বেলায়েতের আয়াতের ব্যাকরণগত দিক সম্পর্কে একটি গবেষণামূলক ও বিশ্লেষণমূলক পোস্টপর্ব ((((((৬)))))) ও এক থেকে শুরু করে এ পর্যন্ত শেষআত তাহকিক ফি কালামাতিল কোরআনিল কারিম’ এর রচয়িতা মনে করেন এ শব্দটির আসল অর্থ হল “পরস্পর সম্পর্ক যুক্ত দুটি জিনিসের পাশাপাশি অবস্থান”। আর এ শব্দটির অন্যান্য সকল অর্থকে এই অর্থের দিকে ফিরিয়ে দিয়েছেন। তিনি লিখেছেন: ‘ওয়ালি শব্দটির জন্য অন্য যে সব অর্থ উল্লেখ করা হয়েছে যেমন- নিকটবর্তী, ভালবাসা, সাহায্য করা এবং অনুসরণ তা এই অর্থের থেকে উদ্ভূত আবশ্যিক ও অবিচ্ছেদ্য অর্থ। (মুস্তাফাভী, আত তাহকিক ফি কালামাতিল কোরআন আল কারিম, ১৩তম খণ্ড, পৃ.-২০২) প্রথমত: ওয়ালির যৌথ অর্থ রয়েছে অর্থাৎ একটা সামগ্রিক অর্থের (নৈকট্য ও সংযুক্তি) জন্য প্রণয়ন করা হয়েছে যার দৃষ্টান্ত রয়েছে যেগুলোর ওপর প্রযোজ্য হয়ে থাকে। উপরিউল্লিখিত কোন লেখকই ভালবাসা, সাহায্য করা, অনুসরণ এবং কর্তৃত্বের ক্ষেত্রে যোগ্যতম এসবকে ওয়ালির প্রকৃত অর্থ বলে উল্লেখ করেননি। (আর তাই এ অর্থগুলো গ্রহণের জন্য তার প্রতি নির্দেশক ও নির্দিষ্টকারী দলীল থাকতে হবে, তা না থাকলে ঐ অর্থ গ্রহণ বৈধ হবে না)।দ্বিতীয়ত: এই শব্দের প্রকৃত অর্থের ব্যাপারে দুটি ভিন্ন রকমের দৃষ্টিভঙ্গি রয়েছে। একদল নিকটবর্তিতাকে অন্যদল দুটি জিনিসের পাশাপাশি অবস্থানকে এই শব্দের প্রকৃত অর্থ বলেছেন এবং নিকটবর্তিতাকে এই পাশাপাশি অবস্থানের অপরিহার্য পরিণতি হিসাবে তার আবশ্যিক অর্থ বলে চিহ্নিত করেছেন।দ্বিতীয় মতটিকেই অধিক যুক্তিযুক্ত বলে মনে হয় তবে নিকটবর্তিতাও মূল অর্থটির অন্যতম দৃষ্টান্ত। এই দৃষ্টিভঙ্গি অনুযায়ী ওয়ালি শব্দটির প্রকৃত অর্থ হচ্ছে পাশাপাশি দুটি জিনিসের এমনভাবে অবস্থান যেন তাদের মধ্যে কোন দূরত্ব না থাকে। অর্থাৎ দুটি জিনিস পরস্পরের সাথে এমনভাবে সংযুক্ত যেন অন্য কোন কিছুই তাদের মধ্যে না থাকে। যেমন যদি কয়েক ব্যক্তি পাশাপাশি বসে থাকে, তখন আমরা বলি যায়েদ সভার সামনের সারিতে বসে আছে আর যায়েদের পাশেই আমর এবং আমরের পাশেই বকর বসে আছে। (অর্থাৎ তাদের একে অপরের মধ্যে কোন ফাঁক নেই) এই কারণেই ولی শব্দটি قرب (নিকটবর্তিতা) এর ক্ষেত্রেও ব্যবহৃত হয়েছে। সেটা স্থানের ক্ষেত্রেই হোক আর অবস্তুক কোন সত্তার ক্ষেত্রেই হোক (যেমন কোন সম্মানিত ও মর্যাদাসম্পন্ন ব্যক্তির সাথে কারো ভাল সম্পর্ক আছে বুঝাতে তিনি তাঁর নৈকট্যপ্রাপ্ত বলা হয়ে থাকে)। এই নিকটবর্তিতার সম্পর্কের কারণেই বন্ধুত্ব, দায়িত্বলাভ, সাহায্যকারী, কর্তৃত্বশীল এবং এরূপ অন্যান্য অর্থে তা ব্যবহৃত হয়েছে, অর্থাৎ এ সকল অর্থেই (দুটি বস্তু বা বিষয়ের মধ্যে) এক ধরনের প্রত্যক্ষ সম্পর্ক ও সংযোগ রয়েছে। তাই ولی শব্দটি যেখানেই ব্যবহৃত হবে সেখানে বাক্যের অর্থনির্দেশক অভ্যন্তরীণ ও সংযুক্ত শাব্দিক দলীল এবং অবস্থা ও ভাবগত দলীলের ভিত্তিতে তার অর্থ খুজে বের করতে হবে। (মুতাহ্হারী, মাজমুএ আছার, ৩য় খণ্ড, পৃ.-২৫৫-২৫৬)২. যেহেতু ولي و ولايت এর প্রকৃত অর্থ হল সংযুক্তি, সান্নিধ্য ও নিকটবর্তিতা, তাই আলোচ্য আয়াতে কর্তৃত্ব অর্থদানের সাথে পূর্ব ও পরবর্তী আয়াতের গৃহীত অর্থের (বন্ধু ও সাহায্যকারী) পার্থক্য বাচনভঙ্গি ও বর্ণনাধারার মধ্যে কোন ছেদ ঘটায়না। কেননা সমস্যা তখনই দেখা দিবে যখন ولایت একটি দ্ব্যর্থবোধক শব্দ হবে কিন্তু ইতি পূর্বেই প্রমাণিত হয়েছে যে, ولایت কোন দ্ব্যর্থবোধক শব্দ নয় বরং এর অভিন্ন অর্থ রয়েছে। তিনটি আয়াতেই সান্নিধ্য এবং নিকটবর্তিতার অর্থ রয়েছে। যদিও সংযুক্তি ও নৈকট্য নির্দেশকারী বস্তুর উদাহরণ ও দৃষ্টান্তের মধ্যে পার্থক্য বিদ্যমান কিন্তু একই ধারা ও ভাবার্থ নির্দেশের জন্য আয়াত তিনটির দৃষ্টান্তসমূহের মধ্যে এতটুকু ঐক্য থাকাই যথেষ্ট। মহান আল্লাহ তাআলা প্রথমে মুমিনদেরকে ইহুদী এবং খ্রীষ্টানদের সাথে সম্পর্ক স্থাপনের জন্য তাদের সান্নিধ্য লাভের চেষ্টা এবং তাদের নিকটবর্তী হওয়া থেকে নিষেধ করেছেন। ইহুদীদের সাথে এই সংযোগ ও সান্নিধ্য শুধুমাত্র বন্ধুত্বের ব্যাপারে অঙ্গিকারাবদ্ধ হওয়ার দ্বারা এবং পারস্পরিক সম্পর্ক জোরদার করার মাধ্যমেই সম্ভব। বেলায়াতের আয়াতেও মহান আল্লাহ তাআলা মুমিনদেরকে তাঁর এবং তাঁর রাসূল ও কিছু সংখ্যক মুমিনের সান্নিধ্যে যাওয়ার বা নিকটবর্তী হওয়ার আহবান জানিয়েছেন। কারণ আল্লাহর সান্নিধ্য কেবল তাঁর সৃষ্টিগত অনিবার্য (অলঙ্ঘনীয় প্রাকৃতিক) নিয়ম এবং মানুষের স্বাধীন ইচ্ছাশক্তির গণ্ডিতে নির্ধারিত শরীয়তের বিধি বিধানের প্রতি নিজেকে সমর্পিত করার মাধ্যমেই লাভ করা সম্ভব। তেমনিভাবে রাসূলের (সা.) রেসালাতকে মেনে নিয়ে এবং তার অনুসরণ করেই শুধু রাসূলের সান্নিধ্য লাভ করা যায়।তেমনি ভাবে কর্তৃত্বের ক্ষেত্রে তাঁর মনোনীত ব্যক্তির অনুসরণ করা এবং তার আনুগত্যের পতাকাতলে একত্রিত হওয়ার মাধ্যমেই ঐ কর্তৃত্বশীল ব্যক্তির নিকটবর্তী হওয়া যায়। সুতরাং বন্ধু, সাহায্যকারী, অভিভাবক ও নেতা এদের সকলের ওপরেই বেলায়েত বা নৈকট্য ও সংযুক্তির বিষয়টি প্রযোজ্য। তবে এক্ষেত্রে তাদের মধ্যে যে পার্থক্য রয়েছে তা ঐ ব্যক্তির সাথে সম্পর্কের দৃষ্টিতে তাদের ঘনিষ্ঠতা ও প্রভাবের পর্যায়ের ভিন্নতা থেকে উদ্ভূত।৩. যদি বেলায়তের আয়াতে ওয়ালি শব্দটির অর্থ কর্তৃত্বের ক্ষেত্রে অগ্রাধিকারপ্রাপ্ত এবং তার পরবর্তী আয়াতে সাহায্যকারী হয় তবুও তা অসঙ্গত ও আলাদা তো নয়ই বরং সঙ্গতিপূর্ণ। কেননা আল্লাহ তাআলা প্রথমেই বলেছেন: আল্লাহ, তাঁর রাসূল এবং মুমিনদের কিছুসংখ্যক ওয়ালি (কর্তৃত্বের ক্ষেত্রে অগ্রাধিকারপ্রাপ্ত) এবং পরবর্তী আয়াতে এরশাদ করেছেন: যারা আল্লাহ, তাঁর রাসূল এবং মুমিনদের সাহায্য করবে তারাই বিজয়ী হবে।আয়াতের শুরুতে তিনি মুমিনদের একাংশের ইমামত ও বেলায়াতকে সত্যায়ন ও নিশ্চিত করেছেন অতপর পরের আয়াতে মুমিনদেরকে নির্দেশ দিয়েছেন তাদেরকে সাহায্য করার জন্য। (সাইয়েদ মুরতাজা, প্রাগুক্ত, ২য় খণ্ড, পৃ.-২৩৫) যেভাবে রাসূল (সা.) গাদীরে খুমের ঘটনার সময় প্রথমে হযরত আলী (আ.) কে নিজের স্থলাভিষিক্ত হিসেবে পরিচিত করিয়েছেন, তারপর দোয়া করেছেন এবং বলেছেন: হে আল্লাহ যে আলীকে (আ.) সাহায্য করবে তুমি তাকে সাহায্য কর, আর যে তাকে অপদস্ত করতে চায় তুমিও তাকে অপদস্ত কর।৪. তদুপরি যদি কোন ক্ষেত্রে কোন আয়াতের অন্তস্থ অর্থগত দলীলের সাথে তার পূর্ব ও পরের আয়াতের বর্ণনাধারাগত অর্থের বৈপরীত্য দেখা যায় তবে সেক্ষেত্রে আয়াতের অন্তস্থ অর্থগত দলীলকে বর্ণনাধারাগত অর্থের মিল থাকার নীতির «سیاق» ওপর প্রাধান্য দিতে হবে। সুতরাং এই আয়াতে ওয়ালি শব্দটি কর্তৃত্বের ক্ষেত্রে অগ্রাধিকারপ্রাপ্ত অর্থে ব্যবহৃত হয়েছে, এব্যপারে শেখ তুসীর যুক্তি প্রমাণই সঠিক। উপসংহার:পরিশেষে আমরা বলতে পারি যে,১. «انما» এই আয়াতে সবসময়ের মতই সীমাবদ্ধতার (হাসর) অর্থে ব্যবহৃত হয়েছে। আর হাসর থাকার কারণে ওয়ালি শব্দটি “কর্তৃত্বের ক্ষেত্রে অগ্রাধিকারপ্রাপ্ত” অর্থের জন্যই নির্ধারিত হয়েছে। এ কারণে বন্ধু বা সাহায্যকারী অর্থ হতে পারেনা।২. «هم راکعون» বাক্যটি معطوف হওয়ার সম্ভাবনা নেই; কারণ এতে একই বিষয়ের পুনরাবৃত্তির ন্যায় অগ্রহণযোগ্য নীতির অবতারণা হয়। তাছাড়া এই বাক্যটি থেকে প্রথম যে অর্থটি শ্রোতার মনে আসে তা হল «هم راکعون» হল অবস্থাবাচক বাক্য বা حالیة جملة এবং আয়াতের শানে নুজুলসহ আয়াতের ব্যাখ্যাকারী বহির্গত অন্যান্য দলীলও উক্ত দাবির (معطوف হওয়ার) বিপরীত বিষয়কে প্রমাণ করে।৩. বহু সংখ্যক ভাষাবিদের মতে রুকু শব্দটির প্রকৃত অর্থ ‘উপুড় হওয়া’ এ শব্দটি বিনয়ী বা ন¤্রতার অর্থে ব্যবহারের জন্য قرینه বা সমর্থক দলীলের প্রয়োজন। অথচ এই আয়াতে এরূপ কোন قرینه নেই।৪. মহত্ব, শ্রেষ্ঠত্ব এবং ভালকাজের প্রতি মানুষকে আকৃষ্ট করার জন্য একবচনের ক্ষেত্রে বহুবচনের ব্যবহার আরবি সাহিত্যে প্রচলিত আছে। অনেক পণ্ডিত ব্যক্তি ও বৈয়াকরণ এর সত্যতা স্বীকার করেছেন।৫. «ولی» শব্দটির যৌথ অর্থ রয়েছে যা একটা সামগ্রিক অর্থ অর্থাৎ সান্নিধ্য বা নৈকট্য নির্দেশের জন্য প্রণয়ন করা হয়েছে। এই সামগ্রিক অর্থের অনেক দৃষ্টান্ত ( مصاﺪیق) রয়েছে যেমন- মুক্ত, মুক্তকারী, ভালবাসা পোষণকারী, সাহায্যকারী, অভিভাবক, নেতা ইত্যাদি। তবে পবিত্র এই আয়াতে বিদ্যমান «انما» সীমাবদ্ধতা নির্দেশক অব্যয়টি এবং অন্যান্য অভ্যন্তরীণ ও বাহ্যিক দলীলের ভিত্তিতে বলা যায় যে, ওয়ালি শব্দটি কর্তৃত্বের ক্ষেত্রে অগ্রাধিকারপ্রাপ্ত বা অভিভাবক অর্থে ব্যবহৃত হয়েছে।সুতরাং হযরত মুহাম্মদ (সা.) এর পরপরই হযরত আলী (আ.) এর নেতৃত্বের বিষয়টি এই আয়াত দ্বারা প্রমাণিত হয় এবং এক্ষেত্রে ফাজেল কুশচী, ফাখরুদ্দীন রাজী ও অন্যরা যা বলেছেন তা এ মত খণ্ডনকারী দলীল বলে গণ্য হতে পারে না।টীকা :১. মুহাম্মাদ বিন মুহাম্মাদ বিন হাসান তুসী (জন্ম ৫৯৭ হি. ও মৃত্যু ৬৭২ হি.) বিশ্ব বিখ্যাত পণ্ডিত, ইরান এবং ইসলামের গর্ব। (হাসান আল-আমীন, আল ইসমাঈলিয়্যুন ওয়াল মোগল ওয়া নাসিরুদ্দীন তুসী) তিনি মোগল যুগের একজন উজ্জল নক্ষত্র ছিলেন তিনি তার জীবদ্দশায় ইসলামের অনেক খেদমত করেছেন। তিনি বিভিন্ন বিষয়ে যেমন-দর্শন, কালাম, গণিত এবং জ্যাতিষ শাস্ত্রে অসাধারণ পাণ্ডিত্যের অধিকারী ছিলেন। কালামশাস্ত্রে তার রচিত তাজরীদুল এ’তেকাদ গ্রন্থটি চির অমর হয়ে আছে। এই গ্রন্থের ভাষার মাধুর্যতা, বর্ণনার ধারা এবং বিভিন্ন যুক্তি প্রমাণ অনেককে এর ব্যাখ্যা গ্রন্থ রচনা করতে এবং এতে টীকা সংযোজন করতে উদ্বুদ্ধ করেছে। শুধুমাত্র আহলে বাইতের অনুসারীরাই নয় এমনকি আহলে সুন্নাতের অনেক গণ্যমান্য প্রসিদ্ধ আলেমও এর বিষয়বস্তুকে তাদের গ্রন্থে ব্যাখ্যা করেছেন।২. আলাউদ্দীন আলী বিন মুহাম্মাদ কুশচী (৮৭৯হি.) ফাজেল কুশচী এবং মোল্লা আলী কুশচী নামে প্রসিদ্ধ, তিনি আহলে সুন্নাতের আশআরী চিন্তাধারার একজন মনীষী। তিনি তাজরীদুল ইতিকাদ গ্রন্থটির অন্যতম ব্যখ্যাকারক। তিনি তার শারহে জাদীদে তাজরীদ নামের প্রসিদ্ধ গ্রন্থে ইমামতের আলোচনায় শেখ তুসীর দৃষ্টিভঙ্গির ত্রুটি ধরেছেন ও সমালোচনা করেছেন। (আগা বুজুর্গে তেহরানী, আয যারিয়াহ ইলা আছারিশ শিয়া, ৩য় খণ্ড, পৃ. ৩৫৪; যারকুলী, আল আলাম, ৫ম খণ্ড, পৃ.-৯; কাহালা, মু’জামুল মুআল্লিফিন, ৭ম খণ্ড, পৃ. ২২৭; কুম্মি, আলকুনি ওয়াল আলকাব, ৩য় খণ্ড, পৃ. ৯৪) গ্রন্থসূচী:১. আল কোরআনুল কারীম।২. ইবনে যিন্নী, আবিল ফাতহ ওসমান, আল খাসায়িস, গবেষণা মুহাম্মদ আলী নাজ্জার, বৈরুত, আলামুল কিতাব।৩. ইবনে ফারেস, মুকায়িসুল লুগাহ, মাকতাবুল এ’লামিল ইসলামী, ১৪০৪ হি:।৪. ইবনে হিশাম আনসারী, আব্দুল্লাহ, মুগনী আল-লাবিব আন কুতুবেল আ-আরিব, তেহরান, মুয়াসসাসে আস-সাদেক, প্রথম সংস্করণ, ১৩৮৬।৫. ইস্পাহানী, রাগেব, মুফরাদাতে আলফাজিল কোরআন, গবেষণা দাউদি, ছাফওয়ান আদনান, দামেস্ক ও বৈরুত, দারুল কালাম ও দারুস সামিয়াহ, প্রথম সংস্করণ।৬. আলুসী, মাহমুদ, রুহুল মাআনী ফি তাফসীরিল কোরআনুল আযিম, সাবউল মাছানী, বৈরুত, দারুল ইহইয়াউত তুরাছিল আরাবি, ১৪২০ হিজরি।৭. আমিনী, আব্দুল হোসাইন, আল-গাদীর ফিল কিতাব ওয়াস সুন্নাহ ওয়াল আদাব, বৈরুত, দারুল কিতাবিল আরাবি, ৪র্থ সংস্করণ, ১৩৭৯ হিজরি।৮. ইজি, আজদুদ্দিন আব্দুর রহমান বিন আহমাদ, আল-মাওয়াকিফ, বৈরুত, দারুল জিয়াল, ১৯৯৭ খ্রিস্টাব্দ।৯. বাহরানী, ইবনে মাইসাম, আন নাজাতু ফিল কিয়ামাহ ফি তাহকিকি আমরিল ইমামাহ, কুম, মুয়াসসাসে আল হাদী, ১ম সংস্করণ, ১৪১৭ হিজরি।১০. বাইদ্বাভী, আব্দুল্লাহ বিন ওমর, আনওয়ারুত তানযিল ওয়া আসরারুত তা’বিল, বৈরুত, দারুল ইহইয়াউত তুরাছিল আরাবি, ১৮১৮ হিজরি।১১. তাফতাজানী, মাসউদ বিন ওমর, আল মুতাওয়াল, বৈরুত, দারু ইহইয়াউত তুরাছিল আরাবি, ১ম সংস্করণ, ১৪২৫ হিজরি।১২. তাফতাজানী, মাসউদ বিন ওমর, শারহুল মুখতাছার, ইসমাঈলিয়্যান, ২য় সংস্করণ।১৩. তাফতাজানী, মাসউদ বিন ওমর, শারহুল মাকাসিদ ফি ইলমিল কালাম, পাকিস্তান, দারুল মাআরেফ আন নোমানিয়া, ১ম সংস্করণ।১৪. ছাআলাবি, আব্দুর রহমান, আল জাওয়াহিরুল হাসান, বৈরুত, দারুল কিতাবিল ইলমিয়্যাহ, ১৪১৬ হিজরি।১৫. জুরজানী, আলী বিন মুহাম্মাদ, শারহুল মাওয়াকিফ, মিসর, মাতবাআতুস সাআদাহ, ১ম সংস্করণ, ১৩২৫ হিজরি।১৬. জুরজানী, আল ইশারাত ওয়াত তানবিহাত ফি ইলমিল বালাগা, বৈরুত, ১ম সংস্করণ, ১৪২৩ হিজরি।১৭. হুররে আমেলী, ইছবাতুল হুদা, বৈরুত, মুয়াসসাসাহ আল আলামী, ১ম সংস্করণ, ১৪২২ হিজরি।১৮. হাসকানী, শাওয়াহিদুত তানযিল লি কাওয়ায়িদুত তাফযিল, তেহরান, বেজারাতে এরশাদে ইসলামী, ১৪১১হিজরি।১৯. হাসান আল আমিন, আল ইসমাঈলিয়্যুন ওয়াল মোগল ওয়া নাসিরুদ্দীন তুসী, কুম, মারকাজুল গাদীর লিদিরাসাতুল ইসলামিয়্যাহ, ২য় সংস্করণ, ১৪১৭ হিজরি।হোসাইনি কাফুমি, আবুল বাকা আইয়্যুব বিন মুসা, আল মুজাম ফিল মুস্তালাহাত ওয়াল ফুরুকুল লুগাবিয়্যাহ, তাহকিক আদনান দারউইশ, বৈরুত, মুয়াসসাসে আর রিসালাহ, ১৪১৯ হিজরি।২০. হালাবি, সামিন, আদ-দুররুল মাসূন ফি ইলমিল কিতাবিল মাকনূন, বৈরুত, দারুল কিতাবিল ইলমিয়্যাহ, ১৪১৪ হিজরি।২১. হালাবি, হাসান বিন ইউসুফ, কাশফুল মোরাদ ফি শারহি তাজরীদিল ইতিকাদ, তাহকিক হাসানযাদে আমুলী, কুম, মুয়াসসাসাতুন নাশরিল ইসলামী, ১০ম সংস্করণ, ১৪২৫ হিজরি।২২. দারউইশ, মহিউদ্দীন, এরাবুল কোরআন ওয়া বায়ানুহু, সিরিয়া, দারুল ইরশাদ, ১৪১৫ হিজরি।২৩. দোআস, এরাবুল কোরআনিল কারীম, দামেস্ক, দারুল মুনির, ১৪২৫ হিজরি।২৪. রাযী, আব্দুল্লাহ বিন মুহাম্মদ বিন ওমর, মাফাতিহুল গাইব, বৈরুত, দারুল ইহইয়াউত তুরাছিল আরাবি, ১৪২০হিজরি।২৫. যুবাইদি, মুহাম্মদ মুরতাজা, তাজুল আরুস মিন জাওয়াহিরুল ক্বামূস, বৈরুত, দারুস সাদর, ১৩৮৬ হিজরি।২৬. যারকুলী, খাইরুদ্দীন, আল এ’লাম, বৈরুত, দারুল ইলম, ১৯৮০ খ্রিস্টাব্দ।২৭. যামাখশারী, মাহমুদ বিন ওমর, আসাসুল বালাগাহ, তাহকিক আব্দুর রাহিম মাহমুদ, বৈরুত, দারুল মা’রেফাহ।২৮. যামাখশারী, মাহমুদ বিন ওমর, আল কাশশাফ আন হাক্বায়িকি গাওয়ামিজিত তানযিল, বৈরুত, দারুল কিতাবুল আরাবি, ১৪০৭ হিজরি।২৯. সাকাকী, ইউসুফ বিন আবি বকর, মেফতাহুল উলুম, বৈরুত, দারুল কিতাবুল ইসলামিয়্যাহ, ১৪০৭ হিজরি।৩০. সূয়ুতী, জালাল উদ্দীন, আল বাহজাতুল মারজিয়াহ ফি শারহিল আলফিয়া, কুম, নাবিদে ইসলামী, ১ম সংস্করণ।৩১. সূয়ুতী, জালাল উদ্দীন, আদ্ দুররুল মানসূর ফি তাফসীরিল মা’ছুর, কুম, আয়াতুল্লাহ মারআশী নাজাফি লাইব্রেরী, ১৪০৪ হিজরি।৩২. সাইয়্যেদ শারাফ উদ্দীন আল মুসাভি, আব্দুল হোসাইন, আল মুরাজায়াত, তাহকিক হোসাইন আর রাযী, দারুল কিতাবুল ইসলামি।৩৩. সাইয়্যেদ মুরতাজা আলামুল হুদা, আশ শাফি ফিল ইমামাহ, কুম, মুয়াসসাসে ইসমাঈলিয়্যান, ২য় সংস্করণ।৩৪. সূয়ুতী, জালাল উদ্দীন, আল মাযহার ফি উলুমিল লুগাহ ওয়া আনওয়ায়েহা, দারুল ইহইয়ায়ে কিতাবুল আরাবি, ১ম সংস্করণ।৩৫. শাহরেস্তানী, মুহাম্মদ বিন আব্দুল করিম, আল মেলাল ওয়ান নেহাল, বৈরুত, দারুল মা’রেফাহ।৩৬. শেখ মুফিদ, আল ইফসাহ ফি ইমামাতি আমিরিল মুমিনিন, কুম, মুয়াসসাসেহ আল বে’সাত, ১ম সংস্করণ, ১৪১২ হিজরি।৩৭. ছাফী, মাহমুদ বিন আব্দুর রহিম, আল জাদওয়াল ফি এরাবিল কোরআন, বৈরুত, দারুর রাশিদ, ১৪১৮ হিজরি।৩৮. তাবাতাবাই, সাইয়্যেদ মুহাম্মদ হোসাইন, আল-মিযান ফি তাফসীরিল কোরআন, তেহরান, দারুল কিতাবুল ইসলামিয়্যাহ, ১৩৭২ ফার্সি সাল।৩৯. তাবারসী, ফাজল বিন হাসান, মাজমাউল বায়ান ফি তাফসীরিল কোরআন, তেহরান, নাসের খসরু, ১৩৭২ ফার্সি সাল।৪০. তাবারী, মুহাম্মদ বিন জারীর, দালায়েলুল ইমামাহ, কুম, দারুজ জাখায়ির লিলমাতবুআত।৪১. তুরাইহী, ফাখরুদ্দীন, মাজমাউল বাহরাইন, তেহরান।৪২. তুসী, মুহাম্মদ বিন হাসান, আল-ইকতিসাদ ফিমা ইয়তাআল্লাকু বিল ইতিকাদ, বৈরুত, দারুল আযওয়া, ১৪০৬ হিজরি।৪৩. তুসী, মুহাম্মদ বিন মুহাম্মদ, তাজরীদুল ইতিকাদ, দাফতারে তাবলিগাতে ইসলামী, ১ম সংস্করণ, ১৪০৭ হিজরি।৪৪. ফাইয়ুমি, আল মিসবাহুল মুনির, কুম, দারুল হিজর, ৩য় সংস্করণ, ১৪২৫ হিজরি।৪৫. কুম্মি, আব্বাস, আল কুনি ওয়াল আলকাব, তেহরান, মাকতাবাতুস সাদর।৪৬. কুশচী, আলী বিন মুহাম্মাদ, শারহে তাজরীদুল আকায়েদ, কুম, মানশূরাতে রাযী।৪৭. কাশানী, ফাতহুল্লাহ, মিনহাজুস সাদেকীন ফি ইলযামিল মুখালিফিন, তেহরান, ইসলামিয়্যা প্রেস, ১৩৭৮ ফার্সি সাল ।৪৮. কাহালী, ওমর রেজা, মু’জামুল মুআল্লিফিন, বৈরুত, মাকতাবাতুল মুসান্না।৪৯. কুলাইনি, মুহাম্মাদ বিন ইয়াকুব, উসূলে কফি, আনুবাদ মুহাম্মদ বাকের, তেহরান, আসওয়েহ প্রেস, ৪র্থ সংস্করণ।৫০. মুহাম্মদ আল আমিন, আসওয়াউল বায়ান ফি ইযাহেল কোরআন বিল কোরআন, বৈরুত, দারুর ফেকর, ১৪১৫ হিজরি।৫১. মুস্তাফাবী, আত তাহকিক ফি কালামাতিল কোরআন আল কারিম, ইরান, বেজারাতুছ ছাকাফাহ ওয়াল ইরশাদে ইসলামী, ১ম সংস্করণ।৫২. মুতাহ্হারী, মুরতাজা, মাজমুএ আছার, তেহরান, সাদর, ২য় সংস্করণ।৫৩. নূহাস, এরাবুল কোরআন, বৈরুত, দারুল কুতুবুল এলমিয়্যাহ, ১৪২১ হিজরি।৫৪. হাশেমী, আহমাদ, জাওয়াহেরুল বালাগাহ, কুম, ওয়ারিওন, ৪র্থ সংস্করণ।আল্লাহুম্মা সাল্লে আলা মোহাম্মদ দিন ওয়া আলে মোহাম্মদ ওয়া আজ্জিল ফারজাহুম খলীফাতুল বিলা ফাশালনিবেদক____________ মোঃ আলী হুসাইন
বেলায়েতের আয়াতের ব্যাকরণগত দিক সম্পর্কে
পর্ব ((((((৬)))))) ও এক থেকে শুরু করে এ পর্যন্ত শেষ
আত তাহকিক ফি কালামাতিল কোরআনিল কারিম’ এর রচয়িতা মনে করেন এ শব্দটির আসল অর্থ হল “পরস্পর সম্পর্ক যুক্ত দুটি জিনিসের পাশাপাশি অবস্থান”। আর এ শব্দটির অন্যান্য সকল অর্থকে এই অর্থের দিকে ফিরিয়ে দিয়েছেন। তিনি লিখেছেন: ‘ওয়ালি শব্দটির জন্য অন্য যে সব অর্থ উল্লেখ করা হয়েছে যেমন- নিকটবর্তী, ভালবাসা, সাহায্য করা এবং অনুসরণ তা এই অর্থের থেকে উদ্ভূত আবশ্যিক ও অবিচ্ছেদ্য অর্থ। (মুস্তাফাভী, আত তাহকিক ফি কালামাতিল কোরআন আল কারিম, ১৩তম খণ্ড, পৃ.-২০২)
প্রথমত: ওয়ালির যৌথ অর্থ রয়েছে অর্থাৎ একটা সামগ্রিক অর্থের (নৈকট্য ও সংযুক্তি) জন্য প্রণয়ন করা হয়েছে যার দৃষ্টান্ত রয়েছে যেগুলোর ওপর প্রযোজ্য হয়ে থাকে। উপরিউল্লিখিত কোন লেখকই ভালবাসা, সাহায্য করা, অনুসরণ এবং কর্তৃত্বের ক্ষেত্রে যোগ্যতম এসবকে ওয়ালির প্রকৃত অর্থ বলে উল্লেখ করেননি। (আর তাই এ অর্থগুলো গ্রহণের জন্য তার প্রতি নির্দেশক ও নির্দিষ্টকারী দলীল থাকতে হবে, তা না থাকলে ঐ অর্থ গ্রহণ বৈধ হবে না)।
দ্বিতীয়ত: এই শব্দের প্রকৃত অর্থের ব্যাপারে দুটি ভিন্ন রকমের দৃষ্টিভঙ্গি রয়েছে। একদল নিকটবর্তিতাকে অন্যদল দুটি জিনিসের পাশাপাশি অবস্থানকে এই শব্দের প্রকৃত অর্থ বলেছেন এবং নিকটবর্তিতাকে এই পাশাপাশি অবস্থানের অপরিহার্য পরিণতি হিসাবে তার আবশ্যিক অর্থ বলে চিহ্নিত করেছেন।
দ্বিতীয় মতটিকেই অধিক যুক্তিযুক্ত বলে মনে হয় তবে নিকটবর্তিতাও মূল অর্থটির অন্যতম দৃষ্টান্ত। এই দৃষ্টিভঙ্গি অনুযায়ী ওয়ালি শব্দটির প্রকৃত অর্থ হচ্ছে পাশাপাশি দুটি জিনিসের এমনভাবে অবস্থান যেন তাদের মধ্যে কোন দূরত্ব না থাকে। অর্থাৎ দুটি জিনিস পরস্পরের সাথে এমনভাবে সংযুক্ত যেন অন্য কোন কিছুই তাদের মধ্যে না থাকে। যেমন যদি কয়েক ব্যক্তি পাশাপাশি বসে থাকে, তখন আমরা বলি যায়েদ সভার সামনের সারিতে বসে আছে আর যায়েদের পাশেই আমর এবং আমরের পাশেই বকর বসে আছে। (অর্থাৎ তাদের একে অপরের মধ্যে কোন ফাঁক নেই) এই কারণেই ولی শব্দটি قرب (নিকটবর্তিতা) এর ক্ষেত্রেও ব্যবহৃত হয়েছে। সেটা স্থানের ক্ষেত্রেই হোক আর অবস্তুক কোন সত্তার ক্ষেত্রেই হোক (যেমন কোন সম্মানিত ও মর্যাদাসম্পন্ন ব্যক্তির সাথে কারো ভাল সম্পর্ক আছে বুঝাতে তিনি তাঁর নৈকট্যপ্রাপ্ত বলা হয়ে থাকে)। এই নিকটবর্তিতার সম্পর্কের কারণেই বন্ধুত্ব, দায়িত্বলাভ, সাহায্যকারী, কর্তৃত্বশীল এবং এরূপ অন্যান্য অর্থে তা ব্যবহৃত হয়েছে, অর্থাৎ এ সকল অর্থেই (দুটি বস্তু বা বিষয়ের মধ্যে) এক ধরনের প্রত্যক্ষ সম্পর্ক ও সংযোগ রয়েছে। তাই ولی শব্দটি যেখানেই ব্যবহৃত হবে সেখানে বাক্যের অর্থনির্দেশক অভ্যন্তরীণ ও সংযুক্ত শাব্দিক দলীল এবং অবস্থা ও ভাবগত দলীলের ভিত্তিতে তার অর্থ খুজে বের করতে হবে। (মুতাহ্হারী, মাজমুএ আছার, ৩য় খণ্ড, পৃ.-২৫৫-২৫৬)
২. যেহেতু ولي و ولايت এর প্রকৃত অর্থ হল সংযুক্তি, সান্নিধ্য ও নিকটবর্তিতা, তাই আলোচ্য আয়াতে কর্তৃত্ব অর্থদানের সাথে পূর্ব ও পরবর্তী আয়াতের গৃহীত অর্থের (বন্ধু ও সাহায্যকারী) পার্থক্য বাচনভঙ্গি ও বর্ণনাধারার মধ্যে কোন ছেদ ঘটায়না। কেননা সমস্যা তখনই দেখা দিবে যখন ولایت একটি দ্ব্যর্থবোধক শব্দ হবে কিন্তু ইতি পূর্বেই প্রমাণিত হয়েছে যে, ولایت কোন দ্ব্যর্থবোধক শব্দ নয় বরং এর অভিন্ন অর্থ রয়েছে। তিনটি আয়াতেই সান্নিধ্য এবং নিকটবর্তিতার অর্থ রয়েছে। যদিও সংযুক্তি ও নৈকট্য নির্দেশকারী বস্তুর উদাহরণ ও দৃষ্টান্তের মধ্যে পার্থক্য বিদ্যমান কিন্তু একই ধারা ও ভাবার্থ নির্দেশের জন্য আয়াত তিনটির দৃষ্টান্তসমূহের মধ্যে এতটুকু ঐক্য থাকাই যথেষ্ট। মহান আল্লাহ তাআলা প্রথমে মুমিনদেরকে ইহুদী এবং খ্রীষ্টানদের সাথে সম্পর্ক স্থাপনের জন্য তাদের সান্নিধ্য লাভের চেষ্টা এবং তাদের নিকটবর্তী হওয়া থেকে নিষেধ করেছেন। ইহুদীদের সাথে এই সংযোগ ও সান্নিধ্য শুধুমাত্র বন্ধুত্বের ব্যাপারে অঙ্গিকারাবদ্ধ হওয়ার দ্বারা এবং পারস্পরিক সম্পর্ক জোরদার করার মাধ্যমেই সম্ভব। বেলায়াতের আয়াতেও মহান আল্লাহ তাআলা মুমিনদেরকে তাঁর এবং তাঁর রাসূল ও কিছু সংখ্যক মুমিনের সান্নিধ্যে যাওয়ার বা নিকটবর্তী হওয়ার আহবান জানিয়েছেন। কারণ আল্লাহর সান্নিধ্য কেবল তাঁর সৃষ্টিগত অনিবার্য (অলঙ্ঘনীয় প্রাকৃতিক) নিয়ম এবং মানুষের স্বাধীন ইচ্ছাশক্তির গণ্ডিতে নির্ধারিত শরীয়তের বিধি বিধানের প্রতি নিজেকে সমর্পিত করার মাধ্যমেই লাভ করা সম্ভব। তেমনিভাবে রাসূলের (সা.) রেসালাতকে মেনে নিয়ে এবং তার অনুসরণ করেই শুধু রাসূলের সান্নিধ্য লাভ করা যায়।
তেমনি ভাবে কর্তৃত্বের ক্ষেত্রে তাঁর মনোনীত ব্যক্তির অনুসরণ করা এবং তার আনুগত্যের পতাকাতলে একত্রিত হওয়ার মাধ্যমেই ঐ কর্তৃত্বশীল ব্যক্তির নিকটবর্তী হওয়া যায়। সুতরাং বন্ধু, সাহায্যকারী, অভিভাবক ও নেতা এদের সকলের ওপরেই বেলায়েত বা নৈকট্য ও সংযুক্তির বিষয়টি প্রযোজ্য। তবে এক্ষেত্রে তাদের মধ্যে যে পার্থক্য রয়েছে তা ঐ ব্যক্তির সাথে সম্পর্কের দৃষ্টিতে তাদের ঘনিষ্ঠতা ও প্রভাবের পর্যায়ের ভিন্নতা থেকে উদ্ভূত।
৩. যদি বেলায়তের আয়াতে ওয়ালি শব্দটির অর্থ কর্তৃত্বের ক্ষেত্রে অগ্রাধিকারপ্রাপ্ত এবং তার পরবর্তী আয়াতে সাহায্যকারী হয় তবুও তা অসঙ্গত ও আলাদা তো নয়ই বরং সঙ্গতিপূর্ণ। কেননা আল্লাহ তাআলা প্রথমেই বলেছেন: আল্লাহ, তাঁর রাসূল এবং মুমিনদের কিছুসংখ্যক ওয়ালি (কর্তৃত্বের ক্ষেত্রে অগ্রাধিকারপ্রাপ্ত) এবং পরবর্তী আয়াতে এরশাদ করেছেন: যারা আল্লাহ, তাঁর রাসূল এবং মুমিনদের সাহায্য করবে তারাই বিজয়ী হবে।
আয়াতের শুরুতে তিনি মুমিনদের একাংশের ইমামত ও বেলায়াতকে সত্যায়ন ও নিশ্চিত করেছেন অতপর পরের আয়াতে মুমিনদেরকে নির্দেশ দিয়েছেন তাদেরকে সাহায্য করার জন্য। (সাইয়েদ মুরতাজা, প্রাগুক্ত, ২য় খণ্ড, পৃ.-২৩৫) যেভাবে রাসূল (সা.) গাদীরে খুমের ঘটনার সময় প্রথমে হযরত আলী (আ.) কে নিজের স্থলাভিষিক্ত হিসেবে পরিচিত করিয়েছেন, তারপর দোয়া করেছেন এবং বলেছেন: হে আল্লাহ যে আলীকে (আ.) সাহায্য করবে তুমি তাকে সাহায্য কর, আর যে তাকে অপদস্ত করতে চায় তুমিও তাকে অপদস্ত কর।
৪. তদুপরি যদি কোন ক্ষেত্রে কোন আয়াতের অন্তস্থ অর্থগত দলীলের সাথে তার পূর্ব ও পরের আয়াতের বর্ণনাধারাগত অর্থের বৈপরীত্য দেখা যায় তবে সেক্ষেত্রে আয়াতের অন্তস্থ অর্থগত দলীলকে বর্ণনাধারাগত অর্থের মিল থাকার নীতির «سیاق» ওপর প্রাধান্য দিতে হবে।
সুতরাং এই আয়াতে ওয়ালি শব্দটি কর্তৃত্বের ক্ষেত্রে অগ্রাধিকারপ্রাপ্ত অর্থে ব্যবহৃত হয়েছে, এব্যপারে শেখ তুসীর যুক্তি প্রমাণই সঠিক।
উপসংহার:
পরিশেষে আমরা বলতে পারি যে,
১. «انما» এই আয়াতে সবসময়ের মতই সীমাবদ্ধতার (হাসর) অর্থে ব্যবহৃত হয়েছে। আর হাসর থাকার কারণে ওয়ালি শব্দটি “কর্তৃত্বের ক্ষেত্রে অগ্রাধিকারপ্রাপ্ত” অর্থের জন্যই নির্ধারিত হয়েছে। এ কারণে বন্ধু বা সাহায্যকারী অর্থ হতে পারেনা।
২. «هم راکعون» বাক্যটি معطوف হওয়ার সম্ভাবনা নেই; কারণ এতে একই বিষয়ের পুনরাবৃত্তির ন্যায় অগ্রহণযোগ্য নীতির অবতারণা হয়। তাছাড়া এই বাক্যটি থেকে প্রথম যে অর্থটি শ্রোতার মনে আসে তা হল «هم راکعون» হল অবস্থাবাচক বাক্য বা حالیة جملة এবং আয়াতের শানে নুজুলসহ আয়াতের ব্যাখ্যাকারী বহির্গত অন্যান্য দলীলও উক্ত দাবির (معطوف হওয়ার) বিপরীত বিষয়কে প্রমাণ করে।
৩. বহু সংখ্যক ভাষাবিদের মতে রুকু শব্দটির প্রকৃত অর্থ ‘উপুড় হওয়া’ এ শব্দটি বিনয়ী বা ন¤্রতার অর্থে ব্যবহারের জন্য قرینه বা সমর্থক দলীলের প্রয়োজন। অথচ এই আয়াতে এরূপ কোন قرینه নেই।
৪. মহত্ব, শ্রেষ্ঠত্ব এবং ভালকাজের প্রতি মানুষকে আকৃষ্ট করার জন্য একবচনের ক্ষেত্রে বহুবচনের ব্যবহার আরবি সাহিত্যে প্রচলিত আছে। অনেক পণ্ডিত ব্যক্তি ও বৈয়াকরণ এর সত্যতা স্বীকার করেছেন।
৫. «ولی» শব্দটির যৌথ অর্থ রয়েছে যা একটা সামগ্রিক অর্থ অর্থাৎ সান্নিধ্য বা নৈকট্য নির্দেশের জন্য প্রণয়ন করা হয়েছে। এই সামগ্রিক অর্থের অনেক দৃষ্টান্ত ( مصاﺪیق) রয়েছে যেমন- মুক্ত, মুক্তকারী, ভালবাসা পোষণকারী, সাহায্যকারী, অভিভাবক, নেতা ইত্যাদি। তবে পবিত্র এই আয়াতে বিদ্যমান «انما» সীমাবদ্ধতা নির্দেশক অব্যয়টি এবং অন্যান্য অভ্যন্তরীণ ও বাহ্যিক দলীলের ভিত্তিতে বলা যায় যে, ওয়ালি শব্দটি কর্তৃত্বের ক্ষেত্রে অগ্রাধিকারপ্রাপ্ত বা অভিভাবক অর্থে ব্যবহৃত হয়েছে।
সুতরাং হযরত মুহাম্মদ (সা.) এর পরপরই হযরত আলী (আ.) এর নেতৃত্বের বিষয়টি এই আয়াত দ্বারা প্রমাণিত হয় এবং এক্ষেত্রে ফাজেল কুশচী, ফাখরুদ্দীন রাজী ও অন্যরা যা বলেছেন তা এ মত খণ্ডনকারী দলীল বলে গণ্য হতে পারে না।
টীকা :
১. মুহাম্মাদ বিন মুহাম্মাদ বিন হাসান তুসী (জন্ম ৫৯৭ হি. ও মৃত্যু ৬৭২ হি.) বিশ্ব বিখ্যাত পণ্ডিত, ইরান এবং ইসলামের গর্ব। (হাসান আল-আমীন, আল ইসমাঈলিয়্যুন ওয়াল মোগল ওয়া নাসিরুদ্দীন তুসী) তিনি মোগল যুগের একজন উজ্জল নক্ষত্র ছিলেন তিনি তার জীবদ্দশায় ইসলামের অনেক খেদমত করেছেন। তিনি বিভিন্ন বিষয়ে যেমন-দর্শন, কালাম, গণিত এবং জ্যাতিষ শাস্ত্রে অসাধারণ পাণ্ডিত্যের অধিকারী ছিলেন। কালামশাস্ত্রে তার রচিত তাজরীদুল এ’তেকাদ গ্রন্থটি চির অমর হয়ে আছে। এই গ্রন্থের ভাষার মাধুর্যতা, বর্ণনার ধারা এবং বিভিন্ন যুক্তি প্রমাণ অনেককে এর ব্যাখ্যা গ্রন্থ রচনা করতে এবং এতে টীকা সংযোজন করতে উদ্বুদ্ধ করেছে। শুধুমাত্র আহলে বাইতের অনুসারীরাই নয় এমনকি আহলে সুন্নাতের অনেক গণ্যমান্য প্রসিদ্ধ আলেমও এর বিষয়বস্তুকে তাদের গ্রন্থে ব্যাখ্যা করেছেন।
২. আলাউদ্দীন আলী বিন মুহাম্মাদ কুশচী (৮৭৯হি.) ফাজেল কুশচী এবং মোল্লা আলী কুশচী নামে প্রসিদ্ধ, তিনি আহলে সুন্নাতের আশআরী চিন্তাধারার একজন মনীষী। তিনি তাজরীদুল ইতিকাদ গ্রন্থটির অন্যতম ব্যখ্যাকারক। তিনি তার শারহে জাদীদে তাজরীদ নামের প্রসিদ্ধ গ্রন্থে ইমামতের আলোচনায় শেখ তুসীর দৃষ্টিভঙ্গির ত্রুটি ধরেছেন ও সমালোচনা করেছেন। (আগা বুজুর্গে তেহরানী, আয যারিয়াহ ইলা আছারিশ শিয়া, ৩য় খণ্ড, পৃ. ৩৫৪; যারকুলী, আল আলাম, ৫ম খণ্ড, পৃ.-৯; কাহালা, মু’জামুল মুআল্লিফিন, ৭ম খণ্ড, পৃ. ২২৭; কুম্মি, আলকুনি ওয়াল আলকাব, ৩য় খণ্ড, পৃ. ৯৪)
গ্রন্থসূচী:
১. আল কোরআনুল কারীম।
২. ইবনে যিন্নী, আবিল ফাতহ ওসমান, আল খাসায়িস, গবেষণা মুহাম্মদ আলী নাজ্জার, বৈরুত, আলামুল কিতাব।
৩. ইবনে ফারেস, মুকায়িসুল লুগাহ, মাকতাবুল এ’লামিল ইসলামী, ১৪০৪ হি:।
৪. ইবনে হিশাম আনসারী, আব্দুল্লাহ, মুগনী আল-লাবিব আন কুতুবেল আ-আরিব, তেহরান, মুয়াসসাসে আস-সাদেক, প্রথম সংস্করণ, ১৩৮৬।
৫. ইস্পাহানী, রাগেব, মুফরাদাতে আলফাজিল কোরআন, গবেষণা দাউদি, ছাফওয়ান আদনান, দামেস্ক ও বৈরুত, দারুল কালাম ও দারুস সামিয়াহ, প্রথম সংস্করণ।
৬. আলুসী, মাহমুদ, রুহুল মাআনী ফি তাফসীরিল কোরআনুল আযিম, সাবউল মাছানী, বৈরুত, দারুল ইহইয়াউত তুরাছিল আরাবি, ১৪২০ হিজরি।
৭. আমিনী, আব্দুল হোসাইন, আল-গাদীর ফিল কিতাব ওয়াস সুন্নাহ ওয়াল আদাব, বৈরুত, দারুল কিতাবিল আরাবি, ৪র্থ সংস্করণ, ১৩৭৯ হিজরি।
৮. ইজি, আজদুদ্দিন আব্দুর রহমান বিন আহমাদ, আল-মাওয়াকিফ, বৈরুত, দারুল জিয়াল, ১৯৯৭ খ্রিস্টাব্দ।
৯. বাহরানী, ইবনে মাইসাম, আন নাজাতু ফিল কিয়ামাহ ফি তাহকিকি আমরিল ইমামাহ, কুম, মুয়াসসাসে আল হাদী, ১ম সংস্করণ, ১৪১৭ হিজরি।
১০. বাইদ্বাভী, আব্দুল্লাহ বিন ওমর, আনওয়ারুত তানযিল ওয়া আসরারুত তা’বিল, বৈরুত, দারুল ইহইয়াউত তুরাছিল আরাবি, ১৮১৮ হিজরি।
১১. তাফতাজানী, মাসউদ বিন ওমর, আল মুতাওয়াল, বৈরুত, দারু ইহইয়াউত তুরাছিল আরাবি, ১ম সংস্করণ, ১৪২৫ হিজরি।
১২. তাফতাজানী, মাসউদ বিন ওমর, শারহুল মুখতাছার, ইসমাঈলিয়্যান, ২য় সংস্করণ।
১৩. তাফতাজানী, মাসউদ বিন ওমর, শারহুল মাকাসিদ ফি ইলমিল কালাম, পাকিস্তান, দারুল মাআরেফ আন নোমানিয়া, ১ম সংস্করণ।
১৪. ছাআলাবি, আব্দুর রহমান, আল জাওয়াহিরুল হাসান, বৈরুত, দারুল কিতাবিল ইলমিয়্যাহ, ১৪১৬ হিজরি।
১৫. জুরজানী, আলী বিন মুহাম্মাদ, শারহুল মাওয়াকিফ, মিসর, মাতবাআতুস সাআদাহ, ১ম সংস্করণ, ১৩২৫ হিজরি।
১৬. জুরজানী, আল ইশারাত ওয়াত তানবিহাত ফি ইলমিল বালাগা, বৈরুত, ১ম সংস্করণ, ১৪২৩ হিজরি।
১৭. হুররে আমেলী, ইছবাতুল হুদা, বৈরুত, মুয়াসসাসাহ আল আলামী, ১ম সংস্করণ, ১৪২২ হিজরি।
১৮. হাসকানী, শাওয়াহিদুত তানযিল লি কাওয়ায়িদুত তাফযিল, তেহরান, বেজারাতে এরশাদে ইসলামী, ১৪১১হিজরি।
১৯. হাসান আল আমিন, আল ইসমাঈলিয়্যুন ওয়াল মোগল ওয়া নাসিরুদ্দীন তুসী, কুম, মারকাজুল গাদীর লিদিরাসাতুল ইসলামিয়্যাহ, ২য় সংস্করণ, ১৪১৭ হিজরি।
হোসাইনি কাফুমি, আবুল বাকা আইয়্যুব বিন মুসা, আল মুজাম ফিল মুস্তালাহাত ওয়াল ফুরুকুল লুগাবিয়্যাহ, তাহকিক আদনান দারউইশ, বৈরুত, মুয়াসসাসে আর রিসালাহ, ১৪১৯ হিজরি।
২০. হালাবি, সামিন, আদ-দুররুল মাসূন ফি ইলমিল কিতাবিল মাকনূন, বৈরুত, দারুল কিতাবিল ইলমিয়্যাহ, ১৪১৪ হিজরি।
২১. হালাবি, হাসান বিন ইউসুফ, কাশফুল মোরাদ ফি শারহি তাজরীদিল ইতিকাদ, তাহকিক হাসানযাদে আমুলী, কুম, মুয়াসসাসাতুন নাশরিল ইসলামী, ১০ম সংস্করণ, ১৪২৫ হিজরি।
২২. দারউইশ, মহিউদ্দীন, এরাবুল কোরআন ওয়া বায়ানুহু, সিরিয়া, দারুল ইরশাদ, ১৪১৫ হিজরি।
২৩. দোআস, এরাবুল কোরআনিল কারীম, দামেস্ক, দারুল মুনির, ১৪২৫ হিজরি।
২৪. রাযী, আব্দুল্লাহ বিন মুহাম্মদ বিন ওমর, মাফাতিহুল গাইব, বৈরুত, দারুল ইহইয়াউত তুরাছিল আরাবি, ১৪২০হিজরি।
২৫. যুবাইদি, মুহাম্মদ মুরতাজা, তাজুল আরুস মিন জাওয়াহিরুল ক্বামূস, বৈরুত, দারুস সাদর, ১৩৮৬ হিজরি।
২৬. যারকুলী, খাইরুদ্দীন, আল এ’লাম, বৈরুত, দারুল ইলম, ১৯৮০ খ্রিস্টাব্দ।
২৭. যামাখশারী, মাহমুদ বিন ওমর, আসাসুল বালাগাহ, তাহকিক আব্দুর রাহিম মাহমুদ, বৈরুত, দারুল মা’রেফাহ।
২৮. যামাখশারী, মাহমুদ বিন ওমর, আল কাশশাফ আন হাক্বায়িকি গাওয়ামিজিত তানযিল, বৈরুত, দারুল কিতাবুল আরাবি, ১৪০৭ হিজরি।
২৯. সাকাকী, ইউসুফ বিন আবি বকর, মেফতাহুল উলুম, বৈরুত, দারুল কিতাবুল ইসলামিয়্যাহ, ১৪০৭ হিজরি।
৩০. সূয়ুতী, জালাল উদ্দীন, আল বাহজাতুল মারজিয়াহ ফি শারহিল আলফিয়া, কুম, নাবিদে ইসলামী, ১ম সংস্করণ।
৩১. সূয়ুতী, জালাল উদ্দীন, আদ্ দুররুল মানসূর ফি তাফসীরিল মা’ছুর, কুম, আয়াতুল্লাহ মারআশী নাজাফি লাইব্রেরী, ১৪০৪ হিজরি।
৩২. সাইয়্যেদ শারাফ উদ্দীন আল মুসাভি, আব্দুল হোসাইন, আল মুরাজায়াত, তাহকিক হোসাইন আর রাযী, দারুল কিতাবুল ইসলামি।
৩৩. সাইয়্যেদ মুরতাজা আলামুল হুদা, আশ শাফি ফিল ইমামাহ, কুম, মুয়াসসাসে ইসমাঈলিয়্যান, ২য় সংস্করণ।
৩৪. সূয়ুতী, জালাল উদ্দীন, আল মাযহার ফি উলুমিল লুগাহ ওয়া আনওয়ায়েহা, দারুল ইহইয়ায়ে কিতাবুল আরাবি, ১ম সংস্করণ।
৩৫. শাহরেস্তানী, মুহাম্মদ বিন আব্দুল করিম, আল মেলাল ওয়ান নেহাল, বৈরুত, দারুল মা’রেফাহ।
৩৬. শেখ মুফিদ, আল ইফসাহ ফি ইমামাতি আমিরিল মুমিনিন, কুম, মুয়াসসাসেহ আল বে’সাত, ১ম সংস্করণ, ১৪১২ হিজরি।
৩৭. ছাফী, মাহমুদ বিন আব্দুর রহিম, আল জাদওয়াল ফি এরাবিল কোরআন, বৈরুত, দারুর রাশিদ, ১৪১৮ হিজরি।
৩৮. তাবাতাবাই, সাইয়্যেদ মুহাম্মদ হোসাইন, আল-মিযান ফি তাফসীরিল কোরআন, তেহরান, দারুল কিতাবুল ইসলামিয়্যাহ, ১৩৭২ ফার্সি সাল।
৩৯. তাবারসী, ফাজল বিন হাসান, মাজমাউল বায়ান ফি তাফসীরিল কোরআন, তেহরান, নাসের খসরু, ১৩৭২ ফার্সি সাল।
৪০. তাবারী, মুহাম্মদ বিন জারীর, দালায়েলুল ইমামাহ, কুম, দারুজ জাখায়ির লিলমাতবুআত।
৪১. তুরাইহী, ফাখরুদ্দীন, মাজমাউল বাহরাইন, তেহরান।
৪২. তুসী, মুহাম্মদ বিন হাসান, আল-ইকতিসাদ ফিমা ইয়তাআল্লাকু বিল ইতিকাদ, বৈরুত, দারুল আযওয়া, ১৪০৬ হিজরি।
৪৩. তুসী, মুহাম্মদ বিন মুহাম্মদ, তাজরীদুল ইতিকাদ, দাফতারে তাবলিগাতে ইসলামী, ১ম সংস্করণ, ১৪০৭ হিজরি।
৪৪. ফাইয়ুমি, আল মিসবাহুল মুনির, কুম, দারুল হিজর, ৩য় সংস্করণ, ১৪২৫ হিজরি।
৪৫. কুম্মি, আব্বাস, আল কুনি ওয়াল আলকাব, তেহরান, মাকতাবাতুস সাদর।
৪৬. কুশচী, আলী বিন মুহাম্মাদ, শারহে তাজরীদুল আকায়েদ, কুম, মানশূরাতে রাযী।
৪৭. কাশানী, ফাতহুল্লাহ, মিনহাজুস সাদেকীন ফি ইলযামিল মুখালিফিন, তেহরান, ইসলামিয়্যা প্রেস, ১৩৭৮ ফার্সি সাল ।
৪৮. কাহালী, ওমর রেজা, মু’জামুল মুআল্লিফিন, বৈরুত, মাকতাবাতুল মুসান্না।
৪৯. কুলাইনি, মুহাম্মাদ বিন ইয়াকুব, উসূলে কফি, আনুবাদ মুহাম্মদ বাকের, তেহরান, আসওয়েহ প্রেস, ৪র্থ সংস্করণ।
৫০. মুহাম্মদ আল আমিন, আসওয়াউল বায়ান ফি ইযাহেল কোরআন বিল কোরআন, বৈরুত, দারুর ফেকর, ১৪১৫ হিজরি।
৫১. মুস্তাফাবী, আত তাহকিক ফি কালামাতিল কোরআন আল কারিম, ইরান, বেজারাতুছ ছাকাফাহ ওয়াল ইরশাদে ইসলামী, ১ম সংস্করণ।
৫২. মুতাহ্হারী, মুরতাজা, মাজমুএ আছার, তেহরান, সাদর, ২য় সংস্করণ।
৫৩. নূহাস, এরাবুল কোরআন, বৈরুত, দারুল কুতুবুল এলমিয়্যাহ, ১৪২১ হিজরি।
৫৪. হাশেমী, আহমাদ, জাওয়াহেরুল বালাগাহ, কুম, ওয়ারিওন, ৪র্থ সংস্করণ।
আল্লাহুম্মা সাল্লে আলা মোহাম্মদ দিন ওয়া আলে মোহাম্মদ ওয়া আজ্জিল ফারজাহুম খলীফাতুল বিলা ফাশাল
নিবেদক____________ মোঃ আলী হুসাইন
মন্তব্যসমূহ