পোস্টগুলি

মার্চ, ২০২২ থেকে পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে

মা খাতুনে জান্নাত ফাতেমা বিনতে মোহাম্মদ (আ.) এর ঘরের সম্মান হানি(পর্ব ১)হ্যাঁ ,এতটা তাগিদ ও সুপারিশ করার পরেও আফসোস যে এমন কিছু অসম্মানজনক ব্যবহার নবী নন্দিনীর সাথে করা হয়েছে যে তা সহ্য করার মত নয়। আর এ এমন একটা সমস্যা যে কারো দোষ আড়াল করা ঠিক নয়।আমি এই ব্যাপারে সমস্ত উক্তি আহলে সুন্নত ওয়াল জমায়েতের গ্রন্থসমূহ হতে উল্লেখ করব ,যাতে এই বিষয়টি পরিষ্কার হয়ে যায় যে হজরত ফাতিমা জাহরা (সা.) এর গৃহের সম্মানহানি ও পরবর্তী ঘটনাগুলি ঐতিহাসিকভাবে অকাট্য সত্য এবং এটি কোন অসত্য ঘটনা নয়! যদিও খলিফাদের যুগে ব্যাপকভাবে আহলে বাইতের গুণ ও মর্যাদাকে গোপন করা হয়েছে ,কিন্তু ইতিহাসের পাতায় ও হাদীসের গ্রন্থসমূহে এখনও পর্যন্ত তা জীবন্ত ও রক্ষিত আছে। আর আমি প্রথম শতাব্দী থেকে বর্তমান যুগ পর্যন্ত এ সম্পর্কে লেখা গ্রন্থের নাম ও লেখকের নাম উল্লেখ করব।১। ইবনে আবি শায়বা ও তার“ আল মুসান্নিফ ” পুস্তকআবুবকর ইবনে আবি শায়বা (১৫৯-২৩৫) আল মুসান্নিফ গ্রন্থের লেখক সহিহ সনদের সাথে এইভাবে লিপিবদ্ধ করেছেন:إنه حين بويع لابي بكر بعد رسول الله (ص) كان علي والزبير يدخلان علی فاطمة بنت رسول الله (ص)، فيشاورونها و يرتجعون في أمرهم، فلما بلغ ذلك عمر بن خطاب خرج حتي دخل علی فاطمة،فقال: يا بنت رسول الله (ص) والله ما أحدٌ أحب إلينا من أبيك وما من أحد أحب إلينا بعد أبيك منك، وأيم الله ما ذاك بمانعي إن اجتمع هؤلاء النفر عندك إن أمرتهم أن يحرق عليهم البيتقال: فلما خرج عمر جاؤوها، فقالت (ع): تعلمون أنّ عمر قد جاءني، وقد حلف بالله لئن عدتم ليحرقنّ عليكم البيت، وايم الله ليمضين لمّا حلف عليهঅর্থাৎ: যখন জনগণ আবুবকরের হাতে বাইয়াত করলেন ,হজরত আলী (আ.) ও যোবায়ের হজরত ফাতিমা (আ.) এর গৃহে পরামর্শ ও আলোচনা করছিলেন ,এই খবর উমর ইবনে খাত্তাবের কর্ণগোচর হল অতঃপর সে ফাতিমা (আ.) এর গৃহে এসে বলল: হে নবী নন্দিনী! আমার প্রিয়তম ব্যক্তি তোমার পিতা ,তোমার পিতার পর তুমি নিজে ; কিন্তু আল্লাহর কসম তোমাদের এই ভালোবাসা আমার জন্য বাধা সৃষ্টি করবে না তোমার এই ঘরে একত্রিত হওয়া ব্যক্তিদের উপর আগুন লাগানোর আদেশ দেওয়া থেকে যাতে তারা দগ্ধ হয়ে যায়। এই কথা বলে উমর চলে যায় ,অতঃপর হজরত আলী ও যোবায়ের গৃহে প্রত্যাবর্তন করেন ,হজরত ফাতিমা (আ.) আলী (আ.) ও যোবায়েরকে বললেন: উমর আমার নিকটে এসেছিল আল্লার কসম খেয়ে বলছিল যে যদি তোমাদের এই“ ইজতেমা ” সমাবেশ বন্ধ না হয় ,দ্বিতীয় বার অব্যাহত থাকে তাহলে তোমাদের গৃহকে জ্বালিয়ে দেব। আল্লার কসম! যার জন্য আমি কসম খেয়েছি অবশ্যই আমি সেটা করব।১১উল্লেখ্য এই ঘটনাকে“ আল মুসান্নিফ ” গ্রন্থে সহিহ সনদের সাথে উল্লেখ করেছে।২। বালাজুরী ও তার“ আনসাবুল আশরাফ ” গ্রন্থআহমাদ বিন ইয়াহিয়া জাবির বাগদাদী বালাজুরী (মৃত্যু:২৭০) বিখ্যাত লেখক ও মহান ঐতিহাসিক এই ঐতিহাসিক ঘটনাকে নিজের গ্রন্থ“ আনসাবুল আশরাফ ” এ এই ভাবে উল্লেখ করেছেন:إنّ أبابكر أرسل إلى علي يريد البيعة فلم يبايع، فجاء عمر و معه فتيلة: فتلقّته فاطمة علی البابفقالت فاطمة: بإبن الخطّاب: أتراك محرقاً عليّ بابي؟ قال: نعم و ذلك أقوى فيما جاء به أبوكঅর্থাৎ: আবুবকর হজরত আলী (আ.) এর বাইয়াত নেওয়ার জন্য (লোক) পাঠায় কিন্তু হজরত আলী (আ.) অস্বীকার করার ফলে উমর আগুনের ফলতে নিয়ে আসল ,দ্বারেই হজরত ফাতিমা (আ.) এর সঙ্গে সাক্ষাৎ হয়। হজরত ফাতিমা (আ.) বললেন: হে খাত্তাবের পুত্র! আমিতো দেখছি তুমি আমার ঘর জ্বালানোর পরিকল্পনা নিয়েছ ? উত্তরে উমর বলল: হ্যাঁ ,তোমার পিতা যার জন্য প্রেরিত হয়েছে (সেই কাজের সহযোগিতা ছাড়া অন্যকিছু নয়) আর এটা তার থেকেও গুরুত্বপূর্ণ।১২৩। ইবনে কুতাইবা ও তার“ আল ইমামাত ওয়াস সিয়াসাত ” গ্রন্থবিখ্যাত ঐতিহাসিক আব্দুল্লাহ বিন মুসলিম বিন কুতাইবা দিনাওয়ারী (২১২-২৭৬) তিনি সাহিত্যিকদের অন্যতম প্রধান ও ইসলামী ইতিহাস লেখকদের মধ্যে একজন ,তাঁর সংকলিত পুস্তক“ তাভিলে মুখতালাফুল হাদীছ ” ও“ আদাবুল কাতিব ” ইত্যাদি। তিনি তাঁর“ আল ইমামাত ওয়া সেয়াসাত ” গ্রন্থে এমনি লিপিবদ্ধ করেছেন:إنّ أبا بكر رضي الله عنه تفقد قوماً تخلّفوا عن بيعته عند علي كرّم الله وجهه فبعث إليهم عمر فجاء فناداهم وهم في دار علي، فأبوا أن يخرجوا فدعا بالحطب و قال: والّذي نفس عمر بيده لتخرجنّ أو لأحرقنّها علی من فيها، فقيل له: يا أبا حفص إنّ فيها فاطمة، فقال: وإن !অর্থাৎ: যাঁরা আবুবকরের হাতে বাইয়াত করেন নি তাঁরা হজরত আলী (আ.) এর গৃহে একত্রিত হয়ে ছিলেন ,আবুবকর খবর পাওয়ায় ওমরকে অনুসন্ধানের জন্য তাঁদের নিকটে পাঠাল ,সে হজরত আলী (আ.) এর গৃহে এসে সকলকে উচ্চস্বরে বলল ঘর থেকে বের হয়ে এস ,তাঁরা প্রত্যাখ্যান করেন ,ফলে উমর কাঠ তলব করল এবং বলল: তাঁর কসম যার হাতে উমরের জীবন আছে সকলে বাইরে এস নইলে যে ঘরে তোমরা আছ আগুন লাগিয়ে দেব। এক ব্যক্তি উমরকে বলল: হে হাফসার পিতা এই ঘরে রাসুলের কন্যা ফাতিমা (আ.) আছেন ,উমর বলল: থাকে থাকুক!১৩ইবনে কুতাইবা এই ঘটনাকে সবথেকে বেদনা দায়ক এবং কষ্ট দায়ক বলে উল্লেখ করেছেন ,তিনি বলেন:ثمّ قام عمر فمشى معه جماعة حتى أتوا فاطمة فدقوا الباب، فلمّا سمعت أصواتهم نادت بأعلى صوتها يا أبتاه رسول الله ماذا لقيناك بعدك من إبن الخطّاب وإبن أبي قحافة فلمّا سمع القوم صوتها و بكائها إنصرفوا. وبقى عمر ومعه قوم فأخرجوا علياً فمضوا به إلي أبي بكر فقالوا له بايع، فقال: إنّ أنا أفعل فمه؟ فقالوا: إذاً والله الذي لا إله إلا هو نضرب عنقكঅর্থাৎ: উমর একদল লোকের সাথে হজরত ফাতিমা (আ.) এর গৃহে এসে ঘরের দরজা করাঘাত করল ,যখন ফাতিমা (আ.) এদের শব্দ শুনলেন উচ্চস্বরে বললেন: হে রাসুলুল্লাহ আপনার পর আমাদের উপর খাত্তাবের ছেলে এবং আবি কুহাফার পুত্র কি যে মুসিবত নিয়ে এসেছে! যখন উমরের সাথিরা হজরত জাহরা (আ.) এর চিৎকার ও কান্না শুনলেন ,ফিরে গেলেন ,কিন্তু কিছু সংখ্যক লোক উমরের সাথে ছিল ,তারা হজরত আলী (আ.) কে ঘর থেকে বের করে আনল। আবুবকরের নিকটে নিয়ে এসে তাঁকে বলল: বাইয়াত করুন ,আলী (আ.) বললেন: যদি বাইয়াত না করি কি হবে ? তারা বলল: সেই খোদার শপথ যিনি ছাড়া কোন প্রতিপালক নেই ,তোমার শির গর্দান থেকে আলাদা করে দেব।১৪সুনিশ্চিতভাবে দুই খলীফার প্রেমিকদের জন্য ইতিহাসের এই অংশটুকু খুবই অসহনীয় ও অরুচিকর ,তাই কিছু সংখ্যক ব্যক্তি পরিকল্পনা নিয়ে বললেন যে ইবনে কুতাইবার পুস্তক অগ্রহণীয় কেউ কেউ বলতে চেয়েছেন এ গ্রন্থ ইবনে কুতাইবার নয়। কিন্তু এ সত্ত্বেও যে ইবনে আবিল হাদীদ যিনি ইতিহাসের অভিজ্ঞ এক শিক্ষক এই পুস্তককে ইবনে কুতাইবার রচিত বলে স্বীকার করেন এবং সর্বদা এই পুস্তক থেকে প্রয়োজনে প্রচুর বর্ণনা করেছেন। আফসোসের বিষয় যে এই পুস্তক বিকৃত করা হয়েছে এবং কিছু অংশকে বাদ দিয়ে মুদ্রণ করা হয়েছে কিন্তু সেই মূল ও অবিকৃত অংশটি ইবনে আবিল হাদীদ তাঁর শরহ্ নাহজুল বালাগা গ্রন্থে বর্ণনা করেছেন।“ জরকলি ” এই পুস্তককে ইবনে কুতাইবার রচিত বলে মনে করেন,অতপর তিনি বলেন: কিছু সংখক আলেম এই ব্যপারে ভিন্ন মত রাখেন। অর্থাৎ এ গ্রন্থের বিষয়ে অন্যদের সংশয় ও সন্দেহ আছে বলে উল্লেখ করেছেন কিন্তু নিজেরা বলেননি যে তা ইবনে কুতাইবার রচিত নয়। যেমন ইলিয়াছ সারকিস১৫ এই পুস্তককে ইবনে কুতাইবার রচনা বলে গণ্য করেন।লা'নাতুল্লাহি আলাল কাজেবিন

সানাইন (আ.)العربيةفارسیاردو中国的ภาษาไทยहिंदीবাংলাIndonesiaAzəriSwahiliHausaTürkçeBosnianPусскийFrançaisEnglishনীড়পাতাইসলামী গ্রন্থাগারপ্রবন্ধঅডিও ভিডিওফটো গ্যালারিঅনুসন্ধান ওহি-গৃহে আক্রমণসূচিপত্রঅনুসন্ধানওহি-গৃহে আক্রমণ: মুহম্মদ রিজওয়ানুস সালাম খানপ্রকাশক: মাজমা-এ-যাখায়েরে ইসলামী কুম,ইরানবিভাগ:গ্রন্থাগর ›আহলে বাইত ›হযরত ফাতেমা (সা.আ.)ভিজিট: 5834ডাউনলোড: 1970 ওহি - গৃহে আক্রমণ১) রাসূল (সা.) এর বাণীতে হজরত ফাতিমা জাহরা (আ.) এর ইসমত (পাপশূন্যতা)২) কুরআন ও সুন্নতের আলোকে ফাতিমা (আ.)এর গৃহ সম্মানিত৩) ফাতিমা (আ.) এর ঘরের সম্মান হানিতথ্যসূত্র৩) ফাতিমা (আ.) এর ঘরের সম্মান হানিহ্যাঁ ,এতটা তাগিদ ও সুপারিশ করার পরেও আফসোস যে এমন কিছু অসম্মানজনক ব্যবহার নবী নন্দিনীর সাথে করা হয়েছে যে তা সহ্য করার মত নয়। আর এ এমন একটা সমস্যা যে কারো দোষ আড়াল করা ঠিক নয়।আমি এই ব্যাপারে সমস্ত উক্তি আহলে সুন্নত ওয়াল জমায়েতের গ্রন্থসমূহ হতে উল্লেখ করব ,যাতে এই বিষয়টি পরিষ্কার হয়ে যায় যে হজরত ফাতিমা জাহরা (সা.) এর গৃহের সম্মানহানি ও পরবর্তী ঘটনাগুলি ঐতিহাসিকভাবে অকাট্য সত্য এবং এটি কোন অসত্য ঘটনা নয়! যদিও খলিফাদের যুগে ব্যাপকভাবে আহলে বাইতের গুণ ও মর্যাদাকে গোপন করা হয়েছে ,কিন্তু ইতিহাসের পাতায় ও হাদীসের গ্রন্থসমূহে এখনও পর্যন্ত তা জীবন্ত ও রক্ষিত আছে। আর আমি প্রথম শতাব্দী থেকে বর্তমান যুগ পর্যন্ত এ সম্পর্কে লেখা গ্রন্থের নাম ও লেখকের নাম উল্লেখ করব।১। ইবনে আবি শায়বা ও তার“ আল মুসান্নিফ ” পুস্তকআবুবকর ইবনে আবি শায়বা (১৫৯-২৩৫) আল মুসান্নিফ গ্রন্থের লেখক সহিহ সনদের সাথে এইভাবে লিপিবদ্ধ করেছেন:إنه حين بويع لابي بكر بعد رسول الله (ص) كان علي والزبير يدخلان علی فاطمة بنت رسول الله (ص)، فيشاورونها و يرتجعون في أمرهم، فلما بلغ ذلك عمر بن خطاب خرج حتي دخل علی فاطمة،فقال: يا بنت رسول الله (ص) والله ما أحدٌ أحب إلينا من أبيك وما من أحد أحب إلينا بعد أبيك منك، وأيم الله ما ذاك بمانعي إن اجتمع هؤلاء النفر عندك إن أمرتهم أن يحرق عليهم البيتقال: فلما خرج عمر جاؤوها، فقالت (ع): تعلمون أنّ عمر قد جاءني، وقد حلف بالله لئن عدتم ليحرقنّ عليكم البيت، وايم الله ليمضين لمّا حلف عليهঅর্থাৎ: যখন জনগণ আবুবকরের হাতে বাইয়াত করলেন ,হজরত আলী (আ.) ও যোবায়ের হজরত ফাতিমা (আ.) এর গৃহে পরামর্শ ও আলোচনা করছিলেন ,এই খবর উমর ইবনে খাত্তাবের কর্ণগোচর হল অতঃপর সে ফাতিমা (আ.) এর গৃহে এসে বলল: হে নবী নন্দিনী! আমার প্রিয়তম ব্যক্তি তোমার পিতা ,তোমার পিতার পর তুমি নিজে ; কিন্তু আল্লাহর কসম তোমাদের এই ভালোবাসা আমার জন্য বাধা সৃষ্টি করবে না তোমার এই ঘরে একত্রিত হওয়া ব্যক্তিদের উপর আগুন লাগানোর আদেশ দেওয়া থেকে যাতে তারা দগ্ধ হয়ে যায়। এই কথা বলে উমর চলে যায় ,অতঃপর হজরত আলী ও যোবায়ের গৃহে প্রত্যাবর্তন করেন ,হজরত ফাতিমা (আ.) আলী (আ.) ও যোবায়েরকে বললেন: উমর আমার নিকটে এসেছিল আল্লার কসম খেয়ে বলছিল যে যদি তোমাদের এই“ ইজতেমা ” সমাবেশ বন্ধ না হয় ,দ্বিতীয় বার অব্যাহত থাকে তাহলে তোমাদের গৃহকে জ্বালিয়ে দেব। আল্লার কসম! যার জন্য আমি কসম খেয়েছি অবশ্যই আমি সেটা করব।১১উল্লেখ্য এই ঘটনাকে“ আল মুসান্নিফ ” গ্রন্থে সহিহ সনদের সাথে উল্লেখ করেছে।২। বালাজুরী ও তার“ আনসাবুল আশরাফ ” গ্রন্থআহমাদ বিন ইয়াহিয়া জাবির বাগদাদী বালাজুরী (মৃত্যু:২৭০) বিখ্যাত লেখক ও মহান ঐতিহাসিক এই ঐতিহাসিক ঘটনাকে নিজের গ্রন্থ“ আনসাবুল আশরাফ ” এ এই ভাবে উল্লেখ করেছেন:إنّ أبابكر أرسل إلى علي يريد البيعة فلم يبايع، فجاء عمر و معه فتيلة: فتلقّته فاطمة علی البابفقالت فاطمة: بإبن الخطّاب: أتراك محرقاً عليّ بابي؟ قال: نعم و ذلك أقوى فيما جاء به أبوكঅর্থাৎ: আবুবকর হজরত আলী (আ.) এর বাইয়াত নেওয়ার জন্য (লোক) পাঠায় কিন্তু হজরত আলী (আ.) অস্বীকার করার ফলে উমর আগুনের ফলতে নিয়ে আসল ,দ্বারেই হজরত ফাতিমা (আ.) এর সঙ্গে সাক্ষাৎ হয়। হজরত ফাতিমা (আ.) বললেন: হে খাত্তাবের পুত্র! আমিতো দেখছি তুমি আমার ঘর জ্বালানোর পরিকল্পনা নিয়েছ ? উত্তরে উমর বলল: হ্যাঁ ,তোমার পিতা যার জন্য প্রেরিত হয়েছে (সেই কাজের সহযোগিতা ছাড়া অন্যকিছু নয়) আর এটা তার থেকেও গুরুত্বপূর্ণ।১২৩। ইবনে কুতাইবা ও তার“ আল ইমামাত ওয়াস সিয়াসাত ” গ্রন্থবিখ্যাত ঐতিহাসিক আব্দুল্লাহ বিন মুসলিম বিন কুতাইবা দিনাওয়ারী (২১২-২৭৬) তিনি সাহিত্যিকদের অন্যতম প্রধান ও ইসলামী ইতিহাস লেখকদের মধ্যে একজন ,তাঁর সংকলিত পুস্তক“ তাভিলে মুখতালাফুল হাদীছ ” ও“ আদাবুল কাতিব ” ইত্যাদি। তিনি তাঁর“ আল ইমামাত ওয়া সেয়াসাত ” গ্রন্থে এমনি লিপিবদ্ধ করেছেন:إنّ أبا بكر رضي الله عنه تفقد قوماً تخلّفوا عن بيعته عند علي كرّم الله وجهه فبعث إليهم عمر فجاء فناداهم وهم في دار علي، فأبوا أن يخرجوا فدعا بالحطب و قال: والّذي نفس عمر بيده لتخرجنّ أو لأحرقنّها علی من فيها، فقيل له: يا أبا حفص إنّ فيها فاطمة، فقال: وإن !অর্থাৎ: যাঁরা আবুবকরের হাতে বাইয়াত করেন নি তাঁরা হজরত আলী (আ.) এর গৃহে একত্রিত হয়ে ছিলেন ,আবুবকর খবর পাওয়ায় ওমরকে অনুসন্ধানের জন্য তাঁদের নিকটে পাঠাল ,সে হজরত আলী (আ.) এর গৃহে এসে সকলকে উচ্চস্বরে বলল ঘর থেকে বের হয়ে এস ,তাঁরা প্রত্যাখ্যান করেন ,ফলে উমর কাঠ তলব করল এবং বলল: তাঁর কসম যার হাতে উমরের জীবন আছে সকলে বাইরে এস নইলে যে ঘরে তোমরা আছ আগুন লাগিয়ে দেব। এক ব্যক্তি উমরকে বলল: হে হাফসার পিতা এই ঘরে রাসুলের কন্যা ফাতিমা (আ.) আছেন ,উমর বলল: থাকে থাকুক!১৩ইবনে কুতাইবা এই ঘটনাকে সবথেকে বেদনা দায়ক এবং কষ্ট দায়ক বলে উল্লেখ করেছেন ,তিনি বলেন:ثمّ قام عمر فمشى معه جماعة حتى أتوا فاطمة فدقوا الباب، فلمّا سمعت أصواتهم نادت بأعلى صوتها يا أبتاه رسول الله ماذا لقيناك بعدك من إبن الخطّاب وإبن أبي قحافة فلمّا سمع القوم صوتها و بكائها إنصرفوا. وبقى عمر ومعه قوم فأخرجوا علياً فمضوا به إلي أبي بكر فقالوا له بايع، فقال: إنّ أنا أفعل فمه؟ فقالوا: إذاً والله الذي لا إله إلا هو نضرب عنقكঅর্থাৎ: উমর একদল লোকের সাথে হজরত ফাতিমা (আ.) এর গৃহে এসে ঘরের দরজা করাঘাত করল ,যখন ফাতিমা (আ.) এদের শব্দ শুনলেন উচ্চস্বরে বললেন: হে রাসুলুল্লাহ আপনার পর আমাদের উপর খাত্তাবের ছেলে এবং আবি কুহাফার পুত্র কি যে মুসিবত নিয়ে এসেছে! যখন উমরের সাথিরা হজরত জাহরা (আ.) এর চিৎকার ও কান্না শুনলেন ,ফিরে গেলেন ,কিন্তু কিছু সংখ্যক লোক উমরের সাথে ছিল ,তারা হজরত আলী (আ.) কে ঘর থেকে বের করে আনল। আবুবকরের নিকটে নিয়ে এসে তাঁকে বলল: বাইয়াত করুন ,আলী (আ.) বললেন: যদি বাইয়াত না করি কি হবে ? তারা বলল: সেই খোদার শপথ যিনি ছাড়া কোন প্রতিপালক নেই ,তোমার শির গর্দান থেকে আলাদা করে দেব।১৪সুনিশ্চিতভাবে দুই খলীফার প্রেমিকদের জন্য ইতিহাসের এই অংশটুকু খুবই অসহনীয় ও অরুচিকর ,তাই কিছু সংখ্যক ব্যক্তি পরিকল্পনা নিয়ে বললেন যে ইবনে কুতাইবার পুস্তক অগ্রহণীয় কেউ কেউ বলতে চেয়েছেন এ গ্রন্থ ইবনে কুতাইবার নয়। কিন্তু এ সত্ত্বেও যে ইবনে আবিল হাদীদ যিনি ইতিহাসের অভিজ্ঞ এক শিক্ষক এই পুস্তককে ইবনে কুতাইবার রচিত বলে স্বীকার করেন এবং সর্বদা এই পুস্তক থেকে প্রয়োজনে প্রচুর বর্ণনা করেছেন। আফসোসের বিষয় যে এই পুস্তক বিকৃত করা হয়েছে এবং কিছু অংশকে বাদ দিয়ে মুদ্রণ করা হয়েছে কিন্তু সেই মূল ও অবিকৃত অংশটি ইবনে আবিল হাদীদ তাঁর শরহ্ নাহজুল বালাগা গ্রন্থে বর্ণনা করেছেন।“ জরকলি ” এই পুস্তককে ইবনে কুতাইবার রচিত বলে মনে করেন,অতপর তিনি বলেন: কিছু সংখক আলেম এই ব্যপারে ভিন্ন মত রাখেন। অর্থাৎ এ গ্রন্থের বিষয়ে অন্যদের সংশয় ও সন্দেহ আছে বলে উল্লেখ করেছেন কিন্তু নিজেরা বলেননি যে তা ইবনে কুতাইবার রচিত নয়। যেমন ইলিয়াছ সারকিস১৫ এই পুস্তককে ইবনে কুতাইবার রচনা বলে গণ্য করেন।৪। তাবারী ও তাঁর ইতিহাস গ্রন্থমুহাম্মাদ বিন তাবারী (মৃত: ৩১০ হি:) নিজের ইতিহাসে ওহি-গৃহের সম্মানহানির ঘটনাকে এরূপ বর্ণনা করেছেন:أتي عمر بن الخطاب منزل علي و فيه طلحة و الزبير و رجالٌ من المحاجرين. فقال والله لأحرقنّ عليكم أو لتخرجنّ إلی البيعة. فخرج عليه الزبير مصلتاً بالسيف فعثر فسقط السيف من يده. فوثبوا عليه فأخذوهঅর্থাৎ: উমর ইবনে খাত্তাব হজরত আলী (আ.) এর গৃহে আসে সে সময় সেই গৃহে তালহা জুবায়ের ও মুহাজিরদের মধ্যে কিছু সংখ্যক লোকও ছিল ,সে তাদের সম্বোধন করে বলল: যদি বাইয়াতের জন্য ঘর থেকে বের না হও তাহলে আল্লাহর কসম ঘরে আগুন লাগিয়ে দেব ,জুবায়ের হাতে তলোয়ার নিয়ে ঘর থেকে বাইরে আসে ,হঠাৎ তার পা পিছলে যায় এবং তার হাত থেকে তলোয়ার পড়ে যায় ,সেই সময় সকলে তার উপর আক্রমণ করে এবং তলোয়ার তার হাত থেকে ছিনিয়ে নেয়।১৬ইতিহাস এই অংশটুকু দ্বারা প্রমাণ করে দিয়েছে যে প্রথম খলিফার বাইয়াত হুমকি ও ধমকি দিয়ে গ্রহণ করা হয়েছে ,এই রকম বাইয়াতের কি মূল্য আছে ? পাঠকগণ নিজেরা ফয়সালা করুন।৫। ইব্নে আবদে রাব্বাহ ও তাঁর গ্রন্থ“ আল আক্বদুল ফরিদ ”শাহাবুদ্দীন আহমদ ওরফে“ ইবনে আবদে রাব্বাহ আন্দালুসী ”“ আল আক্বদুল ফরিদ ” গ্রন্থের লেখক (মৃত: ৪৬৩ হি:) নিজের গ্রন্থে একটি অংশে সাক্বিফার ইতিহাস বর্ণনা করেছেন তার মধ্যে সেই ব্যক্তিদের নাম উল্লেখ করেছেন যারা আবুবকরের বাইয়াত অস্বীকার করেছেন:فأمّا علي والعباس والزبير فعقدوا في بيت فاطمة حتي بعثت إليهم أبوبكر عمر بن خطّاب ليخرجهم من بيت فاطمة وقال له: إن أبوا فقاتلهم، فأقبل بقبس من نار أن يضرم عليهم الدار، فلقيته فاطمة فقال: يابن الخطاب أجئت لتحرق دارنا؟ قال: نعم، أو تدخلوا فيما دخلت فيه الأمةঅর্থাৎ: হজরত আলী (আ.) ,আব্বাস (রা.) ও জোবায়ের ফাতিমা (আ.) এর গৃহে বসেছিলেন। আবুবকর উমরকে পাঠায় যাতে ওদেরকে গৃহ থেকে বের করে আনে আর বলে পাঠায় যে: যদি তারা গৃহ থেকে বের না হয় তালে তাদের সাথে যুদ্ধ করবে! সেই সময় উমর বিন খাত্তাব সামান্য আগুন নিয়ে ফাতিমা (আ.) এর গৃহ জ্বালানোর জন্য অগ্রসর হল ,সেই সময় ফাতিমা (আ.) এর সাথে সাক্ষাৎ হয় ,রাসুলের কন্যা বলেন: হে খাত্তাবের পুত্র আমার ঘর জ্বালানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছ ? সে উত্তরে বলল: হ্যাঁ ,কিন্তু! যদি তোমরা নিজেরা তার মধ্যে (প্রথম খলিফার আনুগত্যের ছায়ায়) প্রবেশ করো যাতে উম্মত (অন্যরা) প্রবেশ করেছে তাহলে ভিন্ন কথা।১৭এই পর্যন্ত ফাতিমা (আ.) এর গৃহের সম্মানহানির বিষয়ে আলোচনা করলাম এ ব্যাপারে এইখানে শেষ করছি এবার দ্বিতীয় বিষয়ের উপর আলোকপাত করতে চাই যাতে এই অমানবিক ও অসৎ কর্মকে কার্যে পরিণত করা হয়েছে।যাইহোক এতক্ষণে এই বোঝা গেল যে তাদের ইচ্ছা ছিল হজরত আলী (আ.) ও তাঁর সঙ্গী সাথিদের ভয় ও হুমকি দিয়ে বাইয়াত করতে বাধ্য করা ,কিন্তু এই হুমকিকে কার্যে পরিণত করার কথাও ইতিহাসে প্রমানিত। এবার সেই কার্যগুলি বর্ণনা করতে চাই যে ,তারা এই মহা অপরাধে লিপ্তও হয়েছে।এ পর্যন্ত শুধুমাত্র খলিফা ও তার সহচরদের কু’ নিয়তকে (অসৎ উদ্দেশ্যের প্রতি) ইঙ্গিত করে শেষ করা হয়েছে। এক শ্রেণীর লোক এই ঘটনার উপর পরিষ্কার ভাবে আলোকপাত করতে পারে না কিংবা করতে চায়না। এ সত্যেও কিছু লোক আসল ঘটনা অর্থাৎ গৃহে আক্রমণ এর উপর ইঙ্গিত করেছেন এবং কিছু পরিমান সত্যের উপর থেকে মুখাবরণ তুলেছেন এবং সত্যকে ফাঁস করেছেন। এখানে সম্মানহানি ও আক্রমণের বিষয়ে ইশারা করব।এখানেও বিষয় বর্ণনার ক্ষেত্রে সময়ের ভিত্তিতে ঐতিহাসিক বর্ণনাক্রমের দিকে বিশেষ খেয়াল রাখা হবে৷৬। আবু ওবায়েদ এবং তার“ আল আমওয়াল ” পুস্তকআবু ওবায়েদ ক্বাসিম বিন সালাম (মৃত: ২২৪ হি:) তাঁর“ আল আমওয়াল ” (যার বিশ্বস্ততার ব্যপারে ইসলামী বিশেষজ্ঞরা একমত) পুস্তকে বর্ণনা করেছেন:আব্দুর রহমান বিন আউফ বলেন: আমি আবুবকরের মৃত্যুশয্যায় তার সাথে সাক্ষাত করতে তার বাড়ি যাই অনেকক্ষণ কথাবার্তার পর আমাকে বলল: কামনা করি হায়! তিনটি কাজ যা আমি করেছি যদি না করতাম ,অনুরূপ আশাকরি হায়! তিনটি কাজ যা আমি করিনি যদি করতাম ,অনুরূপ ইচ্ছাহয় যে হায়! তিনটি জিনিস যদি রাসূল (সাঃ) কে জিজ্ঞাসা করতাম।সেই তিনটি জিনিস যা আমি করেছি আর আফসোস করছি যে যদি না করতাম সে তিনটি হল এই যে:وددت إنّي لم أكشف بيت فاطمة تركته وإن أغلق علی الحربঅর্থাৎ: হায় আফসোস! ফাতিমা (আ.) এর গৃহের সম্মানকে রক্ষা করতাম আর অসম্মানিত না করে তাঁর নিজের অবস্থায় ছেড়ে দিতাম যদিও তা যুদ্ধের জন্য বন্ধ করা হয়ে ছিল।১৮আবু ওবায়েদ যখন বর্ণনায় এই স্থানে পৌছান” لم أكشف بيت فاطمة وتركته “ এই বাক্যকে বর্ণনা না করে” كذا و كذا “ ইত্যাদি ইত্যাদি বলে বর্ণনা করেছেন অর্থাৎ সম্পূর্ণ ঘটনাকে বর্ণনা করেন নি এবং বলেন যে আমি এই ঘটনাকে উল্লেখ করতে চাইনা!কিন্তু যাইহোক“ আবু ওবায়েদ ” মাযহাবী পক্ষপাতিত্বের জন্য কিংবা অন্য কোন কারণে এই সত্যকে বর্ণনা করেন নি ; কিন্তু“ আল আমওয়াল ” পুস্তকের গবেষকেরা পাদটীকাতে লিখেছেন যে বাক্যকে সে বাদ দিয়েছে তা“ মিযানুল এ’ তেদাল ” গ্রন্থে এই রকম (যেমনটি আমরা বর্ণনা করেছি তেমনটি) জাহাবী বর্ণনা করেছেন ,তাছাড়া“ তিবরানী ” নিজের“ মো’ জামে ” এবং“ ইবনে আব্দু রাব্বাহ ”“ আকদুল ফরিদে ” এবং অন্যরা স্ব স্ব গ্রন্থে উপরোক্ত বাক্যটি বর্ণনা করেছেন। (চিন্তা করুন!)৭। তাবরানী ও মো’ জামে কবীরআবুল ক্বাসিম সোলেমান বিন আহমদ তাবরানী (২৬০ -৩৬০) (জাহাবী তার সম্পর্কে“ মিজানুল এ’ তেদালে ” বলেন যে তিনি বিশ্বস্ত ও নির্ভরযোগ্য ব্যক্তি। )“ আল মো’ জামুল কবীর ” পুস্তকে (যার মুদ্রণ বহুবার হয়েছে) যেখানে আবুবকরের মৃত্যু ও তার বাণী সম্পর্কে লিখেছেন উল্লেখ্য যে ,আবুবকর মৃত্যুর সময় কিছু জিনিসের আশা করেছিল!হায় আফসোস! তিনটি কাজকে যদি না করতাম!হায় আফসোস! তিনটি কাজ যদি করতাম!হায় আফসোস! তিনটি জিনিস যদি রাসূল (সা.) কে জিজ্ঞাসা করতাম! যে তিনটি কাজের ব্যাপারে বলেছিল ; যে যদি না করতাম ,সে তিনটি হল:أمّا الثلاث اللائي وددت أنّي لم أفعلهنّ، فوددت إني لم أكن أكشف بيت فاطمة و تركتهযে তিনটি কাজের জন্য আফসোস করছি তা হল যে হায় আফসোস যদি ফাতিমা (আ.) এর ঘরের অসম্মান না করতাম এবং তাকে তার অবস্থায় ছেড়ে দিতাম!১৯এই আকাঙ্খা ব্যক্ত করাতে বোঝা যায় যে উমরের হুমকিকে বাস্তবে রূপ দেয়া হয়েছিল।৮। ইব্নে আব্দু রাব্বাহ ও“ আল আক্বদুল ফরিদ ”ইবনে আব্দু রাব্বাহ আন্দালুসী -“ আল আকদুল ফরীদ ” এর লেখক (মৃত: ৪৬৩ হিঃ) নিজের পুস্তকে আব্দুর রহমান বিন আওফ থেকে বর্ণনা করেছেন:আমি আবুবকরের অসুস্থতার সময় তাকে দেখতে যাই ,তিনি বলেন: হায় আফসোস! যদি তিনটি কাজ না করতাম আর তার মধ্যে একটি কাজ হল যে:وددت إني لم أكن أكشف بيت فاطمة عن شيئ و إن كانوا غلقوه علی الحربঅর্থাৎ হায় আফসোস! যদি ফাতিমা (আ.) এর গৃহকে উন্মোচন না করতাম যদিও তারা লড়াই করার জন্য ঘরের দরজা বন্ধ করে থাকুক না কেন ৷২০এছাড়াও তাঁদের নাম উল্লেখ করব যাঁরা খলীফার এই বাক্যকে বর্ণনা করেছেন।৯।“ আল ওয়াফী বিল ওয়াফাইয়াত“ পুস্তকে নাজ্জামের কথাইব্রাহীম বিন সাইয়ার নাজ্জাম মো’ তিজালী (১৬০ -২৩১) যিনি আরবী পদ্য ও গদ্যে বাক্যের সৌন্দর্যের জন্য বিখ্যাত তার রচিত বিভিন্ন পুস্তকে ,ফাতিমা (আ.) এর ঘরে অন্যদের উপস্থিতির পরের ঘটনাকে বর্ণনা করে বলেন:إنّ عمر ضرب بطن فاطمة يوم البيعة حتي ألقت المحسن من بطنهاঅর্থাৎ আবুবকরের বাইয়াতের দিনে ওমর ফাতেমা (আ.) এর উদরে আঘাত করে ,তাঁর গর্ভের শিশু (মহসিন) গর্ভপাত হয়ে যায়। (চিন্তা করুন!)১০। মোবররিদ্“ আল কামিল ” গ্রন্থেমুহম্মদ বিন এজীদ বিন আব্দুল আকবর বাগদাদী (২১০ -২৮৫) বিখ্যাত সাহিত্যিক ও লেখক তাঁর মুল্যবান পুস্তক“ আল কামিল ” এ প্রথম খলিফার আকাঙ্খার কথা আব্দুর রহমান থেকে বর্ণনা করেছেন ,তিনি লেখেন:وددت إني لم أكن أكشف عن بيت فاطمة و تركته و لوأغلق علي الحربঅর্থাৎ: হায় ফাতিমা (আ.) এর ঘরের উপর আক্রমন না করতাম বরং তাঁকে তার নিজের অবস্থায় ছেড়ে দিতাম যদিও তা যুদ্ধের জন্য রুদ্ধ করা হয়েছিল।২১১১। মাসউদী ও“ মরুজুয্যাহাব ”মাসউদী (মৃত:৩২৫) তার মরুজুয্যাহাব গ্রন্থে লেখেন:আবুবকর মৃত্যুর পূর্বে যা কিছু বলেছে তা নিম্নে দেওয়া হল:তিনটি কাজ করেছি যদি না করতাম ,তার মধ্যে একটি এই যে:فوددت إني لم أكن فتشت بيت فاطمة و ذكر في ذلك كلاماً كثيراًঅর্থাৎ: হায় আফসোস! ফাতিমার ঘরের উপর আক্রমণ না করতাম। আর এ ব্যাপারে সে অনেক কিছু বলেছে।২২মাসউদীর যদিও মহানবী (সা.) এর আহলেবায়েত (আ.) এর প্রতি বিশেষ আকর্ষণ রয়েছে ; কিন্তু এখানে খলিফার বার্তাকে সম্পূর্ণভাবে প্রকাশ করতে দ্বিধা বোধ করেছেন এবং শুধুমাত্র ইশারা করে ছেড়ে দিয়েছেন। কিন্তু আল্লাহ এ বিষয়ে সম্পূর্ণরূপে জানেন ও আল্লাহর বান্দারাও মোটামুটিভাবে জানেন।১২। ইবনে আবী দারেম্ ও“ মীজানুল এ’ তেদাল ” পুস্তক“ আহমদ বিন মুহম্মদ ” ওরফে“ ইবনে আবী দারেম্ ” মুহাদ্দীসে কুফী (মৃত: ৩৬৫ হিঃ) মুহম্মদ বিন আহমদ বিন হাম্মদ কুফী তার সম্পর্কে বলেছেন যে:” كان مستقيم الأمر، عامة دهره “ অর্থাৎ: উনি সারা জীবন সঠিক পথের পথিক ছিলেন।তার সামনে এই ঘটনাকে এভাবে বর্ণনা করা হল যে:إنّ عمر رفس فاطمة حتي أسقطت بمحسنঅর্থাৎ: উমর হজরত ফাতিমা (আ.) এর গর্ভে লাথিমারে তাঁর গর্ভে মহসিন (নামে বাচ্চা) ছিল সে গর্ভপাত হয়ে যায়।২৩ (চিন্তা করুন!)১৩। আব্দুল ফাত্তাহ আব্দুল মকছুদ ও“ আল ইমাম আলী ” পুস্তকতিনি তাঁর গ্রন্থে হজরত ফাতিমা (আ.) এর গৃহে আক্রমণের ঘটনাকে দু’ দুবার বর্ণনা করেছেন ,কিন্তু আমি তার মধ্যে একটি বর্ণনা করছি:-والذي نفس عمر بيده، ليخرجنّ أو لأحرقنّها علي من فيها ...!قالت له طائفة خانت الله، ورعت الرسول في عقبهيا أبا حفص، إنّ فيها فاطمةفصاح لايبالي: و إنواقترب وقرع الباب، ثمّ ضربه واقتحمه ...!অর্থাৎ: যার হাতে উমরের জান আছে তার কসম খেয়ে বলছি তোমরা ঘর থেকে বাইরে বের হয়ে এস ,নইলে ঘরে যারা আছে তাদের সহ ঘরকে জ্বালিয়ে দেব।খোদাভীরু কিছু লোক আল্লাহর ভয়ে এবং রসুলের ঘরের সম্মান রক্ষার জন্য উমরের উদ্দেশ্যে বলল:“ হে হাফসার পিতা! এই ঘরে ফাতিমা (আ.) আছেন ”সে চিৎকার করে বলল:“ থাকে থাকুক!!”দরজার নিকট গিয়ে দরজায় কড়া নাড়ল ,অতঃপর ঘুঁসি ও লাথি মেরে দরজা ভেঙে ঘরের মধ্যে প্রবেশ করল।হজরত আলী (আ.) কে গ্রেফতার করে ।হজরত ফাতিমা (আ.) এর আর্তনাদও চিৎকার প্রবেশদ্বার থেকে শোনাগেল আর তিনি আর্তনাদ করে সাহায্য প্রার্থনা করছিলেন।২৪এই আলোচনাকে আর একটি হাদীস“ মাকাতিল ইব্নে আতীয়া ” এর আল ইমামাত ওয়াস সিয়াসাত গ্রন্থ থেকে বর্ণনা করে সমাপ্ত করব ,(এছাড়াও এখন অনেক কিছু আছে যা বলা এখন সম্ভব নয় বলে রয়ে গেল)তিনি তাঁর পুস্তকে এমনি লিপিবদ্ধ করেছেন:إنّ أبابكر بعد ما أخذ البيعة لنفسه من الناس بالإرهاب والسيف والقوّه أرسل عمر، وقنفذاً وجماعة إلي دار علي وفاطمة عليهماالسلام وجمع عمر الحطاب علي دار فاطمة وأحرق باب الدارঅর্থাৎ: যখন আবুবকর জনগণকে হুমকি দিয়ে তলোয়ার দিয়ে বলপূর্বক বাইয়াত নিল ; উমর ,কুনফুজ ও একদল লোককে হজরত আলী ও হজরত ফাতিমার গৃহে পাঠাল ,উমর কাঠ একত্র করে ঘরের দ্বারকে আগুন দ্বারা জ্বালিয়ে দিল ।২৫এ রেওয়ায়েতের শেষে এমন কিছু কথা এসেছে যা এ কলম লিখতে অক্ষম।*****ফল : এতগুলো উজ্জল প্রমাণ ও দলিল তাদেরই গ্রন্থসমূহে বর্ণিত“‘ হওয়ার পরেও বলছে“ শাহাদাতের কল্পকাহিনী...!”এনসাফ কোথায় ?!এই সামান্য সনদযুক্ত প্রবন্ধটি যে পড়বে অবশ্যই সে বুঝতে পারবে যে রাসূল (সা.) এর ইন্তেকালের পর তাঁর শত্রুরা কেমন বিশৃঙ্খল পরিবেশ সৃষ্টি করেছিল ,শাসন ক্ষমতা ও খেলাফতকে অর্জন করার জন্য কি না করেছে ,সমস্ত স্বাধীন চিন্তাবিদ ও নিরপেক্ষ ব্যক্তিদের জন্য চুড়ান্ত যুক্তি-প্রমান পেশ করে দিলাম। কেন না আমি নিজের থেকে কোন কিছু লিখিনি আমি যাকিছু লিখেছি তা তাদের নিকট গ্রহণীয় পুস্তক সমূহ থেকে বর্ণনা ছাড়া অন্য কিছু করিনি।*****হে আল্লাহ তুমি তোমার সর্বশেষ খলিফা হজরত ফাতিমার সন্তান ইউসুফকে (ইমাম মাহ্দী (আ.) কে) শীঘ্র আবির্ভূব করুন এবং জগৎ কে অন্যায় থেকে মুক্তি দিন ,আমাদের সকলকে তাঁর প্রকৃত অনুসারীতে পরিণত করুন আমিন -।__________

পর্ব 1 ফাতিমা (আ.) এর ঘরের সম্মান হানিহ্যাঁ ,এতটা তাগিদ ও সুপারিশ করার পরেও আফসোস যে এমন কিছু অসম্মানজনক ব্যবহার নবী নন্দিনীর সাথে করা হয়েছে যে তা সহ্য করার মত নয়। আর এ এমন একটা সমস্যা যে কারো দোষ আড়াল করা ঠিক নয়।আমি এই ব্যাপারে সমস্ত উক্তি আহলে সুন্নত ওয়াল জমায়েতের গ্রন্থসমূহ হতে উল্লেখ করব ,যাতে এই বিষয়টি পরিষ্কার হয়ে যায় যে হজরত ফাতিমা জাহরা (সা.) এর গৃহের সম্মানহানি ও পরবর্তী ঘটনাগুলি ঐতিহাসিকভাবে অকাট্য সত্য এবং এটি কোন অসত্য ঘটনা নয়! যদিও খলিফাদের যুগে ব্যাপকভাবে আহলে বাইতের গুণ ও মর্যাদাকে গোপন করা হয়েছে ,কিন্তু ইতিহাসের পাতায় ও হাদীসের গ্রন্থসমূহে এখনও পর্যন্ত তা জীবন্ত ও রক্ষিত আছে। আর আমি প্রথম শতাব্দী থেকে বর্তমান যুগ পর্যন্ত এ সম্পর্কে লেখা গ্রন্থের নাম ও লেখকের নাম উল্লেখ করব।১। ইবনে আবি শায়বা ও তার“ আল মুসান্নিফ ” পুস্তকআবুবকর ইবনে আবি শায়বা (১৫৯-২৩৫) আল মুসান্নিফ গ্রন্থের লেখক সহিহ সনদের সাথে এইভাবে লিপিবদ্ধ করেছেন:إنه حين بويع لابي بكر بعد رسول الله (ص) كان علي والزبير يدخلان علی فاطمة بنت رسول الله (ص)، فيشاورونها و يرتجعون في أمرهم، فلما بلغ ذلك عمر بن خطاب خرج حتي دخل علی فاطمة،فقال: يا بنت رسول الله (ص) والله ما أحدٌ أحب إلينا من أبيك وما من أحد أحب إلينا بعد أبيك منك، وأيم الله ما ذاك بمانعي إن اجتمع هؤلاء النفر عندك إن أمرتهم أن يحرق عليهم البيتقال: فلما خرج عمر جاؤوها، فقالت (ع): تعلمون أنّ عمر قد جاءني، وقد حلف بالله لئن عدتم ليحرقنّ عليكم البيت، وايم الله ليمضين لمّا حلف عليهঅর্থাৎ: যখন জনগণ আবুবকরের হাতে বাইয়াত করলেন ,হজরত আলী (আ.) ও যোবায়ের হজরত ফাতিমা (আ.) এর গৃহে পরামর্শ ও আলোচনা করছিলেন ,এই খবর উমর ইবনে খাত্তাবের কর্ণগোচর হল অতঃপর সে ফাতিমা (আ.) এর গৃহে এসে বলল: হে নবী নন্দিনী! আমার প্রিয়তম ব্যক্তি তোমার পিতা ,তোমার পিতার পর তুমি নিজে ; কিন্তু আল্লাহর কসম তোমাদের এই ভালোবাসা আমার জন্য বাধা সৃষ্টি করবে না তোমার এই ঘরে একত্রিত হওয়া ব্যক্তিদের উপর আগুন লাগানোর আদেশ দেওয়া থেকে যাতে তারা দগ্ধ হয়ে যায়। এই কথা বলে উমর চলে যায় ,অতঃপর হজরত আলী ও যোবায়ের গৃহে প্রত্যাবর্তন করেন ,হজরত ফাতিমা (আ.) আলী (আ.) ও যোবায়েরকে বললেন: উমর আমার নিকটে এসেছিল আল্লার কসম খেয়ে বলছিল যে যদি তোমাদের এই“ ইজতেমা ” সমাবেশ বন্ধ না হয় ,দ্বিতীয় বার অব্যাহত থাকে তাহলে তোমাদের গৃহকে জ্বালিয়ে দেব। আল্লার কসম! যার জন্য আমি কসম খেয়েছি অবশ্যই আমি সেটা করব।১১উল্লেখ্য এই ঘটনাকে“ আল মুসান্নিফ ” গ্রন্থে সহিহ সনদের সাথে উল্লেখ করেছে।২। বালাজুরী ও তার“ আনসাবুল আশরাফ ” গ্রন্থআহমাদ বিন ইয়াহিয়া জাবির বাগদাদী বালাজুরী (মৃত্যু:২৭০) বিখ্যাত লেখক ও মহান ঐতিহাসিক এই ঐতিহাসিক ঘটনাকে নিজের গ্রন্থ“ আনসাবুল আশরাফ ” এ এই ভাবে উল্লেখ করেছেন:إنّ أبابكر أرسل إلى علي يريد البيعة فلم يبايع، فجاء عمر و معه فتيلة: فتلقّته فاطمة علی البابفقالت فاطمة: بإبن الخطّاب: أتراك محرقاً عليّ بابي؟ قال: نعم و ذلك أقوى فيما جاء به أبوكঅর্থাৎ: আবুবকর হজরত আলী (আ.) এর বাইয়াত নেওয়ার জন্য (লোক) পাঠায় কিন্তু হজরত আলী (আ.) অস্বীকার করার ফলে উমর আগুনের ফলতে নিয়ে আসল ,দ্বারেই হজরত ফাতিমা (আ.) এর সঙ্গে সাক্ষাৎ হয়। হজরত ফাতিমা (আ.) বললেন: হে খাত্তাবের পুত্র! আমিতো দেখছি তুমি আমার ঘর জ্বালানোর পরিকল্পনা নিয়েছ ? উত্তরে উমর বলল: হ্যাঁ ,তোমার পিতা যার জন্য প্রেরিত হয়েছে (সেই কাজের সহযোগিতা ছাড়া অন্যকিছু নয়) আর এটা তার থেকেও গুরুত্বপূর্ণ।১২৩। ইবনে কুতাইবা ও তার“ আল ইমামাত ওয়াস সিয়াসাত ” গ্রন্থবিখ্যাত ঐতিহাসিক আব্দুল্লাহ বিন মুসলিম বিন কুতাইবা দিনাওয়ারী (২১২-২৭৬) তিনি সাহিত্যিকদের অন্যতম প্রধান ও ইসলামী ইতিহাস লেখকদের মধ্যে একজন ,তাঁর সংকলিত পুস্তক“ তাভিলে মুখতালাফুল হাদীছ ” ও“ আদাবুল কাতিব ” ইত্যাদি। তিনি তাঁর“ আল ইমামাত ওয়া সেয়াসাত ” গ্রন্থে এমনি লিপিবদ্ধ করেছেন:إنّ أبا بكر رضي الله عنه تفقد قوماً تخلّفوا عن بيعته عند علي كرّم الله وجهه فبعث إليهم عمر فجاء فناداهم وهم في دار علي، فأبوا أن يخرجوا فدعا بالحطب و قال: والّذي نفس عمر بيده لتخرجنّ أو لأحرقنّها علی من فيها، فقيل له: يا أبا حفص إنّ فيها فاطمة، فقال: وإن !অর্থাৎ: যাঁরা আবুবকরের হাতে বাইয়াত করেন নি তাঁরা হজরত আলী (আ.) এর গৃহে একত্রিত হয়ে ছিলেন ,আবুবকর খবর পাওয়ায় ওমরকে অনুসন্ধানের জন্য তাঁদের নিকটে পাঠাল ,সে হজরত আলী (আ.) এর গৃহে এসে সকলকে উচ্চস্বরে বলল ঘর থেকে বের হয়ে এস ,তাঁরা প্রত্যাখ্যান করেন ,ফলে উমর কাঠ তলব করল এবং বলল: তাঁর কসম যার হাতে উমরের জীবন আছে সকলে বাইরে এস নইলে যে ঘরে তোমরা আছ আগুন লাগিয়ে দেব। এক ব্যক্তি উমরকে বলল: হে হাফসার পিতা এই ঘরে রাসুলের কন্যা ফাতিমা (আ.) আছেন ,উমর বলল: থাকে থাকুক!১৩ইবনে কুতাইবা এই ঘটনাকে সবথেকে বেদনা দায়ক এবং কষ্ট দায়ক বলে উল্লেখ করেছেন ,তিনি বলেন:ثمّ قام عمر فمشى معه جماعة حتى أتوا فاطمة فدقوا الباب، فلمّا سمعت أصواتهم نادت بأعلى صوتها يا أبتاه رسول الله ماذا لقيناك بعدك من إبن الخطّاب وإبن أبي قحافة فلمّا سمع القوم صوتها و بكائها إنصرفوا. وبقى عمر ومعه قوم فأخرجوا علياً فمضوا به إلي أبي بكر فقالوا له بايع، فقال: إنّ أنا أفعل فمه؟ فقالوا: إذاً والله الذي لا إله إلا هو نضرب عنقكঅর্থাৎ: উমর একদল লোকের সাথে হজরত ফাতিমা (আ.) এর গৃহে এসে ঘরের দরজা করাঘাত করল ,যখন ফাতিমা (আ.) এদের শব্দ শুনলেন উচ্চস্বরে বললেন: হে রাসুলুল্লাহ আপনার পর আমাদের উপর খাত্তাবের ছেলে এবং আবি কুহাফার পুত্র কি যে মুসিবত নিয়ে এসেছে! যখন উমরের সাথিরা হজরত জাহরা (আ.) এর চিৎকার ও কান্না শুনলেন ,ফিরে গেলেন ,কিন্তু কিছু সংখ্যক লোক উমরের সাথে ছিল ,তারা হজরত আলী (আ.) কে ঘর থেকে বের করে আনল। আবুবকরের নিকটে নিয়ে এসে তাঁকে বলল: বাইয়াত করুন ,আলী (আ.) বললেন: যদি বাইয়াত না করি কি হবে ? তারা বলল: সেই খোদার শপথ যিনি ছাড়া কোন প্রতিপালক নেই ,তোমার শির গর্দান থেকে আলাদা করে দেব।১৪সুনিশ্চিতভাবে দুই খলীফার প্রেমিকদের জন্য ইতিহাসের এই অংশটুকু খুবই অসহনীয় ও অরুচিকর ,তাই কিছু সংখ্যক ব্যক্তি পরিকল্পনা নিয়ে বললেন যে ইবনে কুতাইবার পুস্তক অগ্রহণীয় কেউ কেউ বলতে চেয়েছেন এ গ্রন্থ ইবনে কুতাইবার নয়। কিন্তু এ সত্ত্বেও যে ইবনে আবিল হাদীদ যিনি ইতিহাসের অভিজ্ঞ এক শিক্ষক এই পুস্তককে ইবনে কুতাইবার রচিত বলে স্বীকার করেন এবং সর্বদা এই পুস্তক থেকে প্রয়োজনে প্রচুর বর্ণনা করেছেন। আফসোসের বিষয় যে এই পুস্তক বিকৃত করা হয়েছে এবং কিছু অংশকে বাদ দিয়ে মুদ্রণ করা হয়েছে কিন্তু সেই মূল ও অবিকৃত অংশটি ইবনে আবিল হাদীদ তাঁর শরহ্ নাহজুল বালাগা গ্রন্থে বর্ণনা করেছেন।“ জরকলি ” এই পুস্তককে ইবনে কুতাইবার রচিত বলে মনে করেন,অতপর তিনি বলেন: কিছু সংখক আলেম এই ব্যপারে ভিন্ন মত রাখেন। অর্থাৎ এ গ্রন্থের বিষয়ে অন্যদের সংশয় ও সন্দেহ আছে বলে উল্লেখ করেছেন কিন্তু নিজেরা বলেননি যে তা ইবনে কুতাইবার রচিত নয়। যেমন ইলিয়াছ সারকিস১৫ এই পুস্তককে ইবনে কুতাইবার রচনা বলে গণ্য করেন।৪। তাবারী ও তাঁর ইতিহাস গ্রন্থমুহাম্মাদ বিন তাবারী (মৃত: ৩১০ হি:) নিজের ইতিহাসে ওহি-গৃহের সম্মানহানির ঘটনাকে এরূপ বর্ণনা করেছেন:أتي عمر بن الخطاب منزل علي و فيه طلحة و الزبير و رجالٌ من المحاجرين. فقال والله لأحرقنّ عليكم أو لتخرجنّ إلی البيعة. فخرج عليه الزبير مصلتاً بالسيف فعثر فسقط السيف من يده. فوثبوا عليه فأخذوهঅর্থাৎ: উমর ইবনে খাত্তাব হজরত আলী (আ.) এর গৃহে আসে সে সময় সেই গৃহে তালহা জুবায়ের ও মুহাজিরদের মধ্যে কিছু সংখ্যক লোকও ছিল ,সে তাদের সম্বোধন করে বলল: যদি বাইয়াতের জন্য ঘর থেকে বের না হও তাহলে আল্লাহর কসম ঘরে আগুন লাগিয়ে দেব ,জুবায়ের হাতে তলোয়ার নিয়ে ঘর থেকে বাইরে আসে ,হঠাৎ তার পা পিছলে যায় এবং তার হাত থেকে তলোয়ার পড়ে যায় ,সেই সময় সকলে তার উপর আক্রমণ করে এবং তলোয়ার তার হাত থেকে ছিনিয়ে নেয়।১৬ইতিহাস এই অংশটুকু দ্বারা প্রমাণ করে দিয়েছে যে প্রথম খলিফার বাইয়াত হুমকি ও ধমকি দিয়ে গ্রহণ করা হয়েছে ,এই রকম বাইয়াতের কি মূল্য আছে ? পাঠকগণ নিজেরা ফয়সালা করুন।৫। ইব্নে আবদে রাব্বাহ ও তাঁর গ্রন্থ“ আল আক্বদুল ফরিদ ”শাহাবুদ্দীন আহমদ ওরফে“ ইবনে আবদে রাব্বাহ আন্দালুসী ”“ আল আক্বদুল ফরিদ ” গ্রন্থের লেখক (মৃত: ৪৬৩ হি:) নিজের গ্রন্থে একটি অংশে সাক্বিফার ইতিহাস বর্ণনা করেছেন তার মধ্যে সেই ব্যক্তিদের নাম উল্লেখ করেছেন যারা আবুবকরের বাইয়াত অস্বীকার করেছেন:فأمّا علي والعباس والزبير فعقدوا في بيت فاطمة حتي بعثت إليهم أبوبكر عمر بن خطّاب ليخرجهم من بيت فاطمة وقال له: إن أبوا فقاتلهم، فأقبل بقبس من نار أن يضرم عليهم الدار، فلقيته فاطمة فقال: يابن الخطاب أجئت لتحرق دارنا؟ قال: نعم، أو تدخلوا فيما دخلت فيه الأمةঅর্থাৎ: হজরত আলী (আ.) ,আব্বাস (রা.) ও জোবায়ের ফাতিমা (আ.) এর গৃহে বসেছিলেন। আবুবকর উমরকে পাঠায় যাতে ওদেরকে গৃহ থেকে বের করে আনে আর বলে পাঠায় যে: যদি তারা গৃহ থেকে বের না হয় তালে তাদের সাথে যুদ্ধ করবে! সেই সময় উমর বিন খাত্তাব সামান্য আগুন নিয়ে ফাতিমা (আ.) এর গৃহ জ্বালানোর জন্য অগ্রসর হল ,সেই সময় ফাতিমা (আ.) এর সাথে সাক্ষাৎ হয় ,রাসুলের কন্যা বলেন: হে খাত্তাবের পুত্র আমার ঘর জ্বালানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছ ? সে উত্তরে বলল: হ্যাঁ ,কিন্তু! যদি তোমরা নিজেরা তার মধ্যে (প্রথম খলিফার আনুগত্যের ছায়ায়) প্রবেশ করো যাতে উম্মত (অন্যরা) প্রবেশ করেছে তাহলে ভিন্ন কথা।১৭এই পর্যন্ত ফাতিমা (আ.) এর গৃহের সম্মানহানির বিষয়ে আলোচনা করলাম এ ব্যাপারে এইখানে শেষ করছি এবার দ্বিতীয় বিষয়ের উপর আলোকপাত করতে চাই যাতে এই অমানবিক ও অসৎ কর্মকে কার্যে পরিণত করা হয়েছে।যাইহোক এতক্ষণে এই বোঝা গেল যে তাদের ইচ্ছা ছিল হজরত আলী (আ.) ও তাঁর সঙ্গী সাথিদের ভয় ও হুমকি দিয়ে বাইয়াত করতে বাধ্য করা ,কিন্তু এই হুমকিকে কার্যে পরিণত করার কথাও ইতিহাসে প্রমানিত। এবার সেই কার্যগুলি বর্ণনা করতে চাই যে ,তারা এই মহা অপরাধে লিপ্তও হয়েছে।এ পর্যন্ত শুধুমাত্র খলিফা ও তার সহচরদের কু’ নিয়তকে (অসৎ উদ্দেশ্যের প্রতি) ইঙ্গিত করে শেষ করা হয়েছে। এক শ্রেণীর লোক এই ঘটনার উপর পরিষ্কার ভাবে আলোকপাত করতে পারে না কিংবা করতে চায়না। এ সত্যেও কিছু লোক আসল ঘটনা অর্থাৎ গৃহে আক্রমণ এর উপর ইঙ্গিত করেছেন এবং কিছু পরিমান সত্যের উপর থেকে মুখাবরণ তুলেছেন এবং সত্যকে ফাঁস করেছেন। এখানে সম্মানহানি ও আক্রমণের বিষয়ে ইশারা করব।এখানেও বিষয় বর্ণনার ক্ষেত্রে সময়ের ভিত্তিতে ঐতিহাসিক বর্ণনাক্রমের দিকে বিশেষ খেয়াল রাখা হবে৷৬। আবু ওবায়েদ এবং তার“ আল আমওয়াল ” পুস্তকআবু ওবায়েদ ক্বাসিম বিন সালাম (মৃত: ২২৪ হি:) তাঁর“ আল আমওয়াল ” (যার বিশ্বস্ততার ব্যপারে ইসলামী বিশেষজ্ঞরা একমত) পুস্তকে বর্ণনা করেছেন:আব্দুর রহমান বিন আউফ বলেন: আমি আবুবকরের মৃত্যুশয্যায় তার সাথে সাক্ষাত করতে তার বাড়ি যাই অনেকক্ষণ কথাবার্তার পর আমাকে বলল: কামনা করি হায়! তিনটি কাজ যা আমি করেছি যদি না করতাম ,অনুরূপ আশাকরি হায়! তিনটি কাজ যা আমি করিনি যদি করতাম ,অনুরূপ ইচ্ছাহয় যে হায়! তিনটি জিনিস যদি রাসূল (সাঃ) কে জিজ্ঞাসা করতাম।সেই তিনটি জিনিস যা আমি করেছি আর আফসোস করছি যে যদি না করতাম সে তিনটি হল এই যে:وددت إنّي لم أكشف بيت فاطمة تركته وإن أغلق علی الحربঅর্থাৎ: হায় আফসোস! ফাতিমা (আ.) এর গৃহের সম্মানকে রক্ষা করতাম আর অসম্মানিত না করে তাঁর নিজের অবস্থায় ছেড়ে দিতাম যদিও তা যুদ্ধের জন্য বন্ধ করা হয়ে ছিল।১৮আবু ওবায়েদ যখন বর্ণনায় এই স্থানে পৌছান” لم أكشف بيت فاطمة وتركته “ এই বাক্যকে বর্ণনা না করে” كذا و كذا “ ইত্যাদি ইত্যাদি বলে বর্ণনা করেছেন অর্থাৎ সম্পূর্ণ ঘটনাকে বর্ণনা করেন নি এবং বলেন যে আমি এই ঘটনাকে উল্লেখ করতে চাইনা!কিন্তু যাইহোক“ আবু ওবায়েদ ” মাযহাবী পক্ষপাতিত্বের জন্য কিংবা অন্য কোন কারণে এই সত্যকে বর্ণনা করেন নি ; কিন্তু“ আল আমওয়াল ” পুস্তকের গবেষকেরা পাদটীকাতে লিখেছেন যে বাক্যকে সে বাদ দিয়েছে তা“ মিযানুল এ’ তেদাল ” গ্রন্থে এই রকম (যেমনটি আমরা বর্ণনা করেছি তেমনটি) জাহাবী বর্ণনা করেছেন ,তাছাড়া“ তিবরানী ” নিজের“ মো’ জামে ” এবং“ ইবনে আব্দু রাব্বাহ ”“ আকদুল ফরিদে ” এবং অন্যরা স্ব স্ব গ্রন্থে উপরোক্ত বাক্যটি বর্ণনা করেছেন। (চিন্তা করুন!)৭। তাবরানী ও মো’ জামে কবীরআবুল ক্বাসিম সোলেমান বিন আহমদ তাবরানী (২৬০ -৩৬০) (জাহাবী তার সম্পর্কে“ মিজানুল এ’ তেদালে ” বলেন যে তিনি বিশ্বস্ত ও নির্ভরযোগ্য ব্যক্তি। )“ আল মো’ জামুল কবীর ” পুস্তকে (যার মুদ্রণ বহুবার হয়েছে) যেখানে আবুবকরের মৃত্যু ও তার বাণী সম্পর্কে লিখেছেন উল্লেখ্য যে ,আবুবকর মৃত্যুর সময় কিছু জিনিসের আশা করেছিল!হায় আফসোস! তিনটি কাজকে যদি না করতাম!হায় আফসোস! তিনটি কাজ যদি করতাম!হায় আফসোস! তিনটি জিনিস যদি রাসূল (সা.) কে জিজ্ঞাসা করতাম! যে তিনটি কাজের ব্যাপারে বলেছিল ; যে যদি না করতাম ,সে তিনটি হল:أمّا الثلاث اللائي وددت أنّي لم أفعلهنّ، فوددت إني لم أكن أكشف بيت فاطمة و تركتهযে তিনটি কাজের জন্য আফসোস করছি তা হল যে হায় আফসোস যদি ফাতিমা (আ.) এর ঘরের অসম্মান না করতাম এবং তাকে তার অবস্থায় ছেড়ে দিতাম!১৯এই আকাঙ্খা ব্যক্ত করাতে বোঝা যায় যে উমরের হুমকিকে বাস্তবে রূপ দেয়া হয়েছিল।৮। ইব্নে আব্দু রাব্বাহ ও“ আল আক্বদুল ফরিদ ”ইবনে আব্দু রাব্বাহ আন্দালুসী -“ আল আকদুল ফরীদ ” এর লেখক (মৃত: ৪৬৩ হিঃ) নিজের পুস্তকে আব্দুর রহমান বিন আওফ থেকে বর্ণনা করেছেন:আমি আবুবকরের অসুস্থতার সময় তাকে দেখতে যাই ,তিনি বলেন: হায় আফসোস! যদি তিনটি কাজ না করতাম আর তার মধ্যে একটি কাজ হল যে:وددت إني لم أكن أكشف بيت فاطمة عن شيئ و إن كانوا غلقوه علی الحربঅর্থাৎ হায় আফসোস! যদি ফাতিমা (আ.) এর গৃহকে উন্মোচন না করতাম যদিও তারা লড়াই করার জন্য ঘরের দরজা বন্ধ করে থাকুক না কেন ৷২০এছাড়াও তাঁদের নাম উল্লেখ করব যাঁরা খলীফার এই বাক্যকে বর্ণনা করেছেন।৯।“ আল ওয়াফী বিল ওয়াফাইয়াত“ পুস্তকে নাজ্জামের কথাইব্রাহীম বিন সাইয়ার নাজ্জাম মো’ তিজালী (১৬০ -২৩১) যিনি আরবী পদ্য ও গদ্যে বাক্যের সৌন্দর্যের জন্য বিখ্যাত তার রচিত বিভিন্ন পুস্তকে ,ফাতিমা (আ.) এর ঘরে অন্যদের উপস্থিতির পরের ঘটনাকে বর্ণনা করে বলেন:إنّ عمر ضرب بطن فاطمة يوم البيعة حتي ألقت المحسن من بطنهاঅর্থাৎ আবুবকরের বাইয়াতের দিনে ওমর ফাতেমা (আ.) এর উদরে আঘাত করে ,তাঁর গর্ভের শিশু (মহসিন) গর্ভপাত হয়ে যায়। (চিন্তা করুন!)১০। মোবররিদ্“ আল কামিল ” গ্রন্থেমুহম্মদ বিন এজীদ বিন আব্দুল আকবর বাগদাদী (২১০ -২৮৫) বিখ্যাত সাহিত্যিক ও লেখক তাঁর মুল্যবান পুস্তক“ আল কামিল ” এ প্রথম খলিফার আকাঙ্খার কথা আব্দুর রহমান থেকে বর্ণনা করেছেন ,তিনি লেখেন:وددت إني لم أكن أكشف عن بيت فاطمة و تركته و لوأغلق علي الحربঅর্থাৎ: হায় ফাতিমা (আ.) এর ঘরের উপর আক্রমন না করতাম বরং তাঁকে তার নিজের অবস্থায় ছেড়ে দিতাম যদিও তা যুদ্ধের জন্য রুদ্ধ করা হয়েছিল।২১

হযরত আবু বকরের খেলাফতের প্রতি মা ফাতিমার অস্বীকৃতিহযরত ফাতিমা সালামুল্লাহ আলাইহি তার দুনিয়া ত্যাগের পূর্বমূহুর্ত পর্যন্ত হযরত আবু বকরকে খলিফা হিসেবে স্বীকৃতি প্রদান করেন নি ।৫৯তিনি কি জানতেন না যে নবীজি বলেছেনঃمَنْ ماتَ وَلَمْ يَعْرِفْ إمامَ زَمانِهِ ماتَ مَيْتَةً جاهِلِيَّةًঅর্থাৎঃ“ যে ব্যাক্তি তার যামানার ইমামকে না চিনে মৃত্যু বরণ করলো সে জাহেলিয়াতের সাথে মৃত্যু বরণ করল।৬০নিশ্চয়ই নবী করিম (সা.) এর প্রিয় কন্যা হযরত আবু বকরের খেলাফতের প্রতি অস্বীকৃতি প্রদানের কারণে জাহেলিয়াতের মৃত্যু বরণ করতে পারেন না । কেননা প্রিয়নবী (সা.) তাকে উদ্দেশ্য করে বলেছেনঃفاطمه سیدة نساء العالمینঅর্থাৎঃ“ ফাতিমা বিশ্ব নারীদের নেত্রী।”তিনি আরো বলেছেনঃفاطمه سیدة نساء اهل الجنّةঅর্থাৎঃ“ ফাতিমা বেহেশতের নারীদের নেত্রী।” ৬১তিনি কখনো এমন কাজ করতে পারেন না যাতে তিনি জাহেলী মৃত্যু বরণ করতে পারেন । তাহলে তো নবীজীর কথা মিথ্যা প্রমাণিত হয়ে যায় । হযরত ফাতিমার ব্যাপারে তিনি বলেছেন ,“ ফাতিমা আমার দেহের অংশ , যে ফাতিমাকে কষ্ট দেয় সে আমাকে কষ্ট দেয় ।” ৬২যদি হযরত ফাতিমার (সা.আ.) বেহেশতে যাওয়ার ব্যাপারটা নিশ্চিত হয়ে থাকে তাহলে কি হযরত আবু বকরের খেলাফতের অস্বীকার করেও বেহেশতে যাওয়া যায় ? হযরত আবু বকর যদি সত্যিই ইমাম বা খলিফা হয়ে থাকেন তাহলে তো হযরত ফাতিমার (সা.আ.) জন্য ফরজ ছিল ইমামের আনুগত্য করা । আর ফাতিমার (সা.আ.) বিরোধীতাই প্রমাণ করছে যে , তিনি হযরত আবু বকরকে বৈধ খলিফা হিসেবে মান্য করতেন না । তিনি নিশ্চয় তার যমানার ইমামকে চিনে মৃত্যু বরণ করেছেন । আর এভাবেই তিনি বেহেশতের নারীদের নেত্রী হিসেবে গন্য হবেন । তিনি তো কোন ভুল-ত্রুটি করতে পারেন না । আর খেলাফতের অস্বীকার করার মত ভুল ! মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামিন সূরা আহযাবের ৩৩ নং আয়াতে স্পষ্ট করে বলে দিয়েছেন যে তিনি আহলে বাইতকে সব ধরণের অপবিত্রতা বা পাপ– পংকিলতা থেকে মুক্ত রেখেছেন । অতএব এটা পরিস্কার হয়ে যায় যে নবী (সা.) এর ইহলোক ত্যাগের পর তিনি আবু বকর ব্যতীত অন্য কাউকে ইমাম হিসেবে মানতেন । তিনি মসজিদে নববীতে ফাদাক বাগান কেড়ে নেওয়ার প্রতিবাদে হযরত আবু বকরের বিরুদ্ধে আর হযরত আলীর ন্যায্য খেলাফতের স্বপক্ষে যে ঐতিহাসিক বক্তব্য রেখেছেন তা থেকে স্পষ্ট প্রতিয়মান হয় যে তিনি হযরত আলীকেই তার ইমাম বা নেতা হিসেবে মান্য করতেন ।৬৩হযরত ফাতিমার ব্যাপারে মহানবী (সা.) আরো বলেছেনঃفاطمة مهجة (بهجة) قلبي، وابناها ثمرة فؤادي، وبعلها نور بصري، والأئمّة من ولدها أمناء ربي وحبل الممدود بينه و بين خلقه، من اعتصم بهم نجا ، ومن تخلف عنه هوىঅর্থাৎঃ-“ ফাতিমা আমার হৃদয়ের উল্লাস , তার দু’ ছেলে আমার অন্তরের ফসল এবং তার স্বামী আমার নয়নের জ্যোতি আর তার সন্তানদের মধ্যে থেকে ইমামরা হচ্ছেন আমার রবের আমানত রক্ষাকারী । তারা সৃষ্টিকর্তা ও সৃষ্টিকুলের মাঝে (সমন্বয় সাধনকারী) দীর্ঘ রশ্মি । যে তাদের শক্ত করে আকড়ে ধরলো সে নাযাত পেল আর যে তাদের কাছ থেকে দুরে সরে থাকলো সে ধ্বংস হলো ।” ৬৪উক্ত হাদীসে নবী করিম (সা.) হযরত ফাতিমা ও তার স্বামী-সন্তানদের গুরুত্ব এবং তাদের অনুসরনের ব্যাপারে স্পষ্ট দিক নির্দেশনা দিচ্ছেন । হযরত ফাতিমাকে হৃদয়ের উল্লাস বলার কারণ কোন মতেই শুধুমাত্র সন্তান হওয়ার কারণে নয় বরং তিনি ফাতিমার ভিতর এমন সব মহৎ গুনাবলীর সমাবেশ দেখতে পেয়েছিলেন যার কারণে এতসব বিশেষণ উল্লেখ করেছেন । তার স্বামী ও সন্তানদের অনুসরণ নাজাত ও মুক্তি বয়ে আনবে বলে তিনি উল্লেখ করেছেন । সুতরাং এটা বুঝতে আর বাকী থাকার কথা নয় যে নেতৃত্ব ও নাজাতের প্রশ্নে হযরত ফাতিমাও তার স্বামীকে অনুসরন করতেন তার সম্মানিত পিতার ইন্তেকালের পর । কেননা তাতেই রয়েছে নাজাত ও মুক্তি ।আল্লাহুম্মা সাল্লে আলা মোহাম্মদ দিন ওয়া আলে মোহাম্মদ ওয়া আজিজ ফারজাহুম খালিফা তুল বিলা ফাসাল

আল্লাহররশ্মি আহলে বাইত আঃমূলতঃ নবী করিম (সা .) এর ইন্তেকালের পর প্রায় দুই শতাব্দি কোন মাযহাবের অস্তিত্ব ছিল না । কেননা হযরত আবু হানিফার জন্ম ৮০ হিজরী সনে এবং মৃত্যু ১৫০ হিঃ তে সংঘটিত হয় । হযরত মালিক বিন আনাস (ইমাম মালিক ) ৯৫ হিজরীতে জন্ম গ্রহন এবং ১৭৫ হিজরীতে ইন্তেকাল করেন । হযরত মুহাম্মদ বিন ইদ্রিস শাফেয়ী ১৫০ হিজরীতে জন্ম গ্রহন করেন আর ২০৪ হিজরীতে পরলোক গমন করেন । হযরত আহমদ বিন হাম্বল হিঃ ১৬৪ সনে ভূমিষ্ট হন এবং হিঃ ২৪১ সনে ইহলোক ত্যাগ করেন । আর আবুল হাসান আশ আরী ২৭০ হিঃ সনে পৃথিবীতে আগমন করেন এবং ৩৩৫ হিজরীতে পরলোক গমন করেন ।হানাফী মাযহাব সৃষ্টি হওয়ার পূর্বে মুসলমানগন কোন মাযহাব অনুসরন করতেন ? নিশ্চয়ই চার মাযহাবের মধ্যকার কোন মাযহাবের অনুসরন করতেন না কেউ । পক্ষান্তরে আহলে বাইতরে ইমামগন রাসূলুল্লাহর অব্যবহিত পর থেকেই পর্যায়ক্রমে মুসলমানদের ইমাম হিসেবে নেতৃত্ব দিয়ে এসেছেন সর্বাবস্থায় । আহলে বাইতের ইমামদের এ ধারাবাহিকতার কথাই ইমাম শাফেয়ী বলেছেন সাবলীল ভাষায়ঃوَ أمسَکتُ حَبلَ اللهِ وَ هُوَ وَلاءوهُمکَما قَد أُمِرنَا بالتَمسُّکِ بالحَبلِঅর্থাৎঃ আল্লাহর রশ্মি আকড়ে ধরেছি যা হচ্ছে তাদের ভালবাসা ও অনুসরন , কেননা এ রশ্মিকে আকড়ে ধরে থাকার নির্দেশ দেয়া হয়েছে ।আর আল কুরআনে আল্লাহ নির্দেশ দিয়েছেন ,) و َاعْتَصِمُوا بِحَبْلِ اللَّهِ جَمِيعًا وَلَا تَفَرَّقُوا(অর্থাৎঃ তোমরা আল্লাহর রশ্মিকে শক্তভাবে আকড়ে ধর এবং পরস্পর বিচ্ছিন্ন হয়ো না ।৮০বিভিন্ন সময় , বিভিন্ন প্রকার বাক্যাবলীর মাধ্যমে আর বিভিন্ন ঘটনা প্রসঙ্গে মহানবী (সা .) আহলে বাইতের গুরুত্ব ও মর্যাদা এবং তাদের অনুসরন করার বিষয়টি পরিস্কার ভাবে উম্মতকে বুঝিয়ে দিয়েছেন । তাই আমরা আহলে বাইতের এ রশ্মি তথা আলী থেকে মাহদী পর্যন্ত বারজন ইমামের পদাংক অনুসরনের মাধ্যমে পেতে পারি সত্য ও আলোর পথের নিশানা । আর যারা আহলে বাইতকে আকড়ে ধরে থাকলো মহানবী (সা .) এর বাণী মতে তারা কখনো পথ ভ্রষ্ট হবে না । তিনি বলেন ,انی تارک فیکم الثقلین کتاب الله و عترتی اهل بیتی إن تمسکتم بها لن تضلوا ابدا...........অর্থাৎঃ আমি তোমাদের জন্য দু’ টি ভারবাহী মূল্যবান বস্তু রেখে যাচ্ছি । একটি হচ্ছে আল্লাহর কিতাব অপরটি আমার পবিত্র আহলে বাইত । যারা এ দু’ টিকে শক্ত করে আকড়ে ধরে থাকবে তারা কখনো পথভ্রষ্ট হবে না ।………… .৮১পরিশিষ্টএক . নবীপাক ( সা .) সকল সাহাবীদের মধ্যে হযরত আলীর মর্যাদা ও গুনাবলী সর্বাধিক বর্ণনা করেছেন ।“ আর রিয়াদ আন নাদেরা” - র লেখক বলেছেন , হযরত ওমর বিন খাত্তাব থেকে বর্ণিত যে তিনি বলেছেন , রাসূল ( সা .) বলেছেনঃما اکتسب مکتسب مثل علی، یهدی صاحبه الی الهدی.অর্থাৎঃ আলীর ন্যায় কেউ এত বেশী মর্যাদা অর্জন করতে পারে নি । তার পদাংক অনুসরনকারীরা হেদায়েতের পথে পরিচালিত ।৮২এ ধরণের বর্ণনা্ বিভিন্ন গ্রন্থে সামান্য শব্দ ও বাক্যের তারতম্যসহ উল্লেখিত হয়েছে ।৮৩দুই . নবী ( সা .) এর নিকট থেকে বহুল বর্ণিত যে , তিনি বলেছেন ,“ আদম সৃষ্টির পূর্বে আমি এবং আলী একত্রে আল্লাহর নিকট এক খণ্ড নূর হিসেবে অবস্থান করতাম । অতঃপর যখন আল্লাহ হযরত আদমকে সৃষ্টি করলেন , তখন তিনি সেই নূরকে দু’ খণ্ডে বিভক্ত করলেন । এক খণ্ড আমি এবং অপরটি আলী ।৮৪তিন আল্লামা সুয়ূতি তার বিখ্যাত তাফসীর গ্রন্থে সূরা বাকারার নিম্নোক্ত আয়াতঃ) ف َتَلَقَّى آدَمُ مِنْ رَبِّهِ كَلِمَاتٍ فَتَابَ عَلَيْهِ إِنَّهُ هُوَ التَّوَّابُ الرَّحِيمُ.(অর্থাৎঃ অতঃপর আদম তার প্রতিপালকের নিকট থেকে কতগুলো শব্দ ( কালেমাত ) শিখলেন , ফলে সেগুলোর মাধ্যমে তিনি তওবা করেন । নিশ্চয়ই আল্লাহ তওবা গ্রহনকারী ও অনুগ্রাহী ।৮৫এর ব্যাখ্যায় বলেছেনঃو اخرج ابن النجار عن ابن عباس قال: سألت رسول الله (ص) عن الکلمات التی تلقاها آدم من ربه فتاب علیه، قال: سأل بحق محمد و علی و فاطمة و الحسن و الحسین الا تبت علی فتاب علیهঅর্থাৎঃ ইবনে নাজ্জার ইবনে আব্বাস থেকে বর্ণনা করেছেন যে তিনি বলেছেনঃ আমি আল্লাহর রাসূল ( সা .) কে ঐ শব্দাবলী ( কালেমাত ) সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলাম , যা হযরত আদম আল্লাহর কাছ থেকে শিক্ষা গ্রহন করেছিলেন যার ফলে তার তওবা কবুল হয়েছিল । নবী ( সা .) প্রতিত্তোরে বলেনঃ আদম ( আ .), মুহাম্মদ , আলী , ফাতেমা , হাসান , হুসাইনের উছিলা ধরে আল্লাহর কাছে তওবা করেন , যার ফলে আল্লাহ তার তওবা কবুল করে নেন ।৮৬চার . বিভিন্ন প্রসিদ্ধ হাদীস গ্রন্থে রাসূলুল্লাহ থেকে বর্ণিত আছে যে , তিনি বলেছেন , আমি ও আলী একই বৃক্ষের দু’ টি শাখা ।‘ মুসতাদরাক আস সহিহাইন’ গ্রন্থে নিম্নলিখিতভাবে এ ধরনেরই একটি হাদীস লিপিবদ্ধ আছেঃ জাবের বিন আব্দুল্লাহ বলেছেন , হে আলী , বিশ্বের অন্যান্য মানুষ পৃথক পৃথক বৃক্ষ থেকে সৃষ্টি হয়েছে আর আমি এবং তুমি একই বৃক্ষ থেকে সৃষ্টি ।৮৭পাঁচ . সিহাহ সিত্তার হাদীস গ্রন্থ ছাড়াও অন্যান্য অনেক হাদীস গ্রন্থসমূহ নবী ( সা .) এর নিকট থেকে বর্ণনা করেছেন যে , তিনি আলীকে নিজের ভাই বলে আখ্যায়িত করেছেন । সহি তিরমিযিতে উৎকৃষ্ট সনদসহ ইবনে ওমর থেকে বর্ণিত আছে যে তিনি বলেছেনঃ একদা নবী ( সা .) সাহাবীদেরকে পরস্পরের ভ্রাতৃত্ব বন্ধনে আবদ্ধ করার কাজে ব্যস্ত ছিলেন । ইত্তোবসরে আলী এসে উপস্থিত হলে নবী ( সা .) তাকে উদ্দেশ্য করে বলেন , হে আলী তুমি দুনিয়া ও আখেরাতে ( উভয় জগতে ) আমার ভাই ।৮৮ছয় . সহি আল বুখারীতে‘ সুলহ’ অধ্যায়ে (کیف یکتب )‘ কাইফা ইয়াকতুব’ শীর্ষক পাঠে ( বাব ) বর্ণিত আছে যে , নবী ( সা .) আলীকে উদ্দেশ্য করে বলেছেন ,انت منی و انا منکঅর্থাৎঃ ( হে আলী ) তুমি আমা হতে আর আমি তোমা হতে ।৮৯তথ্যসূত্রঃ১. সূরা আল আসরা , আয়াত নং-৭১ ।২. হাদীসঃاذا کنتم ثلاثة فامروا احدکم সুনানে আবি দাউদ , খণ্ড -২ পৃঃ -৩৪৩. সূরা আল বাকারা ,আয়াত নং-২০১ ।৪. সূরা আলে ইমরান ,আয়াত নং-৩৩ ।৫. সূরা আর রাদ , আয়াত নং-৭।৬. সূরা আলে ইমরান ,আয়াত নং-১০৩ ।৭. সূরা আহযাব , আয়াত নং-৩৩ ।৮. সহি তিরমিযি , খণ্ড-২ , পৃঃ ২৯৯ , হাদীস নং-৩৮০৭ ।৯. সূরা আহযাব , আয়াত নং-৩৩ ।১০ সূরা আশ - শূরা , আয়াত নং - ২৩ ।১১ আল কাশশাফ , খণ্ড - ৪ , পৃঃ - ২২০ , আল কাবির , খণ্ড - ২৭ , পৃঃ ১৬৬ ; তাফসীর আল জামেয়া’ লি আহকাম আল - কোরআন , কুরতুবী , খণ্ড - ১৬ , পৃঃ - ২২ ।১২ নুর আল আবসার , শাবলানজী , পৃঃ১০৪ ; আস সাওয়ায়েক আল মুহরিক্বা , পৃঃ ১৪৬ ; শারহ আল মাওয়াকেফ লি আয - যারক্বানী , খণ্ড - ৭ , পৃঃ ৭ ।১৩ আল মুসতাদরাক আল হাকেম , খণ্ড - ৩ , পৃঃ ১৫১ ; আল আওসাত , তাবরানী , আরবাইনঃ নাবহানী , পৃঃ ২১৬ থেকে বর্ণনা করেছেন । যাখায়েরুল উকবা , পৃঃ - ১৫০ ; তারিখে খোলাফা , পৃঃ ৩০৭ ; নূর আল আবসার , শাবলানজী , পৃঃ ১১৪ ।১৪. আল ক্বামুস আল মুহিত্বলিল ফিরুযাবাদী , খণ্ড-৩ , ফাসল আল হামযা , বাব আল লাম , পৃঃ৩৩১ , প্রিন্টঃ কায়রো , হালাবী ফাউন্ডেশন ।১৫. সূরা আল কেসাস , আয়াত নং-২৯ ।১৬. সূরা আল আনকাবুত , আয়াত নং-৩৩ ।১৭. সূরা আল হুদ ,আয়াত নং-৪৫-৪৬ ।১৮. সূরা আল হুদ ,আয়াত নং-৭৩ ।১৯. সূরা আহযাব ,আয়াত নং-৩৩ ।২০. রুহুল মায়ানি , আলুসী , খণ্ড-২৪ , পৃঃ ১৪।২১. প্রাগুক্ত২২. তাফসীর আল কাশশাফ , খণ্ড-৩ , পৃঃ ২৬ ; ফাতহ আল ক্বাদীর , শাওকানী , খণ্ড-৪ , পৃঃ ২৮০।২৩. আকরামাহ সম্পর্কে বিস্তারিত পড়ুনঃক) আত তাবাকাতুল কোবরা , খণ্ড-৫ , পৃঃ ১৪১ ।খ) মিযান আল এ’ তিদাল , যাহাবী , তারজামাতে আকরামাহ ।গ) আল মা’ য়ারিফ , ইবনে কুতাইবা , পৃঃ-৪৫৫ , প্রিন্ট কোম ।২৪. মিযান আল এ’ তিদাল , যাহাবী , খণ্ড-৩ , পৃঃ ১৭৩ ,৫৬২ ; আল ফাসল লি ইবনে হাযম , খণ্ড-৪ , পৃঃ ২০৫ ।২৫. সূরা আহযাব ,আয়াত নং-৩২ ।২৬. সূরা আহযাব ,আয়াত নং-৩০ ।২৭. সহি বুখারী , খণ্ড-৩ , পৃঃ ৩৪ ।২৮. সূরা তাহরীম ,আয়াত নং-৪ ।২৯. সহি বুখারী , খণ্ড-৭ , পৃঃ ২৮-২৯ ।৩০. তাফসীর আল কাবির , খণ্ড-৩ , পৃঃ ৪ ।৩১. মুসনাদে আহমাদ , খণ্ড-৬ , পৃঃ১১৫ ; তাফসীরে তাবারী , খণ্ড-২৮ , পৃঃ ১০১ ; আত তাবাকাতুল কোবরা , খণ্ড-৮ , পৃঃ ১৩৫ ; সহি বুখারী , খণ্ড-৩ ,পৃঃ ১৩৭ ; খণ্ড-৪ , পৃঃ ২২ ; সহি মুসলিম , কিতাব আত তালাক , হাদীস নং-৩১ ,৩২ ,৩৩ ,৩৪।৩২. কামেল ফি আত তারিখ , খণ্ড-৩ পৃঃ১০৫ ; আল ইমামাহ ওয়াস সিয়াসাহ , ইবনে কুবাইবা , খণ্ড-১ , পৃঃ ৭১ ,৭২ , গবেষক আলী শিরী ; আল ফুতুহ , খণ্ড-২ , পৃঃ ২৪৯ ।৩৩. আদ দুররুল মানসুর , সূয়ুতী , খণ্ড-৪ , পৃঃ ১৯৮ ; মুশকিল আল আসার , খণ্ড-১ , পৃঃ ২৩৩ একই বিষয়ে শব্দের তারতম্য ভেদে বিভিন্ন হাদীস বিদ্যমান , দৃষ্টান্ত স্বরূপঃ সহি আত তিরমিযি , খণ্ড-১৩ পৃঃ ২৪৮ ; মুসনাদে আহমাদ , খণ্ড-৬ , পৃঃ ৩০৬ ; উসদুল গা’ বা , খণ্ড-৪ , পৃঃ ২৯ ।৩৪. মুসতাদরাক আস সাহিহাইন , খণ্ড-৩ , পৃঃ ১৪৭ ; সহি মুসলিম , খণ্ড-৫ , পৃঃ ১৫৪ , মুসনাদে আহমাদ , খণ্ড-১ , পৃঃ ৯ ; সুনানে বায়হাকী , খণ্ড-৬ , পৃঃ ৩০০ ।৩৫. আদ দুররুল মানসুর , সূয়ুতী , খণ্ড-৫ , পৃঃ ১৯৯ ; তাফসীরে ইবনে কাসীর , খণ্ড-৩ , পৃঃ ৪৮৩ ; মুসনাদ আত তাইয়ালীসি , খণ্ড-৮ , পৃঃ ২৭৪ ; মুসতাদরাক আস সাহিহাইন , খণ্ড-৩ , পৃঃ ১৪৭ ; সহি মুসলিম , খণ্ড-৫ , পৃঃ ১৫৪ , মুসনাদে আহমাদ , খণ্ড-১ , পৃঃ ৯ ; সুনানে বায়হাকী , খণ্ড-৬ , পৃঃ ৩০০ ।৩৬. সূরা আলে ইমরান , আয়াত নং-৬১ ।৩৭. সহি মুসলিম , খণ্ড-৬ , বাবে ফাযায়িলে আলী , পৃঃ ১২০ ,১২১ ।৩৮. মুসনাদে আহমাদ , খণ্ড-৬ , পৃঃ ৩০৪ ,৩১৯ ।৩৯. সহি মুসলিম , খণ্ড-৭ , পৃঃ ১২৩ ।৪০. দুরারুস সিমতাইন , পৃঃ ২৩৯ ; উসদুল গাবা , খণ্ড-২ , পৃঃ ১২ , খণ্ড-৩ , পৃঃ৪১৩ , খণ্ড-৪ , পৃঃ২৯ ; মুসনাদে আহমাদ , খণ্ড-১ , পৃঃ১৮৫ , খণ্ড-৩ , পৃঃ২৫৯ , খণ্ড-৬ , পৃঃ১৯৮ ; তাফসীরে তাবারী , খণ্ড-২২ , পৃঃ৭ ।৪১. সহি মুসলিম , খণ্ড-২ , পৃঃ২৬৮ ; বাবে ফাযায়িলে আহলে বাইত ; মুসতাদরাক আস সাহিহাইন , খণ্ড-৩ , পৃঃ ১৪৭ ; তাফসীরে তাবারী , খণ্ড-২২ , পৃঃ৫ ।৪২ সূরা আল মায়েদা , আয়াত নং-৫৫ ।৪৩ তাফসীরে দুররুল মানসুর , খণ্ড-২ , পৃঃ -২৯৩ ; তাফসীরে আল কাবির , খণ্ড-৩ , পৃঃ -১৩ ; তাফসীরে তাবারী , খণ্ড-৬ , পৃঃ -১৬৫ ; তাফসীরে বাইযাভী , খণ্ড-২ , পৃঃ -১৬৫ ; তাফসীর আল কুরআনুল কারিম , শেখ মুহাম্মদ আব্দুহ , খণ্ড-৬ , পৃঃ -৪৪২ ; তাফসীরে আল কাশশাফ , সূরা আল মায়েদার ৫৫ নং আয়াত ।৪৪ তাফসীরে আল কাশফ ওয়াল বায়ান , আস সা’ লাবী , খণ্ড-১ , পৃঃ -৭৪ ; ফারায়েদুস সমিতাইন , খণ্ড-১ , পৃঃ -১৫৭ ,১৯১ , বাব ৩৯ , হাদীস নং - ১১৯ ,১৬২ ।৪৫ সূরা ত্বাহা , আয়াত নং-২৯ -৩২ ।৪৬ তাফসীরে আল কাশফ ওয়াল বায়ান , খণ্ড-১ , পৃঃ -৭৪ ; ফারায়েদুস সমিতাইন , খণ্ড-১ , পৃঃ -১৫৭ ,১৯১ ; কানযুল উম্মাল , খণ্ড-৬ , পৃঃ -৩১৯ ;খণ্ড-৭ , পৃঃ -৩০৫ ; মাজমায়ঃ হাইসামী , পৃঃ -৮৮ ,১০২ ; রিয়াদ আন নাদের , খণ্ড-২ , পৃঃ -২২৭ ।৪৭ সূরা আশ শুরা , আয়াত নং-২১৪ ।৪৮ সিরাহ আল হালাবী , খণ্ড-১ , পৃঃ -৩২১ ।৪৯ উক্ত ঘটনা বিভিন্ন হাদীস বেত্তা তাদের স্ব -স্ব গ্রন্থে বিস্তারিতভাবে উল্লেখ করেছেন । দৃষ্টান্ত স্বরূপ কয়েকটি উদ্ধৃতি নিম্নে উল্লেখ করা হলঃতারিখে তাবারী , খণ্ড-২ , পৃঃ -৬২ -৬৩ ; তারিখে কামেল , খণ্ড-২ , পৃঃ -৪০ -৪১ ; মুসনাদে আহমাদ , খণ্ড১- , পৃঃ -১১১ ; শারহে নাহজুল বালাগা লি ইবনে হাদীদ , খণ্ড-১৩ , পৃঃ -২১০ -২২১ ; কানযুল উম্মাল , খণ্ড-৬ , পৃঃ -৩৯৬ ।৫০ সহি বুখারী , খণ্ড-৫ , পৃঃ - ; বাবে ফাযায়িলে আন -নাবী , বাবে মানাকিবে আলী , পৃঃ -২৪ ; আসনা আল মাতালিব লি জায়রী , পৃঃ -৫৩ ; তারিখে দামেস্ক লি ইবনে আসাকের ,খণ্ড -১ ; শাওয়াহিদ আত তানযিল ,খণ্ড-১ , পৃঃ -১৫ ।৫১ সূরা ত্বাহা , আয়াত নং-২৯ -৩২ ।৫২ সূরা আল মায়েদা , আয়াত নং-৬৭ ।৫৩ সূরা আল মায়েদা , আয়াত নং-৩ ।৫৪ সহি মুসলিম , খণ্ড-২ , পৃঃ -৩৬২ ; মুসতাদরাক আল হাকেম , খণ্ড-৩ , পৃঃ -১০৯ ; তারিখে ইবনে কাসির , খণ্ড-৪ , পৃঃ -২৮১ ,৩৬৮ , ৩৭০ ; খণ্ড -৫ ,পৃঃ -২১ ,২০৯ ; মুসনাদে আহমাদ , খণ্ড-১ , পৃঃ -১১৮ -১১৯ ; সুনানে ইবনে মাজা , খণ্ড-১ , পৃঃ -৪৩ , হাদীস নং -১১৬ ; তারিখে ইয়াকুবী , খণ্ড-২ , পৃঃ -৪৩ ; তাবাক্বাত আল কুবরা , খণ্ড -২ ,অংশ -২ , পৃঃ -৫৭ ; সিরাহ আল হালাবী , খণ্ড-৩ , পৃঃ -৩৯০ ; তারিখে তাবারী , খণ্ড-২ , পৃঃ -৪২৯ ; মাযমাউয যাওয়ায়েদ , খণ্ড-৯ , পৃঃ -১৬৪ ; আস সাওয়ায়েক আল মুহরিক্বা , পৃঃ -২৫ ; তারিখে দামেস্ক , খণ্ড-২ , পৃঃ -৪৫ ; উসূল আল মুহিম্মা , পৃঃ -২৪ , নাজাফ ; আনসাব আল আশরাফ , খণ্ড-২ , পৃঃ -৩১৫ ; খাসায়েস আল আমিরুল মু’ মেনিন , নাসাঈ , পৃঃ -৩৫ -৯৩ ; কানযুল উম্মাল , খণ্ড-৪ , পৃঃ -৫৩ , হাদীস নং -১০৯২ ।৫৫ তারিখে ইয়াকুবী , খণ্ড-২ , পৃঃ -১২৩ -১২৬ ; সহি বুখারী , খণ্ড-৩ , পৃঃ -১৯০ ; মিলাল ওয়ান নিহাল , শাহরেস্তানী , খণ্ড-১ , পৃঃ -৫৭ ; তারিখে তাবারী , খণ্ড-২ , পৃঃ -৭৮ ; তারিখে খোলাফা , পৃঃ -৪৩ ; আস -সিরাতুন নাবাবিয়্যা , ইবনে হিশাম , খণ্ড-৩ , পৃঃ -৩৩১ ; তাফসীরে ইবনে কাসীর , খণ্ড-৪ , পৃঃ -১৯৬ ।৫৬ আল ইমামাহ ওয়াস সিয়াসাহ , ইবনে কুতাইবা , খণ্ড-১ , পৃঃ -২১ ।৫৭ ফাইযুল ক্বাদির শারহে আল জামেয়া আস সাগীর , খণ্ড-৫ , পৃঃ -৫২১ ।৫৮ সহি মুসলিম , খণ্ড-৩ , পৃঃ -৫১ ; মুসনাদে আহমাদ , খণ্ড-৬ , পৃঃ -৫৭ ; তারিখে তাবারী , খণ্ড-২ , পৃঃ -৪৩৯ ।৫৯. মিলাল ওয়ান নিহাল , শাহরেস্তানী , খণ্ড-১ পৃঃ-৭৫৭ । লিসানুল মিযান , খণ্ড-১ , পৃ-২৬৭ । আল ইমামাহ ওয়াস সিয়াসাহ , ইবনে কুতাইবা , খণ্ড-১ , পৃঃ ৩০-৩৩ ।৬০. মুসনাদ তাইয়্যালিসি , পৃঃ-২৫৯ , হাদীস নং-১৯১৩ । হিলইয়াত আল আউলিয়া , খণ্ড-৩ , পৃঃ-২২৪ । সহি মুসলিম , খণ্ড-৬ , পৃঃ-২২ , খণ্ড-১২ , পৃঃ-২১৪ ।৬১. সহি তিরমিযি , খণ্ড-২ , পৃঃ-৩৬০ । উসদুল গাবা , খণ্ড-৫ , পৃঃ-৫৭৪ । সহি আল বুখারী , কিতাব বাদয়’ আল খালক । তাবাকাত আল কোবরা , খণ্ড-২ , পৃঃ-৪০ । মুসনাদ আহমাদ , খণ্ড-৬ , পৃঃ-২৮২ ।৬২. ইয়ানাবিউল মাওয়াদদাহ , পৃঃ-২৬০ । আল মুসান্নেফ , খণ্ড-১২ , পৃঃ-১২৬ , তিনি আইনাহ থেকে ইবনে আইনাহ হযরত ওমর থেকে আবার তিনি মুহাম্মদ বিন আলী থেকৈ বর্ণনা করেছেন যে , রাসুল (সা.) বলেছেনঃانّما فاطمة بضعة منی فمن اغضبها اغضبنی৬৩. সাক্বিফা ও ফদাক , আবি বাকর আহমাদ বিন আব্দুল আযিয জাওহারী ।৬৪. আল মানাক্বিব , যামাখশারী , পৃঃ-২১৩ । দুরারু বাহরিল মানাক্বিব ,আশ শেইখ আল হানাফি আল মুসিলি পৃঃ-১১৬ । আল আরবাইন , আল হাফেজ মুহাম্মদ বিন আবি ফাওয়ারিস , পৃঃ-১৪ । ইয়ানাবিউল মাওয়াদদাহ ,আশ শেইখ সুলাইমান , পৃঃ-৮২ । মাক্বতাল আল হুসাইন , আল খাওয়ারেযমী , পৃঃ-৫৯ ।৬৫ সহি বুখারী , খণ্ড-৬ , পৃঃ -৩ ।৬৬ সহি বুখারী , খণ্ড-৯ , পৃঃ -১০১ , কিতাবুল আহকাম , বাব নং -৫১ , বাবুল ইসতিখলাফ ।৬৭ সহি মুসলিম , খণ্ড-৬ , পৃঃ -৩ ও ৪ , মিসর প্রিন্ট , তিনি ৮০ টা সনদ সহ বিভিন্ন প্রকার শব্দের তারতম্যের মাধ্যমে উক্ত বিষয়ে হাদীস বর্ণনা করেছেন ।৬৮ সহি আবি দাউদ , খণ্ড-২ , পৃঃ -২০৭ , কিতাব আল মাহাদী ।৬৯ সহি আত তিরমিযি , খণ্ড-২ , পৃঃ -৪৫ ।৭০ মুসনাদে আহমাদ , খণ্ড-১ , পৃঃ -৩৯৮ ; খণ্ড-৫ , পৃঃ -৮৬ -১০৮ ।৭১ মুসতাদরাক আস সাহিহাইন , খণ্ড-৩ , পৃঃ -৬১৭ , ৬১৮ ভারত প্রিন্ট ।৭২ তারিখে বাগদাদ , খণ্ড-১৪ , পৃঃ -৩৫৩ , হাদীস নং -৭৬৭৩ ; মুনতাখাব কানযুল উম্মাল , খণ্ড-৫ , পৃঃ -৩১২ ।৭৩ তারিখে খোলাফা , পৃঃ -১০ ।৭৪ আস সাওয়ায়েক আল মুহরিক্বা , পৃঃ -১৮৯ ।৭৫ ইয়ানাবিউল মাওয়াদদাহ ,পৃঃ -৪৪১ ; ফারায়েদুস সমিতাইন , খণ্ড-২ , পৃঃ -১৩৩ , হাদীস নং -৪৩০ -৪৩১ ।৭৬ কিফয়া আল আসার , পৃঃ -৭ (পুরানো প্রিন্ট ), কায়রো আল আসার , পৃঃ -৫৩ -৬৯ , প্রিন্ট ক্বোম ১৪০১ হিঃ ।৭৭ ফারায়েদুস সমিতাইন , খণ্ড-২ , পৃঃ -৩১২ , হাদীস নং -৫৬২ ।৭৮ ফারায়েদুস সমিতাইন , খণ্ড-২ , পৃঃ -৩১২ ; সহি বুখারী , খণ্ড-৪ , পৃঃ -১৬৫ ; সহি মুসলিম , খণ্ড-৬ , পৃঃ -৩ -৪ ; ইয়ানাবিউল মাওয়াদদাহ ,আশ শেইখ সুলাইমান , খণ্ড-১ , পৃঃ -৩৪৯ ;খণ্ড-২ , পৃঃ -৩১৬ ,খণ্ড-৩ , পৃঃ -২০৭ ,২৯১ ; সহি আত তিরমিযি , খণ্ড-৩ , পৃঃ -৩৪২ ; সুনানে আবি দাউদ , খণ্ড-৩ , পৃঃ -৩০২ ; কানযুল উম্মাল , খণ্ড-১২ , পৃঃ -১৬৫ ; মাওয়াদ্দা আল কোবরা , পৃঃ -২৯ ; মাক্বতাল আল হুসাইন লি খাওয়ারেযমী , পৃঃ -১৪৬ , হাদীস নং -৩২০ ; তারিখে দামেস্ক , খণ্ড -৭ , পৃঃ -১০৩ ; উসদুল গাবা , খণ্ড-৫ , পৃঃ -৫৭৪ । এ ধরণের আরো অনেক গ্রন্থে বার ইমামের নাম সহ প্রচুর হাদীস উল্লেখ করা হয়েছে । আশা করি সত্য গ্রহনকারীদের জন্যে উপরোক্ত কয়টি উদ্ধৃতি যথেষ্ট বলে প্রমাণিত হবে ।৭৯ কারবালা একটি সামাজিক ঘূর্ণাবর্তঃ মনির উদ্দিন ইউসূফ , ইসলামিক ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ , প্রথমও দ্বিতীয় প্রকাশ যথাক্রমে ডিসেম্বর - ১৯৯২ , পৃঃ - ১০ - ১১ ।৮০ সূরা আলে ইমরান , আয়াত নং-১০৩ ।৮১ সহি আত তিরমিযি , খণ্ড-৫ , পৃঃ -৬৬২ , হাদীস নং -৩৭৮৫ ,৩৭৮৮ , বাবে আহলে বাইতুন নবী , বৈরুত প্রিন্ট ; সহি মুসলিম , খণ্ড-৭ , পৃঃ -১২২ -১২৩ , মিসর প্রিন্ট ; মুসতাদরাক আল হাকেম , খণ্ড-৩ , পৃঃ -১৪৮ ; কানযুল উম্মাল , খণ্ড-১ , পৃঃ -৪৪ ; মুসনাদে আহমাদ , খণ্ড-৫ , পৃঃ -১৮২ -১৮৯ ; আস সাওয়ায়েক আল মুহরিক্বা , পৃঃ -১৩৫ ।৮২ আর রিয়াদুন নাদেবরা , খণ্ড -২ পৃঃ -২১৪ ।৮৩ মুসতাদরাক আস সাহিহাইন , খণ্ড-৩ , পৃঃ -১০৭ ; আল ইসতিয়াব , খণ্ড-২ , পৃঃ -৪৬৬ ; আস সাওয়ায়েক আল মুহরিক্বা , পৃঃ -৭২ ,৭৬ ; আল ইমামাহ ওয়াস সিয়াসাহ , পৃঃ -৯৩ ; তারিখে বাগদাদ , খণ্ড-৬ , পৃঃ -২২১ ; নূর আল আবসার , পৃঃ - ৭৩ ।৮৪ আর রিয়াদুন নাদেবরা , খণ্ড -২ পৃঃ -১৬৪ ; মিযানুল এতেদাল , যাহাবী , খণ্ড -১ পৃঃ -২৩৫ ; তারিখে বাগদাদ , খণ্ড-৬ , পৃঃ -৫৮ ।৮৫ সূরা আল বাকারা , আয়াত নং -৩৭ ।৮৬ কানযুল উম্মাল , খণ্ড-১ , পৃঃ -২৩৪ ।৮৭ মুসতাদরাক আস সাহিহাইন , খণ্ড-২ , পৃঃ২৪১ ; কানযুল উম্মাল , খণ্ড-৬ , পৃঃ -১৫৪ ; যাখায়েরুল উকবা , পৃঃ -১৬ ।৮৮ সহি আত তিরমিযি , খণ্ড-২ , পৃঃ -২৯৯ ;এ ধরণের হাদীস নিম্ন লিখিত গ্রন্থাবলীতেও দৃষ্টি গোচর হয় ।মুসতাদরাক আস সাহিহাইন , খণ্ড-৩ , পৃঃ -১৪ ,১১১ ,১২৬ ; সুনানে ইবনে মাজা , পৃঃ -১২ ; তারিখে তাবারী , খণ্ড-২ , পৃঃ -৫৬ ,৬৩ ;কানযুল উম্মাল , খণ্ড-৬ , পৃঃ -৩৯৪ ; আর রিয়াদুন নাদেবরা , খণ্ড -২ পৃঃ -১৫৫ ,১৬৭ ,২২৬ ,৪০০ ; তাবাক্বাত আল কোবরা ,খণ্ড-৮ , পৃঃ -১৪ , ১১৪ ; মুসনাদে আহমাদ , খণ্ড-১ , পৃঃ -১৫৯ ,২৩০ ; উসদুল গাবা , খণ্ড-৩ , পৃঃ -৩১৭ ;তারিখে বাগদাদ , খণ্ড-১২ , পৃঃ -২৬৮ ; আস সাওয়ায়েক আল মুহরিক্বা , পৃঃ -৭৪ -৭৫ ।৮৯ এ ধরনের উক্তি আরো বহু হাদীস ও ইতিহাস গ্রন্থে লিপিবদ্ধ আছে । তন্মোধ্যে কয়েকটি উদ্ধৃতি নিম্নে উল্লেখ করা হল ।সুনানে বায়হাক্বী , খণ্ড-৮ , পৃঃ -৫ ; খাসায়েসে নাসাঈ ,পৃঃ -৫১ ; মুসনাদে আহমাদ , খণ্ড-১ , পৃঃ -৯৮ ; মুসতাদরাক আস সাহিহাইন , খণ্ড-৩ , পৃঃ -১২০ ; তারিখে বাগদাদ , খণ্ড-৪ , পৃঃ -১৪০ ; সহি আত তিরমিযি , খণ্ড- 2 পৃঃ=২৯৭==২৯৯আল্লাহুম্মা সাল্লে আলা মোহাম্মদ দিন ওয়া আলে মোহাম্মদ ওয়া আজ্জিল ফারজাহুম খলীফা তুল বিলা ফাসাল

নবীর আহলে বাইত আঃ দের ভালবাসাআল্লামা যামাখশারী ও আল্লামা ফাখরে রাযী আহলে সুন্নাত ওয়াল জামায়াতের প্রখ্যাত দু’জন তাফসীরকারক ও বিজ্ঞ আলেম । তারা তাদের সুবিখ্যাত তাফসীর গ্রন্থদ্বয় ‘আল-কাশশাফ’ ও ‘আল-কাবির’- এ এভাবে লিপিবদ্ধ করেছেন, যখন নাযিল হলো এ আয়াতঃقُل لَّا أَسْأَلُكُمْ عَلَيْهِ أَجْرً‌ا إِلَّا الْمَوَدَّةَ فِي الْقُرْ‌بَىٰঅর্থাৎঃ (হে রাসূল) বলে দাওঃ আমি আমার রেসালতের বিনিময়ে কোন পার্থিব প্রতিদান ও পারিশ্রমিক চাই না । আমি চাই যে, শুধুমাত্র তোমরা আমার নিকটতম লোকদের (আহলে বাইতকে) ভালবাসবে ।১তখন রাসূল (সা.) বলেনঃمن مات علی حب آل محمد مات شهیداالا من مات علی حب آل محمد مات مغفورا لهالا من مات علی حب آل محمد مات تائباالا من مات علی حب آل محمد مات مؤمنا مستکملا للایمانالا من مات علی حب آل محمد مات بشره ملک الموت بالجنة ثم منکر و نکیرالا من مات علی حب آل محمد مات یزف الی الجنة کما تزف العروس الی بیت زوجهاالا من مات علی حب آل محمد مات فتح له فی قبربابان الی الجنةالا من مات علی حب آل محمد مات جعل الله قبره مزار ملائکه الرحمنالا من مات علی حب آل محمد مات مات علی السنة و الجماعةالا من مات علی حب آل محمد مات جاء یوم القیامة مکتوبا بین عینه آیس من رحمه اللهالا من مات علی بغض آل محمد مات کافراالا من مات علی بغض آل محمد مات لم یشم رائحة الجنّةঅর্থাৎঃ যে ব্যক্তি অন্তরে মুহাম্মদ (সা.) এর আহলে বাইতের প্রতি ভালবাসা পোষণ করে মৃত্যুবরন করলো তার মৃত্যু শহীদের মৃত্যুর সমতুল্য ।জেনে রেখোঃ যে ব্যাক্তি হৃদয়ের মাঝে আলে মুহাম্মদের (সা.) প্রতি ভালবাসা লালন করে মৃত্যুবরন করলো তার মৃত্যু ক্ষমা প্রাপ্তির মৃত্যু হিসেবে পরিগনিত ।মনে রেখোঃ যে ব্যক্তি আহলে বাইতের ভালবাসা অন্তরে নিয়ে মৃত্যু বরন করলো তার মৃত্যু “তওবাকারীর মৃত্যু” হিসাবে গন্য ।স্মরণ রেখোঃ যে ব্যক্তি আলে মুহাম্মদকে (সা.) ভালবেসে মৃত্যুবরন করলো সে পরিপূর্ণ ঈমানের সাথে মৃত্যুবরন করলো ।জেনে রেখোঃ যে ব্যক্তি হৃদয়ে আলে মুহাম্মদের (সা.) ভালবাসা নিয়ে মৃত্যুবরন করলো তাকে মৃত্যুদূত তথা আযরাইল (আ.) অতঃপর মুনকির নাকিরও জান্নাতের সুসংবাদ পরিবেশন করবেন ।স্মরণ রেখোঃ যে ব্যক্তি হৃদয়ে মুহাম্মদ (সা.) এর আহলে বাইতের ভালবাসা লালন করে মৃত্যুবরন করলো তাকে বেহেশ্তে এমনভাবে সজ্জিত করে নিয়ে যাওয়া হবে যেমনিভাবে নববধুকে সাজিয়ে স্বামীগৃহে নিয়ে যাওয়া হয় ।মনে রেখোঃ যে ব্যক্তি মনের মাঝে আলে মুহাম্মদ (সা.) এর ভালবাসা নিয়ে মৃত্যুবরন করলো তার কবরে জান্নাত মুখী দু’টি দরজা খুলে দেয়া হবে ।জেনে রেখোঃ যে ব্যক্তি রাসূলের (সা.) আহলে বাইতকে ভালবেসে মৃত্যুবরন করলো মহান আল্লাহ তার কবরকে রহমতের ফেরেস্তাদের জিয়ারতগাহে পরিণত করবেন ।স্মরণ রেখোঃ যে ব্যক্তি আলে মুহাম্মদ (সা.) কে ভালবেসে মৃত্যুবরন করলো সে রাসূলের সুন্নাতের পথে এবং মুসলমানদের দলভূক্ত হয়ে মৃত্যুবরন করলো ।মনে রেখোঃ যে ব্যক্তি মুহাম্মদ (সা.) এর আহলে বাইতের প্রতি শত্রুতা পেষণ করে মারা যায় সে ক্বিয়ামতের দিনে এমন অবস্থায় উপস্থিত হবে যে তার কপালে লিখা থাকবে ‘আল্লাহর রহমত থেকে বঞ্চিত’ ।স্মরন রেখোঃ যে ব্যক্তি মুহাম্মদ (সা.) এর আহলে বাইতের প্রতি শত্রুতা পোষণ করে মৃত্যুবরন করলো তার মৃত্যু কাফেরের মৃত্যুর সমতুল্য ।জেনে রেখোঃ যে ব্যক্তি রাসূলের (সা.) আহলে বাইতের সাথে শত্রুতা পোষণ করে মারা যায় সে কখনো বেহেশ্তের সুঘ্রাণ পাবে না ।২আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাতের চার ইমামের অন্যতম, ইমাম শাফেয়ী আহলে বাইতের শানে নিম্নলিখিতরূপে ভক্তি শ্রদ্ধা প্রদর্শন করেছেন । তিনি কবিতা আবৃতি করেছেন এভাবেঃیَا آلَ بَیتِ رَسولِ الله حُبُّکُمُ فَرضٌ مِنَ الله فی القُرآنِ أنزَلَهُیکَفیکُم مِن عظیمِ القَدرِ أنّکُم مَن لَم یُصلِّ عَلَیکُم لَا صَلَاةَ لَهُوَ لَمَّا رَأیتُ النَّاسَ قَد ذَهَبَت بِهِم مَذَاهِبُهُم فِی أبحُرِ الغَیِّ وَ الجَهلِرَکِبتُ عَلَی اسمِ الله فِی سُفُنِ النَّجَا وَ هُم آل بَیتِ المُصطفَی خَاتَمِ الرُّسُلِوَ أمسَکتُ حَبلَ اللهِ وَ هُوَ وَلاءوهُم کَما قَد أُمِرنَا بالتَمسُّکِ بالحَبلِঅর্থাৎঃ ‘হে আল্লাহর রাসূলের আহলে বাইত, আপনাদের ভালবাসা আল্লাহর পক্ষ থেকে ফরজ করা হয়েছে, যা কোরআনের উল্লেখ আছে ।আপনাদের শ্রেষ্ঠ গৌরবের জন্যে এটাই যথেষ্ট যে, যে ব্যক্তি নামাজে আপনাদের উপর দরুদ পাঠ করে না তাদের নামাজই হয় না ।যখন লোকজনদের দেখেছি তারা তাদের পথকে গোমরাহীর সাগরে ভাসিয়ে দিয়েছে, তখন আমি আল্লাহর নামে উঠে পড়লাম আহলে বাইতে মোস্তফার নাজাতের তরীতে ।আল্লাহর রশ্মি আকড়ে ধরেছি যা হচ্ছে তাদের প্রতি ভালবাসা কেননা এ রশ্মিকে আকড়ে ধরে থাকার দেয়া হয়েছে নির্দেশ ।৩ইমাম শাফেয়ী রাসূলের সেই হাদীসেরই সমর্থন করেছেন যেখানে মহানবী (সা.) বলেছেন,اهل بیتی کسفینة نوح فمن رکبها نجی و من تخلف عنها غرقঅর্থাৎঃ “আমার আহলে বাইত নূহের তরী সদৃশ্য । যে ব্যক্তি তাতে আরোহন করবে সে নাজাত পাবে আর যে ঐ তরী থেকে দূরে সরে থাকবে সে ধ্বংস হয়ে যাবে ।৪উক্ত হাদীসটি এগারটি সূত্রে বিভিন্ন গ্রন্থে লিপিবদ্ধ হয়েছে আর সাতটি সূত্রে শীয়া গ্রন্থাবলীতে বর্ণনা করা হয়েছে ।তথ্যসূত্রঃ১. সূরা আশ-শূরা, আয়াত নং-২৩ ।২. আল কাশশাফ, খণ্ড -৪, পৃঃ-২২০, আল কাবির, খণ্ড-২৭, পৃঃ ১৬৬; তাফসীর আল জামেয়া’লি আহকাম আল-কোরআন, কুরতুবী, খণ্ড-১৬, পৃঃ-২২ ।৩. নুর আল আবসার, শাবলানজী, পৃঃ১০৪; আস সাওয়ায়েক আল মুহরিক্বা, পৃঃ ১৪৬; শারহ আল মাওয়াকেফ লি আয-যারক্বানী, খণ্ড-৭, পৃঃ ৭ ।৪. আল মুসতাদরাক আ হাকেম, খণ্ড-৩, পৃঃ ১৫১; আল আওসাত, তাবরানী, আরবাইনঃ নাবহানী, পৃঃ ২১৬ থেকে বর্ণনা করেছেন । যাখায়েরুল উকবা, পৃঃ-১৫০; তারিখে খোলাফা, পৃঃ ৩০৭; নূর আল আবসার, শাবলানজী, পৃঃ ১১৪আল্লাহুম্মা সাল্লে আলা মোহাম্মদ দিন ওয়া আলে মোহাম্মদ ওয়া আজ্জিল ফারজাহুম খলীফা তুল বিলা ফাসাল