মা খাতুনে জান্নাত ফাতেমা বিনতে মোহাম্মদ (আ.) এর ঘরের সম্মান হানি(পর্ব ১)হ্যাঁ ,এতটা তাগিদ ও সুপারিশ করার পরেও আফসোস যে এমন কিছু অসম্মানজনক ব্যবহার নবী নন্দিনীর সাথে করা হয়েছে যে তা সহ্য করার মত নয়। আর এ এমন একটা সমস্যা যে কারো দোষ আড়াল করা ঠিক নয়।আমি এই ব্যাপারে সমস্ত উক্তি আহলে সুন্নত ওয়াল জমায়েতের গ্রন্থসমূহ হতে উল্লেখ করব ,যাতে এই বিষয়টি পরিষ্কার হয়ে যায় যে হজরত ফাতিমা জাহরা (সা.) এর গৃহের সম্মানহানি ও পরবর্তী ঘটনাগুলি ঐতিহাসিকভাবে অকাট্য সত্য এবং এটি কোন অসত্য ঘটনা নয়! যদিও খলিফাদের যুগে ব্যাপকভাবে আহলে বাইতের গুণ ও মর্যাদাকে গোপন করা হয়েছে ,কিন্তু ইতিহাসের পাতায় ও হাদীসের গ্রন্থসমূহে এখনও পর্যন্ত তা জীবন্ত ও রক্ষিত আছে। আর আমি প্রথম শতাব্দী থেকে বর্তমান যুগ পর্যন্ত এ সম্পর্কে লেখা গ্রন্থের নাম ও লেখকের নাম উল্লেখ করব।১। ইবনে আবি শায়বা ও তার“ আল মুসান্নিফ ” পুস্তকআবুবকর ইবনে আবি শায়বা (১৫৯-২৩৫) আল মুসান্নিফ গ্রন্থের লেখক সহিহ সনদের সাথে এইভাবে লিপিবদ্ধ করেছেন:إنه حين بويع لابي بكر بعد رسول الله (ص) كان علي والزبير يدخلان علی فاطمة بنت رسول الله (ص)، فيشاورونها و يرتجعون في أمرهم، فلما بلغ ذلك عمر بن خطاب خرج حتي دخل علی فاطمة،فقال: يا بنت رسول الله (ص) والله ما أحدٌ أحب إلينا من أبيك وما من أحد أحب إلينا بعد أبيك منك، وأيم الله ما ذاك بمانعي إن اجتمع هؤلاء النفر عندك إن أمرتهم أن يحرق عليهم البيتقال: فلما خرج عمر جاؤوها، فقالت (ع): تعلمون أنّ عمر قد جاءني، وقد حلف بالله لئن عدتم ليحرقنّ عليكم البيت، وايم الله ليمضين لمّا حلف عليهঅর্থাৎ: যখন জনগণ আবুবকরের হাতে বাইয়াত করলেন ,হজরত আলী (আ.) ও যোবায়ের হজরত ফাতিমা (আ.) এর গৃহে পরামর্শ ও আলোচনা করছিলেন ,এই খবর উমর ইবনে খাত্তাবের কর্ণগোচর হল অতঃপর সে ফাতিমা (আ.) এর গৃহে এসে বলল: হে নবী নন্দিনী! আমার প্রিয়তম ব্যক্তি তোমার পিতা ,তোমার পিতার পর তুমি নিজে ; কিন্তু আল্লাহর কসম তোমাদের এই ভালোবাসা আমার জন্য বাধা সৃষ্টি করবে না তোমার এই ঘরে একত্রিত হওয়া ব্যক্তিদের উপর আগুন লাগানোর আদেশ দেওয়া থেকে যাতে তারা দগ্ধ হয়ে যায়। এই কথা বলে উমর চলে যায় ,অতঃপর হজরত আলী ও যোবায়ের গৃহে প্রত্যাবর্তন করেন ,হজরত ফাতিমা (আ.) আলী (আ.) ও যোবায়েরকে বললেন: উমর আমার নিকটে এসেছিল আল্লার কসম খেয়ে বলছিল যে যদি তোমাদের এই“ ইজতেমা ” সমাবেশ বন্ধ না হয় ,দ্বিতীয় বার অব্যাহত থাকে তাহলে তোমাদের গৃহকে জ্বালিয়ে দেব। আল্লার কসম! যার জন্য আমি কসম খেয়েছি অবশ্যই আমি সেটা করব।১১উল্লেখ্য এই ঘটনাকে“ আল মুসান্নিফ ” গ্রন্থে সহিহ সনদের সাথে উল্লেখ করেছে।২। বালাজুরী ও তার“ আনসাবুল আশরাফ ” গ্রন্থআহমাদ বিন ইয়াহিয়া জাবির বাগদাদী বালাজুরী (মৃত্যু:২৭০) বিখ্যাত লেখক ও মহান ঐতিহাসিক এই ঐতিহাসিক ঘটনাকে নিজের গ্রন্থ“ আনসাবুল আশরাফ ” এ এই ভাবে উল্লেখ করেছেন:إنّ أبابكر أرسل إلى علي يريد البيعة فلم يبايع، فجاء عمر و معه فتيلة: فتلقّته فاطمة علی البابفقالت فاطمة: بإبن الخطّاب: أتراك محرقاً عليّ بابي؟ قال: نعم و ذلك أقوى فيما جاء به أبوكঅর্থাৎ: আবুবকর হজরত আলী (আ.) এর বাইয়াত নেওয়ার জন্য (লোক) পাঠায় কিন্তু হজরত আলী (আ.) অস্বীকার করার ফলে উমর আগুনের ফলতে নিয়ে আসল ,দ্বারেই হজরত ফাতিমা (আ.) এর সঙ্গে সাক্ষাৎ হয়। হজরত ফাতিমা (আ.) বললেন: হে খাত্তাবের পুত্র! আমিতো দেখছি তুমি আমার ঘর জ্বালানোর পরিকল্পনা নিয়েছ ? উত্তরে উমর বলল: হ্যাঁ ,তোমার পিতা যার জন্য প্রেরিত হয়েছে (সেই কাজের সহযোগিতা ছাড়া অন্যকিছু নয়) আর এটা তার থেকেও গুরুত্বপূর্ণ।১২৩। ইবনে কুতাইবা ও তার“ আল ইমামাত ওয়াস সিয়াসাত ” গ্রন্থবিখ্যাত ঐতিহাসিক আব্দুল্লাহ বিন মুসলিম বিন কুতাইবা দিনাওয়ারী (২১২-২৭৬) তিনি সাহিত্যিকদের অন্যতম প্রধান ও ইসলামী ইতিহাস লেখকদের মধ্যে একজন ,তাঁর সংকলিত পুস্তক“ তাভিলে মুখতালাফুল হাদীছ ” ও“ আদাবুল কাতিব ” ইত্যাদি। তিনি তাঁর“ আল ইমামাত ওয়া সেয়াসাত ” গ্রন্থে এমনি লিপিবদ্ধ করেছেন:إنّ أبا بكر رضي الله عنه تفقد قوماً تخلّفوا عن بيعته عند علي كرّم الله وجهه فبعث إليهم عمر فجاء فناداهم وهم في دار علي، فأبوا أن يخرجوا فدعا بالحطب و قال: والّذي نفس عمر بيده لتخرجنّ أو لأحرقنّها علی من فيها، فقيل له: يا أبا حفص إنّ فيها فاطمة، فقال: وإن !অর্থাৎ: যাঁরা আবুবকরের হাতে বাইয়াত করেন নি তাঁরা হজরত আলী (আ.) এর গৃহে একত্রিত হয়ে ছিলেন ,আবুবকর খবর পাওয়ায় ওমরকে অনুসন্ধানের জন্য তাঁদের নিকটে পাঠাল ,সে হজরত আলী (আ.) এর গৃহে এসে সকলকে উচ্চস্বরে বলল ঘর থেকে বের হয়ে এস ,তাঁরা প্রত্যাখ্যান করেন ,ফলে উমর কাঠ তলব করল এবং বলল: তাঁর কসম যার হাতে উমরের জীবন আছে সকলে বাইরে এস নইলে যে ঘরে তোমরা আছ আগুন লাগিয়ে দেব। এক ব্যক্তি উমরকে বলল: হে হাফসার পিতা এই ঘরে রাসুলের কন্যা ফাতিমা (আ.) আছেন ,উমর বলল: থাকে থাকুক!১৩ইবনে কুতাইবা এই ঘটনাকে সবথেকে বেদনা দায়ক এবং কষ্ট দায়ক বলে উল্লেখ করেছেন ,তিনি বলেন:ثمّ قام عمر فمشى معه جماعة حتى أتوا فاطمة فدقوا الباب، فلمّا سمعت أصواتهم نادت بأعلى صوتها يا أبتاه رسول الله ماذا لقيناك بعدك من إبن الخطّاب وإبن أبي قحافة فلمّا سمع القوم صوتها و بكائها إنصرفوا. وبقى عمر ومعه قوم فأخرجوا علياً فمضوا به إلي أبي بكر فقالوا له بايع، فقال: إنّ أنا أفعل فمه؟ فقالوا: إذاً والله الذي لا إله إلا هو نضرب عنقكঅর্থাৎ: উমর একদল লোকের সাথে হজরত ফাতিমা (আ.) এর গৃহে এসে ঘরের দরজা করাঘাত করল ,যখন ফাতিমা (আ.) এদের শব্দ শুনলেন উচ্চস্বরে বললেন: হে রাসুলুল্লাহ আপনার পর আমাদের উপর খাত্তাবের ছেলে এবং আবি কুহাফার পুত্র কি যে মুসিবত নিয়ে এসেছে! যখন উমরের সাথিরা হজরত জাহরা (আ.) এর চিৎকার ও কান্না শুনলেন ,ফিরে গেলেন ,কিন্তু কিছু সংখ্যক লোক উমরের সাথে ছিল ,তারা হজরত আলী (আ.) কে ঘর থেকে বের করে আনল। আবুবকরের নিকটে নিয়ে এসে তাঁকে বলল: বাইয়াত করুন ,আলী (আ.) বললেন: যদি বাইয়াত না করি কি হবে ? তারা বলল: সেই খোদার শপথ যিনি ছাড়া কোন প্রতিপালক নেই ,তোমার শির গর্দান থেকে আলাদা করে দেব।১৪সুনিশ্চিতভাবে দুই খলীফার প্রেমিকদের জন্য ইতিহাসের এই অংশটুকু খুবই অসহনীয় ও অরুচিকর ,তাই কিছু সংখ্যক ব্যক্তি পরিকল্পনা নিয়ে বললেন যে ইবনে কুতাইবার পুস্তক অগ্রহণীয় কেউ কেউ বলতে চেয়েছেন এ গ্রন্থ ইবনে কুতাইবার নয়। কিন্তু এ সত্ত্বেও যে ইবনে আবিল হাদীদ যিনি ইতিহাসের অভিজ্ঞ এক শিক্ষক এই পুস্তককে ইবনে কুতাইবার রচিত বলে স্বীকার করেন এবং সর্বদা এই পুস্তক থেকে প্রয়োজনে প্রচুর বর্ণনা করেছেন। আফসোসের বিষয় যে এই পুস্তক বিকৃত করা হয়েছে এবং কিছু অংশকে বাদ দিয়ে মুদ্রণ করা হয়েছে কিন্তু সেই মূল ও অবিকৃত অংশটি ইবনে আবিল হাদীদ তাঁর শরহ্ নাহজুল বালাগা গ্রন্থে বর্ণনা করেছেন।“ জরকলি ” এই পুস্তককে ইবনে কুতাইবার রচিত বলে মনে করেন,অতপর তিনি বলেন: কিছু সংখক আলেম এই ব্যপারে ভিন্ন মত রাখেন। অর্থাৎ এ গ্রন্থের বিষয়ে অন্যদের সংশয় ও সন্দেহ আছে বলে উল্লেখ করেছেন কিন্তু নিজেরা বলেননি যে তা ইবনে কুতাইবার রচিত নয়। যেমন ইলিয়াছ সারকিস১৫ এই পুস্তককে ইবনে কুতাইবার রচনা বলে গণ্য করেন।লা'নাতুল্লাহি আলাল কাজেবিন
মা খাতুনে জান্নাত ফাতেমা বিনতে মোহাম্মদ (আ.) এর ঘরের সম্মান হানি
(পর্ব ১)
হ্যাঁ ,এতটা তাগিদ ও সুপারিশ করার পরেও আফসোস যে এমন কিছু অসম্মানজনক ব্যবহার নবী নন্দিনীর সাথে করা হয়েছে যে তা সহ্য করার মত নয়। আর এ এমন একটা সমস্যা যে কারো দোষ আড়াল করা ঠিক নয়।
আমি এই ব্যাপারে সমস্ত উক্তি আহলে সুন্নত ওয়াল জমায়েতের গ্রন্থসমূহ হতে উল্লেখ করব ,যাতে এই বিষয়টি পরিষ্কার হয়ে যায় যে হজরত ফাতিমা জাহরা (সা.) এর গৃহের সম্মানহানি ও পরবর্তী ঘটনাগুলি ঐতিহাসিকভাবে অকাট্য সত্য এবং এটি কোন অসত্য ঘটনা নয়! যদিও খলিফাদের যুগে ব্যাপকভাবে আহলে বাইতের গুণ ও মর্যাদাকে গোপন করা হয়েছে ,কিন্তু ইতিহাসের পাতায় ও হাদীসের গ্রন্থসমূহে এখনও পর্যন্ত তা জীবন্ত ও রক্ষিত আছে। আর আমি প্রথম শতাব্দী থেকে বর্তমান যুগ পর্যন্ত এ সম্পর্কে লেখা গ্রন্থের নাম ও লেখকের নাম উল্লেখ করব।
১। ইবনে আবি শায়বা ও তার“ আল মুসান্নিফ ” পুস্তক
আবুবকর ইবনে আবি শায়বা (১৫৯-২৩৫) আল মুসান্নিফ গ্রন্থের লেখক সহিহ সনদের সাথে এইভাবে লিপিবদ্ধ করেছেন:
إنه حين بويع لابي بكر بعد رسول الله (ص) كان علي والزبير يدخلان علی فاطمة بنت رسول الله (ص)، فيشاورونها و يرتجعون في أمرهم، فلما بلغ ذلك عمر بن خطاب خرج حتي دخل علی فاطمة،
فقال: يا بنت رسول الله (ص) والله ما أحدٌ أحب إلينا من أبيك وما من أحد أحب إلينا بعد أبيك منك، وأيم الله ما ذاك بمانعي إن اجتمع هؤلاء النفر عندك إن أمرتهم أن يحرق عليهم البيت
قال: فلما خرج عمر جاؤوها، فقالت (ع): تعلمون أنّ عمر قد جاءني، وقد حلف بالله لئن عدتم ليحرقنّ عليكم البيت، وايم الله ليمضين لمّا حلف عليه
অর্থাৎ: যখন জনগণ আবুবকরের হাতে বাইয়াত করলেন ,হজরত আলী (আ.) ও যোবায়ের হজরত ফাতিমা (আ.) এর গৃহে পরামর্শ ও আলোচনা করছিলেন ,এই খবর উমর ইবনে খাত্তাবের কর্ণগোচর হল অতঃপর সে ফাতিমা (আ.) এর গৃহে এসে বলল: হে নবী নন্দিনী! আমার প্রিয়তম ব্যক্তি তোমার পিতা ,তোমার পিতার পর তুমি নিজে ; কিন্তু আল্লাহর কসম তোমাদের এই ভালোবাসা আমার জন্য বাধা সৃষ্টি করবে না তোমার এই ঘরে একত্রিত হওয়া ব্যক্তিদের উপর আগুন লাগানোর আদেশ দেওয়া থেকে যাতে তারা দগ্ধ হয়ে যায়। এই কথা বলে উমর চলে যায় ,অতঃপর হজরত আলী ও যোবায়ের গৃহে প্রত্যাবর্তন করেন ,হজরত ফাতিমা (আ.) আলী (আ.) ও যোবায়েরকে বললেন: উমর আমার নিকটে এসেছিল আল্লার কসম খেয়ে বলছিল যে যদি তোমাদের এই“ ইজতেমা ” সমাবেশ বন্ধ না হয় ,দ্বিতীয় বার অব্যাহত থাকে তাহলে তোমাদের গৃহকে জ্বালিয়ে দেব। আল্লার কসম! যার জন্য আমি কসম খেয়েছি অবশ্যই আমি সেটা করব।১১
উল্লেখ্য এই ঘটনাকে“ আল মুসান্নিফ ” গ্রন্থে সহিহ সনদের সাথে উল্লেখ করেছে।
২। বালাজুরী ও তার“ আনসাবুল আশরাফ ” গ্রন্থ
আহমাদ বিন ইয়াহিয়া জাবির বাগদাদী বালাজুরী (মৃত্যু:২৭০) বিখ্যাত লেখক ও মহান ঐতিহাসিক এই ঐতিহাসিক ঘটনাকে নিজের গ্রন্থ“ আনসাবুল আশরাফ ” এ এই ভাবে উল্লেখ করেছেন:
إنّ أبابكر أرسل إلى علي يريد البيعة فلم يبايع، فجاء عمر و معه فتيلة: فتلقّته فاطمة علی الباب
فقالت فاطمة: بإبن الخطّاب: أتراك محرقاً عليّ بابي؟ قال: نعم و ذلك أقوى فيما جاء به أبوك
অর্থাৎ: আবুবকর হজরত আলী (আ.) এর বাইয়াত নেওয়ার জন্য (লোক) পাঠায় কিন্তু হজরত আলী (আ.) অস্বীকার করার ফলে উমর আগুনের ফলতে নিয়ে আসল ,দ্বারেই হজরত ফাতিমা (আ.) এর সঙ্গে সাক্ষাৎ হয়। হজরত ফাতিমা (আ.) বললেন: হে খাত্তাবের পুত্র! আমিতো দেখছি তুমি আমার ঘর জ্বালানোর পরিকল্পনা নিয়েছ ? উত্তরে উমর বলল: হ্যাঁ ,তোমার পিতা যার জন্য প্রেরিত হয়েছে (সেই কাজের সহযোগিতা ছাড়া অন্যকিছু নয়) আর এটা তার থেকেও গুরুত্বপূর্ণ।১২
৩। ইবনে কুতাইবা ও তার“ আল ইমামাত ওয়াস সিয়াসাত ” গ্রন্থ
বিখ্যাত ঐতিহাসিক আব্দুল্লাহ বিন মুসলিম বিন কুতাইবা দিনাওয়ারী (২১২-২৭৬) তিনি সাহিত্যিকদের অন্যতম প্রধান ও ইসলামী ইতিহাস লেখকদের মধ্যে একজন ,তাঁর সংকলিত পুস্তক“ তাভিলে মুখতালাফুল হাদীছ ” ও“ আদাবুল কাতিব ” ইত্যাদি। তিনি তাঁর“ আল ইমামাত ওয়া সেয়াসাত ” গ্রন্থে এমনি লিপিবদ্ধ করেছেন:
إنّ أبا بكر رضي الله عنه تفقد قوماً تخلّفوا عن بيعته عند علي كرّم الله وجهه فبعث إليهم عمر فجاء فناداهم وهم في دار علي، فأبوا أن يخرجوا فدعا بالحطب و قال: والّذي نفس عمر بيده لتخرجنّ أو لأحرقنّها علی من فيها، فقيل له: يا أبا حفص إنّ فيها فاطمة، فقال: وإن !
অর্থাৎ: যাঁরা আবুবকরের হাতে বাইয়াত করেন নি তাঁরা হজরত আলী (আ.) এর গৃহে একত্রিত হয়ে ছিলেন ,আবুবকর খবর পাওয়ায় ওমরকে অনুসন্ধানের জন্য তাঁদের নিকটে পাঠাল ,সে হজরত আলী (আ.) এর গৃহে এসে সকলকে উচ্চস্বরে বলল ঘর থেকে বের হয়ে এস ,তাঁরা প্রত্যাখ্যান করেন ,ফলে উমর কাঠ তলব করল এবং বলল: তাঁর কসম যার হাতে উমরের জীবন আছে সকলে বাইরে এস নইলে যে ঘরে তোমরা আছ আগুন লাগিয়ে দেব। এক ব্যক্তি উমরকে বলল: হে হাফসার পিতা এই ঘরে রাসুলের কন্যা ফাতিমা (আ.) আছেন ,উমর বলল: থাকে থাকুক!১৩
ইবনে কুতাইবা এই ঘটনাকে সবথেকে বেদনা দায়ক এবং কষ্ট দায়ক বলে উল্লেখ করেছেন ,তিনি বলেন:
ثمّ قام عمر فمشى معه جماعة حتى أتوا فاطمة فدقوا الباب، فلمّا سمعت أصواتهم نادت بأعلى صوتها يا أبتاه رسول الله ماذا لقيناك بعدك من إبن الخطّاب وإبن أبي قحافة فلمّا سمع القوم صوتها و بكائها إنصرفوا. وبقى عمر ومعه قوم فأخرجوا علياً فمضوا به إلي أبي بكر فقالوا له بايع، فقال: إنّ أنا أفعل فمه؟ فقالوا: إذاً والله الذي لا إله إلا هو نضرب عنقك
অর্থাৎ: উমর একদল লোকের সাথে হজরত ফাতিমা (আ.) এর গৃহে এসে ঘরের দরজা করাঘাত করল ,যখন ফাতিমা (আ.) এদের শব্দ শুনলেন উচ্চস্বরে বললেন: হে রাসুলুল্লাহ আপনার পর আমাদের উপর খাত্তাবের ছেলে এবং আবি কুহাফার পুত্র কি যে মুসিবত নিয়ে এসেছে! যখন উমরের সাথিরা হজরত জাহরা (আ.) এর চিৎকার ও কান্না শুনলেন ,ফিরে গেলেন ,কিন্তু কিছু সংখ্যক লোক উমরের সাথে ছিল ,তারা হজরত আলী (আ.) কে ঘর থেকে বের করে আনল। আবুবকরের নিকটে নিয়ে এসে তাঁকে বলল: বাইয়াত করুন ,আলী (আ.) বললেন: যদি বাইয়াত না করি কি হবে ? তারা বলল: সেই খোদার শপথ যিনি ছাড়া কোন প্রতিপালক নেই ,তোমার শির গর্দান থেকে আলাদা করে দেব।১৪
সুনিশ্চিতভাবে দুই খলীফার প্রেমিকদের জন্য ইতিহাসের এই অংশটুকু খুবই অসহনীয় ও অরুচিকর ,তাই কিছু সংখ্যক ব্যক্তি পরিকল্পনা নিয়ে বললেন যে ইবনে কুতাইবার পুস্তক অগ্রহণীয় কেউ কেউ বলতে চেয়েছেন এ গ্রন্থ ইবনে কুতাইবার নয়। কিন্তু এ সত্ত্বেও যে ইবনে আবিল হাদীদ যিনি ইতিহাসের অভিজ্ঞ এক শিক্ষক এই পুস্তককে ইবনে কুতাইবার রচিত বলে স্বীকার করেন এবং সর্বদা এই পুস্তক থেকে প্রয়োজনে প্রচুর বর্ণনা করেছেন। আফসোসের বিষয় যে এই পুস্তক বিকৃত করা হয়েছে এবং কিছু অংশকে বাদ দিয়ে মুদ্রণ করা হয়েছে কিন্তু সেই মূল ও অবিকৃত অংশটি ইবনে আবিল হাদীদ তাঁর শরহ্ নাহজুল বালাগা গ্রন্থে বর্ণনা করেছেন।
“ জরকলি ” এই পুস্তককে ইবনে কুতাইবার রচিত বলে মনে করেন,অতপর তিনি বলেন: কিছু সংখক আলেম এই ব্যপারে ভিন্ন মত রাখেন। অর্থাৎ এ গ্রন্থের বিষয়ে অন্যদের সংশয় ও সন্দেহ আছে বলে উল্লেখ করেছেন কিন্তু নিজেরা বলেননি যে তা ইবনে কুতাইবার রচিত নয়। যেমন ইলিয়াছ সারকিস১৫ এই পুস্তককে ইবনে কুতাইবার রচনা বলে গণ্য করেন।
লা'নাতুল্লাহি আলাল কাজেবিন
মন্তব্যসমূহ