আহলে বাইত আঃ কাদের কে বলা হয়েছেপর্ব (((((শেষ)))))চারঃ মুসলিম তার সহিহাতে এভাবে লিপিবদ্ধ করেছেনঃ যখন অবতীর্ণ হল নিম্নলিখিত আয়াতটিفَقُلْ تَعَالَوْا نَدْعُ أَبْنَاءَنَا وَأَبْنَاءَكُمْ وَنِسَاءَنَا وَنِسَاءَكُمْ وَأَنفُسَنَا وَأَنفُسَكُمْ ثُمَّ نَبْتَهِلْ فَنَجْعَل لَّعْنَتَ اللَّـهِ عَلَى الْكَاذِبِينَঅর্থাৎঃ বল (হে নবী)-এসো, আমরা আমাদের সন্তানদের, মহিলাদের এবং নিজেদেরকে ডেকে আনি আর তোমারাও তাই কর । অতঃপর (এসো) চ্যালেঞ্জ করি আর মিথ্যাবাদীদের উপর আল্লাহর অভিসম্পাত বর্ষন করি ।২৩তখন মহানবী (সা.) আলী, ফাতিমা, হাসান ও হুসাইনকে ডেকে আনলেন । তিনি বললেনঃالهی هولاء اهلیঅর্থাৎঃ হে আল্লাহ এরা আমার আহলে বাইত ।২৪পাঁচঃ সহি তিরমিযি গ্রন্থে নিম্নলিখিতভাবে বর্ণীত আছেঃতাতহীরের আয়াত নাযিল হবার পর থেকে ছয় মাস পর্যন্ত প্রতিদিন যোহর নামাজের সময় আল্লাহর রাসুল ফাতিমার গৃহে আগমন করে উক্ত আয়াত পাঠ করতেন । প্রিয় নবী (সা.) উক্ত আয়াত অবতীর্ণ হওয়ার সময় বলেছেনঃاللهم اهل بیتی و خاصتی فاذهب عنهم الرجس و طهرهم تطهیراঅর্থাৎঃ হে আল্লাহ আমার আহলে বাইত থেকে তুমি সকল অপবিত্রতা দূরীভূত কর এবং পূত-পবিত্র কর ।২৫ছয়ঃ সহি মুসলিম ও জামেয় উসূল গ্রন্থদ্বয়ে এভাবে বর্ণীত আছে যে, হাসীন বিন সামারাহ যায়েদ বিন আরকামকে জিজ্ঞেস করলেন, নবীর পত্নীগণও কি আহলে বাইতের মধ্যে গণ্য ? তিনি উত্তরে বললেন, আল্লাহর শপথ, না এরকম নয় । কেননা স্ত্রী জীবনের কিছু সময় স্বামীর সাথে অবস্থান করে । অতঃপর স্বামী তালাক দিয়ে দিলে সে তার পিতা-মাতা আত্মীয়-স্বজনের কাছে প্রত্যাবর্তন করে এবং স্বামী থেকে সম্পূর্ণভাবে পৃথক হয়ে যায় । কিন্তু রাসুলের আহলে বাইত এমন সব ব্যক্তিবর্গ যাদের জন্য সাদকা গ্রহণ নিষিদ্ধ করা হয়েছে, তারা যেখানেই যান না কেন কখনো পরিবার থেকে বিচ্ছিন্ন হতে পারেন না ।২৬সাতঃ অন্যত্র এরূপ উল্লেখ আছে যে, তাতহীরের আয়াত পাঁচজন তথা নবী (সা.), হযরত আলী ইবনে আবি তালিব, হযরত ফাতিমা, হযরত হাসান ইবনে আলী ও হযরত হুসাইন ইবনে আলীর জন্য অবতীর্ণ হয়েছে ।২৭আটঃ বুখারী ও মুসলিম উভয়েই হযরত আয়েশার সূত্রে বর্ণনা করেছেন যে, মুসআব বিন শাইবাহ তার বোন সাফিয়্যা থেকে বর্ণনা করেছেন, তিনি হযরত আয়েশা থেকে বর্ণনা করেছেনঃ ‘একদা রাসুল (সা.) একটি কালো আ’বা পরিধান করে গৃহের বাইরে আসলেন । পথিমধ্যে হাসান ইবনে আলীর সাথে দেখা হল । তিনি হাসানকে স্বীয় আ’বার ভিতর প্রবেশ করালেন । অতঃপর হুসাইন ইবনে আলী আগমন করলে তাকেও পূর্বানুরূপভাবে তার আ’বার ভিতরে নিয়ে নিলেন । অতঃপর ফাতিমা ও আলী ইবনে আবি তালিব আগমন করলে তারাও নবীর আ’বার ভিতরে প্রবেশ করলেন । আর পরক্ষণে তিনি নিম্নোক্ত আয়াতটি পাঠ করেনঃإِنَّمَا يُرِ‌يدُ اللَّـهُ لِيُذْهِبَ عَنكُمُ الرِّ‌جْسَ أَهْلَ الْبَيْتِ وَيُطَهِّرَ‌كُمْ تَطْهِيرً‌اঅর্থাৎঃ-নিশ্চিয়ই আল্লাহ মনস্থ করলেন তোমাদের নিকট থেকে সমস্ত প্রকার অপবিত্রতা থেকে দূরীভূত করতে হে আহলে বাইত এবং মনস্থ করলেন তোমাদেরকে পুত-পবিত্র করতে ।২৮তথ্যসূত্রঃ১. আল ক্বামুস আল মুহিত্বলিল ফিরুযাবাদী, খণ্ড-৩, ফাসল আল হামযা, বাব আল লাম, পৃঃ৩৩১, প্রিন্টঃ কায়রো, হালাবী ফাউন্ডেশন ।২. সূরা আল কেসাস, আয়াত নং-২৯ ।৩. সূরা আল আনকাবুত, আয়াত নং-৩৩ ।৪. সূরা আল হুদ,আয়াত নং-৪৫-৪৬ ।৫. সূরা আল হুদ,আয়াত নং-৭৩ ।৬. সূরা আহযাব,আয়াত নং-৩৩ ।৭. রুহুল মায়ানি, আলুসী, খণ্ড-২৪, পৃঃ ১৪।৮. প্রাগুক্ত৯. তাফসীর আল কাশশাফ, খণ্ড-৩, পৃঃ ২৬; ফাতহ আল ক্বাদীর, শাওকানী, খণ্ড-৪, পৃঃ ২৮০।১০. আকরামাহ সম্পর্কে বিস্তারিত পড়ুনঃক) আত তাবাকাতুল কোবরা, খণ্ড-৫, পৃঃ ১৪১ ।খ) মিযান আল এ’তিদাল, যাহাবী, তারজামাতে আকরামাহ ।গ) আল মা’য়ারিফ, ইবনে কুতাইবা, পৃঃ-৪৫৫, প্রিন্ট কোম ।১১. মিযান আল এ’তিদাল, যাহাবী, খণ্ড-৩, পৃঃ ১৭৩,৫৬২; আল ফাসল লি ইবনে হাযম, খণ্ড-৪, পৃঃ ২০৫ ।১২. সূরা আহযাব,আয়াত নং-৩২ ।১৩. সূরা আহযাব,আয়াত নং-৩০ ।১৪. সহি বুখারী, খণ্ড-৩, পৃঃ ৩৪ ।১৫. সূরা তাহরীম,আয়াত নং-৪ ।১৬. সহি বুখারী, খণ্ড-৭, পৃঃ ২৮-২৯ ।১৭. তাফসীর আল কাবির, খণ্ড-৩, পৃঃ ৪ ।১৮. মুসনাদে আহমাদ, খণ্ড-৬, পৃঃ১১৫; তাফসীরে তাবারী, খণ্ড-২৮, পৃঃ ১০১; আত তাবাকাতুল কোবরা, খণ্ড-৮, পৃঃ ১৩৫; সহি বুখারী, খণ্ড-৩,পৃঃ ১৩৭; খণ্ড-৪, পৃঃ ২২; সহি মুসলিম, কিতাব আত তালাক, হাদীস নং-৩১,৩২,৩৩,৩৪।১৯. কামেল ফি আত তারিখ, খণ্ড-৩ পৃঃ১০৫; আল ইমামাহ ওয়াস সিয়াসাহ, ইবনে কুবাইবা, খণ্ড-১, পৃঃ ৭১,৭২, গবেষক আলী শিরী; আল ফুতুহ, খণ্ড-২, পৃঃ ২৪৯ ।২০. আদ দুররুল মানসুর, সূয়ুতী, খণ্ড-৪, পৃঃ ১৯৮; মুশকিল আল আসার, খণ্ড-১, পৃঃ ২৩৩ একই বিষয়ে শব্দের তারতম্য ভেদে বিভিন্ন হাদীস বিদ্যমান, দৃষ্টান্ত স্বরূপঃ সহি আত তিরমিযি, খণ্ড-১৩ পৃঃ ২৪৮; মুসনাদে আহমাদ, খণ্ড-৬, পৃঃ ৩০৬; উসদুল গা’বা, খণ্ড-৪, পৃঃ ২৯ ।২১. মুসতাদরাক আস সাহিহাইন, খণ্ড-৩, পৃঃ ১৪৭; সহি মুসলিম, খণ্ড-৫, পৃঃ ১৫৪, মুসনাদে আহমাদ, খণ্ড-১, পৃঃ ৯; সুনানে বায়হাকী, খণ্ড-৬, পৃঃ ৩০০ ।২২. আদ দুররুল মানসুর, সূয়ুতী, খণ্ড-৫, পৃঃ ১৯৯; তাফসীরে ইবনে কাসীর, খণ্ড-৩, পৃঃ ৪৮৩; মুসনাদ আত তাইয়ালীসি, খণ্ড-৮, পৃঃ ২৭৪; মুসতাদরাক আস সাহিহাইন, খণ্ড-৩, পৃঃ ১৪৭; সহি মুসলিম, খণ্ড-৫, পৃঃ ১৫৪, মুসনাদে আহমাদ, খণ্ড-১, পৃঃ ৯; সুনানে বায়হাকী, খণ্ড-৬, পৃঃ ৩০০ ।২৩. সূরা আলে ইমরান, আয়াত নং-৬১ ।২৪. সহি মুসলিম, খণ্ড-৬, বাবে ফাযায়িলে আলী, পৃঃ ১২০,১২১ ।২৫. মুসনাদে আহমাদ, খণ্ড-৬, পৃঃ ৩০৪,৩১৯ ।২৬. সহি মুসলিম, খণ্ড-৭, পৃঃ ১২৩ ।২৭. দুরারুস সিমতাইন, পৃঃ ২৩৯; উসদুল গাবা, খণ্ড-২, পৃঃ ১২, খণ্ড-৩, পৃঃ৪১৩, খণ্ড-৪, পৃঃ২৯; মুসনাদে আহমাদ, খণ্ড-১, পৃঃ১৮৫, খণ্ড-৩, পৃঃ২৫৯, খণ্ড-৬, পৃঃ১৯৮; তাফসীরে তাবারী, খণ্ড-২২, পৃঃ৭ ।২৮. সহি মুসলিম, খণ্ড-২, পৃঃ২৬৮; বাবে ফাযায়িলে আহলে বাইত; মুসতাদরাক আস সাহিহাইন, খণ্ড-৩, পৃঃ ১৪৭; তাফসীরে তাবারী, খণ্ড-২২, পৃঃ৫ ।আল্লাহুম্মা সাল্লে আলা মোহাম্মদ দিন ওয়া আলে মোহাম্মদ ওয়া আজ্জিল ফারজাহুম খালিফা তুল বিলা ফাসালনিবেদক________ মোঃ জাহিদ হোসেন

আহলে বাইত আঃ কাদের কে বলা হয়েছে
পর্ব (((((শেষ)))))

চারঃ মুসলিম তার সহিহাতে এভাবে লিপিবদ্ধ করেছেনঃ যখন অবতীর্ণ হল নিম্নলিখিত আয়াতটি

فَقُلْ تَعَالَوْا نَدْعُ أَبْنَاءَنَا وَأَبْنَاءَكُمْ وَنِسَاءَنَا وَنِسَاءَكُمْ وَأَنفُسَنَا وَأَنفُسَكُمْ ثُمَّ نَبْتَهِلْ فَنَجْعَل لَّعْنَتَ اللَّـهِ عَلَى الْكَاذِبِينَ

অর্থাৎঃ বল (হে নবী)-এসো, আমরা আমাদের সন্তানদের, মহিলাদের এবং নিজেদেরকে ডেকে আনি আর তোমারাও তাই কর । অতঃপর (এসো) চ্যালেঞ্জ করি আর মিথ্যাবাদীদের উপর আল্লাহর অভিসম্পাত বর্ষন করি ।২৩

তখন মহানবী (সা.) আলী, ফাতিমা, হাসান ও হুসাইনকে ডেকে আনলেন । তিনি বললেনঃ

الهی هولاء اهلی

অর্থাৎঃ হে আল্লাহ এরা আমার আহলে বাইত ।২৪

পাঁচঃ সহি তিরমিযি গ্রন্থে নিম্নলিখিতভাবে বর্ণীত আছেঃ

তাতহীরের আয়াত নাযিল হবার পর থেকে ছয় মাস পর্যন্ত প্রতিদিন যোহর নামাজের সময় আল্লাহর রাসুল ফাতিমার গৃহে আগমন করে উক্ত আয়াত পাঠ করতেন । প্রিয় নবী (সা.) উক্ত আয়াত অবতীর্ণ হওয়ার সময় বলেছেনঃ

اللهم اهل بیتی و خاصتی فاذهب عنهم الرجس و طهرهم تطهیرا

অর্থাৎঃ হে আল্লাহ আমার আহলে বাইত থেকে তুমি সকল অপবিত্রতা দূরীভূত কর এবং পূত-পবিত্র কর ।২৫

ছয়ঃ সহি মুসলিম ও জামেয় উসূল গ্রন্থদ্বয়ে এভাবে বর্ণীত আছে যে, হাসীন বিন সামারাহ যায়েদ বিন আরকামকে জিজ্ঞেস করলেন, নবীর পত্নীগণও কি আহলে বাইতের মধ্যে গণ্য ? তিনি উত্তরে বললেন, আল্লাহর শপথ, না এরকম নয় । কেননা স্ত্রী জীবনের কিছু সময় স্বামীর সাথে অবস্থান করে । অতঃপর স্বামী তালাক দিয়ে দিলে সে তার পিতা-মাতা আত্মীয়-স্বজনের কাছে প্রত্যাবর্তন করে এবং স্বামী থেকে সম্পূর্ণভাবে পৃথক হয়ে যায় । কিন্তু রাসুলের আহলে বাইত এমন সব ব্যক্তিবর্গ যাদের জন্য সাদকা গ্রহণ নিষিদ্ধ করা হয়েছে, তারা যেখানেই যান না কেন কখনো পরিবার থেকে বিচ্ছিন্ন হতে পারেন না ।২৬

সাতঃ অন্যত্র এরূপ উল্লেখ আছে যে, তাতহীরের আয়াত পাঁচজন তথা নবী (সা.), হযরত আলী ইবনে আবি তালিব, হযরত ফাতিমা, হযরত হাসান ইবনে আলী ও হযরত হুসাইন ইবনে আলীর জন্য অবতীর্ণ হয়েছে ।২৭

আটঃ বুখারী ও মুসলিম উভয়েই হযরত আয়েশার সূত্রে বর্ণনা করেছেন যে, মুসআব বিন শাইবাহ তার বোন সাফিয়্যা থেকে বর্ণনা করেছেন, তিনি হযরত আয়েশা থেকে বর্ণনা করেছেনঃ ‘একদা রাসুল (সা.) একটি কালো আ’বা পরিধান করে গৃহের বাইরে আসলেন । পথিমধ্যে হাসান ইবনে আলীর সাথে দেখা হল । তিনি হাসানকে স্বীয় আ’বার ভিতর প্রবেশ করালেন । অতঃপর হুসাইন ইবনে আলী আগমন করলে তাকেও পূর্বানুরূপভাবে তার আ’বার ভিতরে নিয়ে নিলেন । অতঃপর ফাতিমা ও আলী ইবনে আবি তালিব আগমন করলে তারাও নবীর আ’বার ভিতরে প্রবেশ করলেন । আর পরক্ষণে তিনি নিম্নোক্ত আয়াতটি পাঠ করেনঃ

إِنَّمَا يُرِ‌يدُ اللَّـهُ لِيُذْهِبَ عَنكُمُ الرِّ‌جْسَ أَهْلَ الْبَيْتِ وَيُطَهِّرَ‌كُمْ تَطْهِيرً‌ا

অর্থাৎঃ-নিশ্চিয়ই আল্লাহ মনস্থ করলেন তোমাদের নিকট থেকে সমস্ত প্রকার অপবিত্রতা থেকে দূরীভূত করতে হে আহলে বাইত এবং মনস্থ করলেন তোমাদেরকে পুত-পবিত্র করতে ।২৮

তথ্যসূত্রঃ

১. আল ক্বামুস আল মুহিত্বলিল ফিরুযাবাদী, খণ্ড-৩, ফাসল আল হামযা, বাব আল লাম, পৃঃ৩৩১, প্রিন্টঃ কায়রো, হালাবী ফাউন্ডেশন ।

২. সূরা আল কেসাস, আয়াত নং-২৯ ।

৩. সূরা আল আনকাবুত, আয়াত নং-৩৩ ।

৪. সূরা আল হুদ,আয়াত নং-৪৫-৪৬ ।

৫. সূরা আল হুদ,আয়াত নং-৭৩ ।

৬. সূরা আহযাব,আয়াত নং-৩৩ ।

৭. রুহুল মায়ানি, আলুসী, খণ্ড-২৪, পৃঃ ১৪।

৮. প্রাগুক্ত

৯. তাফসীর আল কাশশাফ, খণ্ড-৩, পৃঃ ২৬; ফাতহ আল ক্বাদীর, শাওকানী, খণ্ড-৪, পৃঃ ২৮০।

১০. আকরামাহ সম্পর্কে বিস্তারিত পড়ুনঃ

ক) আত তাবাকাতুল কোবরা, খণ্ড-৫, পৃঃ ১৪১ ।

খ) মিযান আল এ’তিদাল, যাহাবী, তারজামাতে আকরামাহ ।

গ) আল মা’য়ারিফ, ইবনে কুতাইবা, পৃঃ-৪৫৫, প্রিন্ট কোম ।

১১. মিযান আল এ’তিদাল, যাহাবী, খণ্ড-৩, পৃঃ ১৭৩,৫৬২; আল ফাসল লি ইবনে হাযম, খণ্ড-৪, পৃঃ ২০৫ ।

১২. সূরা আহযাব,আয়াত নং-৩২ ।

১৩. সূরা আহযাব,আয়াত নং-৩০ ।

১৪. সহি বুখারী, খণ্ড-৩, পৃঃ ৩৪ ।

১৫. সূরা তাহরীম,আয়াত নং-৪ ।

১৬. সহি বুখারী, খণ্ড-৭, পৃঃ ২৮-২৯ ।

১৭. তাফসীর আল কাবির, খণ্ড-৩, পৃঃ ৪ ।

১৮. মুসনাদে আহমাদ, খণ্ড-৬, পৃঃ১১৫; তাফসীরে তাবারী, খণ্ড-২৮, পৃঃ ১০১; আত তাবাকাতুল কোবরা, খণ্ড-৮, পৃঃ ১৩৫; সহি বুখারী, খণ্ড-৩,পৃঃ ১৩৭; খণ্ড-৪, পৃঃ ২২; সহি মুসলিম, কিতাব আত তালাক, হাদীস নং-৩১,৩২,৩৩,৩৪।

১৯. কামেল ফি আত তারিখ, খণ্ড-৩ পৃঃ১০৫; আল ইমামাহ ওয়াস সিয়াসাহ, ইবনে কুবাইবা, খণ্ড-১, পৃঃ ৭১,৭২, গবেষক আলী শিরী; আল ফুতুহ, খণ্ড-২, পৃঃ ২৪৯ ।

২০. আদ দুররুল মানসুর, সূয়ুতী, খণ্ড-৪, পৃঃ ১৯৮; মুশকিল আল আসার, খণ্ড-১, পৃঃ ২৩৩ একই বিষয়ে শব্দের তারতম্য ভেদে বিভিন্ন হাদীস বিদ্যমান, দৃষ্টান্ত স্বরূপঃ সহি আত তিরমিযি, খণ্ড-১৩ পৃঃ ২৪৮; মুসনাদে আহমাদ, খণ্ড-৬, পৃঃ ৩০৬; উসদুল গা’বা, খণ্ড-৪, পৃঃ ২৯ ।

২১. মুসতাদরাক আস সাহিহাইন, খণ্ড-৩, পৃঃ ১৪৭; সহি মুসলিম, খণ্ড-৫, পৃঃ ১৫৪, মুসনাদে আহমাদ, খণ্ড-১, পৃঃ ৯; সুনানে বায়হাকী, খণ্ড-৬, পৃঃ ৩০০ ।

২২. আদ দুররুল মানসুর, সূয়ুতী, খণ্ড-৫, পৃঃ ১৯৯; তাফসীরে ইবনে কাসীর, খণ্ড-৩, পৃঃ ৪৮৩; মুসনাদ আত তাইয়ালীসি, খণ্ড-৮, পৃঃ ২৭৪; মুসতাদরাক আস সাহিহাইন, খণ্ড-৩, পৃঃ ১৪৭; সহি মুসলিম, খণ্ড-৫, পৃঃ ১৫৪, মুসনাদে আহমাদ, খণ্ড-১, পৃঃ ৯; সুনানে বায়হাকী, খণ্ড-৬, পৃঃ ৩০০ ।

২৩. সূরা আলে ইমরান, আয়াত নং-৬১ ।

২৪. সহি মুসলিম, খণ্ড-৬, বাবে ফাযায়িলে আলী, পৃঃ ১২০,১২১ ।

২৫. মুসনাদে আহমাদ, খণ্ড-৬, পৃঃ ৩০৪,৩১৯ ।

২৬. সহি মুসলিম, খণ্ড-৭, পৃঃ ১২৩ ।

২৭. দুরারুস সিমতাইন, পৃঃ ২৩৯; উসদুল গাবা, খণ্ড-২, পৃঃ ১২, খণ্ড-৩, পৃঃ৪১৩, খণ্ড-৪, পৃঃ২৯; মুসনাদে আহমাদ, খণ্ড-১, পৃঃ১৮৫, খণ্ড-৩, পৃঃ২৫৯, খণ্ড-৬, পৃঃ১৯৮; তাফসীরে তাবারী, খণ্ড-২২, পৃঃ৭ ।

২৮. সহি মুসলিম, খণ্ড-২, পৃঃ২৬৮; বাবে ফাযায়িলে আহলে বাইত; মুসতাদরাক আস সাহিহাইন, খণ্ড-৩, পৃঃ ১৪৭; তাফসীরে তাবারী, খণ্ড-২২, পৃঃ৫ ।

আল্লাহুম্মা সাল্লে আলা মোহাম্মদ দিন ওয়া আলে মোহাম্মদ ওয়া আজ্জিল 
ফারজাহুম খালিফা তুল বিলা ফাসাল

নিবেদক________ মোঃ জাহিদ হোসেন

মন্তব্যসমূহ

জনপ্রিয় পোস্টসমূহ

ইসলামে হযরত আবু তালিব আঃ এর অবদান:::::::::::::_________পর্ব (((((৩)))))_____________:::::::::::::::মহানবী (সা.) জন্মের পূর্বেই পিতাকে হারিয়েছেন। মায়ের কাছে তিনি পিতা আব্দুল্লার ইন্তেকালের কথা জানতে পেরেছেন। ছয় বছর বয়সে তিনি মাতা আমেনার স্নেহ থেকেও বঞ্চিত হন।ফলে তাঁর লালন-পালনের ভার পিতামহ জনাব আব্দুল মোতালিব গ্রহণ করেন। মাত্র দুই ছর পর তিনিও এ পৃথীবি ছেড়ে চলে গেলেন। শিশু মোহাম্মদ (সাঃ) অসহায় হয়ে পড়লেন। মহিমান্বিত আল্লাহ তাঁর হাবিবের জন্য নিজ পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে যাচ্ছেন। আট বছর বয়সে শুরু হলো নবী (সা.)-এর জীবনের এক নতুন অধ্যায় , তাঁর দায়িত্ব গ্রহণ করলেন পিতৃব্য হযরত আবু তালিব। মোহাম্মদ (সা.)-কে চাচা আবু তালিব ও চাচি ফাতেমা বিনতে আসাদ প্রাণাধিক ভালবাসতেন। মোহাম্মদ (সা.)-কে তিনি কখনো মায়ের শূন্যতা বুঝতে দেননি। নিজেদের সীমাবদ্ধতা থাকলেও মোহাম্মদ (সা.)-কে তা অনুধাবন করতে দেননি। এই মহিমান্বিত পরিবারের অকৃত্রিম ভালবাসা , আদর-যন্ন আর লালন-পালন ও ছত্রছায়ায় প্রিয় নবী (সা.)-এর শিশু , কিশোর ও যৌবনকাল অতিবাহিত হয়েছিল। জীবনের সেই সময়গুলো কত সুখময় ছিল নবী (সা.) তা বুঝতে পেরেছিলেন , যখন মাতৃসুলভ চাচি ইন্তেকাল করলেন।নবী (সা.) সেই মহিয়সী চাচিকে‘ মা’ বলেই ডাকতেন। তাঁর ইন্তেকালে নবী (সা.) দীর্ঘদিন অশ্রুসজল ছিলেন। হযরত আবু তালিব যেমনি পিতার ন্যায় স্নেহ ভালবাসা দিয়ে নবীকে আগলে রেখেছেন , তেমনি তাঁর ভরণ-পোষণ , পোশাক-পরিচ্ছেদ ও অন্যন্য প্রয়োজন মিটিয়েছেন অকৃপণ ভাবে। এমনকি নিজের সন্তানের চেয়েও নবীকে দিয়েছেন অগ্রাধিকার। নিজেরা কষ্টে থাকলেও নবী (সা.)-এর কষ্টে থাকা তিনি সহ্য করতে পারতেন না।এখানে আমি একটি হাদীস উপস্থাপন করছি: রাসূল (সা.) বলেছেন ,“ যে ব্যক্তি তার জান-মাল , ইজ্জত-সম্মান ও সন্তানসন্ততি এবং সকল মানুষের চাইতে আমাকে অধিক ভালবাসে না তার ঈমান পরিপূর্ণ নয়” । উল্লিখিত হাদীসের আলোকে প্রমাণ হয় হযরত আবু তালিব ছিলেন একজন পরিপূর্ণ ঈমানদার। একজন স্নেহবৎসল পিতা , দয়ালু চাচা ও একজন দরদি অভিভাবক। তাঁরা উভয়ই চাচা এবং ভ্রাতুষ্পুত্র একে অন্যের প্রতি এতটাই অনুরোক্ত ছিলেন যেন মনে হতো তাঁদের জীবন পরস্পরের ওপর নির্ভরশীল। দেশে বিদেশে হযরত আবু তালিব আঃ যেখানেই সফর করতেন নবীকে সাথে রাখতেন। যে কারণে আরবের লোকেরা মোহাম্মদ (সা.)-কে‘ আবু তালিবের ইয়াতিম’ নামেও ডাকত। ভাতিজাকে কখনও তিনি একা ছাড়তেন না , এমনকি ঘুমানো কালেও পাশে নিয়ে ঘুমাতেন এরূপে নবী (সা.)-এর 8 বছর বয়স থেকে 25 বছর বয়স পর্যন্ত সুদীর্ঘ 17 টি বছর তিনি হযরত আবু তালিবের গৃহে অবস্থান করেন।আর যেখানে এত বছর নবী (সা.) অবস্থান করলেন , সেখানে যে খাওয়া দাওয়া করেছেন তা নিশ্চই হালাল ছিল। কারণ নবী-রাসূলগণ হারাম খাদ্য গ্রহণ করেন না। তাহলে যারা বলেন ,“ আবু তালিব ঈমান আনেননি” । তারা নবী (সা.)-কে কোথায় পৌঁছালেন ? কারণ পবিত্র কোরআনে সূরা তওবার 28 নং আয়াতে আল্লাহ পাক উল্লেখ করছেন :) يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا إِنَّمَا الْمُشْرِ‌كُونَ نَجَسٌ(“ হে ইমানদারগন! নিশ্চই মুশরিকরা হচ্ছে অপবিত্র” ।📚📚📚📚তাই ঐ সকল ওলামাদের স্মরণ করিয়ে দিতে চাই আপনাদের উক্তি সত্য হলে , নবী (সা.) কি 17 বছর হালাল খাদ্য গ্রহণ থেকে বঞ্চিত ছিলেন ? যা আদৌ বিশ্বাস যোগ্য নয়। পবিত্র কোরআনে আমরা জানতে পেরেছি নবী মূসা (আ.)-কে ফেরাউনের স্ত্রী আছিয়া (আ.) যখন লালন-পালনের সিদ্ধান্ত নিলেন এবং এই শিশুকে দুধ পান করানোর জন্য ধাত্রীর আহবান করলেন অতঃপর অসংখ্য ধাত্রীর আগমণ ঘটল কিন্তু কেউ শিশু মূসাকে দুগ্ধ পান করাতে সক্ষম হল না। তখন সেখানে উপস্থিত নবী মূসা (আ.)-এর আপন ভগ্নী বললেন ,“ আমি আপনাদের এমন এক ধাত্রীর সন্ধান দিতে পারি , হয়তো এই শিশু তাঁর দুগ্ধ পান করবে” । আর বাস্তবেও তাই ঘটল , অর্থাৎ আল্লাহ তাঁকে মায়ের কাছে ফিরিয়ে নিলেন এবং মায়ের দুগ্ধই পান করালেন। উক্ত ঘটনায় ইহাই প্রমানিত হয় যে , আল্লাহর মনোনীত নবী-রাসূলগণ আল্লাহর ইচ্ছা ব্যতীত যখন যা ইচ্ছা খাদ্য কিংবা পানীয় গ্রহণ করেন না।দুঃখজনক হলেও সত্য যে , আমাদের প্রিয় নবী (সা.) সম্পর্কে কিছু সংখ্যক মুসলমান নামধারী উম্মত এমন সব প্রচার প্রচারণা চালাচ্ছেন , যা শুনে অন্য ধর্মের অনুসারীরাও লজ্জাবোধ করেন। যেমন রাসূল (সা.)-কে সদা সর্বদা অভাবী , ক্ষুধার্ত ও অসহায় হিসেবে উপস্থাপন , তালিওয়ালা জামা পরিধারণ , রাসূল (সা.)-এর সিনাছাক করে ময়লা দূরিকরণ , রাসূল (সা.)-কে নিরক্ষর নির্ধারণ ও চল্লিশ বছর পর নবী নির্ধারণ সহ বেশ কিছু অসঙ্গতিপূর্ণ কিচ্ছা-কাহিনী আমাদের সমজে প্রচলিত আছে। অথচ পবিত্র কোরআনে বেশকিছু সংখ্যক নবীর নাম ও বর্ণনা রয়েছে , যাঁদের কারো কখনো সিনাছাক করতে হয়নি এবং কেহ নিরক্ষর ছিলেন এমন প্রমাণও নেই। তাই প্রিয় নবী (সা.)-এর উম্মত হিসাবে প্রত্যেক মুসলমানের অন্তত নূন্যতম আকিদা এই হওয়া উচিৎ ছিল যে , আমাদের সমাজে যে সকল বক্তব্য রাসূল (সা.)-এর মান-মর্যাদাকে হেয় প্রতিপন্ন করে এবং ভিন্ন ধর্মের লোকেদের কাছে রাসূল (সা.)-এর শাণ ও মানকে প্রশ্নের সন্মূখিন করে তোলে , অন্তত সে সকল প্রচার-প্রচারণা থেকে বিরত থাকা।উদহরণ স্বরুপ বলা যেতে পারে যে , ইসলামের ইতিহাসের প্রথম তিন খলিফার সন্মানিত পিতাগণ , কে কোন অবস্থানে ছিলেন বা তাঁরা প্রকাশ্যে কলেমা পড়ে ইসলামের ছায়াতলে এসেছিলেন কি না এবিষয়ে ইতিহাসে তেমন কোন আলোচনা পরিলক্ষিত হয় না। অথচ চতুর্থ খলিফার সম্মানিত পিতা সম্পর্কে যারা মর্যাদাহানীকর বক্তব্য দিয়ে যাচ্ছেন তারা কি নিশ্চিত বলতে পারেন যে , দ্বীন ইসলাম এতে কত টুকু উপকৃত হয়েছে ?আমাদের প্রিয়নবী হযরত মোহাম্মাদ (সা.)-এর 8 বছর বয়স থেকে শুরু করে তাঁর 50 বছর বয়স পর্যন্ত সুদীর্ঘ 42 বছরের এক অকৃত্রিম অভিভাবক ছিলেন হযরত আবু তালিব। তিনি যে কেবলমাত্র নবী (সা.)-এর অভিভাবক ছিলেন এমন নয় , তিনি ছিলেন সত্য ও ন্যায়ের প্রতিষ্ঠাতা , কল্যানের অগ্রদূত , মজলুমের বন্ধু ও জালেমের শত্রু। নবী (সা.)-এর বিভিন্ন বক্তব্যের মাধ্যমেও তা প্রকাশ পেয়েছে।হযরত আবু তালিব সম্পর্কে কিছু লিখতে গিয়ে ক্ষুদ্র একজন লেখক হিসেবে যে বিষয়টি বারবার আমার অনুভূতিতে নাড়া দিয়েছে তা সমীপে প্রকাশ করছি।আল্লাহুম্মা সাল্লে আলা মোহাম্মদ দিন ওয়া আলে মোহাম্মদ ওয়া আজ্জিল ফারজাহুম খালিফা তুল বিলা ফাসাললা'নাতুল্লাহি আল্লাল কাজেবিননিবেদক______ কবির উদ্দিন

আল্লাহুম্মা সাল্লে আলা মোহাম্মদদিন ওয়া আলে মোহাম্মদনবী-নন্দিনী হযরত ফাতিমা যাহরার মাহাত্ম্য যতই বর্ণনা করা হোক না তা অপূর্ণই থেকে যাবে ঠিক যেমনি জানা যায়নি তাঁর পবিত্র কবর কোথায় রয়েছে এবং তা গোপন বা অজ্ঞাত থাকার রহস্যই বা কী।তিনি কেবল সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ নারী ছিলেন না। বলা হয় মহান আল্লাহর পর সর্বশ্রেষ্ঠ সৃষ্টি হলেন মহানবী হযরত মুহাম্মাদ (সা) এবং তাঁর পর সর্বশ্রেষ্ঠ সৃষ্টি হলেন আমিরুল মু'মিনিন হযরত আলী (আ)। আর তাঁর পরই সর্বশ্রেষ্ঠ সৃষ্টি হলেন হযরত ফাতিমা। তাই এমন ব্যক্তিদের মহিমা ও মহত্ত্ব পুরোপুরি তুলে ধরা মহান আল্লাহর পর কেবল এই তিন শীর্ষ সৃষ্টির পক্ষেই সম্ভব। বলা হয় ইমাম হাসান ও হুসাইনসহ মাওলা মোহাম্মদ রাসুলুল্লাহর আহলে বাইতের ১১ জন সদস্য মা ফাতিমাকে তাঁদের জন্য আদর্শ বা হুজ্জাত বলে মনে করতেন।এমন কোনো নারীর কথা কি কল্পনা করা যায় যিনি তার দুই শিশু-সন্তানসহ তিন দিন ধরে ক্ষুধার্ত হওয়া সত্ত্বেও স্বামীকে খাবার সংগ্রহের কথা বলছেন না ইসলামের জন্য তাঁর গুরুত্বপূর্ণ কাজে মনোযোগ বিঘ্নিত হবে বলে? অথবা এমন নারীর কথা কি চিন্তা করা যায় যিনি পর পর তিন দিন শুধু পানি পান করে রোজা রাখা সত্ত্বেও ইফতারের সময় ক্ষুধার্ত সাহায্যপ্রার্থীকে খাদ্য দেয়ার জন্য সেই তিন দিন কেবল পানি দিয়েই ইফতার করেন? আসলে হযরত ফাতিমা যাহরা ছিলেন মানবজাতির চিরন্তন গৌরব ও আদর্শ মানুষের প্রতীক তথা মানবতা ও মনুষ্যত্বের পূর্ণতারঅন্যতম মডেল। এ ধরনের মানুষ পৃথিবীতে জন্ম না নিলে আদর্শের দিক থেকে মানবজাতির মধ্যে বিরাজ করতো ব্যাপক অপূর্ণতা এবং আদর্শিক শূন্যতা। মাওলা মোহাম্মদ সাঃ এর পুত্র সন্তানরা শৈশবেই ইন্তিকাল করায় মক্কার কাফিররা যখন মহানবীকে আবতার বা নির্বংশ বলে বিদ্রূপ করতো তখন মহান আল্লাহ তাঁকে দান করেন হযরত ফাতিমা যাহরা। পবিত্র কুরআনে তাঁকে উল্লেখ করা হয়েছে 'কাওসার' হিসেবে যার অর্থ মহত্ত্ব আর নেয়ামতের চির-প্রবহমান ঝর্ণা। আল্লামা ফখরুদ্দীন রাযী বলেছেন, হযরত ফাতিমার শানেই সুরা কাওসার নাযিল হয়েছে। তিনি বলেন, অনেক অত্যাচার সত্ত্বেও হযরত ফাতিমার বংশধারা পৃথিবীতে টিকে আছে, অন্যদিকে বনু উমাইয়্যা ধ্বংস হয়ে গেছে।অবশ্য পরবর্তী যুগে বনু আব্বাসও রাসূলের পরিবারের ওপর নিষ্ঠুর নির্যাতন চালিয়েছিল। অবশেষে তারাও ধ্বংস হয়ে গেছে। যারা রাসূলের বিরুদ্ধে কথা বলত তাদের বংশধরদের কোন খবর পৃথিবীর মানুষ জানে না, নেয় না। রাসূলের বংশধরদের নিশ্চিহ্ন করার জন্য সব ধরনের চেষ্টা করেও তারা সফল হয়নি। একের পর এক রাসূলের বংশধরদের শহীদ করা সত্ত্বেও যারা পুত্রসন্তান নিয়ে গর্ব বোধ করত তাদের কোন খবর আজ বিশ্ববাসী জানে না, অথচ রাসূলের বংশধারা হযরত ফাতিমার মাধ্যমে কিয়ামত পর্যন্ত বজায় থাকবে। এ বংশেই ইমাম মাহদী (আ.) আবির্ভূত হবেন এবং তিনি সারা বিশ্বে আল্লাহর ধর্মকে প্রতিষ্ঠিত করবেন। রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘সকল নারীর সন্তানকে যুক্ত করা হয় বাবার সাথে শুধু ফাতিমা ছাড়া। ফাতিমার সন্তানদের আমার সাথে সম্পর্কিত করা হয়েছে।’আর সেজন্যই আমরা ইতিহাসে দেখতে পাই যে, হযরত ফাতিমার সন্তানদের মানুষ ‘ইয়াবনা রাসূলিল্লাহ’ অর্থাৎ ‘হে রাসূলের সন্তান’ বলে সম্বোধন করত।মহান আল্লাহর নির্দেশে মহানবী (সা.) তাঁর কন্যা সন্তানের নাম রাখেন ফাতিমা। ‘ফাত্‌ম্‌’ শব্দের অর্থ রক্ষা করা। এ সম্পর্কে মহানবী বলেন : ‘তাঁর নামকরণ করা হয়েছে ফাতিমা। কারণ, আল্লাহ তাঁকে ও তাঁর অনুসারীদের জাহান্নামের আগুন থেকে মুক্ত রেখেছেন।’ হজরত ফাতিমা(সা) আদর্শ মানবাত্মার প্রতীকহযরত ফাতিমা ছিলেন নারী ও পুরুষ তথা গোটা মানব জাতির জন্য অসাধারণ ত্যাগ, বিশ্বস্ততা, অন্যায়ের ব্যাপারে আপোসহীনতা, সততা, দানশীলতা, ধৈর্য, চারিত্রিক পবিত্রতা, আল্লাহর প্রতি সন্তুষ্টিসহ বহু মহান স্বর্গীয় গুণের আদর্শ। স্নেহময়ী জননীর মত বিশ্বনবীর সেবা-যত্ন করা এবং বিপদের সময় তাঁর সহায়তায় এগিয়ে আসার জন্য মহীয়সী নারী ফাতিমা'র অন্য একটি উপাধি উম্মে আবিহা বা পিতার জননী। বিশ্বনবী (সা:) তাঁকে সর্বযুগের শ্রেষ্ঠ নারী বলে উল্লেখ করেছেন। আল্লাহর দরবারে তাঁর বিশেষ মর্যাদার কারণেই ফাতিমাকে দেখলে দাঁড়িয়ে তাকে সালাম দিতেন মহানবী (সা)। রাসুলে খোদা বলেছেন, 'ফাতিমা আমার দেহের অংশ, যা কিছু তাঁকে সন্তুষ্ট করে তা আমাকে সন্তুষ্ট করে এবং যা কিছু আমাকে সন্তুষ্ট করে তা আল্লাহকেও সন্তুষ্ট করে, আর যা কিছু ফাতিমা কে কষ্ট দেয়, তা আমাকে কষ্ট দেয়, আর যা আমাকে কষ্ট দেয়, তা আল্লাহকেও কষ্ট দেয়।' হযরত ফাতিমা বেহেশতে সর্ব প্রথম প্রবেশ করবেন বলে বিশ্বনবী উল্লেখ করেছেন। অনেকেই মনে করেন প্রিয় কন্যা ফাতিমাকে নিজের দেহের অংশ বলে মহানবী (সা) এটাও বুঝিয়েছেন যে পিতার রিসালাতের অন্যতম কাণ্ডারি ছিলেন ফাতিমা। এই মহীয়সী নারীর অনন্য ত্যাগ-তিতিক্ষা ও সেবা না থাকলে ইসলাম বিলুপ্ত হয়ে যেত।হযরত ফাতিমাকে কেউ কেউ কষ্ট দেবেন- এটা জানতেন বলেই বিশ্বনবী (সা) তাঁকে রাগানোর পরিণতি সম্পর্কে সতর্ক করে দিয়ে বলেছেন, ‘ফাতিমা আমার অস্তিত্বের অংশ। যে তাঁকে রাগান্বিত করে সে আমাকে রাগান্বিত করে এবং ফাতিমা কোন ব্যাপারে ক্রুদ্ধ হলে আল্লাহও ক্রুদ্ধ হন এবং ফাতিমার আনন্দে আল্লাহও আনন্দিত হন।’অনেক মহৎ গুণের আদর্শ হযরত ফাতিমার রয়েছে অনেক উপাধি। যেমন, তাঁর উপাধি ছিল আস-সিদ্দিক্বা বা সত্য-নিষ্ঠ,আল-মুবারাকাহ বা বরকতপ্রাপ্ত,আত-ত্বাহিরা বা পবিত্র,আল-মারজিয়া বা আল্লাহর প্রতি সন্তুষ্ট, আজ জাকিয়া বা সতী, মুহাদ্দিসাহ বা হাদিসের বর্ণনাকারী, সাইয়্যিদাতুন নিসায়িল আলামিন বা নারীকুলের মধ্যে শ্রেষ্ঠ, খাতুনে জান্নাত বা বেহেশতি নারীদের নেত্রী, আয যাহরা বা দ্যুতিময় ইত্যাদি। আর পিতা মহানবীর প্রতি অশেষ ভালোবাসা ও সেবার কারণে তাঁকে বলা হত উম্মে আবিহা বা পিতার মাতা।হযরত ফাতিমা যখন নামাজের জন্য দাঁড়াতেন তখন তাঁর জ্যোতি আকাশের ফেরেশতা ও অন্যান্যদের দিকে ছড়িয়ে পড়ত। আর এ কারণে তাঁকে যাহরা উপাধি দেয়া হয়।রাসুল (সা)’র ওফাতের পর তাঁকে সান্ত্বনা দিতে আসতেন ওহির ফেরেশতা। ওহির ফেরেশতা তাঁকে ভবিষ্যৎ বিষয়ে অনেক কিছু জানান। আর তার থেকে সেসব বিষয় লিখে রাখেন হযরত আলী (আ)। আর এ জন্যই ফাতিমাকে বলা হয় মুহাদ্দিসা।হযরত ফাতিমা খুবই সাধারণ জীবন যাপন করতেন। সংসারের যাবতীয় কাজ তিনি নিজের হাতে করতেন। মশক দিয়ে পানি তুলতে তুলতে তাঁর শরীরে দাগ পড়ে গিয়েছিল। তিনি যাঁতার মাধ্যমে এত পরিমাণ আটা তৈরি করতেন যে, তাঁর হাতে ফোস্কা পড়ে যেত। আর সেই আটা দিয়ে রুটি তৈরি করে সেগুলো মদীনার দরিদ্রদের মধ্যে বিতরণ করতেন। হযরত ফাতিমার কাপড়ের পোশাকে থাকতো তালি। পার্থিব কোন বস্তুই তাঁকে আকৃষ্ট করতে পারত না। আর এজন্যই রাসূল (সা.) তাঁকে ‘বাতুল’ উপাধিতে ভূষিত করেছিলেন।হযরত ফাতিমা সারারাত জেগে নামায পড়তেন, মহান আল্লাহর যিকির করতেন এবং রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর উম্মতের জন্য দো‘আ করতেন। তিনি এত বেশি নামায পড়তেন যে, তাঁর পা ফুলে যেত। সংসারের কাজ করার সময়ও তাঁর মুখে আল্লাহর যিকির থাকত।রাসূলের স্ত্রী হযরত উম্মে সালামাহ্ বলেন : রাসূলের ওফাতের পর ফাতিমাকে দেখতে যাই এবং তাঁর অবস্থা জানতে চাই। তিনি জবাব দিলেন : অত্যন্ত দুঃখ-কষ্টে দিন অতিবাহিত হচ্ছে।এ রকম কষ্টের মধ্য দিয়েই রাসূলুল্লাহ্ (সা.)-এর ওফাতের অল্প কিছুদিন পরই হযরত ফাতিমা এ পৃথিবী থেকে বিদায় নেন। রাসূলে খোদা ওফাতের আগে হযরত ফাতিমার কানে কানে বলে গিয়েছিলেন যে, তিনিই তাঁর সাথে প্রথম মিলিত হবেন। নিশ্চয়ই মহান আল্লাহ তাঁর প্রিয় রাসূলকে এও জানিয়েছিলেন যে, কীভাবে হযরত ফাতিমা তাঁর সাথে এত তাড়াতাড়ি মিলিত হবেন। আর সেজন্যই রাসূল (সা.) বারবার তাঁর উম্মতকে সতর্ক করছেন যে,তারা যেন হযরত ফাতিমাকে কষ্ট না দেয়,তাঁকে অসন্তুষ্ট না করে। হযরত ফাতিমা যাহরা পিতার শারীরিক বিদায়ের কারণে যতটা না দুঃখ পেয়েছিলেন তার চেয়েও বেশি ব্যথা পেয়েছিলেন পিতার আদর্শ তথা ইসলামের শিক্ষা ম্লান ও বিকৃত হয়ে পড়ার কারণে। রাসুলে খোদার কাছেই তিনি শুনেছিলেন তাঁর পবিত্র আহলে বাইতের ওপর অনেক বিপদ ও মুসিবত তথা ইসলামের ওপরই অনেক দুর্যোগ নেমে আসবে। আর সেইসব বিপদ মুকাবিলার মত কঠিন ধৈর্যের খোদায়ী পরীক্ষায়ও উত্তীর্ণ হয়েছিলেন সর্বকালের সেরা মহামানবী হযরত ফাতিমা ঠিক যেভাবে সিফফিন ও কারবালা প্রান্তরসহ যুগে যুগে নানা বিপদ, সংকট ও শত্রুতার মোকাবেলায় উত্তীর্ণ হয়েছিলেন বিশ্বনবী (সা)’র পবিত্র আহলে বাইতের অন্যান্য সদস্য।কোনো কোনো ঐতিহাসিক বর্ণনা অনুযায়ী রাজনৈতিক কারণে হযরত ফাতিমাকে আহত করা হয়েছিল প্রভাবশালী মহলের পক্ষ হতে এবং পরবর্তীকালে এ আঘাতজনিত কারণেই তিনি শাহাদাত বরণ করেন। ফাতিমা আমার দেহের অঙ্গ, চোখের জ্যোতি, অন্তরের ফল এবং আমার রূহস্বরূপ: মহানবী (সা)অনেকেই মনে করেন শত্রুতার প্রেক্ষাপটে হযরত ফাতিমাকে দাফন করা হয়েছিল মধ্যরাতে গোপনীয়ভাবে অতি গোপন স্থানে যা আজো গোপন রয়েছে এবং কিয়ামত পর্যন্ত গোপন থাকবে। হযরত ফাতিমা জানতেন কখন তাঁর মৃত্যু হবে। আর এ জন্য তিনি নিজে গোসল করে নতুন ও পরিষ্কার পোশাক পরে কিবলামুখী হয়েছিলেন।তিনি নিজের মৃত্যু কবে হবে এবং তাঁর দুই প্রিয় সন্তান হযরত হাসান ও হুসাইন কিভাবে মারা যাবেন সেইসব তথ্যসহ ভবিষ্যৎ ইতিহাসের অনেক খবর রাখতেন। হুসাইন (আ.)'র হত্যাকারীদের অভিশাপ দিয়ে গেছেন তিনি। মদিনার নারী সমাজ ধর্মীয় বিষয়সহ নানা বিষয়ে জ্ঞান অর্জন করত হযরত ফাতিমার কাছ থেকে। ফাদাক সম্পর্কিত তাঁর ভাষণ এই মহামানবীর অতুল জ্ঞান, খোদাভীরুতা এবং দূরদর্শিতাকেই তুলে ধরে।মাওলা মোহাম্মদ (সা.) বলেছেন, মহান আল্লাহ আলী, তাঁর স্ত্রী ও তাঁদের সন্তানদেরকে মানুষের জন্য হুজ্জাত বা দলিল করেছেন এবং তাঁরা হল জ্ঞানের দরজা।মহান আল্লাহর ইচ্ছায় হিজরতের দ্বিতীয় বর্ষে বা দ্বিতীয় হিজরিতে হযরত ফাতিমা যাহ্‌রা (সা.আ.) বিবাহ-বন্ধনে আবদ্ধ হন আমিরুল মু'মিনিন হযরত আলী (আ.)'র সঙ্গে। আলী (আ.) ছিলেন সত্য, ন্যায়বিচার ও খোদাভীরুতার প্রতীক। আলী (আ.)'র ঘরে তিনি হন আদর্শ স্ত্রী ও মাতা। গড়ে তোলেন বেহেশতি যুবকদের সর্দার হযরত ইমাম হাসান, ইমাম হুসাইন (আ.) এবং জাইনাব (সা.)'র মত ইসলামের ইতিহাসের প্রবাদতুল্য গৌরব সৃষ্টিকারী অনন্য সন্তান। বিয়ের দিন এক দরিদ্র নারী নবী-নন্দিনীর কাছে পোশাক সাহায্য হিসেবে চাইলে তিনি নিজের বিয়ের জন্য তৈরি নতুন পোশাকটি তাকে দান করে দেন। এর মাধ্যমে তিনি কুরআনের এই আয়াতটি বাস্তবায়ন করেছিলেন যেখানে সর্বোত্তম ও প্রিয় বস্তু থেকে দান করতে বলা হয়েছে। ফাতিমা যাহ্‌রা (সা.আ.) মুসলিম সমাজের বিচ্যুতি ঠেকানোর জন্য ও সত্যের জন্য সংগ্রামের সামাজিক দায়িত্ব পালনের ক্ষেত্রেও নজিরবিহীন দৃষ্টান্ত প্রতিষ্ঠায় সক্ষম হন। নারীমুক্তির আদর্শ হিসেবে এই মহামানবীর জন্মদিন ইরানসহ বিশ্বের বিভিন্ন অঞ্চলে পালিত হয় নারী ও মা দিবস হিসেবে। মাওলা হযরত মুহাম্মাদ (সা:) হযরত ফাতিমা (সা:) সম্পর্কে বলেছেন, ফাতিমা আমার দেহের অঙ্গ, চোখের জ্যোতি, অন্তরের ফল এবং আমার রূহস্বরূপ। সে হচ্ছে মানুষরূপী স্বর্গীয় হুর। প্রসিদ্ধ হাদীস গ্রন্থ বুখারীতে এসেছে, মহানবী (সা:) বলেছেন, ফাতিমা আমার অংশ। যে কেউ তাকে অসন্তুষ্ট ও ক্রোধান্বিত করলো সে আমাকেই অসন্তুষ্ট ও ক্রোধান্বিত করলো। একই ধরনের হাদীস বর্ণিত হয়েছে মুসলিম শরীফ ও আহমদ ইবনে শুয়াইব নাসায়ীর ফাজায়েল গ্রন্থসহ আরো অনেক হাদীস গ্রন্থে। হাদীসে এটাও এসেছে যে যা আল্লাহর রসূল (সা:)কে অসন্তুষ্ট করে তা আল্লাহকেও অসন্তুষ্ট বা ক্রুদ্ধ করে। হযরত ফাতিমা (সা:)'র উচ্চতর মর্যাদা উপলব্ধি করার জন্য কেবল এ হাদীসই যথেষ্ট। বিশ্বনবী (সা:)'র আহলে বাইত (আঃ)'র সদস্য হযরত ফাতিমা যে নিষ্পাপ ছিলেন তাও এসব বর্ণনা থেকে স্পষ্ট। হযরত ফাতিমা (সা:)'র সান্নিধ্য ও সেবা না পেলে আমীরুল মুমিনীন হযরত আলী (আঃ)'র জীবনও পুরোপুরি বিকশিত ও পরিপূর্ণতা লাভ করতো না। তাঁরা ছিলেন একে-অপরের প্রতি পুরোপুরি সন্তুষ্ট। বিশ্বনবী হযরত মুহাম্মাদ (সা:) হযরত ফাতিমা (সা:)-কে মানুষের আকৃতিতে ফেরেশতা বলেও প্রশংসা করেছেন। তিনি বলতেন, আমি যখনই বেহেশতের সুবাস পেতে চাইতাম তখনই কন্যা ফাতিমার ঘ্রাণ নেই।আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য রাত জেগে ইবাদত-বন্দেগী করা ছাড়াও প্রায়ই রোজা রাখা ও গরীব-দুঃখীকে অসাধারণ মাত্রায় দান-খয়রাত করা ছিল হযরত ফাতিমা (সা:)'র একটি বড় বৈশিষ্ট্য। জনসাধারণ বা কারো উদ্দেশ্যে যে কোনো বক্তব্য রাখার আগে দীর্ঘক্ষণ ধরে মহান আল্লাহর বিভিন্ন নেয়ামতের কথা খুব সুন্দর ও হৃদয়স্পর্শী ভাষায় তুলে ধরে আল্লাহর প্রশংসা করা ছিল তাঁর অন্য একটি বড় বৈশিষ্ট্য। বিশ্বনবী (সা:)'র আহলে বাইতের অন্য সদস্যদের মত তিনিও কখনও অন্যায়ের সাথে আপোষ করেন নি। আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য কাজ করা বা সক্রিয় থাকার মধ্যে তিনি খুঁজে পেতেন আনন্দ। হযরত ফাতিমা (সা:) বলেছেন, আল্লাহর সেবায় মশগুল হয়ে যে সন্তুষ্টি পাই তা আমাকে অন্য সব সন্তুষ্টি বা আনন্দ থেকে বিরত রাখে এবং সব সময় মহান আল্লাহর সুন্দর দৃষ্টি আমার দিকে নিবদ্ধ রাখার প্রার্থনা ছাড়া আমার অন্য কোনো প্রত্যাশা নেই। ফাতিমা সিদ্দিকা (সা. আ.) ঐশী পন্থায় অনেক জ্ঞান অর্জন করেছিলেন। 'মাসহাফই ফাতিমা' নামে খ্যাত গ্রন্থটির সমস্ত তথ্য সন্নিবেশিত হয়েছে জিবরাইল ফেরেশতার সঙ্গে ফাতিমা (সা. আ.)'র কথোপকথনের মাধ্যমে যা লিখে গেছেন হযরত আলী (আ.)। রাসূল (সা.)'র মৃত্যুর পর পিতার বিয়োগ-ব্যথায় কাতর ফাতিমাকে সান্ত্বনা দিতে আসতেন স্বয়ং জিবরাইল (আ.)। হযরত ফাতিমা ইমাম হুসাইন (আ.)'র হত্যাকারীদের অভিশাপ দিয়ে গেছেন। মদিনার নারী সমাজ ধর্মীয় বিষয়সহ নানা বিষয়ে জ্ঞান অর্জন করত ফাতিমা (সা.আ.)'র কাছ থেকে। ফাদাক ও মানজিল শীর্ষক তাঁর ভাষণ এই মহামানবীর অতুল জ্ঞান, খোদাভীরুতা এবং দূরদর্শিতাকেই তুলে ধরে।নবী-নন্দিনী (সা:) বলেছেন, পৃথিবীতে তিনটি জিনিস আমার খুবই প্রিয়। আল্লাহর পথে ব্যয়, রাসূলে খোদা (সা:)র চেহারার দিকে তাকানো এবং কুরআন তিলাওয়াত। পবিত্র কুরআনের আয়াত শ্রবণ মুসলমানদেরকে মুক্তির তীরে পৌঁছে দেয়। ফাতিমা (সা. আ.) রাসূল (সা.)'র উম্মতের উদ্দেশে বলেছেন: আল্লাহ ঈমানকে তোমাদের জন্য শির্ক হতে পবিত্র হওয়ার ও নামাজকে অহংকার থেকে পবিত্র হওয়ার এবং আমাদের আনুগত্য করাকে ধর্মের ব্যবস্থায় বা ধর্মকে প্রতিষ্ঠিত করার মাধ্যম করেছেন, আমাদের নেতৃত্বকে অনৈক্যের পথে বাধা ও আমাদের সঙ্গে বন্ধুত্বকে ইসলামের জন্য সম্মানের মাধ্যম করেছেন। ফাতিমা বা তাঁর বংশধরদের কেউই ঐশী সম্মানকে পার্থিব ভোগের কাজে লাগান নি। আত্মত্যাগের বিশালত্বে ফাতিমা এবং তাঁর বংশধররা ইতিহাসে অনন্য। ফাতিমার ত্যাগের শিক্ষাই হল কারবালার শিক্ষা। এ শিক্ষা আজও জুলুম-নিপীড়নের বিরুদ্ধে প্রতিরোধের আদর্শ। সত্যকে জানতে হলে, স্রষ্টার পথ চিনতে হলে এবং স্বাধীন ভাবে বেঁচে থাকতে হলে ধরতে হবে হযরত ফাতিমার পথ। তাই হজরত ফাতিমা(সা) আদর্শ মানবাত্মার প্রতীকবেশুমার লানত বর্ষিত হোক দুশমনে আহলে বায়েত পারআল্লাহুম্মা সাল্লে আলা মোহাম্মদদিন ওয়া আলে মোহাম্মদ ওয়া আজ্জিল ফারজাহুম31=12=202