ব্যবসায়ী হযরত আবু তালিব আঃ ও কিশোর নবী মোহাম্মদ (সাঃ.)পর্ব (১)হযরত আবু তালিব তাঁর পিতা আব্দুল মোতালিবের নিকট থেকে ভাতিজা মোহাম্মদের পৃষ্ঠপোষকতার দায়িত্বপ্রাপ্তির পর থেকে কখনও তাঁকে একা ছেড়ে দেননি। সার্বক্ষণিক নিজে অথবা তাঁর পরিবারের লোক সমেত ভাতিজাকে আগলে রেখেছেন। তিনি ছিলেন তৎকালীন আরবের বিশিষ্ট ব্যবসায়ী। হযরত আবু তালিব নিজের ব্যবসায়িক কাজেও মোহাম্মদ (সা.)-কে সাথে নিয়ে যেতেন। ভাতিজাকে নিয়ে তিনি যতবার ব্যবসয়িক সফরে গিয়েছেন ততবারই অকল্পনীয় সাফল্য তাঁর দৃষ্টিগোচর হয়। তিনি বুঝতে পেরেছিলেন মোহাম্মদ কোনো সাধারণ মানুষ নহেন।একবার দামেশকের সন্নিকটে হযরত আবু তালিবের কাফেলা পৌঁছালে , বুহায়রা নামক এক খ্রীষ্টান পাদ্রী ঐ কাফেলার সকলকে তার মেহমান হওয়ার জন্য আমন্ত্রণ জানান। তখন ১২ বছরের নবী মোহাম্মদ (সা.)-কে মালামাল রক্ষার প্রহরায় রেখে সকলেই বুহায়রার দরবারে উপস্থিত হলেন। বুহায়রা বললেন ,“ যাঁর উদ্দেশ্যে আমি আপনাদের আমন্ত্রণ জানালাম তিনিই তো আসলেন না” । বুহায়রা নিজে গিয়ে কিশোর নবীকে স্বসম্মানে নিজ দরবারে নিয়ে আসলেন।আপ্যায়ন শেষে বুহায়রা সকলের অগোচরে নবী মোহাম্মদ (সা.) ও হযরত আবু তালিবকে উদ্দেশ্য করে বললেন ,“ হে আবু তালিব আপনি অত্যন্ত ভাগ্যবান যে , আপনার বংশে আল্লাহর মনোনীত শেষ নবী‘ মোহাম্মদ’ রয়েছেন। যিনি আদম সন্তানদের মধ্যে সর্বশ্রেষ্ঠ। আপনাদের আগমণের বার্তা আমি আগে থেকেইে অবগত আছি। কারণ আমাদের ইঞ্জিল কিতাবে মোহাম্মদের বিষয়ে উল্লেখ রয়েছে। আর আপনারা যখন আমার এলাকায় প্রবেশ করেন তার পূর্ব থেকেই একখণ্ড মেঘ আপনাদের ছায়া দিয়ে আসছিল। যখন আপনারা সকলে আমার দরবারে এলেন তখনও মেঘটি কাফেলার স্থানে স্থির ছিল। এতে আমি নিশ্চিত হলাম যে , কিতাবে উল্লিখিত নবী মোহাম্মদ এখনও আমার দরবারে উপস্থিত হননি। তাই আমি নিজে গিয়ে নবী আপনাকে নিয়ে আসলাম। আর মেঘ খন্ডটিও আমাদের সাথে চলতে শুরু করল” ।বুহায়রা আরও বললেন ,“ হে আবু তালিব! আপনি অতি শীঘ্রই দামেষ্ক ত্যাগ করুন। কারণ মোহাম্মদের প্রচুর শত্রু রয়েছে। আর হে মোহাম্মদ! আপনি যখন আল্লাহর একত্ববাদের পরিপূর্ণ মিশন শুরু করবেন , তখন যদি আমি বেঁচে থাকি তাহলে আমিও আপনার সাহায্যকারী হবো।” বুহায়রার মুখে ভাতিজার খোদায়ী মিশনের কথা শুনে হযরত আবু তালিব আল্লাহর দরবারে শুকরিয়া আদায় করলেন আর ভাবলেন , মহান আল্লাহ তাঁরই বংশকে শেষ নবী (সা.)-এর আগমণের জন্য নির্বাচিত করেছেন। এক অনাবিল স্বর্গীয় প্রশান্তি তাঁর হৃদয় প্রাণে দোলা দিতে লাগল। এই ব্যবসায়িক সফর শেষে হযরত আবু তালিব আরো সতর্ক হলেন। মোহাম্মদ (সা.)-এর আত্মরক্ষায় নিজে এবং তাঁর সন্তানদের সার্বক্ষণিক নিয়োজিত রাখলেন।৮হযরত আবু তালিব আঃ এর নিকট কাফেরদের অভিযোগযে মোহাম্মদ (সা.)-এর শিশু-কিশোর ও যৌবনকাল আরবের কাফের-মুশরিক ও আরব অনারবদের মাঝে অতিবাহিত হয়েছে , যারা তাঁর চরিত্রমাধুরীতে মুগ্ধ হয়ে তাঁর নাম রেখেছিল‘ আল-আমিন’ অর্থাৎ সত্যবাদী , যারা মোহাম্মদ (সা.)-এর দেয়া সমাধান মেনে নিত অনায়াসে। মাত্র আট বছর বয়সে যিনি‘ হজরে আসওয়াদ’ নামক কালো পাথর স্থানান্তর নিয়ে উদ্ভূত গোত্রীয় দ্বন্দ্বের শান্তিময় সমাধান করেছিলেন। পাথরটি চাদরের মাঝখানে রেখে চার গোত্রপতিকে চার কোন ধরার মাধ্যমে তা স্থানান্তর ও নির্দিষ্ট স্থানে স্থাপনের পরামর্শ প্রদান পূর্বক নিষ্পত্তি করেন। এতে সকলে তাঁর প্রতি সন্তুষ্ট ছিল।আবার সেই কাফেরাই তাঁর বিরুদ্ধে অপবাদ , কুৎসা রটনা ও অস্ত্রধারণ এমনকি তাঁকে হত্যা করার পরিকল্পনাও গ্রহণ করে , কারণ ছিল মোহাম্মদ (সা.) তাদের বাপ-দাদার ধর্মের বিরুদ্ধে কথা বলেন। তিনি একাধিক দেব-দেবীর বিপক্ষে ও এক আল্লাহর পক্ষে কথা বলেন। এটাই মোহাম্মদ (সা.)-এর জন্য কাল হয়ে দাঁড়িয়েছে।লা'নাতুল্লাহি আল্লাল কাজেবিনবেশুমার লানত বর্ষিত হোক ওই সব অন্ধদের উপর
ব্যবসায়ী হযরত আবু তালিব আঃ ও কিশোর নবী মোহাম্মদ (সাঃ.)
পর্ব (১)
হযরত আবু তালিব তাঁর পিতা আব্দুল মোতালিবের নিকট থেকে ভাতিজা মোহাম্মদের পৃষ্ঠপোষকতার দায়িত্বপ্রাপ্তির পর থেকে কখনও তাঁকে একা ছেড়ে দেননি। সার্বক্ষণিক নিজে অথবা তাঁর পরিবারের লোক সমেত ভাতিজাকে আগলে রেখেছেন। তিনি ছিলেন তৎকালীন আরবের বিশিষ্ট ব্যবসায়ী। হযরত আবু তালিব নিজের ব্যবসায়িক কাজেও মোহাম্মদ (সা.)-কে সাথে নিয়ে যেতেন। ভাতিজাকে নিয়ে তিনি যতবার ব্যবসয়িক সফরে গিয়েছেন ততবারই অকল্পনীয় সাফল্য তাঁর দৃষ্টিগোচর হয়। তিনি বুঝতে পেরেছিলেন মোহাম্মদ কোনো সাধারণ মানুষ নহেন।
একবার দামেশকের সন্নিকটে হযরত আবু তালিবের কাফেলা পৌঁছালে , বুহায়রা নামক এক খ্রীষ্টান পাদ্রী ঐ কাফেলার সকলকে তার মেহমান হওয়ার জন্য আমন্ত্রণ জানান। তখন ১২ বছরের নবী মোহাম্মদ (সা.)-কে মালামাল রক্ষার প্রহরায় রেখে সকলেই বুহায়রার দরবারে উপস্থিত হলেন। বুহায়রা বললেন ,“ যাঁর উদ্দেশ্যে আমি আপনাদের আমন্ত্রণ জানালাম তিনিই তো আসলেন না” । বুহায়রা নিজে গিয়ে কিশোর নবীকে স্বসম্মানে নিজ দরবারে নিয়ে আসলেন।
আপ্যায়ন শেষে বুহায়রা সকলের অগোচরে নবী মোহাম্মদ (সা.) ও হযরত আবু তালিবকে উদ্দেশ্য করে বললেন ,“ হে আবু তালিব আপনি অত্যন্ত ভাগ্যবান যে , আপনার বংশে আল্লাহর মনোনীত শেষ নবী‘ মোহাম্মদ’ রয়েছেন। যিনি আদম সন্তানদের মধ্যে সর্বশ্রেষ্ঠ। আপনাদের আগমণের বার্তা আমি আগে থেকেইে অবগত আছি। কারণ আমাদের ইঞ্জিল কিতাবে মোহাম্মদের বিষয়ে উল্লেখ রয়েছে। আর আপনারা যখন আমার এলাকায় প্রবেশ করেন তার পূর্ব থেকেই একখণ্ড মেঘ আপনাদের ছায়া দিয়ে আসছিল। যখন আপনারা সকলে আমার দরবারে এলেন তখনও মেঘটি কাফেলার স্থানে স্থির ছিল। এতে আমি নিশ্চিত হলাম যে , কিতাবে উল্লিখিত নবী মোহাম্মদ এখনও আমার দরবারে উপস্থিত হননি। তাই আমি নিজে গিয়ে নবী আপনাকে নিয়ে আসলাম। আর মেঘ খন্ডটিও আমাদের সাথে চলতে শুরু করল” ।
বুহায়রা আরও বললেন ,“ হে আবু তালিব! আপনি অতি শীঘ্রই দামেষ্ক ত্যাগ করুন। কারণ মোহাম্মদের প্রচুর শত্রু রয়েছে। আর হে মোহাম্মদ! আপনি যখন আল্লাহর একত্ববাদের পরিপূর্ণ মিশন শুরু করবেন , তখন যদি আমি বেঁচে থাকি তাহলে আমিও আপনার সাহায্যকারী হবো।” বুহায়রার মুখে ভাতিজার খোদায়ী মিশনের কথা শুনে হযরত আবু তালিব আল্লাহর দরবারে শুকরিয়া আদায় করলেন আর ভাবলেন , মহান আল্লাহ তাঁরই বংশকে শেষ নবী (সা.)-এর আগমণের জন্য নির্বাচিত করেছেন। এক অনাবিল স্বর্গীয় প্রশান্তি তাঁর হৃদয় প্রাণে দোলা দিতে লাগল। এই ব্যবসায়িক সফর শেষে হযরত আবু তালিব আরো সতর্ক হলেন। মোহাম্মদ (সা.)-এর আত্মরক্ষায় নিজে এবং তাঁর সন্তানদের সার্বক্ষণিক নিয়োজিত রাখলেন।৮
হযরত আবু তালিব আঃ এর নিকট কাফেরদের অভিযোগ
যে মোহাম্মদ (সা.)-এর শিশু-কিশোর ও যৌবনকাল আরবের কাফের-মুশরিক ও আরব অনারবদের মাঝে অতিবাহিত হয়েছে , যারা তাঁর চরিত্রমাধুরীতে মুগ্ধ হয়ে তাঁর নাম রেখেছিল‘ আল-আমিন’ অর্থাৎ সত্যবাদী , যারা মোহাম্মদ (সা.)-এর দেয়া সমাধান মেনে নিত অনায়াসে। মাত্র আট বছর বয়সে যিনি‘ হজরে আসওয়াদ’ নামক কালো পাথর স্থানান্তর নিয়ে উদ্ভূত গোত্রীয় দ্বন্দ্বের শান্তিময় সমাধান করেছিলেন। পাথরটি চাদরের মাঝখানে রেখে চার গোত্রপতিকে চার কোন ধরার মাধ্যমে তা স্থানান্তর ও নির্দিষ্ট স্থানে স্থাপনের পরামর্শ প্রদান পূর্বক নিষ্পত্তি করেন। এতে সকলে তাঁর প্রতি সন্তুষ্ট ছিল।
আবার সেই কাফেরাই তাঁর বিরুদ্ধে অপবাদ , কুৎসা রটনা ও অস্ত্রধারণ এমনকি তাঁকে হত্যা করার পরিকল্পনাও গ্রহণ করে , কারণ ছিল মোহাম্মদ (সা.) তাদের বাপ-দাদার ধর্মের বিরুদ্ধে কথা বলেন। তিনি একাধিক দেব-দেবীর বিপক্ষে ও এক আল্লাহর পক্ষে কথা বলেন। এটাই মোহাম্মদ (সা.)-এর জন্য কাল হয়ে দাঁড়িয়েছে।
লা'নাতুল্লাহি আল্লাল কাজেবিন
বেশুমার লানত বর্ষিত হোক ওই সব অন্ধদের উপর
মন্তব্যসমূহ