেরেশতা এসে মাওলা মোহাম্মদ (সা.)কে বললেন: “আল্লাহ তায়ালা আপনাকে সালাম জানিয়ে বলেছেন, ৪০ দিন বিবি খাদিজার কাছ থেকে দূরে থেকে শুধু আল্লাহর ইবাদতে মশগুল হতে হবে।” রাসূলুল্লাহ (সা.) আল্লাহর নির্দেশ পালন করেন। ৪০ দিন শেষে জিব্রাইল (আ.) জান্নাতি খাবার এনে মাওলা মোহাম্মদ (সাঃ) খেতে দেন। আল্লাহর রাসূল সেই খাবার গ্রহণ করার পর ওহীর ফেরেশতা বলেন, আপনি এবার স্ত্রীর সাক্ষাতে যান। মহান আল্লাহ আপনাকে একজন পবিত্র সন্তান দানের ইচ্ছা করেছেন।
বিবি খাদিজার গর্ভাবস্থায় জিব্রাইল (আ.) মাওলা মোহাম্মদ (সাঃ) কে বলেন, বিবি খাদিজার গর্ভে যে সন্তান রয়েছে তার মাধ্যমে আপনার বংশ রক্ষা পাবে। তিনি হবেন এমন ইমামদের মাতা যারা আপনার কাছে ওহী নাজিল বন্ধ হয়ে যাওয়ার পর আপনার স্থলাভিষিক্ত হবেন। আল্লাহর রাসূল এই খুশির খবর বিবি খাদিজাকে খুলে বলেন।
আইয়ামে জাহিলিয়্যাতের যুগে নারীর কোনো মানবীয়, সামাজিক ও আইনগত অধিকার ছিল না। কন্যা সন্তান জন্মগ্রহণ করাকে একটি পরিবারের জন্য কলঙ্ক মনে করা হতো। কারো পুত্রসন্তান না থাকলে মনে করা হতো তার বংশ ধ্বংস হয়ে যাবে। এ কারণে মক্কার মুশরিকরা ভেবেছিল আল্লাহর রাসূলের পুত্র সন্তান না থাকায় তাঁর মৃত্যুর পর ইসলামেরও অপমৃত্যু ঘটবে। কিন্তু তাদের অপমানকর বক্তব্যের জবাবে আল্লাহ তায়ালা সূরা কাউসার নাজিল করে সুস্পষ্টভাবে জানিয়ে দেন, শত্রুদের এ দুরাশা তো কোনোদিন সফল হবে না। বরং উল্টো নবীনন্দিনী হযরত ফাতিমার মাধ্যমেই রাসূলের বংশ রক্ষা পাবে এবং ইমামত ও বেলায়েতের ধারা জারি থাকার মাধ্যমে বিশ্বব্যাপী ইসলাম ছড়িয়ে পড়বে।
হযরত ফাতিমা জাহরা সালামুল্লাহি আলাইহার জন্মের দিনগুলোতে ইসলামের দ্রুত প্রসার মক্কার কাফিরদের বিচলিত করে তুলেছিল। তারা নানারকম নির্যাতন, হুমকি ও ভয়-ভীতি প্রদর্শন করেও ইসলামের প্রসার রোধ করতে না পেরে মুসলমানদেরকে ‘শোয়াবে আবু তালিব’ নামক উপত্যকায় অবরুদ্ধ করে রাখে। টানা তিন বছর মাওলা মোহাম্মদ (সা.) ও তার পরিবারসহ সব মুসলমান ওই উপত্যকায় দুর্বিসহ জীবন কাটাতে বাধ্য হন। সেই কঠিন দিনে হযরত জাহরা ছিলেন দুগ্ধপোষ্য শিশু। জীবনের শুরুতেই এরকম কঠিন পরিস্থিতিতে পড়ার মাধ্যমে আল্লাহ তায়ালাই হয়ত তাঁকে ভবিষ্যতের আরো কঠিন দিন সহ্য করার জন্য প্রস্তুত করে তুলেছিলেন। টানা তিন বছর অবরুদ্ধ করে রাখার পরও মুসলমানদের মনোবলে বিন্দুমাত্র নমনীয়তা আনতে না পেরে কাফেররা অবরোধ প্রত্যাহার করে নেয়।
এ ঘটনার কিছুদিন পর রাসূলের প্রিয় সহধর্মিনী বিবি খাদিজা সালামুল্লাহি আলাইহা রব্বুল আলামিনের ডাকে দুনিয়া ছেড়ে চলে যান। হযরত জাহরা সালামুল্লাহি আলাইহা পরিণত হন মাতৃহীন এতিম শিশুতে। এরপর আর কিছুদিন যেতে না যেতে রাসূলের চাচা আবু তালিব যিনি কাফেরদের চরম বিরোধিতা ও শত্রুতার মাঝে মাওলা মোহাম্মদ (সাঃ) আশ্রয় দিয়ে রেখেছিলেন তিনিও ইন্তেকাল করেন। পরপর ঘনিষ্ঠতম দু’জন দরদি মানুষকে হারিয়ে আল্লাহর রাসূল বিমর্ষ হয়ে পড়েন। এ সময় আবু তালিবের অনুপস্থিতির সুযোগে মক্কার মুশরিকরা নানাভাবে মাওলা মোহাম্মদ (সাঃ) কে কষ্ট দিতে থাকে। এ অবস্থায় আল্লাহর রাসূল প্রিয় জন্মভূমি মক্কা ত্যাগ করে মদীনায় হিজরত করার সিদ্ধান্ত নেন। এখান থেকে হযরত জাহরার জীবনে শুরু হয় নতুন অধ্যায়।
চলবে
প্রচারে প্রিয় গোলাপ ফুল
মন্তব্যসমূহ